নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
হ ম এরশাদের শাসনামল - ১
------------------ ডঃ রমিত আজাদ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইদানিং হ ম এরশাদের নাম একটু বেশি বেশি শোনা যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে কথায় কথায় দু'একজন বলেই বসেন, "এরশাদের সময়ই ভালো ছিলো।" এই জাতীয় মন্তব্য শুনলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। গোল্ড ফিশের মতো আমাদের স্মৃতি। খুব দ্রুতই সবকিছু ভুলে যাই। আমার অবাক লাগে! আমরা কি করে ভুলে যাই যে 'স্বৈরাচার' ও 'এরশাদ' এ দুটো কথা বাংলাদেশে প্রতিশব্দ হয়ে গিয়েছে। রাজধানী ঢাকার বুকে এখনো রয়েছে নূর হোসেন চত্বর, যার বুকে পিঠে লেখা ছিলো 'গণতন্ত্র মুক্তি পাক', 'স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক'।
১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ, আমাদের স্বাধীনতা দিবসের ঠিক দু'দিন আগে সেনাপ্রধানের আসনে বসে থাকা এরশাদ হঠাৎ করেই নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। এরপর একের পর এক ঘটতে থাকে নাটক। জনগণের ইচ্ছা, আকাঙ্খা, মতামত কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এরশাদের ৯ বছরের শাসনামলে দেশ বিশৃঙ্খলার স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। এরশাদ নিজে যেমন দুর্নীতি করেছেন, অন্যকেও দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছেন। তার ইঙ্গিতে একদিকে গুলি করে ট্রাক চালিয়ে যেমন ছাত্র হত্যা হয়েছে, তেমনি অন্যদিকে তিনি টুপি মাথায় মসজিদে ছুটে গিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। নিজে যেমন তেমনি সমগ্র জাতির মোরাল ক্যারেক্টারও বিনষ্ট করেছেন। দুর্নিতি ও অনৈতিকতাকে তিনি যেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন, ইতিহাসে তা বিরল।
তার দুর্নিতির মাত্রা এত বেশী ছিলো যে একটি বিদেশী পত্রিকা ১৯৮৬ সালে ফ্রন্ট পেজ নিউজ করেছিলো - Ershad, richest president from the poorest country। এই দুর্নিতিবাজ নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত ব্যাক্তিটির প্রতি দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষ এত বেশী বিতশ্রদ্ধ ছিলো যে, তাকে অপসারন করার জন্য দিনের পর দিন সংগ্রাম করেছে। কিন্তু নির্লজ্জ্ব এই ব্যাক্তিটি সিন্দাবাদের ভুতের মত দেশের ঘাড়ে চেপে ছিলো।
তাই এরশাদের প্রকৃত রূপ বোঝাতে প্রখ্যাত শিল্পী পটুয়া কামরুল হাসান একটি বিখ্যাত কার্টুন এঁকেছিলেন। সেই কার্টুনের ক্যাপশন ছিল—‘দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে।’
১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ এরশাদ যখন ক্ষমতা দখল করে আমি তখন প্রায় বারো বছরের এক চঞ্চল বালক, আর ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর তিনি যখন ক্ষমতাচ্যুত হন আমি তখন ২০ বছরের বয়সের একজন উদ্দাম তরুণ। এই উদ্দাম তরুণরাই এরশাদের কাল হয়েছিলো। সকল প্রকার হুমকি, ত্রাস ও ভীতি উপেক্ষা করে তারা একযোগে নেমে এসেছিলো রাজপথে। উত্তাল রাজপথে তখন একটিই কথা, এরশাদ তুমি বাংলা ছাড়ো। এরশাদ বাংলা না ছাড়লেও ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলো।
এরপর ছয় বছরের জেল, আবার রাজনীতি, সংসদে দাঁড়িয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন, মহাজোটে যোগদান, ক্ষণে ক্ষণে গিরগিটির মতো রং পাল্টানো, অতঃপর ভাবগতিক দেখে মনে হচ্ছে আবারও রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। খুব সম্ভবত তিনি প্রতিশোধ নিতে চান। দেশের মানুষকে একহাত দেখে নিতে চান, মনে মনে ভাবনা "তোমরা আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছ? দেখো আমি আবারো রাষ্ট্রপতি হয়েছি!"
উচ্চকন্ঠে বলতে চাই - দেশের সবার মেমোরী গোল্ড ফিশের মত নয় যে, অল্পক্ষণ পরেই তা ভুলে যাব। একজন অতি সাধারণ মানুষ হিসাবে আমি তার পুরো সময়টাই দেখেছি। সেই শ্বাসরুদ্ধকর সময়ের অনেক কিছুই আমার স্মৃতিতে গ্রন্থিত আছে। দেশের মানুষের মনে সেই সবকিছু আবার জাগিয়ে তুলতে আমি ধারাবাহিকভাবে এই সিরিজ লিখে যাবো। পাঠকদের গঠনমূলক মন্তব্য কামনা করছি।
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬
রমিত বলেছেন: বর্তমানের যেসব নেগেটিভ দিক আপনি তুলে ধরেছেন, এ'সব কিছুরই সুত্রপাত করেছিলেন হ ম এরশাদ। আমার পরবর্তি পর্বগুলোতে তা বিষদ তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪
বিশ্বাস করি 1971-এ বলেছেন: যত দোষ সব নন্দঘোষ! এরশাদ কাকুর এখন সব দোষ! আসল কথা স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের জাতি হিসেবে স্খলন শুরু হয়েছিল। এরশাদ কাকুর execution better ছিল এই ব্যাপারে আশা করি কারো দ্বিমত নাই। বঙ্গবন্ধু সেতু, রেলের আন্তনগর ট্রনে চালনা থেকে অনেক বড় বড় প্রকল্পের শুরু তার করা। হয়তোবা কিছু কিছু কাজ পাকিস্তান আমলে প্ল্যান করা হইসিলো।
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২০
রমিত বলেছেন: ভালো কিছু কাজ যে তাঁর সময়ে হয়নি তা নয়। তবে ভালো কাজের চাইতে খারাপ কাজ তার ছিলো অনেক বেশী।
যতদূর জানি মূল পরিকল্পনায় যমুনা সেতু আরো অনেক চওড়া হওয়ার কথা ছিলো। এরশাদের কারণেই তা সরু হয়। তাছাড়া এই সেতু নিয়ে এরশাদের দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে ব্যাপক। এ সেতুর নামে সারচার্জ ও লেভি প্রবর্তন করেন এরশাদ, কিন্তু পরবর্তিতে সেই অর্থ কোথায় গেলো তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। আন্তনগর ট্রেনের বগি ইন্জিন ইত্যাদি বিদেশ থেকে আমদানী করা হয়। অথচ জিয়াউর রহমানের সময় দেশেই বগি ইন্জিন তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। এরশাদের আমলে সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়।
যাহোক প্রশ্ন গুলো উত্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে অধ্যয়ন করে পরবর্তি পর্বগুলোতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪
প্যাপিলন বলেছেন: আপনাদের মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত...এরশাদ আমলকে দুর্নীতির সুতিকাগার বলা চলে। তখনকার সময়ে হোমোর বহুমাত্রিক দুর্ণীতি, দু:শাসনের সাথে আমরা পরিচিত ছিলামনা বলে বিদ্রোহী হয়েছিলাম। এখনও দুর্নীতির মাত্রা শতগুন বেড়ে গেলেও অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় আামদের কোন বিকার নেই।
আপনার দেয়া ছবিতে হোমোর পাশে নিশ্চয় চিনি জাফর। আমাদের পাশের পাড়াতে ওনার শুশুরবাড়ি ছিল। একবার ওনার হাবলা কিসিমের শালাকে পাড়ার বড় এক ভাই চড় মারার পর যে পুলিশি একশন দেখেছি সেটা লাদেনের ওপর মার্কিন হামলার চেয়েও কোন অংশে কম ছিলনা। ঐ বড় ভাইয়ের পুরো পরিবারকে দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল। হোমো ও তার আজ্ঞাবহদের এরকম যে কত দুশাসনের নজির তা বলে শেষ করে যাবেনা।
পরবর্তী পর্বে আপনার অভিজ্ঞতা শোনার অপেক্ষায় থাকলাম
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২১
রমিত বলেছেন: যথাযথ তুলে ধরেছেন সেই সময়ের চিত্র। আপনাকে ধন্যবাদ।
৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২১
আন্ধার রাত বলেছেন:
আসলে আমাদেরই চরিত্র ঠিক জায়গায় নাই।
সেজন্যই সবাই সুযোগ নেয়। যতদিন সবাই উন্নত মন মানসিকতায়
পা না রাখবে ততদিন ঐধরনের লোকেরাই বার বার আসবে।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:০১
রমিত বলেছেন: আমার মনে আছে, আমাদের ছোট বেলায় দেশের মানুষের নৈতিকতা অনেক বেশি ছিলো। এই নৈতিকতার স্খলন হওয়াই শুরু হয় এরশাদের আমলে। ১৯৮৫ সালের দিকে এক মুদির দোকানদার আাকে বলছিলো, " আমরা আর সৎ থেকে কি করবো? যারা দেশের দায়িত্বে, সততা নিশ্চিত করা যাদের কর্তব্য তারাই তো অসৎ।"
৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১
স্রাবনের রাত বলেছেন: আমাদের মেমোরী আসলে গোল্ড ফিশের মত । না হলে আমরা কি ভাবে একজন সুপরিচিত রাজাকার কি করে, এদেশের মন্ত্রী বানাই । আমরা হয়ত আবার কোন, সুপরিচিত দুর্নীতি বাজ কে হয়ত প্রধান মন্ত্রী বানাব ।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:০১
রমিত বলেছেন: জ্বী আমাদের মেমোরী গোল্ড ফিশের মতো।
৬| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
puronodin বলেছেন: কাকু বিদিশা হয়ে যায় মাঝে মাঝে...... হা হা হা
০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:০২
রমিত বলেছেন: হ্যাঁ, দিশা হারিয়ে ফেলেন।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৩
মেহেদী_বিএনসিসি বলেছেন: সেদিন আমার কলিগ এক আমেরিকান ফ্রেন্ড যখন আমার কাছে জানতে পারলো.........আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী-স্পিকার-বিরোধীদলীয় নেত্রী সবই মহিলা.........তখন সে বিস্ময় প্রকাশ করে বললো..........তোদের দেশে কি একটাও পুরুষ মানুষ নাই.........যে নেতা হওয়ার যোগ্য...........। আমি আসলেই শরমে পরেগিয়েছিলাম তার উত্তর দিতে না পেরে...........
০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:০৪
রমিত বলেছেন: তাদেরকে বললেন না কেন যে, আমাদের দেশে কিছু ভিক্ষুক আছে যারা চাদর দিয়ে লাশ ঢেকে রেখে ভিক্ষা করে।
৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০
সুবিদ্ বলেছেন: পড়া শুরু করলাম...
৯| ২৭ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:২৪
জিঘাংসা বলেছেন: কোন বিদেশী পত্রিকা ১৯৮৬ সালে নিউজ করেছিলো "Ershad , richest president from poorest country"। জানতে পারলে উপকৃত হতাম। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২১
প্যাপিলন বলেছেন: এরশাদের শাসনামলে ভাল ছিলাম - এটা আক্ষেপ থেকেই বলা হয়ে থাকে।কেননা এরশাদ বা শাসনযন্ত্র খারাপ হলেও সেসময়ের পলিটিশিয়ান, ব্যবসায়ী, আমলারা এখনকার মতো এতটা খারাপ ছিলনা। চিন্তু করে দেখুন সে সময়ে ছাত্রনেতারা একটা ছাত্রকে হলে সিট দিতে পারলে ক্রেডিট মনে করতো, আর এখনকার ছাত্র নেতারা এখানেও বাণিজ্য খোজে, এখন একটা পিয়নের চাকুরির জন্যও এম্পি, মন্ট্রিরা টাকা খায়