নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভোক্তা স্বার্থে প্রতিটি পণ্যদ্রব্যের গায়ে মূল্য লিখে দেয়া আবশ্যক

১১ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:৩৭

বাজার যেতে হয়না এমন মানুষ বাংলাদেশে বিরল । যারা অর্থনৈতিকভাবে পুরোপুরি স্বচ্ছল তাদের মধ্যে দু’চার জনকে পাওয়া যায় যারা নিজেদের বাজার নিজেরা করে না বরং তাদের পিয়ন কিংবা চাপরাশির মাধ্যমে এ কাজ সমাধা করান । এ সব মানুষের মধ্যেও বছরে এক দু’ইবার বাজারে যায় না এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর । নিম্নবিত্ত এবং মধ্যম শ্রেণীর মানুষকে প্রত্যহ সকালে ব্যাগ হাতে বাজারে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও যারা আর্থিকভাবে মোটামুটি স্বচ্ছল কিংবা চাকুরী, ব্যবসার কাজে সপ্তাহের ছয়দিন ব্যস্ত থাকেন তারা অন্তত প্রতি শুক্রবারে পুরো সপ্তাহের বাজার করে রাখেন । সপ্তাহের মাঝামাঝি যদি কোন অতিথীর আগমন ঘটে তবে শত ব্যস্ততার মাঝেও তাদেরকে বাজারের ব্যাগ হাতে বাজারে প্রবেশ করতে হয় । চাকুরীজীবিদের ক্ষেত্রে সাধারনত তাদের গিন্নীদেরকে বেশিরভাগ সময় বাজার করতে দেখা যায় । গ্রাম অঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে পুরুষদের উপস্থিতি সংখ্যাধিক্য দেখা গেলেও মফস্বল শহরে কিংবা পূর্ণ শহরের বাজারগুলোতে মেয়েলোকের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত । ঘর সমলানোর পরে বাজার করা বাড়তি চাপ হলেও পরিবারের স্বার্থে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদেরকে বাজারে যেতে হয় । ঘর সাজানোর উপকরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে শিশুদের খেলনা পর্যন্ত অর্থ্যাৎ একটি সংসার পরিচালনা করার জন্য যত ধরনের উপকরণ দরকার তার সবটাই বিক্রেতা থেকে ক্রয় করে আনতে হয় । এক্ষেত্রে সাধ্যের মধ্যেই স্বাদ পূরনের সীমা রাখতে হয় । দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বী উর্ধ্বগতির বাজারে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হাসফাঁস লক্ষণীয় । তারপরেও বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু দরকার তা তো জোগাড় করতেই হবে ।



বাংলাদেশের বাজারগুলোতে দেখা যায় প্রায় অধিকাংশ পণ্যের গাঁয়ে মূল্য নির্ধারণ করা থাকে না । আবার কিছু কিছু নিম্নমানের কোম্পানী তাদের উৎপাদিত পণ্যের গায়ে ন্যায্য মূল্যের চেয়ে কয়েকগুন বেশি মূল্য লিখে রাখে । বাংলাদেশে অন্যান্য দেশ থেকে যে সকল পণ্য আমদানি করা হয় তার প্রায় সবগুলোতেই মূল্য নির্ধারিত থাকে না কেননা বর্হিবিশ্বের দেশগুলোর মুদ্রার মান এবং বাংলাদেশের মুদ্রার মানে রয়েছে ব্যাপক পার্থক্য । পণ্যে মূল্য নির্ধারন করে না রাখা কিংবা ন্যায্য মূলের চেয়ে কয়েকগুন বেশি মূল্য লিখে রাখার কারনে প্রায় প্রতিদিন প্রতিটি পণ্য ক্রয় করার সময় সাধারণ গ্রাহককে প্রতারিত এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয় । বিশেষ করে চীন এবং ভারত থেকে যে সকল পণ্যদ্রব্য বাংলাদেশের আসে সে সকল পণ্য দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তাদেরকে মারাত্মকভাবে প্রতারিত হতে হয় । ব্যবসায়িকরা ব্যবসা করবে এটাই রীতি । তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে নৈতিকতা জলাঞ্জলি দিয়ে ‘যার কাছ থেকে যা লয়ে পারে’ নীতিতে ব্যবসা পরিচালনা করে । যার ফলে ভোক্তারা মারাত্মকভাবে প্রতারিত এবং বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয় ।



সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা বিক্রেতার সাথে পণ্যদ্রব্য ক্রয়ের সময় দরকষাকষি করতে অপছন্দ করে । ব্যবসায়ীরা ক্রেতার সে দুর্বলতাকে পুঁজি করে একটি পণ্যের ন্যায্য মুল্যের চেয়ে কয়েকগুন বেশি দাম আদায় করে ছাড়ে । লোকলজ্জা কিংবা চক্ষুলজ্জার কারনে ক্রেতা ব্যবসায়ীর সাথে কোন তর্ক না করেই কেটে পড়েন । যদিও কোন পণ্যের দাম নির্ধারণ না করে ক্রেতার কেনা উচিত নয় তবুও সবাই সে নীতিতে পণ্য কেনেন না । ক্রেতার ক্রয়ের এ পদ্ধতির কারনে ব্যবসায়ীদের আর্থিক লোভ বেড়ে যায় এবং পরবর্তী সকল ক্রেতাদের কাছ থেকে উচ্চমূল্য আশা করে । যা দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারন বলে মনে করা হয় । বাংলাদেশের অনেকগুলো পোশাক বাজার বা অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রীর বাজার আছে যেখানে একটি দ্রব্যের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ক্রেতার কাছে কয়েকগুন বেশি দাম হাঁকা হয় । ক্রেতা চক্ষুলজ্জায় পড়ে হলেও অন্তত বিক্রেতার চাহিদার অর্ধেক দাম বলেন । কিছু সময় বাদানুবাদ করে বিক্রেতা ক্রেতাকে সে দ্রব্য দিয়ে দেয় । তাতে দেখা যায় ক্রেতা এখানেও বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হয়ে যায় । আবার এ সব বাজারে যদি কোন নতুন ক্রেতা আসে তবে তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমান দাঁড়ায় ‘পুকুর চুরি’র মত ।



ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ রক্ষার্থে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সকল পণ্য দ্রব্যের গায়ে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া আশু আবশ্যক । এতে ব্যবসায়ীরা যেমন নৈতিকভাবে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে তেমনি সাধারণ ক্রেতারাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে না । এক্ষেত্রে সরকার বিশেষ করে বিএসটিআইকে সর্বাগ্রে ভূমিকা নিতে হবে । প্রতিটি পণ্য দ্রব্যের মান যাচাইয়ের সাথে পণ্য দ্রব্যের মূল্য নির্ধারন করে তা দ্রব্যের গায়ে লিখে দিতে হবে । কোন প্রতিষ্ঠান যদি এক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গ করে তবে কঠিন আইন প্রনয়ণের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে । যাতায়াত ভাড়ার ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য হওয়া উচিত । যদিও এক্ষেত্রে আইন আছে কিন্তু বাংলাদেশের কোথাও সে আইন কার্যকারী আছে বলে জানা নেই । যে যেমন করে পারছে সেভাবে চলছে । সাধারণ জনগণ এদের খামখেয়ালির কারনে জিম্মি হয়ে পড়েছে । ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যবসাগত কারনে বিরোধ দেখা গেলেও অন্যায়ের ব্যাপারে সবাই একজোট । এ ধারা থেকে ব্যবসায়ীদেরকে বের হয়ে আসতে হবে । প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ‘একদর’ নীতিতে ব্যবসা পরিচালিত করতে বাধ্য করতে হবে এবং তাদের ‘একদর’ কিংবা ‘সরকার নির্ধারিত মূল্য’ নীতি সঠিক কিনা তা পর্যবেক্ষনের জন্য আলাদা শক্তিশালী বাহিনী গঠন করে তাদের দিয়ে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করাতে হবে । যারা এ নিয়মে অসৎ উপায় অবলম্বন করবে তাদেরকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে । সকল ভোক্তার অধিকার রক্ষার জন্য সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং তা কার্যকর করার আহ্বান জানাই ।



রাজু আহমেদ । কলাম লেখক ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.