নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকট প্রতিবেশী ভারতে গত ২রা অক্টোবর থেকে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান । বৃহত্তর স্বাধীন ভারতের রূপকার, জাতির জনক ও অহিংস আন্দোলনের প্রবক্তা মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার । তার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মসূচি অন্যতম । ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুস্থ থাকার অন্যতম মাধ্যম’- এ মতবাদে দেশজুড়ে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশাল অভিযান । এ উদ্দেশ্যে গান্ধীজীর জন্ম দিন (২রা অক্টোবর ১৮৬৯) বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের ৪০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও লাখ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী হাতে বুম ও ঝাড়ু তুলে নিয়েছে । রাস্তা-ঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, বাড়ির আঙ্গিনাসহ কোথাও ময়লা আবর্জনা থাকতে দেয়া হবে না এবং ভবিষ্যতেও যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হবে না বলে শপথ পড়ানো হচ্ছে । শুধু সরকারি কর্মকর্তা বা স্কুল শিক্ষার্থীরাই নয়, হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়েছেন বৃহত্তর ভারতের ক্ষমতাবান প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা । ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত সবচেয়ে বড় সুইপার কলোনি ‘বাল্মিকী স্ট্রিটের’ এক অংশে ২রা অক্টোবর বুম ও ঝাড়ু নিয়ে নেমে পড়েন নরেন্দ্র মোদি । বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মন্ত্রীপরিষদের শীর্ষ সদস্যরাও বিভিন্ন স্থানে এ অভিযানে অংশ নেন । গান্ধীজীর জন্মদিনে সাধারণত ছুটি থাকে । কিন্তু এবারের জন্মদিনে দেশটিতে কোন ছুটি ছিল না । এ দিন অফিসের কাজের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে । শিক্ষার্থীরা স্কুলে কোন ক্লাসে অংশ না নিয়ে এ অভিযানে শরীক হয়েছে । তাই গান্ধীজির জন্মদিন উপলক্ষে নেওয়া ‘ক্লিন ইন্ডিয়া’ অভিযানে পুরো ভারতবাসী পরিচ্ছন্নতাকর্মীতে রূপান্তরিত হয়েছে । ভারতের এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং প্রতিবেশী হিসাবে আমাদেরও ভারতের এ মহৎ কর্মসূচির মত একটি কর্মসূচি পালন করা এবং তা ধারাবাহিক রাখা উচিত । ভারত সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করে ভারতেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করলেও তাদের প্রতিবেশি হিসেবে বাংলাদেশ এবং এদেশের জনগণের সাথে তারা কিরুপ ব্যবহার করছে ? বাংলাদেশের সাথে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বিমাতা সূলভ আচরনের কারণে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে-কোনটা ভারতের সর্বাগ্রে প্রয়োজন; দেশ পরিষ্কার করা নাকি মন পরিষ্কার করা ? এ প্রশ্নের দু’টি অংশের একটিই উত্তর । ভারতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যেমন সর্বাগ্রে ভারতবাসীর মন পরিষ্কার করা দরকার তেমনি বাংলাদেশের মত গরীব প্রতিবেশীদের অধিকার রক্ষার জন্যও তাদের মন পরিষ্কার করতে হবে । বর্তমানে ভারতের ২৯টি অঙ্গরাজ্যে ১৩০টি কোটির অধিক মানুষে বাস । এ বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন গড়ে যদি একটি করে ছোট কিংবা বড় ময়লা যেখানে-সেখানে ফেলে রাখে তবে সরকারের প্রচেষ্টায় ভারতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয় । প্রতিবছর গান্ধীজীর জন্মদিনে কিংবা অন্যকোন বিশেষ উপলক্ষে একদিন করে যদি সমগ্র ভারতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার অভিযান চালানো হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় মোটেই যথেষ্ট হবে না । ভারতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সর্বার্গ্রে দরকার ভারতবাসীর মন পরিস্কার রাখা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা । কেবল ব্যক্তি পর্যায়ের সচেতনতা এবং ভারতের প্রতি ভালোবাসার মাধ্যমেই ভারতকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব । প্রধানমন্ত্রী কিংবা তার মন্ত্রীপরিষদ যতই উদ্যোগী হউক তাতে ভারতের নোংরা অবস্থা দূর হবে না যতক্ষন তাদের মন থেকে নোংরামী দূর না হবে ।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কোন এক অস্পষ্ট কারনে এক মূহুর্তের জন্যও ভারত বাংলাদেশকে ভালো চোছে দেখেনি । এদেশের মানুষের সাথে ভালো আচরণ করেনি এবং এদেশের ভালো চায়নি । বাংলাদেশের জনগণকে যেভাবে পেরেছে সেভাবেই তারা নিষ্পেষিত করছে । এদেশে থেকে সম্পদ কেড়ে নেয়া থেকে শুরু করে সীমান্তে গুলি করে কিংবা অন্যকোন বর্বরভাবে মানুষকে অহরহ হত্যা করেই চলছে । বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্বের সুযোগ নিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন করে দেয়ার পায়তাঁরা করছে । তাদের গোয়েন্দাবাহিনী ‘র’ আড়ালে থেকে একটির পর একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে । বাঁধ দেয়ার নাম করে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে রুপান্তরিত করার চক্রান্ত চলছে । শুরুটা করব সিমান্ত হত্যা দিয়ে । ১৯৭৪ সালের ১৬ই মে ভারতের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । সীমান্ত হত্যা বন্ধই ছিল এ চুক্তির মূল উদ্দেশ্য । বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) কর্তৃক এ চুক্তির সকল শর্ত পালিত হলেও ভারতের বিএসএফ কর্তৃক ঘটেছে পুরো উল্টো ঘটনা । প্রায় প্রতিদিন আমাদের কথিত বন্ধু প্রতীম সীমান্তবর্তী ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ দ্বারা খুন হচ্ছে অসংখ্য মানুষ । এমনি একটি সমালোচিত খুনের ঘটনা ঘটেছিল ২০১১ সালে । ঐ বছরের ৭ই জানুয়ারী ভারতের নয়াদিল্লী থেকে দিনমজুর বাবা নুরুল ইসলামের সাথে বোনের বিবাহে যোগদিতে সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছিল ভাগ্যাহত তরুনী ফেলানী । কিন্তু বিএসএফ জোয়ান অমিয় ঘোষের রাইফেলের বুলেট ফেলানীকে গন্তব্যে পৌঁছতে দেয়নি । বৈধ পাসপোর্ট না থাকায় দালালকে টাকা দিয়ে মইয়ের সাহায্যে কাঁটাতারের বেড়া পার হচ্ছিল ফেলানী ও তার বাবা । বাবা মরন পাহাড় পাড় হতে পারলেও মেয়ের কপাল প্রসন্ন হয়নি । অমীয় ঘোষের বিদ্যুৎ বেগে তেড়ে আসা বুলেট মূহুর্তেই ফেলানীর সতেজ দেহকে নিথর করে দিয়েছিল । প্রায় পাঁচ ঘন্টা কাঁটাতারের সাথে ঝুলেছিল ফেলানীর মরদেহ । দেশের অনেকেই বলেছিল, ‘সমগ্র বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলছে’ । বিশ্ব মিডিয়া ও মানবাধিকার কর্মীরা অবাক হয়ে দেখেছিল ভারতের পৈশাচিক বর্বরতা । বাংলাদেশীদের হই-চইতে ২০১৩ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যা মামলার রায়ও প্রকাশ হয়েছিল । তবে সেটা ফেলানীর পক্ষে যায়নি বরং অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে ফেলানীকে করে হয়েছিল অভিযুক্ত । ফেলানীতেই শেষ হয়নি সীমান্ত হত্যা । ২০১২ সালে বিএসএফ বা ভারতীয়রা সীমান্তে ৩৬ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে । ২০১৩ সালের সংখ্যাটি ছিল ৩৮ । ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের মে পর্যন্ত ২৫২ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ । এছাড়া আহত করা হয়েছে সহস্রাধিক এবং অপরহণের সংখ্যাটিও নিছক কম নয় । সীমান্ত হত্যা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বরং বাংলাদেশী হত্যা অব্যাহত রয়েছে । প্রতিনিয়ত সীমান্ত পথে বাংলাদেশের অনেক সম্পদ ভারতে পাচার হচ্ছে কিন্তু তার বিনিময়ে আমরাও কম কিছু পাই নি ! তবে সেটা বাঙালীর মানবতা, যুব সমাজ ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট । নেশাজাতীয় এমন কোন দ্রব্য নেই যা ভারতের সীমান্ত পথ দিয়ে বন্যার পানির মত আমাদের ভূ-খন্ডে প্রবেশ করে না । মানব ধ্বংসকারী আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতা- সেতো ভারতের কল্যানেই । সংস্কৃতির নামে ভারত বাংলাদেশকে যা দিচ্ছে তা এক কথায় অপসংস্কৃতিতে ভরপুর । স্টার জলসা, স্টার মুভি, জী-বাংলা এবং জী-সিনেমায় যে সকল মেগা সিরিয়াল প্রদর্শিত হয় তা বিকৃত সংস্কৃতির এবং মনমানসিকতার বহি:প্রকাশ । অপসংস্কৃতির সংজ্ঞা, পকারভেদসহ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ভারতের সংস্কৃতি থেকে ভালোভাবেই জ্ঞাত হয় । বাংলাদেশের পারিবারিক ব্যবস্থায় ভাঙ্গন সৃষ্টি, মিথ্যাচার, পরকীয়া, বহুরুপিতা, মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসার নামে ছলনা, সন্দেহ প্রবনতা এবং বিবেকের আত্মাহুতি- এই সবকিছুর জন্য ভারতের বস্তাপঁচা সংস্কৃতি দায়ী । ভারতে আদৌ পারিবারিক কাঠামো নেই । আপন স্বার্থ বলতেই তারা অজ্ঞান । ভারতের যে সকল টিভির মেগা সিরিয়ালগুলো দেশবাসী দেখছে সেগুলো মূলত ভারতের মানুষ দেখে না । কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে, মূল্যবান সময় নষ্ট করে কেবল আমরাই তাদের ব্যবসাকে ফুলে-ফেঁপে বাড়তে সাহায্য করছি । বাংলাদেশের সরকারী-বেসরকারী প্রায় ৩২টি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে অনেক চমকপ্রদ, শিক্ষামূলক এবং গবেষনাধর্মী অনুষ্ঠান প্রচার করা হলেও ভারতের কোন রাজ্যে বাংলাদেশী কোন চ্যানেল প্রদর্শিত হয় না ।
বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক কাঠামোকে ধ্বংস করার জন্য ভারত গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । এ ধারাবাহিকতার অংশ হিসাবে ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘের ৩১তম অধিবেশনে ফারাক্কা ইস্যু উত্থাপণ করে এবং ১৯৭৫ সালের শেষ দিকে ফারাক্কা বাঁধ চালু করে । অনেক বিরোধীতার পরেও ফারাক্কা বাঁধ চালু করে ভারত সরকার বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে মূলত মরুভূমিতে পরিণত করেছে । ফারাক্কা বাঁধ নির্মানের পরেও বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে ফসল উৎপাদনের অনুকূল অবস্থা ছিল কিন্তু ২০০৬ সালে ভারত সরকার পূনরায় আগ্রহী হয় টিপাইমূখী বাঁধ নির্মানে । বাংলাদেশ থেকে প্রবল বিরোধীতা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মূখে ভারত সরকার পিছু হটলেও তারা তাদের পরিকল্পনা থেকে এখনো পিছু হটেনি । ভারত যদি কখনও টিপাইমূখী বাঁধ সম্পন্ন করে তা চালু করে তবে বাংলাদেশের সবুজ শ্যামল প্রকৃতির কথা বাঙালীর পরবর্তী প্রজন্মকে ভূলে যেতে হবে । বাংলাদেশের সাথে ভারতের গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি এবং ১৯৭২ সালের ১৯শে মার্চ ২৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি সম্পাদিত হলেও বাংলাদেশ তা দ্বারা মোটেও উপকৃত হয়নি । ভারত তাদের স্বার্থ উদ্ধার করেছে ঠিকই কিন্তু বাংলাদেশের প্রাপ্তির খাতা একেবারে শূন্য । বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বাঁধ দেয়ার নামে বাংলাদেশকে ন্যায্য পাওনা পানি থেকে বঞ্চিত করছে ভারত । ফারাক্কা বাঁধ ও অন্যান্য বাঁধ নির্মানের ফলে আগে বাংলাদেশ যে পানি পেত এখন তার ১০ ভাগের একভাগ পায় । শুধু গঙ্গা নদীর ওপর ৪শ’টিরও বেশি ছোট বড় বাঁধ রয়েছে । বর্তমানে আরও ১৬টি বাঁধ নির্মানের পরিকল্পনা করছে । বর্তমানে ভারতের পরিকল্পনাধীন এ বাঁধগুলি নির্মান হলে বাংলাদেশের নদীগুলো আর নদী থাকবে না । এছাড়াও মতানৈক্যের কারনে তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি ঝুলে রয়েছে । তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি না হলে দেশের নদীগুলো নাব্যতা হারাবে এবং লাখ লাখ হেক্টর জমি সেচের অভাবে পতিত পরে থাকবে এবং দেশে চরমভাবে খাদ্য-ফসলের ঘাটতি দেখা দেবে । অথচ প্রতিবেশির অধিকার রক্ষার নৈতিক নিয়ম ও আন্তর্জাতিক আইনানুযায়ী প্রতিবেশির স্বার্থ সংরক্ষন করা প্রতিবেশির দায়িত্ব ।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এখনো পূর্ণ স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেনি তাই বিদেশী সাহায্য নিয়ে চলতে হয় । বাংলাদেশেকে ঋনপ্রদানকারী দাতা দেশসমুহের মধ্যে ভারত অন্যতম কিন্তু অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, অন্যান্য দেশ থেকে ঋন সুবিধা পেতে যে সকল শর্ত পূরণ করতে হয় ভারত থেকে ঋন পেতে তার চেয়ে অনেক বেশী শর্ত পূরণ করতে হয় । এবং এ ঋণের বিনিময়ে ভারতকে নানাধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে হয় । ২০১৩ সালে ভারত সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের অনেকগুলো চুক্তি হয়েছে । তার মধ্যে অন্যতম ছিল–তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি যা পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর বিরোধীতার কারনে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পাদন করতে ব্যর্থ হয়েছে । বাংলাদেশে থেকে সকল স্বার্থ ভোগ করলেও তারা আপন স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি সম্পাদন করেনি । এছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের বিরোধিতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিচ্ছে । ট্রানজিট ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে সামান্য কিছু সম্পদের অধিকারী হলেও মারাত্মক ভাবে সামাজিক বিপর্যয়ের মূখোমূখী হতে হবে । এ ট্রানজিট বা যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে মদ, গাঁজা, হিরোইন, কোকেইন, আফিম, মারিজুয়ানা এবং ইয়াবাসহ অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্যে সয়লাব হবে । প্রাণগাতী অস্ত্রের মূখে জিম্মি হয়ে পরবে আমাদের দেশটি । ভারতের অতীত কৃতকলাপে তারা কখনও বাংলাদেশের কল্যানে কোন কাজ করেনি । সুতরাং বর্তমান বা ভবিষ্যতেও যে বাংলাদেশের কল্যানে কোন কাজ করবে সেটা ভাবা বাতুলতা বহি ভিন্ন কিছু নয় ।
সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত থেকে এখন কেবল পাওয়ার সময় । গোটা দেশবাসী চায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথার জয় হোক । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশার বাণীর যদি বাস্তবায়িত হয় তবে সেটা দেশবাসীর জন্য চরম আনন্দের হবে । কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কি সেটা করবে যেটা আমরা চাইছি ? অতীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কেবল নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত ছিল । তাদের মধ্যে এমন কোন অলৌকিক পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যায়নি যার কারনে তারা তারা প্রতিবেশির স্বার্থ রক্ষা করবে এবং পারস্পারিক ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখবে । তবুও আমরা আশা করি, তারা যেভাবে তাদের দেশকে ময়লামুক্ত করার লক্ষ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করায় মনোযোগী হয়েছে তেমনি তাদের মনকেও পরিষ্কার করে পরিবর্তন করবে । মনে রাখতে হবে, স্থান ততক্ষন পরিচ্ছন্ন রাখা যাবে না যতক্ষন মনে পরিবর্তন না আসবে । তাই সর্বাগ্রে মন পরিবর্তন করাটাই জরুরী । কথায় আছে, ‘ভারত যাদের বন্ধু তাদের আর শত্রুর পরিবর্তন হয় না’ । স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সাথে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এ অভিযোগটিও মুছে যাক ।
রাজু আহমেদ । কলামিষ্ট ।
[email protected]
©somewhere in net ltd.