নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৬
মূল বক্তৃতাঃ মহাজ্ঞানী সক্রেটিস
লিখেছেনঃ প্লেটো
অনুবাদঃ ডঃ রমিত আজাদ
(পূর্ব প্রকাশিতের পর থেকে)...
হে বিচারকগণ! আমি চাই, আপনারা আমার সাথে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহন করুন, যেখানে আমি তাঁর (মিলেটাসের) অসঙ্গতি সম্পর্কে ধারণা করছি; আর আপনি মিলেটাস, উত্তর দিবেন। আর শ্রোতাবৃন্দ আমি আপনাদের আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আমার সেই অনুরোধ সম্পর্কে যে, আপনারা অনুগ্রহপূর্বক হইচই করবেন না, যদি আমি আদালতের রীতি অনুযায়ী না বলে আমার স্বভাবসুলভ ধাঁচেই বলি:
মিলেটাস, এমন কেউ কি আছে, যে মানুষের কর্মগুলোর অস্তিত্বে বিশ্বাস করে কিন্তু মানুষের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না? হে এথেন্সবাসীগণ, আমি চাই, তিনি বরাবরের মত হইচইয়ের মধ্যে দিয়ে একটা ইন্টারাপ্শনের অপেক্ষা না করে উত্তর দিন। এমন কেউ কি আছে যে ঘোড়া সংক্রান্ত সব কিছুতে বিশ্বাস করে কিন্তু ঘোড়ায় বিশ্বাস করে না? অথবা বাঁশির সুরে বিশ্বাস করে কিন্তু বাঁশির বাদকে বিশ্বাস করেনা? না বন্ধু; যেহেতু আপনি উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন, অতএব আমি আপনাকে এবং আদালতকে উত্তর দিব। এমন কেউ এই পৃথিবীতে নাই। যাহোক এখন পরবর্তি প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিতে হবে: এমন কেউ কি আছে যে আধ্যাত্মিকতা ও আধ্যাত্মিক প্রতিনিধিত্বে বিশ্বাস করে কিন্তু উপদেবতা (ডেমিগড)-সমূহে বিশ্বাস করেনা?
এমন হতে পারেনা। (মিলেটাস উত্তর দিলেন)
পরিশেষে আদালত আপনার মুখ থেকে উত্তর বের করে আনলো, কি সৌভাগ্যবান আমি! তাহলে অভিযোগপত্রে আপনি দাবী করছেন যে, আমি বিশ্বাস করি ও শিক্ষা দেই আধ্যাত্মিকতায় ও আধ্যাত্মিক প্রতিনিধিত্বে (হোক সে নতুন অথবা পুরাতন তাতে কিছু যায় আসেনা): যেভাবেই হোক আমি আধ্যাত্মিক প্রতিনিধিত্বে বিশ্বাস করি, -- এমনই আপনি বলেছেন আপনার হলফনামায়; এবং এইভাবেই আমি ঐশ্বরিক সত্তায় বিশ্বাস করি, আর যেহেতু আমি ঐশ্বরিক সত্তায় বিশ্বাসই করি সুতরাং আমার পক্ষে উপদেবতায় বিশ্বাস না করা কি সম্ভব? নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি, আমি বিশ্বাস করি, অতএব আমি ধরে নিচ্ছি যে, আপনার মৌনতাই আপনার সম্মতি। এবার আত্মা (spirits) বা উপদেবতা (demigods) কারা? তারা কি দেবতা বা দেবতাদের পুত্ররা নয়?
অবশ্যই তারা তাই।
- সুতরাং, উপদেবতাদের যদি আমি স্বীকার করি, আপনারা যেরকম বলেন, উপদেবতারাও দেবতা, তাহলে বিষয়টা দাঁড়ালো এই যে, যা আমি আগেই বলেছি, আপনি তামাশা করছেন ও ধাঁধাঁ দিচ্ছেন, এই কথা বলে যে, আমি একইসাথে ইশ্বরে বিশ্বাস করি আবার করিনা, কেননা অন্ততপক্ষে উপদেবতাদেরতো আমি স্বীকার করি। অপরপক্ষে, উপদেবতারা যদি পরী বা অন্য কোন সত্তার মায়েদের গর্ভজাত দেবতাদের অবৈধ সন্তান হয়, প্রচলিত রীতি অনুযায়ী এরকমই মনে করা হয়, তাহলে এমন কোন মানুষ আছে যে উপদেবতাদের স্বীকৃতি দেয় কিন্তু দেবতাদের স্বীকৃতি দেয়না? এটা তেমনই হাস্যকর হবে যদি কোন মানুষ ঘোড়া ও গাঁধার সমন্বয়ে যে খচ্চরের জন্ম সেই খচ্চরকে স্বীকৃতি দেয়, কিন্তু ঘোড়া ও গাঁধাকে স্বীকৃতি দেয়না। একেবারেই ননসেন্স! মিলেটাস, সম্ভবত আমাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোটাই আপনার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো। আপনি অভিযোগনামায় পয়েন্টটি এই কারনে অন্তর্ভুক্ত করেছেন যে, আমাকে দোষী সাব্যস্ত করার খাঁটি কোন পয়েন্ট আপনার হাতে ছিলোনা। কিন্তু যার বিন্দুমাত্র বোধশক্তি আছে এমন কেউ আপনার এই কথা কোনদিনই বিশ্বাস করবে না যে, একই মানুষ দৈব ও অলৌকিকতায় বিশ্বাস করে অথচ ইশ্বর, উপদেবতা ও অলৌকিক সত্তায় বিশ্বাস করেনা।
হে বিচারকগণ, মিলেটাস আমার বিরুদ্ধে যেইসব অভিযোগ আনছে, সেইসব অপরাধে আমি অপরাধী নই, আমার মনে হয়না যে এর চাইতে বেশি আর কিছু প্রমান করার প্রয়োজন আছে, এতক্ষণ যা বলেছি সেটাই যথেষ্ট। যে সম্পর্কে আমি শুরুতেই বলেছিলাম, অনেকেরই যে আমার বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্নতা রয়েছে, এটা নির্ভেজাল সত্য। আমার যদি ধ্বংস হয় তবে আমার ধ্বংস ডেকে আনবে, মিলেটাসও নয় এনিটাসও নয়, বরং একটি বিরাট অংশের ঘৃণা ও নিন্দা, যা ইতিপূর্বে অনেক সৎ ব্যক্তিকেই হত্যা করেছে, মনে হয় আরো অনেককেই হত্যা করবে, মনে করবেন না যে, এই জাতীয় হত্যার তালিকায় আমিই সর্বশেষ ব্যক্তি হবো।
অনেকে বলতে পারেনঃ সক্রেটিস, যে কাজ করার জন্য অতঃপর আপনার অকাল মৃত্যু হতে যাচ্ছে, সেইসব কাজ করার জন্য আপনি কি লজ্জ্বিত নন? তাকে আমি ন্যায্যভাবে উত্তর দিবোঃ এখানেই আপনি ভুল করছেন, যে ব্যক্তি মানুষের মঙ্গল সাধনের জন্য মাঠে নেমেছে, তাকে নিহত হবার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতেই হয়, এই নিয়ে তিনি তেমন চিন্তিত নন, তিনি ভাবেন কেবল একটি বিষয় - যা করছেন তা ঠিক করছেন না ভুল করছেন, ভালো মানুষের কর্ম সম্পাদন করছেন না খারাপ মানুষের কর্ম সম্পাদন করছেন। এদিকে, আপনার দৃষ্টিকোন থেকে, ট্রয়ের যুদ্ধে যেসব বীরদের পতন ঘটেছিলো তারা খারাপ, এবং থেটিসের পুত্রও তাদের মধ্যে একজন, যে বিপদের চাইতে মর্যাদাহানীকে বেশি ভয় পেত, এবং যখন তিনি হেকটরকে হত্যা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিলেন, তখন তাঁর দেবী মাতা তাকে বলেছিলেন, "পুত্র আমার, তুমি যদি তোমার বন্ধু পেট্রোক্লাসের হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্যে হেকটরকে হত্যা করো, তবে তুমি নিজেই মারা যাবে।" 'ভাগ্য', দেবী বলেছিলেন এই জাতীয় ভাষায়, "প্রায়ামের পুত্র হেকটরের পর তোমার নিহত হবার পালা", এই সাবধানবাণী শোনার পরেও তিনি বিপদ বা মৃত্যু কোনটিকেই ভয় পেলেন না, বরং বন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ না নিয়ে কাপুরুষের মতো বেঁচে থাকার লজ্জ্বাটাকেই বেশি ভয় পেলেন। 'আমি তৎক্ষণাৎই মরতে চাই', তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, "শত্রু আমাকে হত্যা করুক, এখানে জাহাজের পাশে বসে প্রতীক্ষা করা, বা সকলের বিদ্রুপের পাত্র হয়ে পৃথিবীর একটা বোঝা হওয়ার চাইতে সেটাই ভালো হবে।" সেইসময় একিলিসের কি মৃত্যু ও বিপদ সম্পর্কে কোন চিন্তা ছিলো? হে বিচারকগণ! বাস্তবে এমনই হয় কিন্তু: কোন ব্যক্তি নিজেকে যে অবস্থানে বসিয়েছে, এই ভেবে যে, এটাই তার জন্য সব চাইতে ভালো জায়গা, অথবা তার কমান্ডার তাকে যেখানে বসিয়েছে, সেখানে বসেই তাকে বিপদ মোকাবেলা করতে হবে, না মৃত্যু না অন্য কোন বিপদ কোন কিছুর ভয়ই তার তখন পেলে চলবে না, ভয় যদি পেতেই হয় তবে একটাই ভয়, তা হলো মর্যাদাহানির ভয়। এবং হে বিচারকগণ! এটাই হলো সত্য।
(চলবে)
সক্রেটিসের এ্যাপোলজি - পর্ব ৫ এখানে পাবেন
Click This Link
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
ফেসবুক. বলেছেন: অসাধারন পোস্ট
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩
ব্লকড বলেছেন: চমৎকার কাজে হাত দিয়েছেন।
ভালো লাগা রইল।
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৯
রমিত বলেছেন: পোস্টটি নির্বাচিত পাতায় দেয়ার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।