নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
কয়েকটি গণ-অভ্যুত্থান - ৩
--------------------------- ডঃ রমিত আজাদ
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মুক্তিকামী নিপীড়িত জনগণ রাজপথে নেমে আসে, সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনতার সন্মিলিত প্রচেষ্টা ও আত্মত্যাগে হটে যায় স্বৈরাচারী শাসক, শাসন ক্ষমতায় বসেন নিপীড়িত জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি, একেই বলে গণ-অভ্যুত্থান। মানবজাতির পথ চলার দীর্ঘ ইতিহাসে এই জাতীয় গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে বহুবার। এরকম কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গণ-অভ্যুত্থান স্থান পাবে আমার এই প্রবন্ধে।
পূর্ববর্তি দুটি পর্বে আমি লিখেছিলাম ইরাকের গণ-অভ্যুত্থান (১৯৫৮) ও মিশরের গণ-অভ্যুত্থান (১৯৫২) সম্পর্কে। আজকের পর্বে লিখবো আমাদেরই দেশের ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের উপর।
১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান (বাংলাদেশ)
১৯৬৯ সালের ২৫শে মার্চ দোর্দন্ড প্রতাপশালী পাকিস্তানী স্বৈর শাসক লৌহ মানব হিসেবে খ্যাত দীর্ঘ এক যুগের শাসক ফিল্ড মার্শাল আয়ুব খানের পতন হয় একটি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। এটাই আমাদের দেশের ইতিহাসে '৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান নামে পরিচিত।
প্রেক্ষাপটঃ
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা প্রকার রাজনৈতিক টানাপোড়নে বারবার উত্তাল হতে থাকে দেশ। '৪৮, '৫২, '৫৪, '৫৮ ইত্যাদি বিভিন্ন ধাপের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তদানিন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক শাসন জারী করেন (১৯৫৮ সালের ৭ থেকে ৮ ই অক্টোবরের মধ্যরাতে)। এটিই ছিলো পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসন। এই ইস্কান্দার মীর্জা ছিলো পলাশীর ট্রাজেডির বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর আলী খানের বংশধর। যদিও তিনি ইল্যংন্ডের খ্যাতিমান Royal Military Academy Sandhurst-এর প্রথম ভারতীয় গ্রাজুয়েট ছিলেন এবং ১৯২০ সালে বৃটিশ ইন্ডিয়ান আর্মীতে কমিশনপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, কিন্তু সেনাবাহিনীতে তার চাকুরীজীবন দীর্ঘায়িত হয়নি। ১৯২৬ সালে তিনি Indian Political Service-এ যোগ দেন। পরবর্তিতে বৃটিশ বিতাড়িত হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ইস্কান্দার মীর্জাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী-র honorary active duty Major-General-এর রাংক প্রদান করেন। এই কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ইস্কান্দার মীর্জার অনুগত অফিসার ও সৈনিক তেমন ছিলনা।
পক্ষান্তরে সেনা-প্রধান জেনারেল আয়ুব খান আগাগোড়া পেশাদার সেনা কর্মকর্তা ছিলেন ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার ও সৈনিকদের তার প্রতি আনুগত্যই ছিলো বেশী। জেনারেল আয়ুব খান এই সুযোগ গ্রহন করেন ও ঠিক ২০ দিনের মাথায় ২৭ শে অক্টোবর ১৯৫৮ সালে ইস্কান্দার মীর্জাকে সরিয়ে নিজেই প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে আয়ুব খান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সিনিয়র মোস্ট জেনারেল ছিলেন না। তার চাইতেও সিনিয়র একজন বাঙালী অফিসার ছিলেন, যার নাম জেনারেল ইশফাকুল মজিদ। পাকিস্তানের প্রথম সেনাপ্রধান General Sir Douglas Gracey-র বিদায়ের পর যোগ্যতা, গুনাগুন, সিনিয়রিটি সবকিছু বিচারে জেনারেল ইশফাকুল মজিদ-এরই পাকিস্তানের প্রথম স্বদেশী সেনাপ্রধান হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু ইস্কান্দার মীর্জার কূটচালে সেটা হয়নি। ইস্কান্দার মীর্জা প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলী খানকে বুঝিয়েছিলেন যে, ইশফাকুল মজিদ-কে সেনাপ্রধান না করে আয়ুব খানকে সেনাপ্রধান করাই ভালো হবে। ইস্কান্দার মীর্জা Rawalpindi conspiracy নামক একটি মিথ্যা ষড়যন্ত্রের মামলায় জড়িয়ে জেনারেল ইশফাকুল মজিদ-এর প্রমোশন আটকে দেন ও তার চাইতে দু'বছরের জুনিয়র আয়ুব খানকে সেনাপ্রধান হিসাবে নিয়োগ দেন। মুর্শিদাবাদের (বাংলার) সন্তান হিসাবে ইস্কান্দার মীর্জার আনুকুল্যই যেখানে কাম্য ছিলো, সেখানে ইস্কান্দার মীর্জা জেনারেল ইশফাকুল মজিদ-এর সাথে গাদ্দারী করলেন। মীরজাফরের বংশধর বলেই হয়তো জেনেটিকালী এই স্বভাব তিনি পেয়েছিলেন। যাহোক মীরজাফরের মতো তিনিও স্বল্পমেয়াদে ক্ষমতা হারান তারই আনুকুল্যপ্রাপ্ত জেনারেল আয়ুব খানের কাছে। হিস্ট্রী রিপিট্স ইটসেলফ!
১৯৫৮ সালে আয়ুব খানের এই ক্ষমতা দখল ছিলো পাকিস্তানের মাটিতে সামরিক বাহিনীর প্রথম বারের মতো সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া। কি এই সামরিক শাসন? একটি দেশের সরকার হবে কোন না কোন দর্শনে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল (বা একাধিক রাজনৈতিক দলের কোয়ালিশন), এবং এই সরকার হবে জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত বেসামরিক সরকার, এটাই আধুনিক গণতান্ত্রীক যুগের রীতি। তবে কোন কারণে বেসামরিক সরকার ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার খাতিরে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহন করে ও সামরিক শাসন জারী করে (যেহেতু জাতীয় নিরাপত্তা নীশ্চিত করা সামরিক বাহিনী-র একটি টাস্ক)। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায় যে, খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো পেল্লায় গণতান্ত্রীক রাষ্ট্রেও একাধিকবার সামরিক শাসন জারী করা হয়েছিলো। এছাড়া কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ইস্রাইল, তুরস্ক সহ বিভিন্ন দেশে সামরিক শাসনের ইতিহাস রয়েছে।
তবে ষাটের দশকের দিক থেকে সামরিক শাসনের ভিন্ন প্রকৃতিও দেখা যায়। এসময়ে পৃথিবী দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়, কম্যুনিস্ট ও ক্যাপিটালিস্ট। কম্যুনিস্ট রাষ্ট্রগুলির পালের গোদা ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ক্যাপিটালিস্ট রাষ্ট্রগুলির গুরু ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কম্যুনিস্ট আদর্শের এমনই প্রসার ও প্রচারনা ছিলো যে, অনেক দেশেরই তরুণ-তরুণীরা রোমান্টিকতায় বিভোর হয়ে তথাকথিত শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে ঐ আদর্শে আকৃষ্ট হতে থাকে। কিছু কিছু দেশে ঐ সকল তরুণ-তরুণীরা হাতে অস্ত্র তুলে নেয় এবং নিজ দেশের ক্যাপিটালিস্ট সরকারের সাথে সসস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত হয়। এতে ঐ সকল দেশে কম্যুনিস্ট মতাদর্শ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার হুমকী দেখা দেয়। উদাহরণ স্বরূপ কিউবার নাম উল্লেখ করা যায়, যেখানে এই কম্যুনিস্ট বিপ্লব সফল হয়েছিলো। কোন দেশে কম্যুনিস্ট মতাদর্শ প্রতিষ্ঠিত হওয়া মানে ঐ দেশে বাণিজ্য হারানো। এটা ক্যাপিটালিস্ট-দের জন্য কোন ক্রমেই কাম্য নয়। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও সহযোগী রাষ্ট্রগুলো আপ্রান চেষ্টা করতে থাকে তা ঠেকানোর জন্য। তাই এই উদ্দেশ্য যতরকম পলিসি এ্যডোপ্ট করা সম্ভব তারা করেছিলো। এর মধ্যে একটি ছিলো কোন রাইটিস্ট জেনারেলকে হাত করে তার দ্বারা সামরিক শাসন জারী করা। অনেক ক্ষেত্রে এই রাইটিস্ট জেনারেল-রা জীবনের কোন এক পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলো। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায় চিলিতে military junta General Augusto Pinochet Ugarte কর্তৃক সামরিক শাসন জারী করা। জেনারেল পিনোচেটের এই ক্যু দেতাত-এর পিছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদ ছিলো। অনুরূপভাবে ইন্দোনেশিয়ায় কম্যুনিস্ট পার্টি সমর্থিত রাষ্ট্রপতি সুকর্ণো-কে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলো জেনারেল সুহার্তো। জেনারেল আয়ুব খানের পিছনেও ক্যাপিটালিস্ট শক্তি ছিলো এমন অভিযোগ রয়েছে।
আয়ুব খানের সময় উন্নয়ণ হয়েছিলো যুগান্তকারী। ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন এতো অধিক মাত্রায় হয়েছিলো যে এই সময়টিকে বলা হয় "Great Decade" in the history of the country। আমদের বাংলাদেশের চিটাগাং ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি, খুলনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি, ঢাকার তেজগাঁ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া আয়ুব যুগেরই সুফল। বাণিজ্য ক্ষেত্রে তিনি পুঁজিবাদি উন্নয়নের পক্ষে ছিলেন ও তার বিকাশে ভূমিকা রাখেন। তার সময়ে প্রচূর পরিমাণে ব্যক্তি মালিকানাধীন বড়, ছোট ও মাঝারী আকৃতির মিল ইন্ডাস্ট্রী গড়ে ওঠে, ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ব্যপক বিকাশ লাভ করে। মূলতঃ কৃষি নির্ভর দেশে উৎপাদন ও ব্যবসার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। শিক্ষা ক্ষেত্রেও ব্যপক উন্নয়ণ সাধিত হয়। তনি যুগোপযোগী নতুন শিক্ষা কারিকুলাম দেয়ার চেষ্টা করেন। ১৯৪৭ সালে দেশে ছিলো মাত্র দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা ও করাচী) কিন্তু আয়ুব খানের শাসনামলে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তাছাড়া সারাদেশে প্রচুর পরিমানে স্কুল ও কলেজ ও অপরাপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। আয়ুব খান আইনেও কিছু রিফর্ম করেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য Muslim Family Laws through an Ordinance on 2 March 1961। অনেকে বলেন আয়ুব খান তার সময়ের চাইতে অগ্রগামী ছিলেন। ১৯৬১ সালে প্রফেসর আবদুস সালাম (পরবর্তিতে নোবেল বিজয়ী) আয়ুব খানকে কনভিন্স করতে সমর্থ হন যে, পাকিস্তানের একটি মহাকাশ প্রোগ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। যার ফলে সেই ১৯৬১ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো the Space and Upper Atmosphere Research Commission (SUPARCO)। প্রফেসর সালামকেই এই কমিশনের প্রধান করা হয়। আয়ুব খান ও প্রফেসর সালামের প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের National Aeronautics and Space Administration (NASA) began পাকিস্তানী বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনীয়ারদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। এরই সুফল আজ পাকিস্তান ভোগ করছে।
বৈদেশিক নীতিতে আয়ুব খান নিঃসন্দেহে ডানপন্থী ছিলেন, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরী করেন ও সসস্ত্রবাহিনীর আধুনিকায়ন করেন। তার শাসনামলে পেশোয়ারে Air Station মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে লীজ দেয়া হয় এবং সেখানে একটি secret intelligence base গড়ে ওঠে। এভাবে সি, আই, এ-র কার্যক্রম প্রসারিত হয়। তিনি কট্টর পুঁজিবাদী হয়েও চীনের মতো কম্যুনিস্ট রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক ধরে রেখেছিলেন (এক্ষেত্রে তিনি পুঁজি করেছিলেন ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধকে)।
আয়ুব খান এর শাসনামলে উন্নয়ন হলেও সেই সময়ের সমালোচনাও রয়েছে ব্যপক। প্রথমতঃ একটি দেশের জনগণের জন্য যেটা সব চাইতে বেশী প্রয়োজন সেই বাক স্বাধীনতাই ছিলোনা তার সময়ে। শুনেছি কেউ কিছু বলতে চাইলেই খান সাহেব হুংকার দিয়ে উঠতেন, "বকাওয়াজ বন কর।" দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ব্যপক অভিযোগ রয়েছে তার সরকারের প্রতি। তার নিজের পরিবার প্রচুর ধন সম্পদ করেছিলো বলে শোনা যায়। আয়ুব খানের পুত্র গওহর আয়ুবের ব্যাক্তিগত সম্পদের মূল্য ছিলো চার মিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং তাদের পারিবারিক ধন-সম্পত্তির হিসাব হয়েছিলো বিশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত। তাছাড়া শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নরন যা কিছুই হয়ে থা তা মূলতঃ ছিলো বাইশ-টি পরিবারের হাতে জিম্মি। তারাই দেশের ৬৬% ইন্ডাস্ট্রী ও ৮০% ব্যংকিং ও বীমা নিয়ন্ত্রণ করতো। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছিলো কম। রাজনৈতিক স্বাধীনতা বলে কিছুই ছিলো না। এইসব চাপা ক্ষোভ থেকে অস্থিতিশিলতা শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিলো এবং লাহোর প্রায় দখল হয়ে গিয়েছিলো। এসময় যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। প্রতারক ইংরেজ জাতি দক্ষ ও অকুতোভয় বাঙালী সৈন্যদের সহযোগীতায়ই পুরো ভারত দখল করেছিলো আবার সীপাহী বিপ্লবের ঘাঁ খেয়ে বাঙালীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছিলো যে, বাঙালী মার্শাল রেস না। সেই অপবাদ মুহুর্তেই দূরীভূত হয় যখন সদ্য প্রতিষ্ঠিত ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অপরিসীম বীরত্ব দেখায়। তরুণ সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান এই যুদ্ধে পেয়েছিলেন সর্বচ্চো পদক 'হেলাল-ই-জুরাত'। তিনি ছাড়া আরো অনেক অফিসার ও সৈনিক নানা স্তরের পদক পেয়েছিলেন। এরপর যুদ্ধের মিমাংসা হয় তাসখন্দ চুক্তিতে। বুকের রক্ত ঢেলে যুদ্ধ করা সৈনিকরা এই চুক্তিকে পজেটিভলী নিতে পারেনি। জনগণও অসন্তষ্ঠ হয় মূলতঃ একজন ডিক্টেটরের অবিচক্ষণতাই দেশকে ঠেলে দিয়েছিলো এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের দিকে। এদিকে পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনীতি থেকে শুরু করে সর্ববিষয়েই বৈষম্য ছিলো প্রচূর। ফলে বাংলাদেশের জনমনে ব্যপক অসন্তোষের জন্ম হয়। এভাবে আয়ুব খান তার জনপ্রিয়তা ও প্রভাব দুটাই হারাতে থাকেন।
অসন্তোষের প্রতিক্রিয়া ও গণ-অভ্যুত্থান
আয়ুব খানের বিরুদ্ধে অসন্তোষ দানা বাধতে বাধতে এক সময় বিস্ফোরিত হয়। শুরু হয় গণ-আন্দোলন।
১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান লাহোরে একটি সর্বদলীয় রাজনৈতিক সম্মিলনে ছয় দফা দাবী প্রকাশ করেন। এ সম্মিলনে আইয়ুবশাহী বিরোধী সকল রাজনৈতিক দল প্রতিনিধি প্রেরণ করে, যেখানে ৭০০ জনের মধ্যে মাত্র ২১ জন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান থেকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের এ ছয় দফা দাবি ঘোষণা তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে সকল মহলে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানী শোষণ ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির চাবি হিসেবে ছয় দফাকে চিহ্নিত করে, আর পশ্চিম পাকিস্তানে একে পাকিস্তান ভাঙার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে রোষের চোখে দেখা হয়।
কি ছিলো এই ছয় দফায়?
• প্রথম দফা :
শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি: ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের বৈশিষ্ট্য হবে Federal বা যুক্তরাষ্ট্রীয় ও সংসদীয় পদ্ধতির; তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন হবে প্রত্যক্ষ এবং সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে।প্রদেশগুলোকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার প্রতিনিধি নির্বাচন জনসংখ্যার ভিত্তিতে হবে।
• দ্বিতীয় দফা :
কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা: কেন্দ্রীয় বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের দায়িত্ব থাকবে কেবল প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ।অবশিষ্ট সকল বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
• তৃতীয় দফা :
মুদ্রা ও অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা: পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দু'টি পৃথক মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যা পারস্পরিকভাবে কিংবা অবাধে উভয় অঞ্চলে বিনিময়যোগ্য।এ ক্ষেত্রে দু'অঞ্চলে স্বতন্ত্র বা পৃথক পৃথক ষ্টেট ব্যাংক থাকবে এবং মুদ্রার পরিচালনা ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। অথবা, এর বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে একটি মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু থাকতে পারে এই শর্তে যে, একটি কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার অধীনে দুই অঞ্চলে দুটি রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে। তাতে এমন বিধান থাকতে হবে যেন এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে সম্পদ হস্তান্তর কিংবা মূলধন পাচার হতে না পারে।বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্থান থেকে পশ্চিম পাকিস্থানে মূলধন পাচার বন্ধ করার জন্য সংবিধানে কার্যকর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
• চতুর্থ দফা :
রাজস্ব কর ও শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা: সকল প্রকার রাজস্ব ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে।কেন্দ্রীয় তথা প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ের ব্যয় নির্বাহের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় রাজস্বের যোগান আঞ্চলিক তহবিল হতে সরবরাহ করা হবে। সংবিধানে নির্দেশিত বিধানের বলে রাজস্বের এই নির্ধারিত অংশ স্বাভাবিকভাবেই ফেডারেল তহবিলে জমা হয়ে যাবে। এহেন সাংবিধানিক বিধানে এমন নিশ্চয়তা থাকবে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্বের প্রয়োজন মেটানোর ব্যাপারটি এমন একটি লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ হতে হবে যেন রাজস্বনীতির উপর নিয়ণ্ত্রন ক্ষমতা নিশ্চিতভাবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকে।
• পঞ্চম দফা :
বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা: পঞ্চম দফায় বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে নিম্নরূপ সাংবিধানিক বিধানের সুপারিশ করা হয়: (ক) ফেডারেশনভুক্ত প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্যের বহির্বাণিজ্যের পৃথক পৃথক হিসাব রক্ষা করতে হবে। (খ) বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলোর এখতিয়ারে থাকবে এবং অঙ্গরাজ্যের প্রয়েআজন অঙ্গরাজ্য কর্তৃক ব্যবহৃত হবে। (গ) কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে অথবা সর্বসম্মতনির্দিষ্ট হারে অঙ্গরাজ্যগুলেআ মিটাবে। (ঘ) অঙ্গরাজ্যের মধ্যে দেশজ দ্রব্য চলাচলের ক্ষেত্রে মুল্ক বা করজাতীয় কোন বাধা থাকবে না। (ঙ) সংবিধানে অঙ্গরাজ্যগুলোকে বিদেশে নিজ নিজ বাণিজ্য প্রতিনিধি দল প্রেরণের এবং স্ব স্ব স্বার্থে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দিতে হবে।
• ষষ্ঠ দফা :
আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা: (ক) আঞ্চলিক সংহতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সংবিধানে অঙ্গরাজ্যগুলোকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীনে আধা-সামরিক বাহিনী বা আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে। (খ) কেন্দ্রীয় সরকারের সকল শাখায় বা চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিট থেকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করতে হবে। (গ) নৌ-বাহিনীর সদর দপ্তর করাচি থেকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করতে হবে।
ছয় দফা দাবির প্রতি ক্রমবর্ধমান জনসমর্থনকে দাবিয়ে রাখতে নতুন এক ফন্দি আঁটেন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় যেখানে ৩৫ জন বাঙালি সরকারি কর্মচারী এবং সামরিক কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়। “রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য” নামের এই মামলায় শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রধান আসামি। অভিযুক্তদের বিচার করার জন্য প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেন। এই মামলার ফলে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রসমাজ। হাজার হাজার ছাত্র জনতা
১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারী স্বৈরাচারী আইয়ুব বিরোধী গণ আন্দোলনের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের সড়কে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কিংবদন্তীতুল্য অকুতোভয় ছাত্রনেতা আসাদ। আসাদের মৃত্যুর পর আয়ুবের পতন তরান্বিত হয়।
ছাত্রনেতা আসাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাষ্টার্স করছিলেন। আসাদ ছাত্র রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা হল শাখা সভাপতি ছিলেন। আসাদ ছিলেন মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী
।
ছয় দফা আন্দোলনের পাশাপাশি পূর্ব পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটি তাদের ১১ দফা আন্দোলন শুরু করে। ১৯৬৯ এ এই আন্দোলন চরম রূপ নেয়। ১৭ ই জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটি সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১১ দফা দাবীতে এবং পুলিশ ও ই. পি. আর. বাহিনী কর্তৃক ছাত্র-জনতার উপর বর্বর নির্যাতন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্রতা লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ২০ জানুয়ারি পূর্ণ হরতাল পালনের আহবান জানায়। হরতালের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের সকল স্কুল, কলেজে ধর্মঘট পালিত হয়। গভর্নর মোনায়েম খান ২০ জানুয়ারি ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পাকিস্তান পুলিশ থেকে বলা হয় শহরের কোথাও চার জনের বেশি লোক একসাথে হলে তাদের গ্রেফতার করা হবে। ২০ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিভিন্ন কলেজের ছাত্ররা মিছিল সহকারে জড়ো হয়। ১১ দফা দাবিতে শহরে প্রায় ১০ হাজার ছাত্রের এক বিরাট মিছিল ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ।
মিছিলটি তৎকালীন পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে সামনে এসে পৌছালে সেখানে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন। পুলিশ এর সাথে সংঘর্ষের প্রায় এক ঘণ্টা পর আসাদ সহ কিছু ছাত্র আবার মিছিল সংঘটিত করে ঢাকা হলের পাশে দিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেন। তখন একজন পুলিশ অফিসার তাকে বেয়নেট দিয়ে আহত করে রাস্তায় ফেলে দেয় এবং তাকে খুব কাছে থেকে গুলি করা হয়। পুলিশের গুলিতে ঢাকা মেডিকেলের বর্তমান জরুরী বিভাগের সামনে আসাদ শহীদ হন।
ছাত্রনেতা আসাদের মৃত্যুর খবর সারা শহরে আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার ছাত্র জনতা ঢাকা মেডিকেল কলেজে ছুটে আসেন। অসংখ্য শোক মিছিল বের হয়। শহিদ আসাদ হত্যা প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশাল মিছিল বের হয়। ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করার সময় সাধারণ মানুষ , নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই মিছিলে যোগ দেন। দুই মাইল লম্বা সেই মিছিল ছিল ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘ মিছিল। শোক মিছিল শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল দেখে শামসুর রাহমান 'আসাদের শার্ট' নামে অমর কবিতা লিখেন। হেলাল হাফিজ লিখেন কালজয়ি কবিতা 'নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়'। শহীদুল্লা কায়সার লিখেন 'সমুদ্রে যখন ঝড় উঠে'। আ ন ম গোলাম মোস্তফা লিখেন 'কবরের ঘুম ভাঙে'।
পূর্ব পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটি শহীদ আসাদের হত্যার প্রতিবাদে তিন দিনের শোক পালন করে। ২৪ তারিখ হরতাল দেওয়া হয়। সেই দিন আবারও মিছিল লক্ষ্য করে পুলিস গুলি করে। পুরো পরিস্থিতি গভর্নর মোনায়েম খানের বাইরে চলে যায়। তুমুল গণ আন্দোলনে প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদী জনগণ বিভিন্ন স্থানে আয়ুব খানের নামের স্থাপনা ভেঙ্গে সেখানে শহীদ আসাদের নাম লাগিয়ে দেন। সংসদ ভবনের ডান পার্শ্বে অবস্থিত লালমাটিয়ায় একটি তোরণ আইয়ুব গেট থেকে নাম পরিবর্তন করে আসাদগেট রাখা হয়। আইয়ুব এভেনিউ এর নাম হয় আসাদ এভেনিউ।
এই আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আসাদ ছাড়াও আরো অনেকেই শহীদ হন । এদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ সামসুজ্জোহা, স্কুল ছাত্র মতিউর অন্যতম। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হক জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেন।
আগরতলা মামলার প্রধান আসামী শেখ মুজিবুর রহমানকে আয়ুব খান কারারুদ্ধ করেছিলো। জনগণের প্রবল আন্দোলনের তোড়ে অবশেষে ২২শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এর পরের দিন রেসকোর্স ময়দানে এক আড়ম্বরপূর্ণ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ মুজিব কে “বঙ্গবন্ধু” উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৬৯ সালের ২৫শে মার্চ আইয়ুব খান ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
এভাবে দীর্ঘ এক যুগের কাছাকাছি দোর্দন্ড শাসনের অভিজ্ঞতা, ঘরে ও বাইরে ব্যপক প্রভাব বিশাল সামরিক শক্তি এই সব কিছু থাকা সত্বেও জনতার রোষের কাছে আইয়ুব শাহীর একনায়কতন্ত্রের পতন ঘটে। শাসকদের বুঝতে হবে যে, জনতার সাথে লড়াই করে টেকা যায় না।
(চলবে)
(আমি আর্টিকেলটি লেখার সময় যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি তা ত্রুটিমুক্ত রাখতে, তারপরেও কোন ত্রুটি বা তথ্যগত কোন ভুল থাকলে তা অনিচ্ছাকৃত, ভুলটি আমাকে জানাবেন, আমি তা সংশোধন করে নেব।)
তথ্যসূত্রঃ
১। বিভিন্ন ইতিহাসের বই।
২। ইন্টারনেটে প্রাপ্ত বিভিন্ন আর্টিকেল।
আমি সকল লেখকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২২
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:১০
মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: জনতার সাথে লড়াই করে টেকা যায় না।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৩
রমিত বলেছেন: জনতার সাথে লড়াই করে টেকা যায় না।
৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫১
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: চমৎকার তথ্যবহুল পোস্ট। +।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৪
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৩
মুশে হক বলেছেন: এসময়ের আন্দোলনকারীরা তথ্যগুলো পাথেয় হিসেবে ব্যবহার করার প্রয়াস নিলে লেখাটা সার্থক হবে।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৬
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯
আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: হুম।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৭
রমিত বলেছেন: হুম
৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০২
মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ বলেছেন: আসুন আজ জাতিকে এই রাজনীতিক অভিনেতাদের আসোল রূপ তুলে ধরে নতুন সামাজ গরে তুলি।
Click This Link
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৮
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯
বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: এই ইস্কান্দার মীর্জা ছিলো পলাশীর ট্রাজেডির বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর আলী খানের বংশধর সত্যি নাকি গুজব??
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩২
রমিত বলেছেন: না গুজব না, সত্যিই তাই। পলাশীর ট্রাজেডির পর সিরাজউদ্দৌলার পরিবার ও বংশধরেরা খুব ভয়ে ভয়ে নীরবে দিন কাটাতো, আর মীর জাফরের পরিবার ও বংশধরেরা দাপটের সাথে চলতো। ইস্কান্দার মীর্জা মীর জাফর আলী খানের বংশধর এবং তার জন্ম মুর্শিদাবাদে।
৮| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৪৬
শোয়াইব আহামাদ বলেছেন: ধন্যবাদ
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪০
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২১
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৭
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০১
রমিত বলেছেন: পোস্টটি নির্বাচিত পাতায় দেয়ার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৪
রমিত বলেছেন: কয়েকটি গণ-অভ্যুত্থান - ২ ও ১ নিচের লিণকে পাবেন
Click This Link
Click This Link
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৪৮
বীরেনদ্র বলেছেন: Quite informative article. Thank you for sharing with us.