নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ ফুটবল এবং আমাদের জাতীয় পতাকার অবমাননা

১৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:০৬

বিশ্বের সবচেয়ে আনন্দদায়ক, জনপ্রিয় এবং সৌন্দর্যমন্ডিত খেলা ফুটবল । সেই ফুটবলের মহা আসর বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র ২৬ দিন বাকী । বর্তমান বিশ্বের ফুটবলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরাশক্তি এবং সাবেক পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের বিশতম আসর। গ্রহের সবচেযে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে মেতে উঠে বিশ্বের শত কোটি মানুষ । নাওয়া, খাওয়া ঘুম বাদ দিয়ে খেলা চলাকালীন সময়ে মাঠে কিংবা টিভির সামনে বসে এবং বিশ্বকাপ চলাকালীন বাকি সময়টাতে কেবল ফুটবল বিষয়ক আলাপচারিতায় মেতে ওঠে সকল মানুষ । বিশ্বকাপ শুরুর একশ দিন আগ থেকেই শুরু হয় বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় কাউন্টডাউন । তখন থেকে মানুষ ভাবতে থাকে কে হতে পারে এবারের চ্যাম্পিয়ন ? কে পেতে পারে সোনার বুট কিংবা সোনার বল ? আরও কত কত জিজ্ঞাসা ? ফুটবল খেলার ইতিহাস খুবই প্রাচীন । ১৮৭২ সালে ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে ফুটবলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় । তখন শুধু অলিম্পিকে ফুটবল অন্তর্ভূক্ত ছিল । কিন্তু সময়ের তালে তাল মিলিয়ে ফুটবল ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করার কারনে ফুটবলের সাথে জড়িত কর্তাব্যক্তিরা ভাবতে থাকে এমন একটি আয়োজনের যার মাধ্যমে ফুটবলের জনপ্রিয়তা এবং উত্তেজনাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া যায । এ বিষয়টি নিয়ে ১৯২৮ সালে প্রথম মিটিং বসে এবং সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় উরুগুয়ের স্বাধীনতার শতবর্ষ উপলক্ষে ১৯৩০ সালে সেখানে বিশ্বকাপের আয়োজন করা হবে । ফুটবলের ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপে চারটি দল অংশগ্রহন করে । সে বিশ্বকাপে উরুগুয়ে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ীর খেতাব অর্জন করে । তখন অর্থ্যাৎ ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বর্তমান সময়ে যারা বিশ্বকাপ ট্রফি অর্জন করেছে তাদেরকে ‘জুলে রিমে ট্রফি’ প্রদান করা হয় । দেখতে দেখতে ফুটবল বিশ্বকাপের ২০তম আসর হাজির । ১৯তম আসরে ফুটবল জগতের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অর্জন করেছিল স্পেন । তারা নেদারল্যান্ড‘সকে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় ১-০ গোলে হারিয়ে ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে । এ জয়ের মাধ্যমে স্পেন প্রথমবারের মত ‘ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি’ অর্জনের সম্মান এবং স্বীকৃতি পায় । গত উনিশটি বিশ্বকাপে ব্রাজিল পাঁচবার, ইতালি চারবার, জার্মানী তিনবার, আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ে দুইবার করে এবং ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং স্পেন একবার করে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় ।



বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশীরাও মেতে ওঠে বিশ্বকাপ উত্তেজনায় । সারা দেশব্যাপী তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয় । বাংলাদেশের মানুষের খুব কম সংখ্যক মাঠে গিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপ উপভোগ করার সামর্থ্য রাখার কারনে টিভিই হয় বিশ্বকাপ উপভোগের প্রধান ভরসা । তাইতো বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে টিভির বিক্রি পূর্বের তুলনায় অনেকগুনে বেড়ে যায় । দেশের যে মুরুব্বীরা ক্রিকেট কিংবা অন্যান্য খেলা দেখার তীব্র বিরোধীতা করেন তারাও ফুটবল বলতে উম্মাদনায় ভোগেন । বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ফুটবল বিশ্বকাপে সুযোগ না পেলেও বাংলাদেশের সকল বয়সের মানুষ কমবেশি ফুটবল প্রেমী । বিশেষ করে বিশ্বকাপ ফুটবল বললে তো কথাই নেই । বাংলাদেশে যারা ফুটবল ভক্ত তাদের সিংহভাগ ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার ভক্ত-সমর্থক । অন্যান্য দেশের হাতেগোনা সল্পসংখ্যক ভক্ত আছে ঠিকই কিন্তু ফুটবলের ঈশ্বরখ্যাত সাবেক তারকা ম্যারাডোনা এবং বর্তমান তারকা মেসির কারনে আর্জেটিনা অপরদিকে ফুটবলের কালো মানিক ও বরপুত্র সাবেক তারকা পেলে এবং বর্তমান তারকা নেইমারের কারনে ব্রাজিলের ভক্ত চোখে পড়ার মত । ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে সমগ্র বাংলাদেশ আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল এই দুই মেরুতে ভাগ হয়ে যায় । দেশের মানুষ বিশেষ করে তরুনরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি বিভাগীয়, জেলা এমনকি উপজেলা শহরেও আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল কিংবা পর্তুগাল অথবা অন্যকোন দেশের পতাকা দিয়ে মুড়িয়ে দেয় । রাজধানীতে এত পরিমান ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার পতাকা উত্তোলন করা হয় যার কারনে নতুন কেউ এদেশে আসলে বুঝতেই পারবে না যে এ দেশটা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা না বাংলাদেশ ?



ফুটবল উত্তেজনায় কাঁপা দোষের নয় বরং খেলার প্রতি টান থাকাই উচিত । খেলাকে ভালোবাসা উচিত । তাই বলে বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করে অন্যকোন দেশের পতাকাকে গগনচুম্বীভাবে উড়ানো প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের কাজ হতে পারে না । দেশের পতাকাকে সর্বোচ্চ স্থানে রেখে তার নিচে অন্য কোন দেশ কিংবা সংস্থার পতাকা উত্তোলনে দোষের নয় তবে নিজ দেশের পতাকার চেয়ে অন্য দেশের পতাকার বৃহদাকৃতি কিংবা নিজ দেশের পতাকার উপরে অন্য দেশের পতাকা উড়ানো অবশ্যই গাদ্দারীতুল্য । গত কয়েকটি বিশ্বকাপে গণমাধ্যম এ ব্যাপারে অনেকগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করার পরে সরকার দেশের পতাকার সাথে বিদেশের পতাকা উড়ানোর যে বিধিমালা প্রনয়ণ করেছে তার বাস্তবায়ণ অতীতের কোন বিশ্বকাপে দেখা যায় নি । অতীতের গন্ডি থেকে বের হয়ে ফুটবলের আসন্ন বিশতম বিশ্বকাপ আসরে যাতে দেশের পতাকাকে তার প্রাপ্ত মর্যাদার স্থানে রেখে ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে বিদেশের পতাকাকেও উত্তোলন করা হয় সে ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা এবং কঠোরতা কামনা করছি । দেশের তরুন সমাজসহ সকলের কাছে প্রার্থনা, অন্য একটি দেশকে ভালোবেসে পতাকা টানাবেন তবে তার কারনে যাতে নিজেদের পতাকাকে অবমাননা কিংবা অমর্যাদা না করা হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন । যে পতাকাটি অর্জন করার জন্য ত্রিশ লাখ মানুষ বুকের রক্ত দিয়েছে সেই পতাকাটির কোন অমর্যাদা করা কোন অবস্থাতেই উচিত নয় ।



রাজু আহমেদ । কলাম লেখক ।

[email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.