নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

http://www.somewhereinblog.net/blog/kauser_pranjal/category/17287

এগিয়ে যেতে চাই নিজের চেস্টায় এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন কারও করুনায় নয়

আথাকরা

আমার জীবন বৈচিত্রময় ! জীবনের প্রতিটা পদে পদে বাধা পেয়েছি কিন্তু এসব বাধা গুলো খুব সফল ভাবেই উত্তিণ্ণ হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ ।

আথাকরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৪ আর ২৫ তারিখের বিসিএস ক্যারিয়ার আড্ডার সামান্য কিছু অংশ October 26, 2014 at 11:00pm

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:২২

২৪ আর ২৫ তারিখের বিসিএস ক্যারিয়ার আড্ডার সামান্য কিছু অংশ
October 26, 2014 at 11:00pm

একজন নোবডির গল্প



এখানে যারা আছেন, যারা এখনো ক্যারিয়ার শুরুই করেননি, তারা কি সত্যিই পিছিয়ে আছেন? ‘পিছিয়ে থাকা’ কাকে বলে? আমার শুরু যেভাবে। আমি আমার বন্ধুদের চেয়ে অন্তত ৪.৫ বছর পর চাকরি করা শুরু করি।
বারবার জীবনের মোড় বদলানো। সিদ্ধান্তহীনতার গল্প। Never it’s too late to realize it’s already getting late.
আমার কোনো Aim in Life ছিলো না, শুধু এক্সামের খাতায় ছাড়া। কেউ একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, life এবং career নিয়ে আপনার আগামী ১০ বছরের plan কী? আমি উত্তর দিয়েছিলাম, আমি আমার জীবনে ১০ মিনিটের planও কখনো করতে পারিনি। Still I’m happy. No regrets! এক জীবনে মানুষ কতোটুকুই বা পায়? আমি প্রতি মুহূর্তের দুনিয়ায় বেঁচে থাকা মানুষ। এতো ক্যারিয়ারিস্ট হয়ে বেঁচে কী লাভ?
ক্যারিয়ার কী? ‘ভালো’ ক্যারিয়ারে কী কী থাকে? আমি মনে করি, ৩টা জিনিস থাকে।

Social recognitionSolvencyTime to spend your earning in your own way

Better to live a short life without regrets than to live a long one with sighs. Yes, you can be a part of the popular rat-race. Run run and run only to stop peacefully. The problem is, even if you win a rat-race, you still remain a rat. Fact is, your career offers much to others comparing to you and your family. Most people say goodbye to the hell they're living in early before they dream to say hello to the heaven they're dreaming to live in. I really don't want to build a castle where I myself can't live.
খুব ভালো কিছু করতে যে খুব বেশি সময় নিয়ে করতে হয়, তা কিন্তু নয়। আমার ধারণা, সুন্দর কিছু ক'রতে পরিশ্রম কিংবা বুদ্ধিমত্তার চাইতেও আবেগটাই বেশি দরকার। কম সময়ে অনেক কিছু ক'রতে জানাটা মস্তো বড়ো একটা আর্ট। …… কেউ কথা রাখেনি। You fill up my senses. কুমার সানুর ২৮। দস্তয়ভস্কির গল্প। Be lazy enough not to do it again!
ফিরে দেখা। নোবডি হয়ে থাকার গল্প। সবচেয়ে বাজে রেজাল্ট করা ছেলেটার গল্প; যার একটা সময়ে অনার্স কমপ্লিট করারই কথা ছিলো না, যাকে নিয়ে কেউ কখনো স্বপ্ন দেখেনি। কারোর কাছ থেকে পাত্তা না পাওয়াটা ভয়াবহ কষ্টের একটা ব্যাপার। অপমানের দিনগুলো, কান্নার রাতগুলো। ‘কিছু করা’ বলতে কী বোঝায়? বিষের পেয়ালার হার ও অতঃপর। স্রেফ বেঁচে থাকলেও অনেককিছু হয়৷ সাঁতারু ও জলকন্যা পড়েছেন? Cry, only to smile better!!
Your passion pays!! Books, movies, music & of course Facebook!! No matter, whatever it is!! Basically, you’re what you love!!
অন্য কারোর জীবনে না বাঁচা, জীবনের সাথে কম্প্রোমাইজ না করা একজন সুখী অসফল অ্যাক্সিডেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারের গল্প, একজন হতাশাগ্রস্ত উদ্যোক্তার গল্প। Happy to be derailed! Thank you God, you didn’t listen to my prayers!
একটা কথা খুব সত্য৷ এ্যাকাডেমিক্যালি কেউ ভালো স্টুডেন্ট হওয়া মানেই কিন্তু তার ক্যারিয়ার ভালো হবে, এমন নাও হ’তে পারে৷ শেষ হাসিটা হাসার চেষ্টা করুন৷ মাঝের কিছুটা সময় না হয় কাটুক কান্নায়, অবহেলায়, তাচ্ছিল্যে৷
ক্যারিয়ার শুরু করার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস ক’রে নিন, কী আপনার ভালো লাগে৷ অন্যেরা এর উত্তর দিতে পারবে না৷ ওরা বড়োজোর জানে, কী আপনার ভালো লাগা উচিত৷ অন্য দশ জনের মতো ক’রে ভাববার মস্তো বড়ো অসুবিধে হ’চ্ছে এই, আপনি আসলে যতোটুকু করার ক্ষমতা রাখেন, সেটা একটা বাঁধাধরা ছকে প’ড়ে যায় এবং আপনার অ্যাচিভমেন্ট এমন কিছু হয় না, যেটাকে আলাদা ক’রে বলা যায় কিংবা দেখা যায়৷ আপনার জীবনটাকে আপনি গড়পড়তায় ফেলবেন কিনা, it’s your choice.
কোনো কাজ করার সবচেয়ে কঠিন ধাপ ২টিঃ এক। আপনি আসলে কী করতে চান, কীভাবে করতে চান, কেনো করতে চান সেটা ঠিক করা। দুই। কাজটা সত্যি সত্যি শুরু করা। কোনো কাজ শুরু করার সবচেয়ে সহজ টেকনিক হল, কাজটা সত্যিই শুরু করে দেয়া।
সাফল্যের জন্যে আত্মবিশ্বাস জরুরী, নাকি আত্মবিশ্বাসের জন্যে সাফল্য জরুরী? আমাকে দিয়ে হবে না, আর পারছি না, I quit! শাহরুখ খানের গল্প।
“It always seems impossible until it's done.” The difficulty level of most of the competitive exams is overrated. --- Why? সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় যারা প্রথম হয় ওরা মানুষ তো? এইসব ভাবতাম।
If you are not thinking about your dream, you are not thinking at all.
You can never deserve success, you have to always earn it. Fact is, your success is what you think you earn, your failure is what others think you deserve.
বিল গেটসের কাছে চাল-ডালের ব্যবসার আইডিয়া চেয়ে কী লাভ? কৌশলী হোন।
People have natural talent of undermining your attempts to which they are not familiar with or don’t feel comfortable about. There are some people who can never appreciate. So, it's foolish to judge yourself by what they say. Kind words are healthier than a bowl of chicken soup.
ছোটোবেলায় ভালো স্টুডেন্ট হিসেবে সবার কাছে পরিচিত হয়ে যাওয়াটা একটা বিশ্রী জিনিস, নিজেকে কিছুতেই আর ছোটো ভাবা যায় না। অন্যরা আমাকে গাধা ভাবছে, এটা মেনে নেয়ার অনভ্যস্ততা খুব কষ্টের! Sometimes it’s your bad luck! People want to see you as they want, not as you want to see yourself. Still, live in your own life. Don’t listen to others, listen to your heart.
Don’t be serious, be sincere. সবাই তো আর সবকিছু পারে না৷ এটা মেনে নিন। আপনি কোন কাজটা সবচেয়ে ভালো পারেন, সেটা বের করুন।
Stop overthinking. If you're going through hell, keep going. Que sera sera --- Whatever was, was; whatever is, is; whatever will be, will be. যা হবার তা হবেই।
Life didn't come to us with a user-manual. So, it's our right to use and to abuse it! Sometimes, failures are just too good! To fail successfully is an art.
Deciding what you really want matters. It took me almost 2 decades to decide what I really want. When I'd decided finally, it took me only a few months to get what I really want.
Don’t only work hard, also work smartly.
Success. It’s not the opposite of failure as popularly believed, it's just living without sighs. It's just dancing in the manner you want and making people think you dance well even if you don't. It's making your style others' favourite brand even if it's foolish. It's sometimes making people laugh listening to your even worst jokes. It's making others hear you even when you don't speak. It's taking the opportunity to tell others that meeting your previous millionth failure was essential, anyway. It's making your failures worth-mentioning by you or by others.
Only your results are rewarded, not your efforts. This is the way the world accepts or rejects you.





বিসিএস পরীক্ষার

DOs & DON’Ts





বিসিএস পরীক্ষার ডিফিকাল্টি লেভেল আমার কাছে কিছুটা overrated বলেই মনে হয়েছে৷ এটা কম্পিটিটিভ এক্জাম, এটা যতটা সত্য, রিয়েল কম্পিটিশনে আসার মতো ক্যান্ডিডেট খুব বেশি সাধারণতঃ থাকেনা, এটা আরো বেশি সত্য৷ বেশিরভাগ মানুষই এই এক্সাম নিয়ে ভয় দেখাতেই বেশি পছন্দ করেন। যা জানেন, তা বলেন; যা জানেন না, তাও বলেন। ২টা ফ্যাক্ট শেয়ার করি।

এই এক্সামে ৫০% ক্যান্ডিডেট যায় জাস্ট ঘুরতে কোনো কারণ ছাড়াই, অনেকটা গেট-টুগেদার করতে। (মজার ব্যাপার হলো, এদের কেউকেউ সফলও হয়ে যায়! veni, vidi, vici টাইপের আরকি!)
রিয়েল কম্পিটিটিশনে আসার মতো ক্যান্ডিডেট থাকে মাত্র ৭% এর মতো।

এর মানে, আপনার কম্পিটিটর আপনি যতটা ভাবছেন, তত বেশি না। বিসিএস পরীক্ষার কোনো সুনির্দিষ্ট সিলেবাস নেই, তাই এই পরীক্ষায় ১০০% প্রস্তুতি নেয়া কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। মাথায় রাখুন, শতভাগ শিখেছি ভেবে তার ষাটভাগ ভুলে গিয়ে বাকী চল্লিশভাগকে ঠিকমতো কাজে লাগানোই আর্ট৷ এই পরীক্ষায় ভালো করার জন্যে কী কী পড়বেন, সেটা জানার চাইতে অনেকবেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, কী কী বাদ দিয়ে পড়বেন, সেটা ঠিক করা। আমি পরের স্লাইডগুলোতে এ সম্পর্কে বলার চেষ্টা করেছি। এই গাইডলাইনটা নিজের মত করে কাজে লাগাবেন। যতটুকু দরকার, ততটুকু নেবেন, বাকিটা ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।



প্রিলিমিনারির বিভিন্ন টপিক নিয়ে.....

ভাষাঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ ৯ম-১০ম শ্রেণীর ব্যাকরণ বই+ হায়াৎ মামুদের ভাষা-শিক্ষা+ গাইড বই
সাহিত্যঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ সৌমিত্র শেখরের জিজ্ঞাসা+ গাইড বই
Language: আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ English for the Competitive Exams+ Oxford Advanced Learner’s Dictionary+ গাইড বই
Literature: আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ গাইড বই
বাংলাদেশ বিষয়াবলী+ আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ পেপার+ ইন্টারনেট+ গাইড বই
ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাঃ নতুন গাইড বই
সাধারণ বিজ্ঞানঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন
কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তিঃ জব সল্যুশন+ আগের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও টীকা+ নতুন গাইড বই
গাণিতিক যুক্তিঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন
মানসিক দক্ষতাঃ আগের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন+ গাইড বই+ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নব্যাংক
নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসনঃ কমনসেন্স+ নতুন গাইড বই



মাই এক্সপেরিয়েন্স উইথ বিসিএস প্রিলি + রিটেন

১০ম থেকে ৩৪তম বিসিএস, ২-৩টা জব সল্যুশন কিনে পিএসসি’র নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নগুলো (সম্ভব হলে, অন্ততঃ ২৫০-৩০০ সেট) বুঝে বুঝে solve করে ফেলুন। দাগিয়ে দাগিয়ে রিভিশন দেবেন অন্তত ২-৩ বার। Read the mind of the question setter, not the mind of the guidebook writer. ৪ ঘণ্টা না বুঝে study করার চাইতে ১ ঘণ্টা questions study করা অনেক ভালো। তাহলে ৪ ঘণ্টার পড়া ২ ঘণ্টায় পড়া সম্ভব। Apply the POE. বেশি বেশি প্রশ্নের প্যাটার্ন study করলে, কীভাবে অপ্রয়োজনীয় টপিক বাদ দিয়ে পড়া যায়, সেটা শিখতে পারবেন। এটা প্রস্তুতি শুরু করার প্রাথমিক ধাপ। এর জন্যে যথেষ্ট সময় দিন। অন্যরা যা যা পড়ছে, আমাকেও তা-ই তা-ই পড়তে হবে। এই ধারণা ঝেড়ে ফেলুন। Invent your own style. নতুন সিলেবাসের নতুন টপিকগুলো নতুন গাইড বই বের হওয়ার পর অন্তত ২-৩ সেট কিনে পড়ে ফেলবেন। পড়া ভালো, চোখ বুলানো আরো ভালো। মডেল টেস্টের গাইড বই কিনে নিজে নিজে মডেল টেস্ট দিন। প্রতিদিন অন্তত ৩টা করে। নতুন টপিকগুলো নিয়ে অত গবেষণা করার সময় নাই। নতুন টপিকগুলো থেকে কঠিন প্রশ্ন না হওয়ারই কথা।
বেশিরভাগ স্টুডেন্টই প্রথমে রেফারেন্স বই পড়ে, পরে প্রশ্ন সলভ করা শুরু করে। এখানে ২টা সমস্যা আছে। এক। বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ করার সময় পাওয়া যায় না। যত বেশি প্রশ্ন সলভ করবেন, ততই লাভ। দুই। রেফারেন্স বইগুলোর বেশিরভাগ অংশই বিসিএস পরীক্ষার জন্যে কাজে লাগে না, অথচ পুরো বই পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট হয় এবং বিসিএস নিয়ে অহেতুক ভীতি তৈরি হয়। তাছাড়া অতকিছু মনে রাখার দরকারও নেই। .........তাই, উল্টো পথে হাঁটুন। আমিও তা-ই করেছিলাম।
আজাইরা ফালতু জিনিসপত্র পড়া বাদ দিন৷ বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্যে আপনি কী কী পড়বেন, সেটা ঠিক করার চাইতে অনেক বেশি জরুরী আপনি কী কী পড়বেন না, সেটা বুঝতে পারা৷ রেফারেন্স বই পড়ুন আর না-ই পড়ুন, বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ্ করা ফরজ৷ যে জানে, সে সফল নাও হ'তে পারে; কিন্তু যে সফল, সে নিশ্চয়ই জানে৷ (না জানলেও জানে) অসফল পণ্ডিত অপেক্ষা সফল গর্দভ উত্তম৷ যাঁরা বিসিএস নিয়ে থাকেন, তাঁরা দুই টাইপের হ’য়ে ওঠেন৷ এক। বিসিএস বিশেষজ্ঞ৷ দুই। বিসিএস ক্যাডার৷ ...... ক্যাডার হোন৷
একটা বুদ্ধি দিই৷ বিসিএস পরীক্ষার জন্য যেকোনো বিষয়ের রেফারেন্স পড়ার একটা ভালো টেকনিক হচ্ছে, জ্ঞান অর্জনের জন্য না প'ড়ে, মার্কস্ অর্জনের জন্য পড়া৷ জ্ঞান অর্জন করলে জ্ঞানী হবেন, মার্কস অর্জন করলে ক্যাডার হবেন। এটা করার জন্য আগে বিগত বছরগুলোর প্রশ্নগুলো পড়ে পড়ে কোন টাইপের প্রশ্ন আসে না, সেই আইডিয়াটা নিন৷ আরো ভালো হয়, প্রিলি আর রিটেন'এর প্রশ্নগুলো ভালোভাবে দেখে, এরপর রেফারেন্স বই 'বাদ দিয়ে বাদ দিয়ে' পড়ুন৷ যেমন, বাংলা সাহিত্যের জন্য যদি কেউ মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস কিংবা সৌমিত্র শেখরের জিজ্ঞাসা (কথার কথা) পড়তে চান, আগেই প্রিলিতে সাহিত্যের প্রশ্ন + রিটেনে সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন কী কী টাইপের আসে মাথায় ম্যাপিং করে ফেলুন৷ এরপর পড়ুন৷ কম্পিটিটিভ পরীক্ষায় ভালো করার বেস্ট ওয়ে, আগে রেফারেন্স বই পড়ে তারপর প্রশ্ন সলভ্ করা নয়; বরং প্রশ্ন সলভ্ করতে করতে রেফারেন্স বই পড়া৷ সবকিছু পড়ার সহজাত লোভ সামলান। একটি অপ্রয়োজনীয় topic একবার পড়ার চেয়ে প্রয়োজনীয় topic গুলো বার বার পড়ুন৷
প্রিলির জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, আজকের বিশ্ব, অর্থনৈতিক সমীক্ষা টাইপের বইপত্র পড়া বাদ দিন৷ একেবারেই সাম্প্রতিক বিষয় থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন আসে বড়জোর ৫-৬টা, যেগুলো শুধু ওই বইগুলোতেই পাওয়া যায়৷ এরমধ্যে অন্তত ২টা পেপারটেপার প'ড়ে আনসার করা যায়৷ বাকি ৪টাকে মাফ ক'রে দিলে কী হয়?! এই ৪ মার্কসের এ্যাতো পেইন কোন দুঃখে পাব্লিক নেয়, আমার মাথায় আসে না৷ আসলে, ওই যন্ত্রণাদায়ক বইগুলো প'ড়লে নিজের কাছে কেমন জানি পড়ছি পড়ছি মনে হয়৷ এটা অতি উচ্চমার্গীয় ফাঁকিবাজির পর্যায়ে পড়ে৷ একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷ প্রিলিমিনারি হাইয়েস্ট মার্কস্ পাওয়ার পরীক্ষা নয়, স্রেফ পাস করার পরীক্ষা৷ কে কী পারে সেটা নিয়ে কম ভাবুন। আপনি যা পারেন সেটার চাইতে অন্যরা যা পারে, সেটা শেষ পর্যন্ত বেশি কাজে আসবে, এরকমটা নাও হতে পারে।
Time Management. Because it does matter in the exam hall! এখন দেখা যাক, এর মানে কী? ২টা ব্যাপার মাথায় রাখবেন। এক। কম্পিটিটিভ এক্জামগুলোতে ভালো করার ক্ষেত্রে প্রিপারেশনের চাইতে প্রিপেয়ার্ডনেসটা বেশি কাজে লাগে৷ I’m the best, এই ভাবটা এক্জাম হলে ধ’রে রাখুন৷ এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে! যতটুকুই প্রিপারেশন নিন না কেনো, এর maximum utilization করতে হবে। প্রস্তুতি নেয়া বড় কথা নয়, প্রস্তুতিকে ঠিকভাবে কাজে লাগানোই বড় কথা। দুই। আপনাকে প্রত্যেকটা segment-এ খুব ভালো কিংবা মোটামুটি ভালো করতে হবে। কাজেই preparation নেয়ার সময় আপনি যা পারেন, শুধু সেটার উপরেই পুরো effort দেয়া যাবে না। আমার টেকনিক হল, আমি যা পারি সেটার বেশিবেশি যত্ন নিই, যাতে অন্যদের চাইতে অনেকবেশি সুবিধা আমি সেটাতে নিতে পারি। তবে তার আগে দেখে নিই, যেটা বেশি পারি, সেটা আদৌ সুবিধা নেয়ার মতো কিছু কিনা। Exam hall-এ সময়টাকে ভাগ করে নেবেন। পুরো সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ে যা যা পারেন, সব answer করে ফেলবেন। বাকি সময়ে left-out প্রশ্নগুলো answer করবেন।
বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা মূলতঃ চারটি বিষয়ের উপর অনেকংশে নির্ভর করে---ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও বাংলা৷ এই চারটি বিষয় বেশি জোর দিয়ে পড়ুন৷ শুধু সাধারণ জ্ঞানে সুপণ্ডিত তোতাপাখিসদৃশ ব্যক্তিবর্গ বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণত ফেল করে অথবা অতি সাধারণ মানের রেজাল্ট করে৷ সাধারণ জ্ঞানে বেশি পণ্ডিত হয়ে লাভ নাই, কারণ ওই segment-টাতে সাধারণত average marks আসে, তাই অন্যান্য ক্যান্ডিডেটের তুলনায় আপনি খুব বেশি marks পেয়ে কোনো competitive advantage পাবেন না, যেটা ওই চারটা বিষয়ে পাওয়া সম্ভব। প্রিপারেশন নিচ্ছি নিচ্ছি---নিজেকে এবং অন্য সবাইকে এটা বোঝানোর চাইতে সত্যি সত্যি প্রিপারেশন নেয়া ভালো। ‘প্রিপারেশন প্রিপারেশন ভাব, প্রিপারেশনের অভাব।’ কম্পিটিটিভ এক্সামের প্রিপারেশন নেয়ার ক্ষেত্রে এটা হয়। মাথায় রাখুন, Only your results are rewarded, not your efforts. অনেক পরিশ্রম করে ফেল করার চাইতে, বুঝেশুনে পরিশ্রম করে পাস করা ভালো।
বিসিএস পরীক্ষা বার বার দেয়া যায়, এটা সত্যি। কিন্তু তার চেয়ে বড় সত্যি, এটা একবারে পাস না করার পানিশমেন্ট হল, এই বিরক্তিকর ক্লান্তিকর পড়াগুলো আরেকবার পড়তে হবে। আমার বেলায় এই ভয়টা মোটিভেশন হিসেবে কাজ করেছে। এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষাও তো ৪ বার দেয়া যায়। ওইসময়ে কেউ যদি আপনাকে বলতো, ১ম বার এক্সপেরিএন্স হোক, পরেরবার ভালো করে দিয়ো। এটা শুনলে কি রাগ হতো না?
প্রথমবারের কাজ ভালো হয় না? কে বললো একথা? আমি প্রথমবারে ক্যাডার হয়েছি। এরকম আরো অসংখ্য নজির আছে। পথের পাঁচালি (বিভূতি ও সত্যজিৎ), নাগরিক, The 400 Blows কিংবা Wuthering Heights, The Catcher in the Rye, To Kill a Mockingbird, The Kite Runner-এর গল্প। বিসিএস পরীক্ষার মতো বিরক্তিকর পরীক্ষা আরেকবার দিতে হবে, এটা ভাবতে ভয় লাগে না? শুধু এইজন্যেই তো পড়াশোনা করা যায়। সবার মতো আপনাকেও বারবার বিসিএস দিতে হবে কেনো? তবে এখানে luck favour করা না-করার কিছু ব্যাপারও ঘটে।
যে প্রশ্নগুলো একটু কঠিন মনে হয়, সেগুলো একাধিকবার পড়ুন৷ একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি---এই বিষয়গুলোতে প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র ও ম্যাপ আঁকুন৷ যথাস্থানে বিভিন্ন ডাটা, টেবিল, চার্ট, রেফারেন্স দিন৷
কোন কোন সেগমেন্ট-এ ক্যান্ডিডেট’রা সাধারণতঃ কম মার্কস্ পায় কিন্তু বেশি মার্কস্ তোলা সম্ভব, সেগুলো নির্ধারণ করুন এবং নিজেকে ওই সেগমেন্ট’গুলোতে ভালোভাবে প্রস্তুত করে কম্পিটিশনে আসার চেষ্টা করুন৷ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, টীকা, শর্ট নোটস্, সারাংশ, সারমর্ম, ভাবসম্প্রসারণ, অনুবাদ, ব্যাকরণ ইত্যাদি ভালোভাবে পড়ুন৷
দাগিয়ে দাগিয়ে রিটেনের গাইড বই পড়ুন৷ সম্ভব হলে, কমপক্ষে ৩-৪ সেট৷ তবে খেয়াল রাখবেন গাইডে অনেক ভুল থাকে৷ এটা স্বাভাবিক৷ তাই পড়ার সময় সংশোধন করে নিতে হবে৷
নোট করে পড়ার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই৷ এতটা সময় পাবেন না৷ বরং কোন প্রশ্নটা কোন সোর্স থেকে পড়ছেন, সেটা লিখে রাখুন৷ রিভিশন দেয়ার সময় কাজে লাগবে৷ বাংলাদেশের সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখুন৷ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে রাখুন৷ প্রয়োজনমত পরীক্ষার খাতায় রেফারেন্স উল্লেখ করে উপস্থাপন করুন৷ (আমি একটা প্রশ্নও নোট করে পড়িনি।)
বিসিএস’এর জন্য নিয়মিত পেপার পড়ুন৷ সম্ভব হলে অন্তত ৫-৬ টা৷ অনলাইনে পড়তে পারেন৷ এই সময়টাতে পুরো পেপার না পড়ে শুধু যে অংশগুলো পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়, সেগুলোই পড়ুন৷ খুব দ্রুত চোখ বুলিয়ে যা যা বিসিএস পরীক্ষার জন্যে দরকার, প্রয়োজনে সেগুলো ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করে রাখুন। কী কী দরকার, সেটা কীভাবে বুঝবেন? বেশি বেশি প্রশ্ন স্টাডি করুন।
বিভিন্ন রেফারেন্স, টেক্সট ও প্রামাণ্য বই অবশ্যই পড়তে হবে৷ বিসিএস পরীক্ষায় অনেক প্রশ্নই কমন পড়েনা৷ এসব বই পড়া থাকলে উত্তর করাটা সহজ হয়৷ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে মার্কস বাড়বে৷ এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার ক’রলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে৷ জানি, অত কোটেশন তো মনে থাকে না। তাহলে কীভাবে কাজটা করবেন? আমি যে টেকনিকগুলো ফলো করেছিলাম, সেগুলো বলছি। সেগুলোর অনেকগুলোই ফাঁকিবাজি। বেড়াল সাদা কী কালো, সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা, ইঁদুর ধরতে পারে তো? ভালো কথা, সংবিধান মুখস্থ করার কোনো দরকারই নাই। আমি করিনি।
লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই৷ লিখিত পরীক্ষায় অনেক বেশি দ্রুত লিখতে হয়৷ তাই প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন৷ খেয়াল রাখবেন, যাতে লেখা পড়া যায়৷ সুন্দর উপস্থাপনা মার্কস বাড়ায়৷ বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় লিখতে খুব বেশি কষ্ট হয়। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো, আঙুলের জয়েন্টগুলো বুঝি এখুনি খুলে পড়ে যাবে। ভাবতাম, I’ve to really perform when I’m performing! আমি তো স্রেফ আমার বাবা-মা আর টেন্ডুলকারের কথা ভেবে ভেবেই রিটেন পার করে দিলাম। একটা গল্প শেয়ার করি। ১৬ বছরের বালকের ‘Main Khelega’ অ্যাটিচিউডের গল্প৷ হারিয়ে না যাওয়ার গল্প৷ আমার লাইফে শেখা সেরা অ্যাটিচিউড৷ আমার মতে, জীবনে বড় হতে হলে habitual ‘selfish’ weakness to greatness থাকাটা জরুরি। যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল তাদের গুণগুলোকে replicate করার চেষ্টা করুন। যে লক্ষ্যেই পৌঁছাতে চান না কেনো, সেই লক্ষ্যের প্রতি প্রচণ্ড শ্রদ্ধাবোধ রাখুন। নাহলে প্রিপারেশনে ঠিকমতো আন্তরিকতা আসে না।
কোনভাবেই কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না৷ উত্তর জানা না থাকলে ধারণা থেকে অন্তত কিছু না কিছু লিখে আসুন৷ আপনি প্রশ্ন ছেড়ে আসছেন, এটা কোন সমস্যা না৷ সমস্যা হল, কেউ না কেউ সেটা উত্তর করছে৷ নিজের সাজেশনস্ নিজেই তৈরী করুন৷ কারো সাজেশনস্ ফলো করবেন না৷ এই প্রশ্নটা আসবেই আসবে --- এ জাতীয় মিথ্যে আশ্বাসে কান দেবেন না৷ আমি অন্তত ৪ বার সাজেশনস রেডি করেছিলাম। আর এটা মাথায় রাখুন, রিটেনে (৪০-৫০)% এর বেশি প্রশ্ন কমন পাবেন না। (এইটুকু পেলেও অনেক!)
মাঝে মাঝে বিভিন্ন topic নিয়ে ননস্টপ লেখার প্র্যাক্টিস করুন৷ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার অভ্যাস বাড়ান৷ এতে আপনার লেখা মানসম্মত হবে৷ কোনো উত্তরই মুখস্থ করার দরকার নেই৷ বরং বারবার পড়ুন, বিভিন্ন সোর্স থেকে৷ ধারণা থেকে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন৷ কেউই সবকিছু ঠিকঠাক লিখেটিখে ক্যাডার হয় না। কতো বুদ্ধিটুদ্ধি করে কতোকিছু ভুলভাল লিখে ক্যাডার হয়েছি, সেটা বলে বোঝানো যাবে না! (আমি আসলে অতি সৌভাগ্যবানদের দলে!)
বিসিএস পরীক্ষায় কোন ভাষায় উত্তর লিখবো? ইংরেজিতে? নাকি, বাংলায়? এ প্রশ্ন অনেকেরই৷ আমি বাংলায় লিখেছি, পরীক্ষায় প্রথম হ’য়েছি৷ এ ভাষায় ‘আসি’ বলে স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়া যায় … কী আশ্চর্য রহস্য! তাই না? তবে, আপনি ইংরেজিতেও লিখতে পারেন৷ এক্ষেত্রে সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতাই মুখ্য৷ অনেক অনেক লিখতে হবে, যেটা খুব ভালোভাবে পড়ার সময়ই হয়তো পরীক্ষকের নেই, এটা মাথায় রাখুন।
অনেকেই বলবে, আমার তো অমুক অমুক প্রশ্ন পড়া শেষ! ব্যাপারটাকে সহজভাবে নিন৷ আপনার আগে কেউ কাজ শেষ করলেই যে শেষ হাসিটা উনিই হাসবেন---এমন তো কোন কথা নেই৷ আমি বিসিএস পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি শুরু করতে গিয়ে দেখলাম, অনেকের অনেককিছু পড়া শেষ। 3 Idiots তো দেখেছেন। বন্ধুর খারাপ রেজাল্টে যতোটা মন খারাপ হয়, বন্ধুর ভালো রেজাল্টে তার চেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হয়। যখন দেখলাম, আমি অন্যদের তুলনায় বলতে গেলে কিছুই পারি না, তখন আমি ২টা কাজ করলাম। এক। বোঝার চেষ্টা করলাম, ওরা যা পারে, সেটা পারাটা আদৌ দরকার কিনা? দুই। ওদের সাথে নিজেকে কম্পেয়ার করা বন্ধ করে গতকালকের আমি’র সাথে আজকের আমি’কে কম্পেয়ার করা শুরু করলাম।
মাঝে মাঝে পড়তে ইচ্ছে করবে না, আমারও করত না৷ সারাক্ষণ পড়তে ইচ্ছে করাটা মানসিক সুস্থতার লক্ষণ না৷ Why so serious? Job for Life, not Life for Job. বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে, এমন তো নয়! আপনার রিজিক আগে থেকেই ঠিক করা আছে। কতোকিছুই তো করার আছে! তাই, ব্রেক নিন, পড়াকে ছুটি দিন৷ মাঝেমধ্যেই৷ রুমের দরোজাজানালা বন্ধ করে ফুল ভলিয়্যুমে মিউজিক ছেড়ে সব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে নাচুন! কী আছে জীবনে! দু’দিন পড়া হ’লো না বলে মন খারাপ করে আরো দু’দিন নষ্ট করার তো কোনো মানে হয়না৷ ভুল না করে শিখেছে কে কোথায় কবে? অনুশোচনা করার সময় কোথায়? আপনি তো আর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভুলটি করে বসেননি! আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী মানুষটিও নন!
গ্রুপ স্টাডি করা কতোটুকু দরকার? এটা আপনার অভ্যেসের উপর নির্ভর করে। আমার নিজের এই অভ্যেস ছিলো না। আমি গ্রুপ স্টাডি করতাম না ২টা কারণে। এক। যখন দেখতাম, সবাই অনেককিছু পারে, যেগুলোর কিছুই আমি পারি না, তখন মনমেজাজ খারাপ হতো। আমি পারি না, এটা ভাবতে ভালো লাগে না। The Pursuit of Happyness এর ডায়লগটা মনে আছে তো? আপনি পারেন না, সবার কাছ থেকে এটা শুনে, বুঝে আপনার কী লাভ? দুই। সবার সাথে পড়লে বেশি বেশি গল্প করতে ইচ্ছে করতো, আর মনে হতো, ওরা যেটা করছে সেটা ঠিক, আমার নিজেরটা ভুল। অন্ধ অনুকরণ করতে ভালো লাগে না।



Viva: the art of selling yourself



আসলে ভাইভা এক্জামের কোনো প্যাটার্নই নাই। ভাইভার মার্কস্ ম্যাটার করে, এধরণের ভাইভা আমি দিয়েছি এপর্যন্ত ২ জায়গায়। আইবিএ ভাইভা আর বিসিএস ভাইভা। আইবিএ'র ভাইভা বোর্ডে ছিলাম ১৮-২০ মিনিট, বিসিএস-এ ৪-৫ মিনিট। কতক্ষণ ওখানে রাখলো, কী জিজ্ঞেস ক'রলো, কী কী পারলাম, কী কী পারলাম না, এগুলো অতটা মুখ্য নয় যতটা ভাবা হয়। অলস্ ওয়েল দ্যাট এন্ডস্ ওয়েল।
আমার মনে হয়েছে, ভাইভা ব্যাপারটা যতটা অবজেকটিভ, তার চেয়ে অনেক বেশি সাবজেকটিভ। আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলে? কাউকে কাউকে দেখলে কথা বলতেও হিসাব ক'রে বলতে হয়। আবার কাউকে কাউকে দেখলে কষে দুইটা চড় মারতে ইচ্ছা করে। মারতে না পারলে কেমন যেনো অস্বস্তি লাগে। ভাইভাতে ভালো করার জন্যে প্রিপারেশন থেকে প্রিপেয়ার্ডনেসটাই বেশি জরুরি। প্র্যাকটিস তো সবাই-ই করে, তবুও সেঞ্চুরিটা কিন্তু টেন্ডুলকারের ঝুলিতেই যায়। সেইদিনটা আপনার কিনা সেটা অনেকটাই আপনার ভাগ্য নির্ধারণ ক'রে দেয়।
আপনি কী জানেন তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার ইমপ্রেশন কী হলো আপনার জানার সম্পর্কে। সাধারণত একজন ব্যক্তিকে দেখার প্রথম ২০ সেকেন্ডের মধ্যে তার সম্পর্কে একটা ইম্প্রেশন জন্মে, সেটা ইতিবাচকও হতে পারে, নেতিবাচকও হতে পারে। এটাকে কাজে লাগান। You will never get a second chance to make the first impression. সবাইকে দেখলে সবকিছু বলা যায় না, বলতে ইচ্ছেও করে না। কাউকে কাউকে দেখলে তাজমহল কীভাবে প্রেমের সাক্ষর বহন করে চলেছে, সেটা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে; আবার কাউকে কাউকে দেখলে তাজমহলের ইটের সংখ্যা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে। কারো কারো অ্যাপিয়ারেন্স অ্যাটিচিউড দেখলে পদ্মা নদীর দৈর্ঘ্য জিজ্ঞেস ক'রতে ইচ্ছা করে, আবার কারো কারো কাছ থেকে পদ্মার বুকে নৌকায় ভাসতে ভাসতে চাঁদের আলো ছুঁয়ে দেখার গল্প শুনতে ইচ্ছে করে। কিংবা পদ্মাপাড়ে প্রেমিকার হাত ধ'রে হাঁটবার গল্প। অথবা অন্য কোনোকিছু, যা বলতে কিছু জানতে হয় না, অথচ সবকিছুই জানিয়ে দেয়া যায় খুব সহজে।
যাঁরা ভাইভা বোর্ডে থাকেন, তাঁরা সত্যিই অনেক বেশি এক্সপেরিএন্সড আর এক্সপার্ট। ওরা খুব ভালো করেই বোঝেন আপনি কী বলছেন, কী লুকাচ্ছেন। A clever man knows how to cheat, an intelligent man knows how to make others let him cheat.
এক্সপেরিয়েন্স বলে, ভাইভাতে ভালো করার অন্ততঃ একশো টেকনিক আছে যেগুলোর একটাও কাজ করে না৷ যা সঞ্চয় করবেন, তার চেয়ে বেশি কাজে লাগবে যা সঞ্চয়ে আছে৷ আপনি যেরকম, সেটাকেই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন। আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয় কিংবা আপনাকে আপনার মতো থাকতে দেয় না, এমন কিছু শুনবেন না, করবেন না৷
ভাইভা’র সময় আই কনট্যাক্ট রাখুন৷ অন্য দিকে তাকিয়ে কথা বলা কোনো কাজের কথা না৷ তাছাড়া, স্যারদের ইনস্ট্যান্ট এক্সপ্রেশন জানতেও এটা জরুরি।
ভাইভা বোর্ডে যে যে ব্যাপারগুলো দেখা হয় বলে আমার মনে হয়েছে ---

Positive Attitude
Mental Maturity
Ready Wit
Thought Clarity
Decent Appreance
Etiquette
Commonsense
Cool Temperament
English Fluency
Situation Handling Capability
Analytical Skill

নার্ভাসনেস থাকবে না, এটা হয় না৷ থাকবেই৷ ওটা কাটানোর কিছুটা দায়িত্ব সিচ্যুয়েশনের উপরে ছেড়ে দিন৷ আমার ক্ষেত্রে নার্ভাসনেস আমাকে ভালো মার্কস পেতে হেল্প করেছিলো। ঘটনাটা বলি। A knife kills. Well, a knife saves too!
ভাইভা বোর্ডে আপনার সাথে যদি দুর্ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটাকে পারসনালি নেয়ার কিছু নাই। এখানে যা কিছুই করা হয়, প্রত্যেকটার পেছনে উদ্দেশ্য থাকে আপনাকে judge করা।
বিসিএস পররাষ্ট্র ফার্স্ট চয়েস থাকলেই যে ভাইভা ইংলিশে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। ফরেনের অনেকেই ৫০% এর বেশি বাংলায় ভাইভা দিয়ে ক্যাডার হয়েছে। আমার ফার্স্ট চয়েস ছিলো কাস্টমস, অথচ আমার ৮৫ ভাগ ভাইভা হয়েছে ইংলিশে।
যারা আগে ভাইভা দিয়েছেন, উনাদের সাথে কথা বলুন, কী কী টাইপের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, সেটা সম্পর্কে একটা ফেয়ার আইডিয়া নিন। সবাই যেভাবে বলে, একটু ভিন্নভাবে উত্তরটা নিজের মধ্যে সাজিয়ে নিন। Presentation matters! Try to read the mind of the interviewer. আপনি কী বলতে চাচ্ছেন, তার চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হল, উনারা যা শুনতে চাচ্ছেন, আপনি সেটা বলতে পারলেন কিনা। আপনি কী বললেন, সেটা নয়, আপনি সেই কথাটা কীভাবে বললেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। Hiding is an art. ইউফেমিজম্ শিখুন৷ যেমন ধরুন, যদি আপনাকে আপনার নিজের একটা দুর্বল দিক সম্পর্কে বলতে বলা হয়, তবে আপনি এমনভাবে উত্তরটা দেবেন যাতে এটা আপনার সম্পর্কে খুব বেশি নেতিবাচক কিছু না দেখায়। (আমাকে আইবিএ’তে এটা জিজ্ঞেস করেছিলো) কিংবা, বাংলাদেশের কিছু সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করলে এমন কিছু বলার চেষ্টা করবেন, যেগুলো সমাধানে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
যদি কোনো প্রশ্ন উত্তর দেয়ার মাঝখানে অন্য কেউ প্রশ্ন করেন, তাহলে যিনি প্রথমে প্রশ্ন করেছেন, উনার পারমিশন নিয়ে পরের প্রশ্নটার উত্তর দিতে হবে।
মাঝে মাঝে Ted Talks শুনতে পারেন, Youtube সহ অনেক সাইটে দেয়া জব ইন্টারভিউগুলো শুনতে পারেন। বিটিভির রাত ১০টার ইংরেজি সংবাদ শুনতে পারেন। CNN, Al Jazeera শুনুন। সাবটাইটেল অন করে American accent এর মুভিগুলো দেখতে পারেন। কোনো বন্ধুর সাথে মাঝে মাঝে ইংলিশে কনভারসেশন প্র্যাকটিস করতে পারেন। তবে ভুলেও এমন কোনো পণ্ডিতের সাথে এই কাজটা করবেন না, যে শুধু ভুলই ধরিয়ে দেয়।
আপনার ভাইভার ডেটের আগের ১ সপ্তাহের কয়েকটা পেপারে নিয়মিত চোখ রাখুন। সাম্প্রতিক বিষয়, মুক্তিযুদ্ধ, নিজের সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখুন।
মাঝে মাঝে স্মার্টনেস না দেখানোটাই স্মার্টনেস৷ আপনাকে দেখার প্রথম ২০ সেকেন্ডের মধ্যে যে ফার্স্ট ইম্প্রেশন তৈরী হয়, সেটার উপর আপনার ভাইভার প্যাটার্ন অনেকটাই নির্ভর করে৷ নিজেকে gentleman/ lady হিসেবে উপস্থাপন করুন।
যেকোনো ভাইভা এক্সামে ২ ধরণের প্রশ্ন থাকে। এক। Informative দুই। Non-informative ........ সাধারণত ২য় ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার স্টাইলের উপর স্যারদের বেশি emphasis থাকে। ভাইভাতে এমন কিছু নেই যে, এতোটা পারলাম, এতো মার্কস দেয়া হবে, মানে ভাইভাতে কোনো segmented marking হয় না; বরং overall performance-এর উপর নম্বর দেয়া হয়। আপনি অনেক প্রশ্নের উত্তর করতে পারলেই যে অনেক মার্কস পাবেন, এমন নয়।
ইংলিশে উত্তর দেয়ার সময় যদি আপনার কোনো কথায় কোনো ভুল খেয়াল করেন, তাহলে থেমে গিয়ে সেটাকে শুধরে দেয়ার দরকার নাই। কথা হচ্ছে তীরের মতো, একবার ছুটে গেলে সেটাকে থামাতে গেলে হাত রক্তাক্ত হবে। হয়তো বা, স্যাররা আপনার ভুলটা খেয়ালই করেননি। কী দরকার আপনি নিজ থেকে বলে দেয়ার?
সিভিল সার্ভিস, আপনার সাবজেক্ট, ক্যাডারের ফার্স্ট আর সেকেন্ড চয়েস সম্পর্কে ফেয়ার আইডিয়া রাখুন৷ আপনি কেন চাকরিটা চাইছেন, সেটার উত্তর রেডি রাখবেন।
কী জানেন না, সেটা নিয়ে অত ভাববেন না৷ হয়তো আপনাকে ওটা জিজ্ঞেসই করা হবে না৷ আর যদি জিজ্ঞেস ক’রেই ফেলে, আর আপনি উত্তর দিতে পারলেন না, তাতে কী হ’য়েছে? প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য ভাইভাতে বেশি মার্কস্ বরাদ্দ থাকলে অনেক Parrot-type’এর লোকজন চাকরি পেতো৷
নিজেকে উৎসাহী শ্রোতা হিসেবে দেখান৷ চেহারায় একটা ভদ্র ভদ্র টাইপের ভাব ফুটিয়ে তুলুন, যাতে আপনাকে বকা দিতেই কষ্ট লাগে৷ এটা সত্যিই কাজে দেয়৷



আড্ডা শেষ হোক গল্পে ........



প্রথম গল্প:

একটা কাক গাছের উঁচু ডালে কোন কাজ না করে অলসভাবে বসে ছিল৷ ঠিক সে সময়ে ওই পথ দিয়ে এক খরগোশ যাচ্ছিলো৷ খরগোশ কাককে জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা ভাই, আমিও কি তোমার মতো কোন কাজ না করে এই গাছের নীচে বসে থাকতে পারি?” কাক বলল, “নিশ্চয়ই পারো!” খরগোশ তা-ই করল৷

কিছুক্ষণ পর সেই পথ দিয়ে এক শেয়াল যাচ্ছিল৷ শেয়াল খরগোশটাকে বসে থাকতে দেখে খপ্ করে ধরে খেয়ে ফেলল৷

এই গল্পের lesson কি? lesson হলো, যখন আপনি এতটা উঁচু আসনে বসে আছেন যে, কেউ আপনাকে ছুঁতে পারবে না, তখন আপনি হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন৷ তবে, এর আগে পরিশ্রম করে আপনাকে সেই আসনে বসার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে৷ ভাবুন, আপনারা এখন কোন আসনটাতে বসে আছেন৷



দ্বিতীয় গল্প:

শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে একটা ছোট্ট পাখি সাইবেরিয়া ছেড়ে যাচ্ছিল৷ হঠাৎ পাখিটা জমে গিয়ে বরফের টুকরোর মতন টপ্ করে মাটিতে পড়ে গেল৷ বেশ কিছু সময় পড়ে সেই পথ দিয়ে একটা গরু হেঁটে যাওয়ার সময় পাখিটার উপর মলত্যাগ করল৷ কিছুক্ষণ পর গোবরের উষ্ণতায় পাখির গায়ের সমস্ত বরফ ঝরে গেল৷ পাখিটা তখন খুশীতে গান গাইতে শুরু করল৷ কাছেই একটা বেড়াল বসেছিল৷ গান শুনে বেড়ালটা গোবর থেকে পাখিটাকে বের করে খেয়ে ফেলল৷

এই গল্পের lesson গুলো কি কি?

প্রথম lesson হলো, Not everyone who drops shit on you is your enemy. এর মানে হল, যারা আমাদের উপরে ময়লা ছিটিয়ে দেয় অর্থাৎ আমাদের বকা-ঝকা করেন, তাদের সবাই কিন্তু আমাদের শত্রু নন; অনেকেই আমাদের ভালো চান৷ এই দলে আছেন, আমাদের বাবা-মা, সিনিয়ররা, স্যাররা৷



দ্বিতীয় lesson হলো, Not everyone who gets you out of shit is your friend. এর মানে হল, অনেকেই আছেন যাঁরা আমাদের বিপদ থেকে মুক্ত করার কথা বলে হাত বাড়িয়ে দিয়ে আরো বড় বিপদে ফেলে দেন৷ এই দলে আছেন, আমাদের আশে-পাশের সেইসব মহাপণ্ডিত ব্যক্তিরা, যাঁরা বলেন, “বিসিএস পরীক্ষা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.