নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাদ্রাসা অনার্সে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের নিশ্চয়তা কোথায় ?

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪২

নবম জাতীয় সংসদের সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মাদ্রাসা শিক্ষার মানোয়ন্নের লক্ষ্যে এবং গতানুগতিক শিক্ষা কাঠামো থেকে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিক শিক্ষায় রূপান্তরিত করার উদ্দেশ্যে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সুনামধারী ৩১টি মাদ্রাসায় অনার্স কার‌্যক্রম চালু করেছে । সরকারে এ সিদ্ধান্ত মাদ্রাসা শিক্ষায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ । সরকার এবং বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে যারা গবেষণা করেন কিংবা যৎকিঞ্চিত ভাবেন সে নীতিনির্ধারকরা মাদ্রাসা শিক্ষাকে অগ্রসর করার লক্ষ্যে যে উচ্চতর অভিপ্রায় পোষণ করেন তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু । বাংলাদেশ সরকারও যে মাদ্রাসা শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন তা স্পষ্টতঃই ফুটে উঠেছে তাদের শিক্ষা প্রকল্পের এই নব্য সংযুক্তিতে । বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় ফাযিল ও কামিল শিক্ষা কার‌্যক্রম যখন গতি হারিয়ে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছিল তখন সরকার মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করে যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আবারও গতিশীল করার চেষ্টা করেছে । ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়ার) তত্ত্বাবধানে মাদ্রাসা অনার্সের পথ-পরিক্রমায় দীর্ঘ ৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও কেমন আছে এখানকার শিক্ষার্থীরা ? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং অনার্সপ্রাপ্ত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কতটুকু শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পেরেছে এসকল শিক্ষার্থীদের জন্য ? মাদ্রাসায় অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের এবং তৎসম্পৃক্ত শিক্ষকদের মতামতে যা জানা গেছে, তাতে সকল শিক্ষার্থীরাই চরম হতাশার মধ্য দিয়ে তাদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করছে । অন্যদিকে অনার্সের পাঠদানের জন্য যে শিক্ষকদেরকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দিয়েছে তাদের ব্যাপারে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা না থাকায় তারা স্থায়ী কোন চাকরির সন্ধান পেলেই সেদিকে ছুটছে । এ কারণে মাদ্রাসা অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যেমন স্থায়ী শিক্ষকদের থেকে জ্ঞাণ আহরণ করার সুযোগ পাচ্ছেনা তেমনি অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে জ্ঞানের প্রকৃত স্বাদ থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে । মূলত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত অনার্স ঘারানায় মাদ্রাসা অনার্স কার‌্যক্রম চালু করলেও বর্তমানে মাদ্রাসা অনার্সের চরম বেহাল দশা চলছে । ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং অনার্সপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলোর বিভিন্ন দিকের সংকীর্ণতার খেসারত দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের । অথচ সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদেরকে যে স্বপ্ন দেখিয়ে এবং ইসলামের খেদমতের নামে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অনার্স কার‌্যক্রম চালু করেছিল সে আগ্রহের ছিটেফোঁটাও এখন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে আছে কিনা সন্দেহ ? মাদ্রাসা অনার্সের প্রথম ব্যাচ তৃতীয় বর্ষে অবস্থান করছে অথচ দীর্ঘ প্রায় এক বছর পূর্বে তাদের দ্বীতিয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলেও তার ফলাফলে এখনো প্রকাশিত হয়নি । মাদ্রাসা অনার্স পড়ুয়া ভূক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থীর মত নিয়ে মনে হয়েছে, তাদের জীবনে সিদ্ধান্তগত যতগুলো ভূল হয়েছে তার মধ্যে একটি এ ধরণের অনিশ্চিত শিক্ষা কাঠামোয় ভর্তি হওয়া । ফাযিল(বিএ) কোর্সের থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এবং বাহ্যিক দৃষ্টিতে মানসম্মত হওয়ায় মাদ্রাসা অনার্সের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনেক বেশিই ছিল । ২০১০ সালে সরকার কর্তৃক এ ধরনের শিক্ষাসূচী ঘোষণা হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা চোখেমূখে গভীর স্বপ্ন নিয়ে ভর্তিও হয়েছিল মাদ্রাসা অনার্সে । নতুন শিক্ষা কাঠামোর প্রথম ব্যাচ হওয়ায় ২০১০ সালের ব্যাচকে মারাত্মক ধকল পোহাতে হয়েছে । সিলেবাস পাওয়া যায় তো বই পাওয়া যায় না কিংবা কখনো সেমিষ্টার আবার কখনো ইয়ার সিষ্টেমের ঘোষণায় প্রস্তুতি নেয়ার দোদুল্যমান সিদ্ধান্ত । কয়টি বিষয় আরবী মাধ্যমে লিখতে হবে কিংবা বাংলা বা অন্য ভাষা ব্যবহার করা যাবে কিনা- এমন অনেক প্রশ্নের মূখোমুখি হতে হয়েছে প্রতিটি শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের । তবুও সকল বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে সময়ের তালে প্রথম ব্যাচ আজ তৃতীয় বর্ষে পৌঁছেছে । তাদের মনে অনেক ক্ষোভ থাকলেও বাহ্যত তা প্রকাশ না করে কেবল স্বপ্ন বুনছে, কিভাবে ‍মুক্তি পাওয়া যায় । বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষকদের সমস্যার কথা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি । অনার্স প্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলো যে সম্পূর্ণ স্বণির্ভর তাও নয় । তবুও সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ততটুকু তারা আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়ণ করার চেষ্টা করেছে এবং যতটা সহ্য করা যায় শিক্ষার্থীরা ঠিক ততোটাই সহ্য করেছে । মাদ্রাসায় অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরকে যতটা শিক্ষাগত অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে রাখা হয়েছে এর সিঁকি অংশও যদি সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীদেরকে ফেলে রাখা হত তবে আন্দোলনের বণ্যা বইয়ে যেত । এক্ষেত্রে মাদ্রাসায় অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জ্ঞানীর পরিচয় দিয়েছে । তারা কোন অবস্থাতেই শিক্ষার সাথে অন্য কোন আচরণের সমন্বয় করতে যায়নি অথচ কর্তৃপক্ষ কখনোই শিক্ষার্থীদেরকে প্রতি সুবিচার করেনি । শিক্ষার্থীদের দাবী, তারা যখন মাদ্রাসায় ক্লাস অনার্সে ভর্তি হতে আগ্রহী হয় তখন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্স চার বছরেই শেষ হবে অথচ ৪ বছর দু’মাস পেরিয়ে গেলেও প্রথম ব্যাচ এখনো তৃতীয় বর্ষের গণ্ডি পেরুতেই পারেনি । জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ছয় বছরে অনার্স শেষ হয় কিন্তু মাদ্রাসা অনার্সের যে গতি এবং এর প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যে দৃষ্টি তাতে ৬ বছরেও ৪ বছরের কোর্স শেষ হবে কিনা সন্দেহ ? শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়টুকু এবং চাকরি খোঁজার রাষ্ট্রনির্ধারিত সময় যদি শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করতেই শেষ হয়ে যায় তবে এদের ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত কী ? নিশ্চয়ই সে ভবিষ্যতে আলোর পরশ থাকবে না । মাত্র দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ণ করে কেন এক বছরের মধ্যেও ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না ? মাদ্রাসা অনার্স শুরু হওয়ার পর প্রতিটি মাদ্রাসায় চারটি ব্যাচ অবস্থান করছে অথচ শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে শিক্ষক বাড়ানো হচ্ছে না । অনেক প্রতিষ্ঠানেই সেই শুরুতে যে সংখ্যক শিক্ষক ছিল আজও তার সংখ্যার বৃদ্ধি পায়নি । দেশের নামকরা মাদ্রাসাগুলোতে অনার্স দেয়া হয়েছে কারণ সে সকল মাদ্রাসায় মানসম্মত শিক্ষক আছে যারা অনার্স না পড়লেও অনার্স পড়ানোর যোগ্যতা রাখে । কিন্তু প্রশ্ন হল, দেশের নামকরা মাদ্রাসগুলোতে ফাযিল, কামিল ক্লাসের অবস্থাও তো ভালো । সুতরাং সরকার নির্ধারিত সে শিক্ষমণ্ডলী তাদের নির্ধারিত ক্লাস নিতেই হাঁপিয়ে ওঠেন । কর্তৃকপক্ষের আদেশ কিংবা চাপে তারা হয়ত অনার্সের ক্লাস নিতে বাধ্য হন কিন্তু শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষেত্রে তারা কতটুকু মনোযোগী হতে পারেন ? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন । তাতেও তাদের ক্লাস নিতে কষ্ট হয় অথচ মাদ্রাসা অনার্সের প্রতিটি সাবজেক্টের জন্য একজন শিক্ষককেও নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি । মাদ্রাসা অনার্সে প্রতি বৎসর ১০টি বিষয়ে ১০০০ নম্বরের পরীক্ষা হয় । এছাড়া প্রতিবছরে ৫০ নম্বরের ভাইভা তো থাকছেই । অথচ শিক্ষক সল্পতার কারনে কোন কোন প্রতিষ্ঠানে প্রত্যহ ৩টি ক্লাস আবার কোথাও ২টি ক্লাস আবার কোথাও একেবারেই ক্লাস হয় না । যে কারনে সিলেবাসের অনেক অংশ সম্পর্কে শিক্ষার্থী কোন ধারণা পায় না । আধুনিক বিশ্বের শিক্ষা বিভাগ মনে করে, অনার্সের প্রতিটি বিভাগ স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় । কিন্তু মাদ্রাসা অনার্সের ছবি সম্পূর্ণ ভিন্ন । বেশিরভাগ অনার্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে এখন পর‌্যন্ত অনার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ী ক্লাস রুমের ব্যবস্থা, স্বতন্ত্র অফিসরুম কিংবা সেমিনারের ব্যবস্থা করা হয়নি । কিছু প্রতিষ্ঠানের মানসম্মত লাইব্রেরীও নাই । চতুর্থ কিংবা পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পাশের ক্লাসে ব্যবস্থা করা হয় উচ্চ শিক্ষার ক্লাস । স্বভাবতঃই নিম্ন শ্রেণীর বাচ্চার হৈ-চৈ করে । যার মধ্যে গবেষণাধর্মী শিক্ষা ব্যবস্থা আদৌ সম্ভব কিনা তা আবারও ভেবে দেখা আবশ্যক । একজন মানুষকে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানের পরিচয় পেতে হলে মাদ্রাসা অনার্সের সিলেবাসের বিকল্প নাই । এখানে ইসলামী জ্ঞানের সাথে সাধারণ জ্ঞানের যোগসূত্র ঘটানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে । তবে প্রতিটি বিষয়েই অসংখ্য সহায়ক গ্রন্থের নাম জুড়ে দেয়া হলেও দু’একটি বইয়ের মধ্যে একটি বিষয়ের সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়নি । এমন কিছু বই উদ্ধৃত করা হয়েছে যা দূর্লভ এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল । অনার্সের এ সিলেবাস হয়ত নিকট ভবিষ্যতে ফলপ্রসূ হবে কিন্তু বর্তমানে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থীদের কথাও তো মাথায় রাখা দরকার । বিশেষ করে প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যে সমস্যা অতিক্রম করছে তা কিভাবে সমাধান করা যায় তার ব্যবস্থাও কর্তৃপক্ষকে গ্রহন করতে হবে । মাদ্রাসা শিক্ষার সাথে ফ্রি বা মাগনা নামক শব্দ অতীতে জড়িত থাকলেও মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষ করে মাদ্রাসা অনার্সকে বেশ ব্যয়বহুলও বলা চলে । প্রতিবছর ফরম ফিলাপের সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত উচ্চাঙ্কের ফির সাথে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের যোগকৃত ফি মিলিয়ে ৬ হাজারের মত টাকা দিতে হয় । এছাড়া মাসিক বেতন তো আছেই । অথচ মাদ্রাসা অনার্সের সমপর‌্যায়ের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সে ফরম ফিলাপ করতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায় হয়ে যায় । এত টাকা দিয়েও অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের কষ্ট থাকত না যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কথা একটু ভাবত । কোন শিক্ষার্থী যদি কোন পরীক্ষায় খারাপ করে কিংবা কাঙ্খিত ফলাফল করতে না পারে তবে তার জন্য মানোয়ন্নে পরীক্ষা দেয়ার সুনির্ধারিত কোন ব্যবস্থাও এখন পর‌্যন্ত গ্রহন করা হয়েছে বলে জানা যায়নি । এভাবে মাদ্রাসা অনার্সের এবং শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা বলতে থাকলে তা ফুরাবার নয় । তবে এমন কিছু সমস্যা আছে যা না বললেও নয় । আশা নয় বিশ্বাস, কর্তৃপক্ষ অনিশ্চয়তায় কাটানো শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই ভাববেন । চার বছরের কোর্স যাতে চার বছরেই শেষ হয় তার ব্যবস্থা করবেন । সেশনজট কিংবা অন্য কোন বাধায় যেন শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় নষ্ট না হয় তার প্রতি নজর দিতে হবে । যথাসময় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাও সময়ের দাবী । জেডিসি/দাখিল/আলিমের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফলাফল যদি ৩০ কিংবা ৬০ দিনে প্রকাশ করা যায় তবে মাত্র হাজার খানেক শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশ করতে কেন বছরের অধিক সময় লাগবে ? নির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষকে শুধু অনার্স কোঠায় স্থায়ীভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক । অনার্স প্রাপ্ত যে সকল প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছল তারা যেন অনার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বতন্ত্র ক্যাম্পাস, পৃথক আইন সর্বোপরি বিষয় অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিভাগ স্থাপন করে সেমিনার কক্ষের ব্যবস্থা করেন তার নিশ্চয়তা দেয়াও সময়ের বড় দাবী । অনার্সের পাঠ্য বইয়ের ব্যাপারে নতুনভাবে ভাবা দরকার । এমনভাবে সিলেবাস প্রনয়ণ করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সহজেই তাদের কাঙ্খিত বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পায় । কথিত আছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন কোন ওষুধ আবিষ্কারের পর সেটা পিছিয়ে পড়া কিংবা সমাজ বিচ্ছিন্ন কোন জনগোষ্ঠী অথবা জন্তু জানোয়ারের শরীরে প্রয়োগ করে তার কার‌্যকারিতা যাচাই করা হয় । ওষুধের পরীক্ষণের সময় যাদের উপর প্রয়োগ করা হয় তারা বাঁচতেও পারে আবার মারাও যেতে পারে । তবে গবেষণালব্ধ জ্ঞান বলে, যাদের উপর ওষুধের পরীক্ষণমূলক প্রয়োগ করা হয় তারা বেশিরভাগ সময়েই মারা যায় কিংবা পঙ্গুত্ববরণ করে । প্রশ্ন জেগেছে, মাদ্রাসা অনার্সে অধ্যয়ণ করার কারনে অনুপায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তেমন কোন পরীক্ষণ পদ্ধতি চালু করেছে কিনা ? সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদ্রাসা শাখায় ব্যাপক দুর্নীতির প্রশ্ন ওঠায় সেখানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মাদ্রাসা অনার্স নিয়েও তেমন কিছু চলছে । সুতরাং সরকারের যদি স্বতন্ত্র আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অচিরেই চালু করে তার সাথে অনার্সপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলোতে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থীদের ভাগ্য জুড়ে দেয় সেটা মঙ্গলজনক হবে । ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারিতা আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিকে জোড়ালো থেকে আরও জোরদার করছে । রাজু আহমেদ । কলামিষ্ট । [email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.