![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে জানার একটা মাধ্যম হচ্ছে লিখে যাওয়া।লেখালেখি করার অভ্যাস নেই বললেই চলে,মাঝে মাঝে "আউল ফাউল"লেখার চেষ্টা করি একটু.....
ইদানিং "রাকিন" শব্দটা কোথাও শুনলেই একটা হার্টবিট মিস হয়ে যায় বলে মনে হয়।অবশ্য এই ইদানিংটার বয়স তিন বছরের একটু বেশি।যখনই কারও মুখে এই শব্দটা শুনি,তখন খুব ধীরে ঘাড়টা একটু ঘুরিয়ে দেখি কে ডাকার চেষ্টা করছে।নাম নেয়া মানুষটা যদি আমাকে চিনতে না পারে তাহলে সে বুঝতেই পারবে না আমি তার দিকে তাকিয়েছি।কারও নজরে না পড়ে সাবধানে সব কিছু দেখা সহজ না,এই বিদ্যা শিখতে আমার অনেক সময় লেগেছে।অবশ্য গত তিন বছরে এই শব্দটা দশ-পনেরোবারের বেশি শুনিনাই।আসলে এখন আমাকে এই নামে কেউ ডাকেনা।যখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম তখন আমার বিজ্ঞানের টিচার অবশ্য আমাকে রাকিন বলতো সবসময়,আমাকে উনি আজ পর্যন্ত আপন ডাকেনাই।ক্লাসের সব ছেলের ডাকনাম ধরে ডাকলেও তিনি আমাকে সবসময় রাকিন নামে ডাকতো।হয়তো আপন নামটা উনার ভালো লাগতো না অথবা তিনি আমাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা চোখে দেখতেন,হয়তো কোন একটা।আসলে কোন একটা না,আমার বলা উচিত কিছু একটা।কারন কখনো কোন মানুষ না যে সেটাকে কোন একটা বলতে হবে,সেটার জন্য কিছু একটাই যথেষ্ট।অবশ্য তোমার কথা আলাদা।জানো,আমি এখন ঠিক তোমার মতো কোন একজনকে চিনতাম বলিনা, ঠিক তোমার মতো কিছু একটা চিনতাম বলি।অবজ্ঞা?আমার মনে হয়না আমি তোমাকে অবজ্ঞা করে বলছি কথাটা।আসলে অস্তিত্ব থাকলেই কোন একজন হয়,অস্তিত্ব ছাড়া সেটা কিছু একটায় পাল্টে যায়.....................
ছায়ার মতো-কথাটার অর্থ জানো?আমার খুব ইচ্ছা করে তোমার ছায়ার মতো কিছু একটা হতে।দেখলে?তোমার কাছে আমার অস্তিত্ব নাই দেখেই কিছু একটা এসে পড়েছে।যাই হোক,তোমার ছায়ার মতো বাস্তবে না হতে পারলেও কল্পনাতে অনেক হয়েছি।আচ্ছা,একসাথে কল্পনা করলে কেমন হয়?ধরো তুমি হাঁটছ,আর আমি তোমাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করছি,কেমন?দয়া করে হেসে দিওনা,কারন গত তিন বছর ধরে আমি এই কাজটা করে আসছি,কল্পনাতে।তবে তোমাকে নিয়ে কল্পনা করার একটা মজা কি জানো?সেখানে তোমার বয়স বাড়ে না,তিন বছর পরেও তোমার বয়স একদিনও বাড়েনাই।এখন অবশ্য সেটা একটা বেশ বড় মাপের সমস্যা কারন তিন বছর আগের আমি আর এখনকার আমির মাঝে কোন মিল নাই।তোমার সামনে গিয়ে দাঁড়ালে চিনতে পারবে?মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি,কপাল কুঁচকে যাওয়া স্থায়ী একটা হতাশ চেহারা,আরও তিন-চার ইঞ্চি লম্বা একটা মানুষ,বাচ্চা বাচ্চা চেহারার বদলে নিষ্ঠুর একটা অভিব্যাক্তি,সব মিলিয়ে রাকিন বলতে যেই মানুষটা কে চিনতে,তাকে দেখে এখন আর রাকিন বলে মনে হবেনা।তুমি অবশ্য চিনলেও না চেনার ভান করবে,তোমার কাছে তো আমি অনেক আগেই মৃত।তবুও যদি কখনো তোমার প্রয়োজন পড়ে,তুমি এভাবেই তো ইতস্তত করে বলবে,"তুমি রাকিন না?"............
একটা ব্যাপার জানো?গত তিন বছর ধরে সরকারী কাগজপত্র পড়ার সময়েই খালি আমাকে রাকিন বলা হয়েছে,কেউ আবেগ নিয়ে রাকিন বলেনাই।কোথাও রাকিন শুনলে আমার আত্মা পর্যন্ত থমকে যায়,কারন তুমি রাকিন বলতে।সবাই আমাকে আপন বলে ডাকতো,খালি তুমি ছাড়া।আমি নিজেকে কঠোরভাবে তৈরি করি এই নামটা শোনার পরে যেন স্বাভাবিক থাকি,তবুও আমার সত্ত্বা আমার সাথে বেইমানী করে,আমাকে থামিয়ে রাখে শব্দটা শোনামাত্রই........................
আজপর্যন্ত আমার জানা হলোনা কেন তুমি আমাকে এই নামে ডাকতে।আপন নামটা হয়তো তোমার ভালো লাগতোনা,হয়তো তুমি অন্য সবার থেকে আমাকে অন্য ভাবে দেখতে,হয়তো কোন একটা............ অথবা কিছু একটা......
কবির মুখে নিজের নাম শোনা আর কবির লেখাতে নিজের নাম পড়ার মাঝে বিস্তর তফাৎ ।আজকে আমি কবির লেখায় নিজের নাম দেখেছি।কিন্তু কবি সেখানে আপন লেখেনাই,লিখেছে রাকিন............
©somewhere in net ltd.