নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনের রাফখাতা

পিছন ফিরে তাকানোর বদলে সামনে তাকানোই বেশি সহজ

ট্রিপল এ

নিজেকে জানার একটা মাধ্যম হচ্ছে লিখে যাওয়া।লেখালেখি করার অভ্যাস নেই বললেই চলে,মাঝে মাঝে "আউল ফাউল"লেখার চেষ্টা করি একটু.....

ট্রিপল এ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডাইরি

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৩:৪৪

সমস্যাটা সব সময় শুরু হয় আমার ড্রেসিং টেবিলে লাগানো বড় আয়নাটা থেকে।আমার রুমের সব ফার্নিচার এমন ভাবেই সাজানো যে ঘুম থেকে উঠে বসা মাত্র চোখ চলে যায় আয়নার দিকে।আমার তখন আয়নার দিকে তাকাতে ইচ্ছা করেনা,কিন্তু কেন জানি বারবার চোখ চলে যায়।আর প্রত্যেকটা দিন সকাল বেলাতে আয়নাতে আমি দেখি ক্লান্ত,হতাশ,বিরক্ত,হেরে যাওয়া কিছু একটা,ঠিক একটা জেলখানার কয়েদীর মতো দেখতে কিছু একটা।,আকৃতিটা ঠিক আমার মতো।আমি এরপর বিছানার পাশে রাখা সাইড ক্যাবিনেটের উপরে রাখা চশমাটা পড়তে পড়তে ধীরে ধীরে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়াই,নিজেকে আরেকটু ভালভাবে দেখি।চার-পাঁচ দিন ধরে শেভ করা হচ্ছেনা,মুখে খোঁচা-খোঁচা দাড়ি উঠে একদম জঘন্য লাগছে।চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে গেছে,চোখ এখনো ফুলে আছে বীভৎসভাবে যেন চোখের উপর কেউ ঘুষি মেরেছে।অন্যমনস্কভাবে চুলে হাত দিতে গিয়ে দেখি ব্যাথা লাগে,চুল নিশ্চয়ই জট পাকিয়েছে আবার।নিজের এই চেহারা দেখে আবার ক্লান্ত লাগে আমার,আরও হতাশ হয়ে যাই অথচ আমি মাত্র ঘুম থেকে উঠেছি সকালে।আজব,আমি কি করে বলবো এইটা সকাল বেলা কিনা?রুমের ঘড়িটা তো দেড় বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে,আজ পর্যন্ত ব্যাটারি চেঞ্জ করা হয়নি।এখন সকালও হতে পারে,দুপুরও হতে পারে অথবা বিকাল।তবে আমার মনে হয় না সন্ধ্যা হয়েছে।কারন সন্ধ্যা হলে আম্মু নিজে এসেই উঠিয়ে দিতো ঘুম থেকে,সন্ধার সময় ঘুমানো নাকি ভালো না।আসলে রুমে এতো অন্ধকার যে বোঝা যাচ্ছেনা সময়টা ঠিক কোনসময়।এইরকম অন্ধকারের মাঝে আয়নাতে নিজেকে দেখলে নিজেকে ক্লান্ত,হতাশ মনে হতেই পারে।আমার মনে হয় একবার আলোতে যদি আয়নার দিকে তাকাই তাহলে আমাকে এতোটা বাজে লাগবে না...............





কম্পিউটার টেবিলের উপর মনিটরের কোনায় হালকা সবুজ আলো জ্বলছে।রাতে তাহলে কম্পিউটার বন্ধ না করেই শুয়ে পড়েছি মনে হয়।হাহ,বাসার ইলেকট্রিক বিল গত কয়েকমাস ধরে কেন বেশি আসছে বুঝতে অসুবিধা হয়না কারও।আমারও না,আম্মুরও না।ওহ,মনে পড়েছে।আম্মু স্কুলে যাওয়ার আগে টেবিলে আমার জন্য নাস্তা তো রেখেই গেছে,গিয়ে দেখতে হবে পিঁপড়া কতোটুকু উঠেছে নাস্তার উপর।আমার এখন সময় জানতে খুব বেশি কষ্ট হয়না।নাস্তার উপর পিঁপড়ার পরিমাণ দেখেই আমি সময় আন্দাজ করে নেই।অবশ্য ইদানিং আম্মু টেবিলের নিচে পিঁপড়া মারার পাউডার দিচ্ছে,তাই আমার জৈবিক ঘড়ির অস্তিত্ব বিলুপ্তির পথে............







বেসিনের সামনে গিয়ে চোখে পানি দেয়া মাত্র মনে হল চোখের মধ্যে কেউ মরিচের গুড়ো মিশিয়ে দিয়েছে।কোন মতে চোখ ডলে চোখ খোলার চেষ্টা করলাম।বাহ,চোখ জ্বলবেই না কেন?মরিচা সহ রক্তাভ পানি তো মরিচ গুড়োর মতোই।বিরক্ত হওয়ার শক্তি নেই,তবে হতাশার পারদ আরেকটু উচু করে নিয়েছি এর মাঝেই।কোন মতে চোখে পানির ঝাঁপটা দিয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে গেলাম।আজকে পিঁপড়ারা এখনো নাস্তার কাছে আসেনাই,তবে স্কাউট পিঁপড়ারা এরমাঝেই টেবিলে এসে পড়েছে।তারমানে এখনো সকাল দশটার বেশি বাজেনা.........







নাস্তা খাওয়ার ইচ্ছা করছেনা আজকে।নিজের অন্ধকার রুমের দিকে যেতে যেতে চিন্তা করতে থাকলাম যে কি করা যায় এখন।অবশ্য কিছু করার ছিলোনা কখনোই,নাই এবং আমার বিশ্বাস,কখনো থাকবেও না।আলো নেই দেখে রুমে ঢুকতে একটু কষ্ট হয়,কিন্তু কিছুক্ষণ স্থির হয়ে থাকলে অন্ধকার চোখে সয়ে আসে।আমার ছোটবেলা থেকেই এইরকম একটা অন্ধকার রুমের অনেক সখ।এইরকম একটা রুমে থাকলে নিজের অন্ধকারগুলো বাইরের অন্ধকারের কারনে দেখা যায়না,অনুভব করা যায় শুধু।ভাবছি পুরনো কোন ফ্রেন্ডকে ফোন দেয়া যায় কিনা।অনেক পুরনো,যে আমার ফোন পেয়ে সত্যিই অবাক হবে,ভাববে,আমাকে এতদিন পরে ফোন দিলো!কিন্তু কাকে ফোন দেয়া যায়?ফোনবুক চেক করতে করতে হটাত করেই কাউকে ফোন করার ইচ্ছাটা মরে গেলো।এখন কিছুই করতে ইচ্ছা করছে না।রুমের মধ্যে গীটারটা দেখা যায় না বললেই চলে,গীটারটা কালো যে!ধুলোর একটা স্তর জমেছে গীটারের উপরে।নাহ,এটা ছুতেও ইচ্ছা করছেনা এখন।বিছানাতে একটু হেলান দিয়ে বসলাম,কিছু ভাবতে ইচ্ছা করছে না এখন।দেখি,কতক্ষন এইভাবে বসে থাকা যায়............











এতক্ষন ধরে নোটটার দিকে তাকিয়ে চিন্তা করছি যে এইটা কবে লিখলাম?গত দেড় বছরের কোন এক সময় লেখা,কিন্তু কবে লিখেছি,সেটা জানার উপায় কি?প্রত্যেকটা দিনই তো এইরকম,কোন পার্থক্য নেই,একবিন্দুও না.........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.