নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত ২৭শে আগষ্ট ফিলিস্তিনবাসীর চোখে-মূখে বিশেষ করে গাজাবাসীর মূখে হাসির ফোয়ারা বইছিল । মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলে মানুষের মন যেভাবে খুশিতে উদ্বেলিত হয়, ঠিক তেমনিভাবেই ফিলিস্তিনের সকল বয়সের মানুষ বাঁধভাঙ্গা বিজয়ের আনন্দ উৎসব করেছিল । তবে এ খুশির অন্তরালের তাদের ধ্বংসের প্রতিচ্ছবি বিশ্বের প্রায় ১৫০ কোটি মুসলমানের ভূলে যাওয়ার কথা নয় । আবার ভূলে গেলেও আশ্চারর্য্য হওয়ার উপায় নেই কেননা মুসলমানরা তো তাদের স্বকীয়তা হারিয়ে শংকর জাতিতে পরিণত হয়েছে । প্রত্যক্ষ ইতিহাস থেকে যদি মানুষ শিক্ষা গ্রহন করতে না পারে তবে তার চেয়ে হতভাগ্যের আর কী হতে পারে ? মুসলমানদের অবস্থা দেখলে খুব বেশি মনে পড়ে জর্জ বার্নাড-শ এর উক্তি । তিনি খুব আফসোস করে বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহন করে না’ । দার্শনিক বার্নাড-শ এর উক্তিটি গোটা বিশ্বের ৭০০ কোটির অধিক মানুষের জন্য প্রযোজ্য কি-না তা নিশ্চিত করে বলতে পারি না তবে মুসলমানদের জন্য এর চেয়ে নির্ভরযোগ্য আর কোন সত্য নেই । একমাত্র মুসলমান জাতি অতীতের ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহন না করার হাজারো দৃষ্টান্ত বর্তমান পৃথিবীতে দৃশ্যমান । ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়ে পরার কারনে মুসলমানদের দশা কুকুর-বিড়ালের মত । সৃষ্টি কূলের সেরা সৃষ্টি মানুষের মধ্যেও যারা সেরা সেই মুসলমানরা আজ অপদস্থ লজ্জাহীন জন্তুতে পরিনত হওয়ার দ্বার প্রান্তে । একজনের পালিত কুকুর কিংবা বিড়াল যেমন আপন প্রভূকে ভূলে অন্য গৃহবাসীর ক্ষতি করে লাথি-গুতা খেয়ে আবার সেই গৃহবাসীদের কাছে দ্বারস্থ হয় কিন্তু আপন মালিকের কাছে ফিরে যায়না ঠিক তেমনি মূসলমানরাও তার প্রভূকে ভূলে আজ অন্যের মূখাপেক্ষী । অবস্থা যা হওয়ার তাই । মানুষরূপী প্রভূদের থেকে অপমান-অপদস্থ হয়ে আবারও সেই তাদের পাণে । অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে একটুও শিক্ষা হচ্ছে না কিংবা নিচ্ছি না । পৃথিবীর বুকে সর্বোচ্চ সম্মানের জাতি আজ সবার কাছে অপমানিত হচ্ছে । ন্যাংটা, পঙ্গুরাও সুযোগ পেলে ধমক দিচ্ছে । মুসলমানদের হারানো গৌরবের চর্চা করে ইসলামের চিরশত্রুরা পৃথীবির কর্তৃত্ব করছে । আর মুসলমানরা দালালের ভূমিকা পালন করে চলছে । হায়েনাদের হাসি-ঠাট্টা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য সয়েও যেন শিক্ষা হচ্ছে না । মুসলামনদের এক পক্ষকে দমিয়ে রাখার জন্য অন্যপক্ষ ইসলাম ও মুসলমানদের চির শত্রুদের হাতে হাত রাখছে । মুসলমানদের এ দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইহুদী-নাসারা ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি একের পর এক ইসলামিক রাষ্ট্রের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়ে সে সকল দেশের শাসকদেরকে তাদের্ ইচ্ছার পুতুলে পরিণত করছে । মুসলমানদের সিংহভাগই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দুরভিসন্ধিমুলক কূট-কৌশল বুঝতে না পেরে ইসলামের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য শত্রুদেরকে বাহবা দিচ্ছে এবং তাদের পক্ষ নিয়ে সাফাই গাইছে ।
পৃথিবীতে অন্য সকল ধর্মাবলম্বীদের শত্রু শুধু বাইরে হলেও মুসলমাদের শত্রু ঘরে-বাইরে সমানে । মুসলমানদের বাইরের শত্রুর শক্তির চেয়ে কিংবা ক্ষতির বিবেচনায় ঘরের শত্রুর শক্তি ও ক্ষতির করার সামর্থ্য বেশি বলেই মনে হয় । গ্রাম্য ভাষায় বলা হয়, ‘ঘরের ইঁদুরে বান কাটলে সে ঘর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না’ । মুসলমান জাতির অবস্থাও হয়েছে সে রকম । ইসলামের মর্মবানী অনুযায়ী এক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও এক ভাইয়ের সাথে শত্রুতা প্রদর্শনে অন্য ভাইয়ের ভূমিকা অনবদ্য । এছাড়াও বাইরের শত্রুরা হর-হামেশা হায়েনার মত আড়ি পেতে আছে কখন আসবে সুযোগ । অতীতের কোন ইতিহাসই বলে না যে, মুসলমানদেরকে হেয় করা কিংবা মুসলমাদের ক্ষতি করার সুযোগ পেয়ে সাম্রাজ্যবাদী ইহুদী-নাসার শক্তি সে সুযোগকে কাজে লাগায় নি । ইসলাম তথা মুসলমানদের শত্রুদের দর্শন হচ্ছে, কিভাবে মুসলমানদের ক্ষতি করা যায় । এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা বারবার ইসলামের অনূভূতিতে আঘাত, ঠুনকো অভিযোগে আক্রমন, সংস্কৃতি-সভ্যতার উপর আগ্রাসন চালিয়ে মুসলিমদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার ছক একের পর এক এঁকেই চলছে । আত্মভোলা মুসলমান জাতি ইসলাম বিদ্বেষীদের কার্যক্রমকে তাদের জন্য উপকারী মনে করে দর্শকের ভূমিকা পালন করছে । যদি তাই না হয় তবে কিভাবে আরব বিশ্বের মূখে কুলুপ এঁটে থাকার সুযোগ নিয়ে গত ৮ই জুলাই থেকে শুরু করে ইসরাইল রাষ্ট্র ভিত্তিহীন অভিযোগে ৭ সপ্তাহের আক্রমনে ফিলিস্তিন অধিভূক্ত গাজাকে ধ্বংসের বেলাভূমিতে পরিণত করল । ইসরাইলী বাহিনীর হামলায় মোট ২ হাজার ১৪২ মুসলিম ব্যক্তি নিহত হয়েছে যার অধিকাংশই বেসামরিক । নিহতদের মধ্যে ৪৯০টিই ছিল শিশু । ইসরাইলী বাহিনীর এ নগ্ন হামলার সময় জাতিসংঘ, আমেরিকা এবং অন্যান্য পরাশক্তিদের চুপ থাকাই কি প্রমাণ করে না যে, মুসলামনদের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোন পর্যায়ে ? এরপরেও আমাদের মুসলমানদের শিক্ষা হবে না, কারন আমরা তো মিশ্র জাতিতে পরিনত হয়েছি । দাদা দাদা বলে তাদেরকে কোলে তুলে নেব, তাদের পাশে একটু বসতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করব কিংবা তাদের একটু খুশির জন্য নিজেদের সব কিছু বিসর্জন দিতেও পিছপা হব না । এভাবে আর কত দিন ? বোধোদয় না হলে নিকট ভবিষ্যতে ইসলামের মর্মবানী কেবল ছাপার অক্ষরেই সীমাবদ্ধ থাকবে এবং মুসলমানদের যে টুকু সম্মান অবশিষ্ট আছে তাও বিলীন হয়ে যাবে ।
আজ শুধু ইসলামের বাইরের শত্রুদের কথা লিখতে বসিনি বরং ঘরের শত্রুদের কথাও লিখব । বাইরের শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজন ঘরের সদস্যদের একতাবদ্ধ হওয়া । সে ঐক্য কি আমাদের মধ্যে আছে ? জাবারিয়া, কাদারিয়া, মুরজিয়া, সিফাতীয়া, খারেজী, শিয়া, সুন্নী, মুতাজিলা এবং আশারিয়াসহ বিভিন্ন দল-উপদলে আজ মুসলিমরা বিভক্ত । এছাড়াও নব্য সৃষ্টি হওয়া আহলে হাদীস, আহলে কেতাব, আহলে সুন্নাত অল জামাআত, পীরবাদ, তাবলিগ, কওমী, আলিয়াসহ আরও কত দল । এরকম হাজারো দলে বিভক্ত হওয়ার পরেও কোন সমস্যা হত না যদি শুধু তাওহীদ বা আল্লাহর একাত্মবাদ মান্য করে এবং তার রাসূল প্রদর্শিত পথে মুসলমানদের অগ্রযাত্রা থাকত । মুসমানরা যদি তাদের নিজস্ব ধারায় জীবন-যাপন করত তবে মুসলমানদের চেয়ে শক্তিশালী জাতি বিশ্বের বুকে আর দ্বিতীয়টি থাকত কি ? অন্য জাতির সকল যোদ্ধারা শুধু সমরাস্ত্রে শক্তিশালী হলেও মুসলিম যোদ্ধারা সমরাস্ত্রের সাথে আধ্যাত্মিক শক্তিতে বলীয়ান থাকত । মুসলমানদের বিভিন্ন দল আল্লাহ ও তার রাসূল প্রদর্শিত পন্থায় তাদের জীবন পরিচালিত করলেও তাদের মধ্যে এক পক্ষকে অন্য পক্ষ সহ্য করতে পারে না । মুসলিম বিশ্বের প্রধান শক্তি ও মুরুব্বী হিসেবে প্রিয় নবীর জন্মস্থান সৌদি আরবের বাদশাহকে বিবেচনা করা হয় । কিন্তু দূর্ভাগ্যের হলেও সত্য যে, কোন এক বিশেষ কারনে সৌদি শাসকবৃন্দ ইসলামের প্রকাশ্য শত্রুর দালালে পরিনত হয়েছে । যদি তাই না হত, তবে ইসরাইল কর্তৃক গাজায় আক্রমন চালানোর কিংবা চলার সময় তাদের নিরব ভূমিকা কোন অবস্থাতেই থাকত না । এছাড়াও তাদের আরও অনেকগুলো কর্মকান্ড তাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে । সৌদি আরবের পরেই ইরানকে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয় । ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদি নেজাদ যখন আমেরিকার বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা এবং ইরান আক্রমন করলে পাল্টা জবাব দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছিল তখন বাংলাদেশের মুসলমানসহ বিশ্বের অনেক দেশের মুসলমানরাই তাকে সিংহের বংশধর বলে বাহবা দিয়েছিল । কিন্তু আদর্শগতভাবে ইরানের সাথে অর্থ্যাৎ শিয়াদের সাথে সুন্নীদের কিংবা অন্যান্য সম্প্রদায়ের অবস্থান কোথায় ? এদের এক পক্ষ অন্যপক্ষকে মুসলিম হিসেবে বিবেচনা করে কিনা সেটা নিয়েই প্রশ্ন ? রাজনৈতিক, আদর্শিকসহ বিভিন্ন মত পার্থক্য দিনে দিনে দূরত্বের সৃষ্টি করছে । ইসলামের প্রকৃত সাম্যবাদী ও উদার নৈতিক শিক্ষা এবং সার্বজনীন নেতৃত্ব যদি মুসলমানদের মধ্যে বিরাজ থাকত তবে বর্তমান বিশ্বে মুসলমানরা সুপার পাওয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকত এতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই ।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক বানরের রুটি ভাগ করা পন্থায় ইহুদীদেরকে ফিলিস্তিনের ৫৫% ভূমি দিয়ে দেয়ার পরেই মুসলমানদের মধ্যে বিবাদমান সমস্যা প্রকট আকার ধারন করে । জাতিসংঘের একপেশে সিদ্ধান্তের কারনে বাঁধে প্রথম আরব-ইসরাইল যুদ্ধ । ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া এ যুদ্ধে আরবদের পক্ষে ছিল সিরিয়া, লেবানন, মিশর ও ইরাক । এ যুদ্ধের প্রধান ইস্যু ছিল ফিলিস্তিনী মাতৃভূমি রক্ষা করা । ১৯৪৯ সালের ৭ই জানুয়ারী এ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে । দ্বিতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ অক্টোবর মাসে । মিশরের সুযেজ খাল জাতীয়করণের দাবীকে কেন্দ্র করে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয় । দ্বিতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইলকে ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স সমর্থন ও সাহায্য করে । ১৯৬৭ সালে ইসরাইলীদের মুখোশ উম্মোচিত হতে শুরু হয় । এ সময় ইসরাইলীরা ফিলিস্তিন অধিভূক্ত সিনাই, গাজা ও জেরুজালেমের বিরাট অংশ দখল করে নেয় । ১৯৬৭ সালের ৫জুন থেকে শুরু করে ১০জুন পর্যন্ত অর্থ্যাৎ ৬ দিনের স্থায়ী যুদ্ধ তৃতীয় আবর-ইসরাইল যুদ্ধ নামে পরিচিত । ১৯৭৩ সালের ৬অক্টোবর থেকে ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত চতুর্থ আরব-ইসরাইল যুদ্ধ সংঘটিত হয় । খ্রিষ্টান ও ইহুদীদের একযোগের ষড়যন্ত্র মুসলিমে মুসলিমে দ্বন্দ্ব কেবল দীর্ঘায়িত করেনি বরং যুদ্ধে রুপ দিতে সক্ষম হয়েছে । মুসলমানদের মধ্যে এমন কয়েকটি হয়েছে যেগুলো এড়ানো যেত কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে উগ্রবাদী এবং শিথিলপন্থীদের মধ্যকার বিবাদে লাখ লাখ মুসলিমকে জীবন দিতে হয়েছিল । ক্ষতিটা ইসলামের শত্রুদের হয়নি বরং মিত্রদেরই হয়েছিল । এ সকল যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছিল তারা সকলেই ছিল মুসলিম । মুসলমানদের ক্ষমতা লোপ পাওয়ার পিছনে এসকল যুদ্ধের ভূমিকা ছিল অনেক । ১৯৮০ সালের ২০ শে আগষ্ট থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হয় ইরাক-ইরানের মধ্যকার যুদ্ধ । শুধু সাতিল আরবের পানি বন্টন নিয়ে এ যুদ্ধ সংঘটিত হলেও এ যুদ্ধে কয়েক লাখ মুসলিমকে প্রাণ দিতে হয়েছে । ১৯৯০ সালের ২রা আগষ্ট ইরাক-কুয়েত দখল করে নেয় এবং কুয়েতকে ইরাকের অঙ্গ বলে ঘোষণা করে । ইসলামের শত্রুরা মুসলমানদের মধ্যকার এ দ্বন্দ্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে গঠিত বহুজাতিক বাহিনী ইরাকের বাহিনীর উপর ব্যাপক আক্রমন চালিয়ে ইরাকী বাহিনীকে কুয়েত থেকে হটিয়ে দেয় । ব্যাপক যুদ্ধ শেষে দুই দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরে ১৯৯১ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধের অবসান ঘটে । ১৯৯২ সালের এপ্রিলে বসনিয়া-হারজেগোভিনা যুগোশ্লাভিয়ার রাষ্ট্র কাঠামো থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে । এরপর থেকে বসনিয়া-হারজেগোভিনার মুসলমানদের (মোট জনসংখ্যার ৪৪%) সাথে সার্বিয়ার উস্কানিতে অর্থোডক্স খ্রিস্টান সার্বদের (মোট জনসংখ্যার ৩৩%) ও রোমান ক্যাথলিক ক্রোটদের (মোট জনসংখ্যার ১৭%) দ্বিমুখী যুদ্ধ শুরু হয় । ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেখানে স্বাধীনতার পক্ষে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় । ব্যাপক জনগোষ্ঠী স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয় ! কিন্তু সার্ব ও ক্রোটরা মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষে নির্মম নির্যাতন ও গণহত্যা চালায় । অবশেষে জাতিসংঘ ও ন্যাটোর তত্ত্বাবধানে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । এতে বসনিয়া-হার্জেগোভিনিয়াকে তিনটি অংশে বিভক্ত করে মুসলিম, সার্ব ও ক্রোয়েটদেরকে দিয়ে দেয়া হয় । এখানেও বন্টন নিতীতে বানরের রুটি ভাগের মানদন্ডকেই গ্রহন করা হয় ।
কে বা কারা ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর, এক চরম নাটকীয় কায়দায় আমেরিকায় আক্রমন করে । আমেরিকার অর্থনৈতিক শক্তির প্রতীক বলে পরিচিত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে দুটি যাত্রীবাহি বিমানকে মিসাইল হিসাবে ব্যবহার করে আক্রমন শানানো হয়েছিল এবং আমেরিকার সামরিক শক্তির প্রতীক পেন্টাগনে আঘাত করা হয়েছিল আরো একটি বিমান নিয়ে । এছাড়া আরো একটি মিসাইল হিসাবে ব্যবহ্রত বিমান পথেই ক্রাশ করেছিল । এই ঘটনায় প্রায় তিন হাজার লোক মারা গিয়েছিল । এই আক্রমনটি একই সাথে বিভিন্ন দিক থেকে সংঘটিত করা হয়েছিল । আমেরিকা এই ঘটনায় আফগানিস্তান ও ইরাকে আক্রমন ও আগ্রাসন চলাবার অজুহাত খোজেঁ পেয়েছিল । আমেরিকা একে তাদের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার শক্তি বৃদ্বির অজুহাত হিসাবে ও ব্যবহার করে । তারা একে সেনা শিল্প, নিরাপত্তা শিল্প, পুলিশি কার্যক্রম, বাজেট বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত বিষয়কে বিপুলভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ পায় । তারা এই ঘটনাকে দূরদূরান্তে নজরদারী করার কাজে লাগায় । এই আক্রমনটিকে আমেরিকা সীমান্ত এলাকায় সামরীকি করণ ও অভিবাসী মানুষের উপর নির্যাতনের অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করেছিল । তারা এ কে ইসলাম ও বিশেষ করে আরব বিশ্বকে সন্ত্রাসী হিসাবে অভিহিত করার কারণ হিসাবে দাঁড় করায় । আর এর সবগুলোই ছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্বেরই অংশ যা মার্কিন রাষ্ট্র, তাদের মিডিয়া এবং নীতি-নির্ধারকদের শাণিত অস্ত্র । এই ধরনের যুদ্ধ হলো অনন্ত যুদ্ধ, যার কোন শেষ বিন্দু নেই । যা হলো বিগত দশকের লাল আতঙ্কের ও কমিউনিজমের বিরুদ্ধে যুদ্ধেরই মত । এই মহান (!) যুদ্ধ কাদের জন্য বেহেশতি উপহার নিয়ে এসেছে ? ইহা সাম্রাজ্যবাদকে দিয়েছে তৃতীয় বিশ্বকে দমন ও পিড়ন করার এক মহা সুযোগ, এবং গৃহে বসেই দুরবর্তী কোন দেশকে ধবংস করার এক মহা লাইসেন্স । ঠুনকো অজুহাতে আফগানিস্তান, ইরাককে পুরোপুরি সরাসরি ধ্বংস এবং অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোকে কৌশলে ধ্বংস করে দিচ্ছে । যা তাদের একটি চলমান প্রক্রিয়া ।
‘সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে আল কোরআন’ । মুসলমানদেরকে আবারও কোরানের পানে ছুটে আসতে হবে । ইসলামের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে । মুসলমানদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতানৈক্য থাকলেও ‘মতানৈক্য সহ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’ । নিজেদের ক্ষতির কারন যদি নিজেরাই হয় তবে তাদের ধ্বংস রোধ করার সাধ্য আছে কার ? মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বহীনতাই আজ মুসলিমদের এ অবস্থার পিছনে দায়ী । সুতরাং মুসলমানদের হারানো ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের কথা স্মরণ করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সম্মুখপাণে যাত্রা করতে হবে । মুসলমান বীরের উত্তরসূরী কিন্তু সে বীরত্বেরহানী হয় এমন কোন কাজ করা মুসলমানদের জন্য লজ্জার । পূর্ণ মুসলিম ও আশিংক মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের যারাই বর্তমানে নিরাপত্তা অনুভব করছে সেটা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা নয় । হায়েনাদের থাবা যে কোন সময় যে কারো উপর পড়তে পারে । সুতরাং সাবাধান হওয়ার এটাই উত্তম সময় ।
রাজু আহমেদ । সাংবাদিক ও কলাম লেখক ।
[email protected]
©somewhere in net ltd.