নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনের রাফখাতা

পিছন ফিরে তাকানোর বদলে সামনে তাকানোই বেশি সহজ

ট্রিপল এ

নিজেকে জানার একটা মাধ্যম হচ্ছে লিখে যাওয়া।লেখালেখি করার অভ্যাস নেই বললেই চলে,মাঝে মাঝে "আউল ফাউল"লেখার চেষ্টা করি একটু.....

ট্রিপল এ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি এবং আমি,ডে থ্রি............

১০ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৮

কবির সাথে আমার যখনই দেখা হয়,তখন দেখা করে আমি বাসায় এসে কবিকে নিয়ে কিছু একটা অবশ্যই লিখি।ব্যাপারটা অনেকটা এইরকম যে আমার লাইফের ইম্পরট্যান্ট কিছু আমি নোট করে রাখার চেষ্টা করি আরকি।আজকে আইমিন শুক্রবারে(১২ টা তো বেজেই গেছে,দিন শেষ অলরেডি) সকাল থেকেই করার কিছু ছিল না আমার।বিকালে অবশ্য লিখনদের জ্যামিং সেশনে থাকার কথা ছিল।তাই সকাল থেকেই বসে বসেই সময় কাটাচ্ছিলাম।আসলে শুক্রবারে আমার কখনোই কিছু করার থাকেনা।অন্য সব শুক্রবারের মতো আজকেও একটা বোরিং লাইফ কাটানোর কথা ছিল আমার,যদি না লিটা আপু আজকে জিগ্যেস না করতো,"বিকালে কি করবি?"





ব্যাটল রেডি কথাটার মানে জানেন?মুহূর্তের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রিপারেশন নেয়ার জন্য যেভাবে রেডি হতে হয়,একটা চিতা শিকার করার আগে যেভাবে রেডি হয়ে যায়,আমি মানসিকভাবে ঠিক সেই প্রস্তুতিটা নিয়ে ফেলেছি এই মেসেজটা দেখা মাত্রই,কারন লিটা আপু হয়তো বলতে পারে যে আমি চাইলে আসতে পারি।এবং ঠিক তাই,লিটা আপু আজকে টিএসসি তে একটা ফ্রেন্ডলি মিটিং করতে যাচ্ছে এবং আমি আসতে পারি,ইনফ্যাক্ট লিটা আপু রাগের ইমো দিয়ে বললো আমার নাকি আসতেই হবে............





উত্তরা থেকে শাহাবাগ যাওয়াটা সহজ না,তাও আবার বিকাল টাইমে।আমি তিন দিনের শেভ ছাড়া পাঁড় মাতালের মতো অবস্থায়,গোসল-খাওয়া কিছুই নাই,এই অবস্থায় ন্যূনতম সময়ে রেডি মেডি হয়ে দিলাম দৌড়,সাথে আমার জানের টুকরা আই মিন আমার ব্যাগ.....................







লিটা আপু আগেই বলে দিয়েছিল সাড়ে পাঁচটার একটু আগেই আসতে,আমি কোনরকমে সাড়ে চারটার মধ্যে টিএসসি মোড়ে পৌঁছে চেকইন দিলাম লিটা আপুর ডিজিটাল দফতরে,মানে হোয়াটসঅ্যাপে।ধরেই নিয়েছিলাম লিটা আপুর আসতে আসতে সোয়া পাঁচটা বেজে যাবে,সেই হিসেবে একটু আরাম করে বসার চেষ্টা করলাম সেইখানে,যদিও ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স না পাওয়ার কষ্ট একটু পরপরই "গুতাচ্ছিল"........................







ঠিক সোয়া পাঁচটার মধ্যেই দেখলাম রিকশা করে আমার সামনে ল্যান্ড করলো দ্যা ওল্ড টেস্টামেন্ট,দ্যা টেস্টিং সল্ট,ফালুদা,নীল,লিডাফা,লিটাপু,আরও অনেক কিছু মিলিয়ে একজন কবি,আমার প্যাট্রন।নেমেই সোজা একটা বিশাল সাইজের স্ট্রাইক!আমি নাকি মোটা হয়ে গেছি(মাত্র দেড় কেজি বেড়েছে দেখে এই কথা!!!!)এরপর হাটতে হাটতে চারুকলার ভিতরে বিশাল সাইজের একটা গাছের নিচে বসলাম,যদিও উপরে কাউয়া বোমা পড়ার সম্ভাবনা ছিল অনেক।টিএসসি থেকে চারুকলা পর্যন্ত কথা তো চলছে তো চলছেই।এর মধ্যেই লিটা আপুর মনে সুপ্ত ভালোলাগা যেটা কিনা মেটালের প্রতি,আরও ভেঙ্গে বলতে গেলে আয়রন মেইডেনের প্রতি,সেটা জেনে তো আমার মধ্যে টু মিনিটস টু মিডনাইটের সোলো আর রিফ শুরু হয়ে গেছে............







এর মধ্যে লিটা আপুর ফ্রেন্ড কাম বড় ভাই এসে গেছে।আজকে উনার সাথে কথা বলে আমি মনে মনে আবার স্বীকার করলাম,পৃথিবীতে মার্সেক,মেরিন রিকনরা যেমন এলিট,লিটা আপুর ফ্রেন্ড সার্কেল হচ্ছে ঠিক সেইরকম লেভেলের একটা ব্যাপার।এর মধ্যে টিএসসি মোড়ে কাসাফাদ্দৌজা নোমান ভাইয়ের সাথে দেখা,সবাই শুনে রাখুন,ফেবুর ছবির থেকে বাস্তবে তিনি আরও অনেক সুন্দর(নোমান ভাই যদি এই লেখা কোনদিন পড়েন তাহলে একটা চকলেট দিয়েন)।যাই হোক,এর মধ্যে আমাদের আউটসোর্সিং 101 ক্লাস নিয়ে ফেললো লিটা আপু,তার একটু পর দেখা আবার ফিনিক্স আপুর সাথে।বুঝতে পারলাম আজকে আমার সেলিব্রিটি ভাগ্য অনেক ভালো..................





এর মধ্যে আটটার উপরে বাজে,আম্মু জানেনা যে আমি লিটা আপুর সাথে।কারন আজকে আমার প্রোগ্রামে বিকাল চারটা টু ছয়টা লিখনদের সাথে টাইমিং ছিল।আম্মু টেনশন করবে,তাই আমি জাস্ট আম্মুকে টুক করে মেসেজ পাঠিয়ে দিলাম,যা ছিল স্পেশাল এক মন্ত্রওয়ালা মেসেজ,মন্ত্রের নাম "লিটা আপু".....................







এমনিতেই শনিবার আমার ক্লাস,বাসায় দেরি করে গেলে প্রবলেম।কিন্তু আজকে আমার এমন একটা মিশন,যেই মিশনের কারনে আমি সারারাত বাইরে থাকতে পারবো।আজকে আমি কোয়ান্টামে যাবো,লিটা আপু সেখান রক্ত দিবে।যারাই বলে আমাদের মধ্যে রক্তের বন্ধন নাই,তারা সবাই ভুল জানে।লিটা আপুর জন্য আজকে আমি মাথা উচু করে বলতে পারি,আমি একজন রক্তদাতা,তাই লিটা আপুর সাথে আমার বন্ধন রক্তের বন্ধনের চেয়েও অন্যরকম............





টিএসসি থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত রিকশায়,এর মধ্যে তো আমার কবিকে বিশ্লেষণ করার কাজ চলছেই।আসলে লিটা আপু যখন কথা বলে,টাইম,ম্যাটার,রিয়েলিটি,ইমোশন-সব কিছু কেন জানি কোন একটা ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।বলতে গেলে লিটা আপুর সাথে সময় কাটানো,ঘুরা একটা নেশার মতো।আর আমার কাছে এটা একটা করতেই হবে টাইপ কিছু একটা কারন আমি লিটা আপুকে আমার লিওনাইডাস মেনেছি সব সময়..................





লাইফে তিনবার রক্ত দিয়েছি,কিন্তু কোয়ান্টামে আসা এই প্রথমবার।লিটা আপুর সাথে লাইভ রক্তদান দেখার অভিজ্ঞতা এই প্রথম কারন আমি যখন রক্ত দেই,আমার রক্ত কিভাবে ব্যাগে জমা হয়,ব্যাগ কিভাবে দোল খায়,আমার দেখার কথা না।আমি হতবাক হয়ে আজকে তাকিয়েছিলাম রক্তের ব্যাগটার দিকে,একজন সাচ্চা মুক্তিযোদ্ধার রক্ত বইছে এই ধমনীতে,এই রক্তে জীবন বেঁচে যাবে কারও।একজন কবিরের রক্ত..............................





রক্তদান শেষ,রেস্ট শেষ,হাটতে হাটতে লিটা আপুর বাসার দিকে চলা,অসাধারন কিছু গল্প শোনা যেগুলো কিনা আমাকে প্রতিমুহূর্ত কিছু একটার প্রেরণা দেয়,লিটা আপুর জিলাপি আর সমুচা খাওয়ানো(পানি খাইতে পারিনাই তখন) তো আছেই.........







দুই জনের বাসা দুই দিকে,তাই এখন আলাদা হতে হবেই।শেষ মুহূর্তে চুলে হাত বুলিয়ে লিটা আপু বললো,"সাবধানে বাসায় যা"। এখন মিনিমাম একসপ্তাহ শ্যাম্পু করা যাবেনা কারন কবি ছুঁয়েছে আমাকে(জাস্ট ফান,বাসায় এসেই কড়া গোসল দেয়া শেষ)...........................







কবিকে সবাই বুঝতে পারেনা।যারা বুঝেনা বলে কবিকে অবজ্ঞা করে,তাদের কিছুই বলার নাই।আমি শুধু এতোটুকুই জানি,এই কবির জন্যই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে হতাশ মুহূর্তগুলোর সাথে যুদ্ধ করতে পেরেছি,এই কবির দেয়া সাহস আমাকে যুদ্ধ শিখিয়েছে।কবির দেয়া চেতনার কারনে আজকে আমি যাই লিখিনা কেন,কিছু হলেও লিখতে পারি।কবি আমাকে মানুষ হতে সাহায্য করেছে অনেকভাবে।কবির কারনে আমি মুনিরকে বুঝি,কবির কারনে আমি তামিমের সত্ত্বার ভিতরে থাকি।আমার সব লেখাই মৌলিক,কিন্তু একদম অন্তর থেকে আসা লেখাগুলো আমি কবির জন্য লিখেছি,এটা আমার গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা........................





আমি আমার লাইফে শুধু মাত্র দুইজন মানুষকে বিশ্বাস করি,আম্মু আর আমাকে।এই তালিকায় আরও একজন মানুষকে আমি তার অজান্তেই যোগ করে দিয়েছি,সেই মানুষটা আমার কবি,আমার জমজ বোন,আমার গুরু,লিটা আপু।হ্যাঁ,সবাই জেনে রাখো,আমার লাইফের সিরিয়াস কোন ডিসিশন আমার আম্মু আর লিটা আপুকে জানিয়েই নিবো আমি,সো এইখানে অবাক হওয়ার কিছুই নাই।আমার লাইফে আম্মুর পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই আমি এই মানুষটাকে,সুতরাং লিটা আপুর কথার বাইরে আমি যাবো না।লিটা আপুর জন্য এতোটা ভক্তি কোন কারন ছাড়া আসেনাই।কেন এসেছে এটা বোঝানো সম্ভব না,এক কথায় বুঝতে গেলে লিটা আপু আমার লিওনাইডাস,আমি উনার 300 এর একজন.................................







আমার লাইফের আরেকটা অসাধারন দিন,যেখানে কবির দেয়া একটা অসাধারন উপহার আমার কাছে আছে।উপহারটা বস্তুগত না,ভাবগত।আজকে অসাধারন একটা অনুভূতি নিয়ে পিসির সামনে বসে আছি,আমার শেষ না করা জমানো গল্পগুলো আজ আবার জীবনের স্বাদ পাবে,কারন কবি আমাকে লিখতে বলেছে..................

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: অবাক মুগ্ধ হয়ে গেলাম আপানার লেখা পড়ে। আমি খুব অল্প সংখ্যক মানুষের লেখা মনযোগ দিয়ে পড়ি কারণ লেখাইয় আটকে রাখার ক্ষমতা সবার থাকেনা-কিন্তু আপনার আছে। লিখে যান ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.