নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ থেকে প্রত্যহ দুর্নীতি ও অনৈতিকতা ছাড়া সবকিছু পাচার হয়ে যাচ্ছে । মেধাপাচার থেকে শুরু করে নারী ও শিশু পাচার নিত্য নৈমিত্তিককার ব্যাপার । দেশের অগ্রগতিতে যারা অবদান রাখতে সক্ষম তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিভিন্ন প্রলোভনে দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা ভূলে দেশ ছেড়ে ভিনদেশে বিলাসিতা খুঁজতে ব্যস্ত । এই শ্রেণীভূক্তরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফলতার মুখ দেখলেও অধিকাংশ সময়ে বিদেশে ভিখারী দশায় কাটাতে হয় । কেউ কেউ দালালদের প্রলোভনে আকৃষ্ট হয়ে অবৈধপথে বিদেশে পাড়ি জমায় । কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেও অনেকের জীবনে নেমে আসে অনাকাঙ্খিত গন্তব্য । স্বপ্নের পরিসমাপ্তি ঘটায় মৃত্যু । যারা বুক ভরা স্বপ্ন লালন করে বহু কষ্ট-ক্লেশ করে বিদেশের সীমানায় প্রবেশ করতে পারে তারাও মাঝে মাঝে সে সকল দেশের প্রশাসন কর্তৃক পাকড়াও হয়ে বন্দি জীবন পালন করতে বাধ্য হয় । সকল দেশের জেল তো আর বাংলাদেশের জেলের মত আরামদায়ক নয় । কাজেই বাংলাদেশী বন্দীদের জীবনে নেমে আসে চরম যন্ত্রনা ও হতাশা । বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে নারী ও শিশু পাচার হয় । অভিনব কায়দায় নারী ও শিশুপাচারের মত জঘন্য কর্মকান্ড আমাদের দেশে অব্যাহত থাকায় সভ্যতা ও মানবতা প্রতিদিনই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে । সংঘবদ্ধ পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়ে প্রতিদিন ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার নারী, কিশোর ও শিশু । মানব পাচারের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে দেশের বৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দর । বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা গেছে, অসৎ প্রশাসনের সদস্যদের যোগসাজশে সময় ও সুযোগ বুঝে জল ও স্থলপথে সীমান্তের চোরাগলি দিয়ে পাচার করা হচ্ছে মানব নামের নারী ও শিশু । সংঘবদ্ধ দালালচক্রসহ প্রশাসনের কিছু সদস্যরা লুটছেন মোটা অঙ্কের অর্থ । দেশের মানব সম্পদ পাচার হওয়ায় দেশের অবক্ষয়সহ পরিবেশ ও সংসারে অশান্তি বাড়ছে । নারী ও শিশু পাচার রোধে আইন থাকলেও যেন তা বাস্তবায়ন করার দরদী কেউ নেই । নারী ও শিশুপাচারে যুক্ত অপরাধীরা রাজনৈতিক আশ্রয়সহ আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে । চুনোপুঁটিদের দু’একজন আটক হলেও পাচারের সঙ্গে জড়িত রাঘব বোয়ালরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে । বাংলাদেশে এই অপকর্ম সংঘটিত হওয়ার পেছনে দারিদ্র্য একটি অন্যতম উপসর্গ হিসেবে কাজ করছে । দারিদ্র্যের কষাঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়ায় এবং আইনী প্রতিকারের দৃষ্টান্ত উজ্জ্বল না হওয়ায় নারী ও শিশু পাচারের মত হীনকর্ম সমাজদেহে কালো ছায়া ফেলছে । পাচার হওয়া নারীদের মধ্যে অনেকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে ও সম্ভ্রম হারিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছে । আবার পাচার হওয়া অনেক নারীদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না । পাচারের শিকার হওয়ায় বহু পরিবারের সদস্যদের চাপা কান্না যেন থামবার নয় । কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও এই অপকর্ম রোধ করা যাচ্ছে না বরং দিন দিন বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠছে, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সেখানেই । সমস্যাটি একদিকে সামাজিক, অন্যদিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন । অধিক জনসংখ্যা, অসচেতনতা, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, দ্রুত নগরায়ন, মাদক ও যৌন ব্যবসা, প্রাকৃতিক বিপরর্যয় ইত্যাদি বাংলাদেশকে এশিয়ার অন্যতম শিশু ও নারী পাচারের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত করেছে ।
মানবপাচার একটি জাতীয় সমস্যা । পাচার যেকোনো বয়সের যে কেউ হতে পারে । তবে আমাদের দেশে সাধারণত বেশির ভাগ পাচার হয়ে থাকে শিশু, কিশোর ও নারী । সাম্প্রতিক সময়ে রুট পরিবর্তনের পাশাপাশি মানবপাচারের ধরনেও পরিবর্তন এসেছে । সভ্যকালে মানুষ পণ্যের মতো বেচাকেনার উপকরণ হবে, তা অচিন্তনীয় । মানবপাচারের সব খবর গণমাধ্যমে আসে না । তবে বিভিন্ন জরিপ এবং সংবাদে মানব পাচারের যে ভয়াল চিত্র ফুটে ওঠে তা আঁৎকে ওঠার জন্য যথেষ্ট । ১০ই সেপ্টেম্বর একটি সহযোগী দৈনিকে ‘১০ বছরে ভারতে তিন লাখ নারী ও শিশুপাচার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে নারী ও শিশুপাচার বেড়েই চলেছে । জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) গবেষণায় দেখা গেছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে তিন লাখ নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়েছে । পাচারকৃত নারী ও শিশুর বেশিরভাগ পাচার করা হয়েছে দেশের পশ্চিমের জেলাগুলোর সীমান্ত দিয়ে বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ রয়েছে । ২০১৪ সালে সাড়ে ৮ মাসে বেনাপোল সীমান্তে ভারতে পাচারকালে ৮৭৮ জন নারী, শিশু ও পুরষকে উদ্ধার করেছে বিজিবি । আজকাল বাংলাদেশ থেকে বিদেশে নারী শ্রমিক ও কর্মী যাওয়ার হারও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে । পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ১৯ টি দেশে কমপক্ষে ৩ লাখ বাংলাদেশী নারী শ্রমিক কর্মরত আছে । এর বাইরেও দালাল প্রতারক চক্র ও আদম ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে অবৈধ পথে পাচার হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী শ্রমিক । একমাত্র লেবাননেই কর্মরত আছে ৮১ হাজার ৭১০ জন বাংলাদেশী নারী শ্রমিক । দেশের এ নারী শ্রমিকদের অধিকাংশই কাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশগুলোতে যাদের বেশির ভাগই গৃহকর্মী । পাচার হওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের হাতে ২০১০ সালে ৭৪ জন, ২০১১ সালে ৩১ জন, ২০১২ সালে ৩৪ জন এবং চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে ।
ভারতের বিভিন্ন যৌনপল্লীতে নারীদের ১০০ জনের ৯০ জনই বাংলাদেশী । যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘টেলিগ্রাফ’ ৩৭১ টি শিশুর ওপর জরিপ শেষে এক প্রতিবেদনে জানায়, ভিয়েতনাম, নাইজেরিয়া রোমানিয়া চীন ও বাংলাদেশ থেকে আগের বছরের তুলনায় গত বছরে ৫০ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু যুক্তরাজ্যে পাচার হয়েছে । এসব শিশুদের দাস কিংবা যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয় । সবচেয়ে কমবয়সী শিশুদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দেয়া হয় বিভিন্ন চোরাই বাজারে । বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এসব চোরাই বাজারে প্রতি বছর সাত হাজার কিডনি কেনা-বেচা চলে । মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী নারী শ্রমিকদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানোর খবর অহরহ শুনতে পাওয়া যায় । দু্বাইয়ে বাংলাদেশী নারী কর্মীদের দেহব্যবসায় বাধ্য করছে একটি চক্র । ওই চক্রটি ভালো কাজ দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে নারী কর্মীদের দুবাই পাঠায় । তারপর নির্যাতন করে ওই নারীদের অসমাজিক কাজ করতে বাধ্য করা হয় । প্রবাসে বাংলাদেশের নারী শ্রমিক ও গৃহকর্মীর একাংশ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে । তারা ঠিকমত খাবার না পেয়ে দিনের অধিকাংশ সময় ক্ষুধার্ত থাকে । দিনের পর দিন কাজ করেও তারা নিয়মিত বেতন পায় না । এমনকি কেউ কেউ নিত্যদিন সম্ভ্রম লুণ্ঠনের শিকার হয় । বাংলাদেশ মহিলা অভিবাসী নারী শ্রমিক সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ভয়াবহ নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশী নারী শ্রমিকরা বিদেশে স্বেচ্ছায় কারাবরণের পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন । এ পর্যন্ত কারাবরণকারী বাংলাদেশী নারী শ্রমিকদের সংখ্যা শতাধিক । স্বেচ্ছা কারাবরণ ছাড়াও নির্যাতন সহ্য করতে না পারায় প্রতিবছর হাজার হাজার নারী শ্রমিক শূণ্য হাতে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে । সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে বিদেশে কর্মরত নারী শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ জমা পড়ছে গড়ে ৪ হাজার । প্রতিদিনই বুড়ো গৃহকর্তার এমনকি তার ছেলেদের একান্তবাসের লালসার শিকার হয়ে অনেকে সন্তানসম্ভাবাও হয়ে পড়েছে । অনেকেই শিকার হচ্ছে বিকৃত ও নির্মম একান্তবাসের । কিন্তু চাকরি ও মানসম্মানের ভয়ে তা বাইরে প্রকাশ করতে অনেকেই সাহস পাচ্ছে না । অনেক নারী শ্রমিক গর্ভে অবৈধ সন্তান নিয়ে দেশে ফিরে আসছে । প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন শ্রমিক সংগঠনগুলো জানিয়েছে. বর্তমানের মধ্যপ্রাচ্যের জর্ডানে বাংলাদেশী নারী শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার । এ তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে লেবানন ও দুবাই । দেশে ফেরা নারী শ্রমিকরা জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের উপর নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বাড়ছেই । শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনা, নির্যাতন চলে তাদের উপর । বাংলাদেশী নারী শ্রমিক ও কর্মীদের সাথে নিয়োগকর্তারা মধ্যযুগে দাসের সাথে যেভাবে আচরণ করা হত সেই ধরনের আচরণ করে ।
প্রথম যে ২২টি রাষ্ট্র ‘শিশু অধিকার’ সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদে তাদের অন্যতম । তাই পাচার প্রতিরোধে জাতীয় পর্যায় থেকেই সনদের ১১(২) অনুচ্ছেদটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা হ্রাসের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী । পাচারের পর এদেশের শিশুদের বিভিন্ন ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যেমন- উটের জকি হিসেবে ব্যবহার, শিশু ও নারী উভয়ের দ্বারাই মাদক বহন অথবা বিক্রি, পতিতাবৃত্তিসহ নানা অসমাজিক ও অনৈতিক কাজ করানো হয় । জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের ৩৫নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, শিশু অপহরণ, বিক্রি ও বিদেশে পাচার বন্ধে এবং পাচার হওয়া শিশুদের দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে রাষ্ট্র যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করবে । এ লক্ষ্যে উভয় রাষ্ট্রই দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করবে । এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ শিশু ও নারী পাচার প্রতিরোধে আইন প্রনয়ণ করেছে । ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারীতে ‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন’ প্রণীত হয় । এ আইনে ৬ থেকে ১১ পর্যন্ত ধারাগুলোতে বলা হয়েছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন, বল প্রয়োগ, প্রতারণা করে কোন ব্যক্তির আর্থ-সামাজিক, পরিবেশগত বা অন্য কোন অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা দেশের বাইরে যৌন শোষণ, নিপীড়নের উদ্দেশ্যে বিক্রি বা ক্রয়, নির্বাসন বা স্থানান্তর, চালান বা আটক করা বা লুকিয়ে রাখা বা আশ্রয় দেয়াকে মানব পাচার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে । কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এ আইনের অধীনে কোন অপরাধ করলে ওই প্রত্যেক সদস্যকে অপরাধ সংগঠনের দায়ে অভিযুক্ত হবে এবং শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ন্যূনতম পাঁচলাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে । কোন ব্যক্তি মানব পাচারের ষড়যন্ত্র করলে শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনিম্ন তিন বছরের কারাদন্ড অথবা বিশ হাজার টাকা জরিমানা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে ।
মানব পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ প্রণীত আইনটি যদি সম্পূর্ণভাবে প্রয়োগ করা যায় তবে এ অপরাধ বহুলাংশে কমে আসবে । তবে মানবপাচার রোধে সবচেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও প্রসার বিবেচেনা করা যেতে পারে । নারী ও শিশুপাচার রোধে জনসচেতনাতা একমাত্র বিকল্প হতে পারে । সীমান্তবর্তী এলাকায় শিশু ও নারী পাচার প্রতিরোধে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, বিশেষ করে কমিউনিটি রেডিও’র মাধ্যমে জনগণ, স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের দলীয় আলোচনা সভার ফুটেজ তৈরি করে তা প্রচার করতে হবে । এ ছাড়াও পথনাটক, ছবি প্রদর্শন, পোষ্টার লিফলেট বিতরণ ও বিলবোর্ড স্থাপন করে ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে । পাচার প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের আওতায় গ্রাম, পাড়া বা মহল্লায় কোন অপরিচিত লোক দেখলে তার সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, চৌকিদার অথবা থানায় অবহিত করার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে । যেসব সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা প্রতিরোধে কাজ করে তাদের সঠিক তথ্য দেয়া ও সহায়তা করা আমাদের কর্তব্য । বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্রের পরিচয় জানা এবং মেয়ের অভিভাবকের ছেলের পারিবারিক অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া প্রয়োজন । পাচারের পরিণতি সম্পর্কে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং পরিবারের সবাইকে সচেতন করা কর্তব্য । কাজের লোক নিয়োগ করার ক্ষেত্রে ছবি তুলে রাখা এবং প্রাক-পরিচয় যাচাই করে নেয়া আবশ্যক । বাড়ির শিশুকে নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার মুখস্থ করানো এবং অপরিচিত লোকের দেয়া কোন খাবার বা জিনিস যাতে গ্রহন না করে সে বিষয়ে পরিবার থেকেই শিশুকে সচেতন করতে হবে । নারী ও শিশু পাচার রোধে প্রণীত আইন যথাযথ প্রয়োগ এবং মানুষের মধ্যে পূর্ণ সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব । তবে আইনের চেয়ে সবার মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি নারী ও শিশু পাচার রোধে ফলপ্রশু ভূমিকা পালন করতে পারে ।
রাজু আহমেদ । কলামিষ্ট ও সাংবাদিক ।
[email protected]
©somewhere in net ltd.