নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল!

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।

রমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৯

২৯ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৫

সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৯



মূল বক্তৃতাঃ মহাজ্ঞানী সক্রেটিস

লিখেছেনঃ প্লেটো



অনুবাদঃ ডঃ রমিত আজাদ (Dr. Ramit Azad)






(পূর্ব প্রকাশিতের পর থেকে)



এখন আপনারা কি সত্যিই কল্পনা করতে পারেন যে, আমি যদি একটি সামাজিক জীবনযাপন করতাম, যেখানে একজন ভালো মানুষের মতো আমি সব সময়ই সত্য ও ন্যায়ের পথে ছিলাম ও সেটাকেই প্রধান কর্তব্য মনে করেছি, তাহলে আমি এই এতগুলো বছর বেঁচে থাকতে পারতাম? অবশ্যই নয়, হে এথেন্সবাসীগণ, না আমি না অন্য কেউ। কিন্ত আমি সব সময়ই আমার কাজে এক পথেই ছিলাম, সেটা সর্বসাধারণের জন্যও ব্যাক্তিসাধারণের জন্যও, আমি কখনোই ন্যায়ের বিপক্ষে কাজ করার জন্য কারো সাথেই সম্মত হইনি, এমনকি তাদের সাথেও না যাদেরকে আমার কুৎসারটনাকারীরা আমার শিষ্য হিসাবে আখ্যা দিয়ে থাকে। আমি কখনো কারো শিক্ষক ছিলাম না, কিন্তু আমার মিশন চলার সময় কেউ যদি আমার কাছে আসতে ও আমার কথা শুনতে ভালোবাসে, সে যুবাই হোক কি বৃদ্ধই হোক, আমি তাকে বাধা দেইনি। আলাপচারিতার জন্যে আমি কখনো কারো কাছ থেকে টাকাও নেইনি, ধনী হোক আর দরিদ্র হোক যে কেউই আমাকে প্রশ্ন করতে পেরেছে, আমার কথা শুনতে পেরেছে; আর তারা ভালো ছিলো কি মন্দ ছিলো, ন্যায়সঙ্গতভাবে আমি তার উত্তর দিতে পারিনা, কারণ তাদের কাউকে আমি কোন জ্ঞান শিক্ষা দেইনাই, শিখানোর অঙ্গীকারও করিনাই। এবং কেউ যদি খাস করে বলে যে, সে আমার কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে এমন কিছু শিখেছে ও শুনেছে যা এই পৃথিবীর কেউই কখনো শোনেনি, আমি বলবো যে তিনি মিথ্যা বলছেন।



এখন আমাকে প্রশ্ন করা হতে পারে, আপনার সাথে কথপোকথন করে মানুষ পুলকিত হয় কেন? এথেন্সবাসীগণ, আমি ইতিমধ্যেই আপনাদের এই বিষয়ের পুরো সত্যটাই বলেছি: তারা আমি জ্ঞানের ভানকারীদের কেমন করে পরীক্ষা করি সেটা দেখতে পছন্দ করে; এর মধ্যে একটা আমোদ আছে। এখন, কোন ব্যক্তিকে পরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব ঈশ্বর আমাকে দিয়েছেন; এবং এটা আমাকে জ্ঞাপন করা হয়েছে দৈববাণীর মাধ্যমে, স্বপ্নের মাধ্যমে, এবং আরো যত রকমভাবে ঈশ্বর কাউকে তা জ্ঞাপন করেছেন সব ভাবেই। হে বিচারকগণ, এটা সত্য, আর শুধু সত্যিই নয় খুব সহজেই প্রমাণসিদ্ধ। আমি যদি যুব সম্প্রদায়কে বিপথেই নিতাম বা নিয়ে থাকি, তাহলে সেই সব ব্যক্তিরা যারা এক সময় যুবা ছিলো এবং এখন বড় হয়েছেন, তারা এই বয়সে এসে সচেতন হতেন এবং বুঝতেন যে এক সময় আমি তাদের কূ-পরামর্শ দিয়েছি, এবং তারা এগিয়ে এসে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেন, এবং প্রতিশোধ নিতেন; আর যদি তারা নিজেরা আসাটা পছন্দ না করতেন, সেই ক্ষেত্রে অন্ততপক্ষে তাদের আত্মীয়রা, বাবা, ভাই অথবা অন্য কোন স্বজনরা এসে বলতেন যে, আমার দ্বারা তাদের পরিবার কতই না ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন তো তাদেরই সময়। তাদের অনেককেই আমি এই মুহূর্তে আদালতে উপস্থিত দেখতে পাচ্ছি। ঐ যে ওখানে আছে ক্রিটো, যিনি আমার সমবয়সী এবং আমার ডেমে-র, এবং তার পুত্র ক্রিটোবুলাসকেও আমি ওখানে দেখতে পাচ্ছি। তারপর স্ফেটাসের লাইসানিয়াস, যিনি আয়েসচিনের পিতা - তিনিও উপস্থিত আছেন; আরও আছেন সেফিসাসের আন্টিফোন যিনি এপিগেনে-এর পিতা; তারপর যারা আমার সাথে ছিলো এখানে তাদের অনেকেরই ভাইয়েরা উপস্থিত আছেন। ওখানে আছে থিওসডোটাইড্স-এর পুত্র নিকোস্ট্র্যাটাস, এবং থিওডটাস-এর ভাই, থিওডটাস নিজে যেহেতু এখন আর বেঁচে নাই, সুতরাং তার পক্ষে আর কোনক্রমেই সম্ভব না নিজের ভাইকে অভিযোগ উত্থাপন থেকে থামিয়ে দেয়া; এবং আরিস্তনের পুত্র আদেইমান্তাস, তার ভাই প্লেটো-ও উপস্থিত আছে; এবং আপোলোডোরাস এর ভাই আয়েন্তোদোরাস-কেও এখানে দেখতে পাচ্ছি। আমি খ্যাতিমান আরো অনেকের নামই উল্লেখ করতে পারি, যাদেরকে সাক্ষি হিসাবে এখানে হাজির করা মিলেটাসের উচিৎ ছিলো; এবং তাই তিনি করুন, যদি তিনি ভুলে গিয়ে থাকেন -- আমি উনার জন্য পথ তৈরী করে দেবো। এবং তাকে বলতে দিন, যদি তার স্বপক্ষে কোন স্বাক্ষ্য-প্রমাণ থাকে। তাতো নয়ই, হে এথেন্সবাসিগণ বরং উল্টোটাই সত্য। মিলেটাস ও এনিটাস আমাকে দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যা দিয়েছেন, আর ঐ সব লোকজন সবাই আসলে সেই দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাক্ষ্য দিতেই প্রস্তুত রয়েছেন; শুধু যে বিপথগামী তরুণেরা তা নয় -- সেখানে কোন একটা মোটিভেশন থাকলেও থাকতে পারে -- কিন্তি তাদের অবিপথগামী অগ্রজ আত্মীয়-স্বজনরাও আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিবেন। এবার বলুন, তারাও কেন আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিবেন? এই কারণে যে, তারা সত্য ও ন্যায়ের স্বার্থে এটা করবেন, এবং এই কারণে যে তারা জানেন যে আমি সত্য বলছি, আর মিলেটাস বলছে মিথ্যা।





ঠিকআছে, এথেন্সবাসীগণ, এটা এবং এর মতো আরো বক্তব্যগুলো হলো আমার পক্ষসমর্থনমূলক যা আমি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পেরেছি, আমি মনে করি যে এটাই যথেস্ট। তারপরেও আরো একটি কথা। খুব সম্ভবত এখানে এমন কেউ থাকতে পারে যে আমার কথা শুনে রাগান্বিত হতে পারে, সে একটু মনে করুক সে নিজে সমজাতীয় এমনকি এর চাইতেও গুরুতর মোকদ্দমায়, আদালতে এসে বিচারকদের সামনে চোখের জল ফেলে কত ভাবেই না প্রার্থনা ও অনুনয়-বিনয় করেছে, বিচারকদের অনুকম্পা পাওয়ার জন্য তার সন্তানদের আদালতে উপস্থিত করেছে, যা মূলত ছিলো আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের অংশগ্রহনে একটি সাজানো নাটক; পক্ষান্তরে আমি, যে কিনা খুব সম্ভবত জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছি, এমন কোন কিছুই করবো না।

সে ঠিক উল্টোটা ভাবতে পারে, এবং সে আমার বিরূদ্ধ মনোভাব পূর্ব-নির্ধারিত করে এখানে বসতে পারে, এবং ক্রোধবশতঃ হয়ে আমার বিরূদ্ধে ভোট দিতে পারে কারণ সে আমার উপর অসন্তুষ্ট। এখন, আমি বলছি না যে আপনাদের মধ্যে এমন লোক আছেই, -- মনে রাখবেন, আমি বলছি যদি এমন কেউ থেকে থাকে, আমি তাকে সুন্দরভাবে ও যুক্তিযুক্তভাবে উত্তর দিব: বন্ধু, আমি কাঠ-পাথরের তৈরী নই, আর দশজনার মতোই আমিও একজন রক্ত-মাংসের মানুষ, যেমনটি হোমার বলেছিলেন; এবং আমার একটি পরিবার রয়েছে, হ্যাঁ, আমার পুত্ররাও রয়েছে, হে বিচারকগণ! তারা তিনজন, একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষ, আর বাকী দুজন এখনো যুবক; তারপরেও মার্জনা চেয়ে বেকসুর খালাস পাওয়ার উদ্দেশ্যে আমি তাদেরকে এখানে নিয়ে আসবো না। কেন নয়? কোন আত্মসাম্মুখ্য থেকে নয় বা আপনাদের শ্রদ্ধা পাওয়ার উদ্দেশ্যেও নয়। আমি মৃত্যুকে ভয় করি কি করিনা সেটাও ভিন্নকথা, এ সম্পর্কে এখন আমি কিছু বলবো না। কিন্তু জনতার মতামতকে বিবেচনায় এনে আমি বলবো, আমি এমন কিছু করলে সেটা আমার জন্য অমর্যাদাকর হবে, আপনাদের জন্যও হবে, পুরো রাষ্ট্রের জন্যও হবে। যার কথা আমার কান পর্যন্ত পৌঁছেছে, এবং প্রজ্ঞার জন্য যার সুনাম রয়েছে, তার উচিৎ হবেনা নিজেকে ছোট করা। আমার মতামতটি গ্রহনযোগ্য হবে কি হবে না জানিনা, তবে জগতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সক্রেটিস অন্যদের চাইতে শ্রেয়। এবং আপনাদের মধ্যে যাদেরকে প্রজ্ঞা এবং সাহস ও অন্য কোন গুনের ভিত্তিতে শ্রেয় মনে করা হয়, তারা যদি নিজেদের এভাবে ছোট করে, এটা কি লজ্জ্বাজনকই না হবে! আমি অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিদের দেখেছি যে, যখন তারা অভিযুক্ত হয়েছে, কি অদ্ভুত আচরণই না তারা করছে: তাদের দেখে মনে হচ্ছিলো যেন তারা মৃত্যুর পর এক ভয়ঙ্কর দুর্ভোগে পতিত হবে, এবং যদি আপনারা তাকে মৃত্যুদন্ড না দেন তবে তারা অনন্তকাল বেঁচে থাকবে; এবং আমি মনে করি যে, এটা রাষ্ট্রের জন্য অবমাননাকর, আর যদি বিদেশী কেউ এটা প্রত্যক্ষ করতো তবে সে বলতো যে, এথেন্সে এসে দেখলাম যে এথেন্সের সর্বাধিক খ্যাতিমান ব্যাক্তিবর্গ, যাদেরকে এথেন্সবাসীগণ প্রচুর সম্মান দিয়ে থাকে, তারা মেয়েমানুষের চাইতে উত্তম নয়। এবং আমি বলছি যে, আমরা যাদের সুখ্যাতি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এমনটি হওয়া উচিৎ নয়; আর তারা যদি তা করে, আপনাদের (বিচারকগণের) উচিৎ হবেনা এটার অনুমতি দেয়া; উল্টো আপনাদের উচিৎ হবে যে ব্যাক্তি এই জাতীয় অশ্রুসিক্ত নয়নে বেদনাপূর্ণ দৃশ্যের সৃষ্টি করে নগরীকে হাস্যকর অবস্থায় নিয়ে যায় তাকে, যে ব্যাক্তি ধীর-স্থিরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে তার চাইতে বেশী অভিযুক্ত করা ।





লোকে কি বলবে সেটা না হয় বাদই দিলাম, আমি মনে করি বিচারকের অনুকম্পা ভিক্ষা করে বেকসুর খালাস চাওয়াটা কখনোই সঠিক নয়, বরং যা করা উচিৎ তা হলো যুক্তি-প্রমাণ দিয়ে বিচারকদের উপলব্ধি করানো। বিচারককে ঐ আসনে এইজন্য বসানো হয়নি যে, তিনি যে অনুকম্পা চাইবে তাকেই ক্ষমা করে দেবেন, বরং বিচারকের দায়িত্ব আইনের ভিত্তিতে বিচার করা, এই শপথ নিয়েই তিনি বিচারকের আসনে বসেছেন, নিজের খেয়াল-খুশী মতো রায় দেয়ার জন্য নয়; এবং আমাদের উচিৎ হবেনা আপনাদের (বিচারকদের) প্রণোদিত করা, অনুরূপভাবে আপনাদেরও উচিৎ হবেনা প্রণোদিত হওয়া, এতে শপথভঙ্গ হবে, এতে কোন পুণ্য থাকতে পারেনা। আমাকে অনুগ্রহপূর্বক সেই কাজ করতে বলবেন না, যাকে আমি মনে করি অসম্মানজনক, অধর্ম এবং ভুল, বিশেষতঃ এখন, যখন মিলেটাসের অভিযোগের ভিত্তিতে অভক্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করে আমাকে বিচারকের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। হে বিচারকগণ! অনুনয় ও প্রার্থনা-র বলে আমি যদি আপনাদের শপথের বলকে বশীভূত করে ফেলি, তাহলে এটা দাঁড়াবে এমন যে আমি আপনাদের এই বিশ্বাস করতে শিক্ষা দিচ্ছি যে, ঈশ্বর নেই, অর্থাৎ নিজেকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে উল্টো আমার বিরূদ্ধে আনিত নাস্তিকতার অভিযোগকেই সমর্থন করে ফেলবো। কিন্তু তা তো নয় -- বরং উল্টোটা। হে বিচারকগণ! আমি বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বর আছেন, এবং এক অর্থে আমার এই বিশ্বাস আমার অভিযোক্তাদের চাইতেও অনেক অনেক বেশি দৃঢ়। এবং আপনাদের ও আমার ঈশ্বরকে বলছি, আমার বিচার করুন, এমন বিচার যা আপনাদের ও আমার সকলের জন্যই হবে সর্বত্তোম।

(চলবে)





সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৮



নিচের লিংকে পাবেন

Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৬

রমিত বলেছেন: সক্রেটিসের এ্যাপোলজি – পর্ব ৮

নিচের লিংকে পাবেন
Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.