নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল!

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।

রমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৭

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৩

সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৭



মূল বক্তৃতাঃ মহাজ্ঞানী সক্রেটিস

লিখেছেনঃ প্লেটো



অনুবাদঃ ডঃ রমিত আজাদ




(পূর্ব প্রকাশিতের পর থেকে)...



হে এথেন্সবাসীগণ! (আমি সৈনিক থাকাকালীন অবস্থায়) পতিদাইয়া, এ্যামফিপলিস ও ডেলিয়াম-এ আমার কমান্ডার জেনারেলগণ, আর দশজনার মতোই, আমাকে যেখানে থাকতে আদেশ করেছিলেন, আমি সেখানেই ছিলাম এবং মৃত্যুর মুখোমুখী হয়েছিলাম (অর্থাৎ কর্তব্যকর্মে অবহেলা করিনি) -- এখন আমি এমনটাই জ্ঞান করি ও ধারণা করি যে, ইশ্বর আমাকে দার্শনিকের কর্তব্য, অর্থাৎ নিজের ও অন্যের সম্পর্কে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছেন, এখন যদি আমি মৃত্যুভয়ে কিংবা অন্য কোন ভয়ে আমার এই দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাই, এটা নিঃসন্দেহে একটা অদ্ভুত আচরনটি হবে, এবং আদালতে হয়তো আমাকে কৈফিয়তও দিতে হতে পারে ইশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার অপরাধে, মৃত্যুভয়ে দৈববাণীকে অমান্য করার অপরাধে ও জ্ঞানী নই তারপরেও নিজেকে জ্ঞানী মনে করার অপরাধে। না এমন আমি করবো না, কারণ মৃত্যুকে ভয় করা মানে অজানাকে জানার ভান করা, জ্ঞানী হওয়ার ভান করা, আদতে জ্ঞানী নয়; কারন, কেউতো জানেনা যে মৃত্যু কি, কেউতো জানেনা যে মৃত্যুই সবচাইতে মঙ্গলকর কিনা, অথচ সবাই মৃত্যুকে এমনভাবে ভয় করে যেন, মৃত্যুই সবচাইতে অশুভ। এটা সেই অজ্ঞতা যেখানে মানুষ যা জানেনা তা জানার অহংকার করে, এই অজ্ঞতা কি লজ্জাজনক নয়? এবং আমি মনে করি যে, এই ক্ষেত্রে আমি সাধারণভাবে অন্যদের চাইতে পৃথক, এবং সম্ভবতঃ এই বিষয়ে আমি নিজেকে অন্যদের চাইতে জ্ঞানী বলে দাবী করতে পারি। -- এই বিশ্বজগৎ সম্পর্কে আমি যতটুকুই জানিনা কেন, আমার এমন ধারণা করা ঠিক হবে না যে, আমি কিছু জানিঃ কিন্তু আমি জানি যে ইশ্বর হোক আর মানুষ হোক কারো প্রতি অন্যায় করা ও অবাধ্যতা প্রদর্শন করা, খারাপ ও লজ্জাজনক, এবং মন্দকে গ্রহন নয় বরং আমি কখনোই একটি সম্ভাব্য ভালোকে ভয় পাবো না অথবা তাকে এড়িয়ে যাবো না। অতএব যদি আপনারা যেই এনিটাস বলেছেন যে, সক্রেটিসের আদালতে আসা উচিৎ হয়নাই, আর যেহেতু এসেই গিয়েছেন সেহেতু বিচারপূর্বক তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া উচিৎ, সেই এনিটাস কর্তৃক প্রনোদিত না হয়ে, আমাকে এখন ছেড়ে দিন; এনিটাস ধীরে ধীরে আপনাদের অন্তরে সঞ্চারিত করেছে যে, আমাকে যদি শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে আপনাদের সন্তানেরা আমার কথা শুনে বিপথগামী হয়ে যাবে -- আপনাদের পুত্রগণ আমার বাণী শুনে দারুণভাবে উচ্ছন্নে যাবে - যদি আপনারা বলেন যে, সক্রেটিস এইবারের মতো আমরা এনিটাসের সাথে একমত নই এবং আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি, তবে শর্ত একটি আছে, আপনি এইসব গবেষণা আর করবেন না এবং দর্শন ছেড়ে দেবেন, আর যদি আপনাকে পুনর্বার এই করতে দেখা যায়, তবে মৃত্যুদন্ডই হবে আপনার শাস্তি; -- যদি আপনারা আমাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য এই শর্ত আরোপ করেন, আমি উত্তর দিব: হে এথেন্সবাসীগণ, আমি আপনাদের শ্রদ্ধা করি, আমি আপনাদের ভালোওবাসি, কিন্তু আমি আপনাদের কথা শুনবো না, আমি শুনবো আমার ইশ্বরের কথা। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আমার জীবন ও শক্তি রয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি দর্শন চর্চা ও শিক্ষাদান থেকে বিরত হবো না। , যার সাথেই দেখা হয় না কেন আমি আমার স্বভাবসুলভ পদ্ধতিতে তাকে উৎসাহ প্রদান করে বলি, -- বন্ধু, আপনি -- এথেন্সের মত একটি মহৎ, প্রজ্ঞাবান ও শক্তিধর নগরের নাগরিক, -- আপনি বিশাল পরিমানের অর্থ, খ্যাতি ও যশ পুঁজিভূত করেছেন অথচ প্রজ্ঞা ও সত্য, সততা ও আত্মার (অন্তরের) উন্নয়নের বিষয়ে বিন্দুমাত্রও যত্নবান নন, বিষয়টির দিকে আপনি কোনদিন মনযোগই দেননি, এতে কি আপনি লজ্জিত নন? আর যদি সেই ব্যক্তি যার সাথে আমি তর্ক করছি যদি বলেনঃ হ্যা, আমি বিষয়টির বিষয়ে সচেতন; তখন আমি ছেড়ে দেইনা বা সাথে সাথেই যেতে দেইনা, আমি তাকে জেরা করতে শুরু করি, পরীক্ষা-প্রতিপরীক্ষা করতে শুরু করি, এবং যদি আমি বুঝতে পারি যে তার মধ্যে আসলে কোন সততা নেই, শুধু শুধুই বলছে যে সে সচেতন, মহৎকে অবমূল্যায়ন ও ক্ষুদ্রকে অতিমূল্যায়ন করার জন্য আমি তাকে ভর্ৎসনা করি। এবং আমি একই বিষয়ের পুণরাবৃত্তি করবো প্রতিটি মানুষের সাথে (যার সাথেই আমার দেখা হবে), কি যুবা কি বৃদ্ধ, কি নাগরিক কি বহিরাগত, বিশেষত নাগরিকদের সাথে, যেহেতু তারা আমার ভাই। আপনাদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই, এটাই ইশ্বরের আদেশ; এবং আমি বিশ্বাস করি যে, আমি ইশ্বরের আদেশ পালন করার কারণে রাষ্ট্রের যে অধিকতর কল্যাণ হয়েছে সেরূপ কল্যাণ আর কখনো হয়নি। আমি যা করছি তা আর কিছুই নয় কেবল আপনাদের মধ্যে প্ৰত্যয় জন্মানোর চেষ্টা করা, যার সাথেই দেখা হয়, কি বৃদ্ধ কি যুবা, আপনাদের এই বোঝাতে চাই যে, আপনারা আপনাদের দেহ ও সম্পদের দিকে নজর দেয়ার আগে আপনাদের আত্মার উৎকর্ষসাধনের প্রতি প্রথম যত্নবান হোন। এমনভাবে যত্নবান হোন যেন তা হয় যতদূর সম্ভব উৎকৃষ্ট। আমি আপনাদের এই বলতে চাই যে, পুণ্য (সদ্গুণ) টাকা থেকে আসে না, বরং পুণ্য (সদ্গুণ) থেকেই টাকা আসে। শুধু টাকাই নয়, যেকোন মানবীয় মঙ্গলই পুণ্য (সদ্গুণ) থেকে আসে, তা সে ব্যাক্তি জীবনেই হোক আর সামাজিক জীবনেই হোক। এটাই আমার ডকট্রাইন (শিক্ষা), এবং এই ডকট্রাইন (শিক্ষা) যদি তরুণদের বিপথগামী করে, তাহলে আমি একজন অনিষ্টকারী। আর যদি কেউ বলে যে এটা আমার শিক্ষা নয়, তাহলে সে অসত্য বলছে। অতএব, হে বিচারকগণ! আমি আপনাদের বলছি, আপনারা এনিটাসের প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ করুন অথবা না করুন, এবং আমাকে বেকসুর খালাস দিন অথবা না দিন; অথবা যাই করুন না কেন, মনে রাখবেন, আমি আমার পথ থেকে সরে দাঁড়াবো না, এমনকি এর জন্য যদি আমাকে একাধিকবার মৃত্যুবরণ করতে হয় তারপরেও না।



এথেন্সবাসীগণ! হৈচৈ করবেন না, ইন্টার্আপ্ট করবেন না, শুধু আমার কথা শুনুন; আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছিলো যে, আপনারা আমার কথা শেষ পর্যন্ত শুনবেন: আমার আরো কিছু বলার আছে, যা শুনে আপনারা অঝোরে কেঁদে ফেলতে পারেন, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, আমার কথা শুনলে আপনাদের মঙ্গলই হবে। সুতরাং আমি আপনাদের না কাঁদতে অনুরোধ করছি। আমি আপনাদের জানাতে চাই যে, যদি আপনারা আমার মত একজন মানুষকে হত্যা করেন, তাহলে আমার যে পরিমান ক্ষতি হবে, তার চেয়ে আপনাদের অধিক ক্ষতি হবে। কোন কিছুই আমার ক্ষতি করতে পারবে না, মিলেটাস নয়, এনিটাসও নয়। কারণ একজন ভালো মানুষের ক্ষতি করার ক্ষমতা ঈশ্বর দুষ্টলোককে দেননি। দুষ্টলোক শুধু নিজেদেরই ক্ষতি করতে পারে। আমি অস্বীকার করিনা যে, এনিটাস তার চেয়ে একজন ভালো মানুষকে হত্যা করতে পারে বা তাকে নির্বাসনে পাঠাতে পারে, বা রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে; এবং সে কল্পনা করতে পারে যে, এরূপ করে সে তার যথেষ্ট ক্ষতি করেছে, অন্যেরাও সেরূপ মনে করতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে আমি তাদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করিনা। অন্যায়ভাবে একজনকে হত্যা করে সে নিজের যে পরিমান অকল্যাণ করবে তা নিহত ব্যক্তির অকল্যান থেকে অনেক বেশি।



এবং এখন বিচারকগণ! আপনারা যেমনটা মনে করছেন, আমার আত্মপক্ষ সমর্থন আমার মঙ্গলের জন্য নয়, বরং তা আপনাদের মঙ্গলের জন্যে, যাতে আপনারা আমাকে অভিযুক্ত করে ঈশ্বরের কাছে পাপের ভাগী না হন, কেননা আমি ঈশ্বরের তরফ থেকে আপনাদের জন্য একটি উপহার। আমাকে হত্যা করে আপনারা আমার মত আরেকজনকে খুব সহজে পাবেন না। আমি এখন একটি উদ্ভট কথা বলবো যে, আমি একজন গো-মাছি (gadfly), রাষ্ট্র-যন্ত্রের কাছে আমি ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত একটি উপহার; আর রাষ্ট্রকে এই মুহূর্তে তুলনা করা যায় একটি অশ্বের সাথে যা বৃহৎ ও মহৎ কিন্তু তার আকৃতির কারণে গতিতে শ্লথ, এখন অতীব প্রয়োজন তাকে আন্দোলিত করে দ্রুতগামী করা। এবং আমি হলাম সেই গো-মাছি যাকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন রাষ্ট্র-যন্ত্রের কাছে, এবং সারাদিন সর্বস্থানে আপনাদের সাথে দৃঢ় বন্ধনে রয়েছি এবং আপনাদের প্রত্যেকের মধ্যে প্ৰত্যয় জন্মানোর, প্রত্যেককে ভর্ৎসনা করার ও প্রত্যেককে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।



(চলবে)



সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৬ নীচের লিংকে পাবেন

Click This Link

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৫

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: এই সিরিজটা চলতে থাকুক...। নতুন পর্বের শুভেচ্ছা।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪

রমিত বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫

রমিত বলেছেন: লেখাটিকে নির্বাচিত পাতায় দেয়ার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:০৫

রাতুল_শাহ বলেছেন: শুরু থেকে পড়তে হবে।

আমি সক্রেটিস-প্লেটো-এরিষ্টটলের উপর লেখা একটা বই কিছুদিন থেকে পড়ছি। মনে হয় আপনার লেখা এই সিরিজটাও আমার কাছে বেশ তৃপ্তিকর হবে।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫

রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। সম্ভব হলে আপনার কিছু পড়া আমাদের সাথে শেয়ার করুন।

৪| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:১৪

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: প্রিয়তে নিয়ে গেলাম-----------

১৮ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮

রমিত বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

বোকামন বলেছেন:
চমৎকার লিখছেন ! শুভ কামনা।

১৮ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩৭

রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.