![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে জানার একটা মাধ্যম হচ্ছে লিখে যাওয়া।লেখালেখি করার অভ্যাস নেই বললেই চলে,মাঝে মাঝে "আউল ফাউল"লেখার চেষ্টা করি একটু.....
আজকে সন্ধ্যার পর থেকেই কেন জানি মোহগ্রস্থ হয়ে যেতে ইচ্ছা করছে।আমার মস্তিষ্ক একটু মোহ চায় আমার দেহের কাছে।অনেকদিন ধরেই আমার মস্তিস্ক ক্লান্ত,একটানা কাজ করতে করতে,নিয়ম-শৃঙ্খলা মানতে মানতে সে আর চলতে চাচ্ছেনা।তার এখন কড়া কোন মোহের দরকার।আমার মস্তিষ্কের মোহগ্রস্থ হতে চাওয়ার কি জানেন?সোজা ভাষায়,সে নেশা করতে চায়।এখন সবার সামনে তো আর চিৎকার করে বলা যায়না,আমি আজ নেশা করবো,সবার সামনে উদাস চেহারা করে বলতে হয়-আজকে আমার মোহগ্রস্থ হওয়ার দিন............
ভ্রু কুঁচকে তাকাচ্ছেন?ভাবছেন আমি কি নেশা করি?জানতে ইচ্ছা করছে যে আমি নাক দিয়ে হেরোইন নেই নাকি সিরিঞ্জ দিয়ে পেথেড্রিন?নাকি ফেন্সিডিলের বোতলে আমি নেশা খুজি?সিগারেট,গাঁজা দিয়ে কাজ চালাই নাকি কোকেন অথবা এলএসডির মতো গভীর পানির নেশা করি?দুঃখিত,আমার নেশা আরও গভীর পানির নেশা,অনেকটা পাতালের নেশার মতো।জানেন,আমি তো মানুষের নেশা করি।তবে আক্ষরিক অর্থে মানুষের না,মানুষের ছবির।এই নেশাটাও অনেক মজার,একদম মাথাটাকে হালকা করে ফেলে,দুঃখ-কষ্ট যে কিভাবে গায়েব হয়ে যায়!নাহ,ভুল বলে ফেললাম।এই নেশা দুঃখ-কষ্ট,রাগ,অভিমান,সবকিছুকে একটা কেন্দ্রে এনে ফেলে,একদম একটা বিন্দুতে আর তখন সেই বিন্দুর মধ্যে থেকে নিজেকে বের করার কোন ইচ্ছাই থাকেনা...............
বাহ,সস্তা একটা নেশার জন্য এতো কাব্য মন থেকে বের হয় কিভাবে!আসলে আজকে সন্ধার পর থেকেই কেন জানি খোলস পাল্টাতে ইচ্ছা করছে,অনেকটা সাপের মতোই।নিজের বাইরের মুখোশটা কেন জানি সাপের চামড়ার মতো পিচ্ছিল হয়ে গেছে,গা ঘিনঘিন করছে এইরকম ভাবে থাকতে।আসলে মোহগ্রস্থ হয়ে থাকার এটাই সমস্যা।নিজেকে তখন খুব ক্ষুদ্র লাগে,এতদিনের পুরনো চামড়াটাকেও সাপের খোলস মনে হয়।অবশ্য যতো যা কিছুই মনে করিনা কেন,শেষ পর্যন্ত মোহগ্রস্থতার কাছে ধরা দিতেই হয়............
আমি তাকাই,আমি দেখি।প্রথমেই কোন কিছুই বোধশক্তির স্নায়ুতে খোঁচা দেয় না।কিছুক্ষণ পর খুব সূক্ষ্ম,বোঝা যায় না এমন একটা তাল পরিবর্তিত হয়।প্রায় ধরা যায়না এমন,একটা তিক্ত অনুভূতি,চেহারাতে দেখা যায়।অবশ্য খালি চোখে এই পরিবর্তনটা দেখা খুব কঠিন,তবে অসম্ভব না।একটু পর আসবোনা আসবোনা করেও তিল পরিমাণ অসহায়ত্ব চলে আসে,একেবারে তিল পরিমাণ,এর চেয়ে বেশি না।এভাবে আস্তে আস্তে ক্লান্তি,হতাশা,রুক্ষতা,ক্রোধ,জিঘাংসা-এভাবে অনুভূতিগুলো কঠোর থেকে কঠোরতর হতে থাকে।ইংরেজিতে এর অসম্ভব চমৎকার একটা প্রতিশব্দ আছে যেটা বলতে আরাম,শুনতেও আরাম।হার্ডকোর,হ্যাঁ,অনুভূতিগুলো আস্তে আস্তে হার্ডকোর হতে থাকে।ছবির নেশার একটাই মজা,ছবি কখনো পুরনো হয় না,নতুন ছবিও খুজতে হয় না।ছবি অনেক বড় ম্যাজিশিয়ান,সময়কে একটুও নড়তে দেয় না।একটা জীবন্ত সত্ত্বার নিশ্বাস বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে ছবি।এইজন্যই তো ছবি ছাড়া এই নেশা হয় না।এই ম্যাজিশিয়ানের ম্যাজিক বুঝার জন্য নিজের সমস্ত মনোযোগ,সমস্ত অনুভূতি দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে হয়,চোখ দেখতে হয়,চোখের মধ্যে প্রায় বোঝা যায়না-এমন প্রতিচ্ছবি দেখতে হয়।বুঝতে হয়,জানতে হয়।প্রত্যেকবারই মনে হয় সব কিছুই জেনে গেছি,কিন্তু মোহগ্রস্থ হয়ে যাওয়ার পর মনে হয় আমি কিছুই জানি না,আগে যা জেনেছি,সবই ছিল ভুল.....................
মোহগ্রস্থ হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি কিইবা ত্যাগ করা যায়? আত্মা বিক্রি করা যাবে? আত্মা জানি কে কিনে নিতো?মরফিস,মেটামরফিস,মেটামরফোসিস...............ভুলে গেছি নামটা।যেই হোক না কেন,বিক্রি করা গেলে মন্দ হয়তো হতোনা।কারন সত্যিকার অর্থে আমার কাছে বিক্রি করার মতো মূল্যবান কিছুই নেই।বিনিময়ে কি দিতে পারে?অসীম সময় পর্যন্ত মোহগ্রস্থ থাকার সুযোগ?মোহগ্রস্থতার কারনকে চোখের সামনে জীবন্ত করে তোলার সুযোগ?নিজের আত্মার বিনিময়ে কি চাওয়া যায়?নিজের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের বদলে কিইবা চাওয়ার আছে?
যদি সুযোগ থাকে চাওয়ার তাহলে চাইবো শক্তি দাও বোঝার,অনুভূতি দাও দেখার,সময় দাও শোনার।পারলে দেখাও তো দিয়ে!উঁহু,পারবে না।কারন তোমার ক্ষমতা শুধুমাত্র আত্মা কিনে অন্ধকার জগতের সমস্ত পাপমাখা ক্ষমতা দেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ,তুমি আলো তৈরির ক্ষমতা দিতে পারো না।পুরো অস্তিত্বকে নিকষ কালো করে দিতে পারলেও সামান্য একটা টর্চলাইটের সমান ক্ষমতা তোমার নেই।যেইদিন পারবে আত্মার বিনিময়ে উজ্জ্বল কোন ক্ষমতা দিতে,সেইদিন জানিও।সবার আগে তোমার কাছেই নিজের আত্মা বিক্রি করতে আসবো,কথা দিচ্ছি একদম বিষাদগ্রস্থ,হতাশাপূর্ণ,অসুস্থ,অসহায়,নিঃস্ব একটা আত্মা নিয়ে আসবো,তোমার কেনার জন্য একদম উপযুক্ত।খালি একবার বিনিময়ে একটা পছন্দসই কিছু দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করো,সবার আগে তোমার সামনে আমিই হাজির হবো...............
©somewhere in net ltd.