নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল!

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।

রমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সক্রেটিসের এ্যাপোলজি - ১

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩

সক্রেটিসের এ্যাপোলজি





অনুবাদঃ ডঃ রমিত আজাদ



যে কয়েকটি সংলাপ ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে তার মধ্যে একটি হলো এ্যপোলজি (Apology)। আধুনিক ইংরেজীতে Apology অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা। কিন্তু গ্রীক ভাষায় Apology-অর্থ ভিন্ন। সেখানে Apology-অর্থ defense। আদালতে বিচারের সময় আত্মপক্ষ সমর্থন করে সক্রেটিস যে ভাষণ দেন এ সংলাপ তারই বর্ণনা। আদালতে সক্রেটিসের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ছিল নিম্নরূপ - 'সক্রেটিস অশুভ কাজ করেন এবং তিনি একজন কৌতুহলী ব্যক্তি, তিনি স্বর্গ-মর্ত্যের বিদ্যমান বস্তু নিয়েও অনুসন্ধান করেন, এবং যা ভালো তাকে খারাপ বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন এবং অন্যকে এসব বিষয় শিক্ষা দেন'।



Apology-র শুরু সক্রেটিস এই বলে করেছিলেন: তিনি জানেন না যে, এ্যাথেন্সবাসী (বিচারের জুরি) অভিযোক্তাদের দ্বারা প্ররোচিত কি না। পুরো বক্তৃতাটির মূলভাব এই প্রথম বাক্যটির মধ্যেই কঠোরভাবে নিহিত ছিলো। তাঁর এই ইতিহাসখ্যাত বক্তৃতায় তিনি এই ইঙ্গিত দেন যে, অজ্ঞতার খোলাখুলি স্বীকারোক্তিতেই দর্শনের সুত্রপাত ঘটে। তারপর তিনি নাটকীয়ভাবেই প্রকাশ করেন যে, যতটুকু প্রজ্ঞা তাঁর আছে তার সবটুকুই এসেছে ঐ জ্ঞান থেকে যে, 'তিনি কিছুই জানেন না।'



Apology-কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে সক্রেটিস আত্মপক্ষ সমর্থন করছিলেন এবং এই পর্যায়ে মিলেটাসকে জেরা করেন ও ডেলফির মন্দিরে নিজের দৈববাণী পাওয়ার বিষয়টি সবিস্তারে বর্ণনা করেন। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে রায়, এবং তৃতীয় অংশে শাস্তি



অংশ এক-এর কিছু অংশঃ

সক্রেটিস বিচারের জুরি-কে এই বলে বলা শুরু করেন যে, তারা যখন তরুণ ও অনুভূতিপ্রবণ ছিলো তখন শত্রুরা তাদের মন বিষিয়ে দেয়। তিনি বলেন, কূটতর্ক (sophistry) বিষয়ে তাঁর খ্যাতি মূলতঃ এসেছে তার শত্রুদের কাছ থেকে, যারা সকলেই আমার প্রতি হিংসাপরায়ন ও বিদ্বেষপরায়ন।



সক্রেটিসের বিরুদ্ধে শত্রুতার প্রায় নিশ্চিত প্রকৃত যে কারণটি ছিল তা হলো তাকে অভিজাত দলের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হতো। তাঁর অধিকাংশ ছাত্র ঐ দলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের মধ্যে আবার অনেকেই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতও ছিল। এরা নিজেদেরকে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকারক বলেও প্রমাণ করেছিল। কিন্তু এই অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি বলে সক্রেটিসকে এই অভিযোগ মুক্ত করা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক দ্বারা তাঁর অন্যান্য অপরাধ প্রমাণিত হয় এবং তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। বিচারের ফলাফল তিনি পূর্বেই বুঝতে পেরেছিলেন, কিন্তু দোষ স্বীকার করে তিনি মৃত্যুদন্ড এড়িয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তার ছিল না।



বিচারকদের মধ্যে ছিলেন গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ এনিটাস, কবি মেলিটাস, বাগ্মী লাইকন। তারা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, সক্রেটিস জাতীয় দেব-দেবীর উপাসনা করেন না। বরং নতুন নতুন দেব-দেবীর প্রচলন করার অপরাধে অপরাধী। এছাড়া তিনি যুবকদের এসব বিষয়ে শিক্ষাদান করে পথভ্রষ্ট করার অপরাধেও অপরাধী।



সক্রেটিস আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন যে, তার বিচারকরা বাগ্মী, কিন্তু তিনি বাগ্মী নন, শব্দ ও প্রবাদে অলংকৃত একটি যথাযথ ভাষণ তিনি দিতে পারবেন না, তিনি তার অভ্যস্ত উপায়ে ভাষণ দেবেন। তাঁর বয়স তখন সত্তরেরও বেশি আর এই প্রথম তিনি বিচারালয়ে উপস্থিত হয়েছেন, সুতরাং আদালতের বিধিবিধানসম্পন্ন বক্তৃতা দিতে তিনি অপারগ। তিনি আরো বলেন যে, তিনি বিজ্ঞানী নন, তিনি শিক্ষকও নন এবং সোফিস্টদের মত তিনি শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ গ্রহন করেন না। তিনি প্রশ্ন করেন, "আমি জ্ঞানী নই, তাহলে আমাকে জ্ঞানী বলার ও দুর্নাম করার কারণ কি?"



ডেলফির উপাসনালয়ে একবার তার বন্ধু কায়রেফোন (Chaerephon ) জিজ্ঞাসা করেছিলেন সক্রেটিস অপেক্ষা বিজ্ঞতর কোন ব্যক্তি আছে কি না। গায়েবী আওয়াজ এসেছিল, 'সক্রেটিস অপেক্ষা বিজ্ঞতর কোন ব্যক্তি নেই'। এই দৈববাণীতে সক্রেটিস সম্পূর্ণরূপে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন। কারণ তিনি জানতেন যে, 'তিনি কিছুই জানে না'। আবার ইশ্বর মিথ্যা কথাও বলতে পারেন না। সুতরাং বিষয়টি পরীক্ষা করার জন্য তিনি বিভিন্ন বিখ্যাত জ্ঞানী ব্যক্তিদের নিকট যেতে শুরু করেন। প্রথমেই তিনি একজন রাজনীতিবিদের কাছে গেলেন জ্ঞানী বলে যার খ্যতি ছিল। সেই রাজনীতিবিদ নিজেও নিজেকে জ্ঞানী বলে মনে করতেন। তার সাথে আলোচনা করে সক্রেটিস খুব শীগগিরই বুঝতে পারেন যে, সেই রাজনীতিবিদ মোটেও জ্ঞানী নন। একথা সক্রেটিস তাকে বিনয়ে কিন্তু দৃঢ়তার সাথে বলেন। এর ফলে সক্রেটিস তার ঘৃণার পাত্র হন। এরপর তিনি কবিদের কাছে যান, কিন্তু সেখানেও ঐ একই অবস্থা। সক্রেটিস বুঝতে পারলেন, কবিগণ জ্ঞান দ্বারা কবিতালেখেন না, বরং এক ধরনের সৃজনী ক্ষমতা ও অনুপ্রেরণার দ্বারাই কবিতা লেখেন।এরপর তিনি কারিগড়দের কাছে যান, তাদেরকেও অজ্ঞ বলে মনে হয়। সক্রেটিস বলেন, "এভাবে আমি আমার অনেক বিপজ্জনক শত্রু সৃষ্টি করেছি'। পরিশেষে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনিত হন যে একমাত্র ইশ্বরই জ্ঞানী, আর ইশ্বরের জ্ঞানের তুলনায় মানুষের জ্ঞান অতি সামান্য বা কিছুই না।



দৈববাণীতে বলা হয়, 'হে মানবগণ, তিনিই মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী, যিনি সক্রেটিসের মত এ বিষয় জানেন যে, প্রকৃতপক্ষে তার জ্ঞান কিছুই নয়।' জ্ঞানাভিমানীদের অভিমান ভাঙাতেই সক্রেটিসের সমস্ত সময় ব্যয় হয়েছে। ফলে তিনি কঠোর দারিদ্রের মধ্যে নিপতিত হয়েছেন। কিন্তু দৈববাণির সত্যতা প্রমাণ করাকে সক্রেটিস তার কর্তব্য মনে করেছেন।



সক্রেটিস বলেন, অধিকতর বিত্তশালী যুবকদের তেমন করণীয় কিছু থাকেনা বলে তারা সক্রেটিসের কথা আগ্রহের সঙ্গে শোনে, এবং জনগণের কাছে জ্ঞানের ভানকারীদের অজ্ঞতা প্রকাশ করে দেয়। এভাবে তাঁর শত্রুসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ তথাকথিত খ্যাতিমানরা যারা এতকাল জ্ঞানের ভান করে আসছিলেন, তারা স্বীকার করতে চান না যে, তাদের জ্ঞানের ভান ধরা পড়ে গেছে।



এরপর সক্রেটিস তার অভিযোক্তা মেলিটাসকে জেরা করতে শুরু করেন। মেলিটাস নিজেকে একজন ভালো মানুষ ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক বলে দাবী করত। তিনি মেলিটাসকে প্রশ্ন করেন, "কারা যুবকদের উন্নতি সাধন করেন?" উত্তরে মেলিটাস প্রথমে বিচারকদের কথা বলেন। এরপর ক্রমান্বয়ে প্রশ্নের ফলে চাপের সম্মুখীন হয়ে তিনি বলেন যে, শুধু সক্রেটিস ব্যতীত প্রতিটি এথেন্সবাসী যুবকদের উন্নতিসাধন করে। এর উত্তরে সক্রেটিস নগরবাসীদের তাদের সৌভাগ্যের জন্য অভিনন্দন জানান।



অভিযোগপত্র অনুযায়ী সক্রেটিস শুধু জাতীয় দেব-দেবীকে অস্বীকারই করেননি, বরং নিজ ইচ্ছা অনুসারে নতুন নতুন দেব-দেবীর প্রবর্তনও করেছেন। তাই মেলিটাস বলেন সক্রেটিস একজন পূর্ণ নিরীস্বরবাদী।



(এই লেখাটি সূচনামূলক। পরবর্তিতে পুরো এ্যাপোলজি হুবুহু অনুবাদ করে তুলে দেয়ার চেষ্টা করবো)



(চলবে)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪২

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: ভালো পোষ্ট্

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৯

নাজমুল_হাসান_সোহাগ বলেছেন: চলুক

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:২৫

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: সচল থাকুক সিরিজ।+।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:২৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: +++++++++++++++++

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৫| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: ভালো বিষয়। চলতে থাকুক।

শুভেচ্ছা রইলো... :)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:১১

হাতীর ডিম বলেছেন: পরের পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩২

রমিত বলেছেন: ধন্যবা। পরের পোস্ট দ্রুত দিয়ে দেব আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.