নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
ছোটবেলায় ইতিহাস বইয়ে একটা ঘটনা পড়েছিলাম। আমাদের দেশে একজন বীর পুরুষ ছিলেন, উনার নাম ঈসা খাঁ। মোগল সম্রাটদের মধ্যে সব চাইতে কির্তীমান বলে যাকে ধরা হয় সেই জালালউদ্দীন আকবর বশ্যতা স্বীকার করে খাঁজনা দিতে আদেশ দিলেন ঈসা খাঁ-কে। বরাবরই স্বাধীনচেতা বাংলার নেতা ঈসা খাঁ সেই আদেশে সাড়া তো দিলেনই না উল্টা যুদ্ধ ঘোষণা বসলেন। ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠলেন সম্রাট আকবর। তাঁর পিতামহ সম্রাট বাবরও বাঙালীর স্বাধীনচেতা মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করেছিলান। ভাবখানা ছিলো এমন যে, তাকে খাঁজনা দিলেই ভালো, আর তাকে খাঁজনা না দিলেই খারাপ। বাংলার নেতাকে শায়েস্তা করার জন্য আকবর পাঠালেন তার সর্বাধিক বিশ্বাসভাজন রাজপুত সেনাপতি মানসিংহকে। বিশাল সৈন্যদল নিয়ে বাংলায় হামলা চালালো বাহাদুর সেনাপতি মানসিংহ। বাংলার মানুষও লেজ গুটিয়ে পালানোর নয়, বীরের বেশে অস্ত্র ধারণ করে প্রতিরোধ গড়ে তুললো ঈসা খাঁ-র নেতৃত্বে। ঢাকার অদূরে কাপাসিয়ার কাছাকাছি মুখোমুখী হলেন তারা। এপাশ থেকে রাজপুত মানসিংহ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ করছেন ঈসা খাঁ-কে। কখন বেজে ওঠে যুদ্ধের ধ্বনি। কোন ধ্বনি ছাড়াই ধীর পায়ে মানসিংহের দিকে এগিয়ে আসেন অসাধারণ বীর ঈসা খাঁ। ঠিক কি বলবেন তাঁকে, আঁচ করতে চাইলেন মানসিংহ। কাছে এসে ঈসা খাঁ বললেন, "বিবাদ আপনার আর আমার মধ্যে তাই তো?" "জ্বী" স্বিকার করে নিলেন আকবরের দুর্ধর্ষ সেনাপতি মানসিংহ। "তাহলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এই লড়াইয়ে দরিদ্র সৈন্যরা প্রাণ দেবে কেন?" "আপনি কি বলতে চান", অনেকটাই বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করলেন মানসিনংহ। "আমি প্রস্তাব করছি, কোন ব্যাপক রক্তপাত নয়। আপনি যদি বীর হয়ে থাকেন, আমি আপনাকে মল্লযুদ্ধে আহ্বান করছি। আমাদের দুজনার মধ্যে যে জিতবে, জয় হবে তার। আপনার ভারতীয় সৈন্যরা ও আমার বাঙালী সৈন্যরা প্রত্যক্ষ করবে এই মল্লযুদ্ধ। যদি আপনি জয়লাভ করেন আমি আপনাদের বশ্যতা স্বীকার করবো। আর যদি আপনি পরাজিত হন, আপনি ফিরে যাবেন ফতেপুর সিক্রিতে। আমাদের স্বাধীনতা অটুট থাকবে।" কথাগুলো হজম করতে কষ্ট হলো মানসিংহের। এ পর্যন্ত কোন যুদ্ধে পরাজয় হয়নি তার। আকবরের বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পিছনে তারও ভূমিকা রয়েছে। ঈসা খাঁ-র প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা তাঁর জন্য হবে কাপুরুষোচিত, 'রাজপুত মরদ হ্যায়' এটা তারা নিজেরাই বলে থাকে। "আমি রাজী" গমগমে কন্ঠে বললেন মানসিংহ। শুরু হলে মল্লযুদ্ধ, চরম উৎকন্ঠা নিয়ে সেই যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করছে দুদল সৈন্য। ঢাকার অদূরে সেই ময়দানে একদিকে দাঁড়িয়ে আছে ভারতীয় সৈন্যদল আরেকদিকে বাঙালী সৈন্যদল। তাদের ঠিক মাঝখানে চলছে মল্লযুদ্ধ। তরবারীর ঝনঝন আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। বুক ঢিপ ঢিপ করছে সকলেরই, কে হারে কে জেতে? হঠাৎ ঝন-ঝনাৎ একটা শব্দ হলো। দ্বি-খন্ডিত হয়ে গিয়েছে প্রতাপশালী সম্রাট আকবরের রাজপুত সেনাপতি মানসিংহের তরবারী। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। অপেক্ষা করছেন, অপেক্ষা মৃত্যুর। যেকোন মুহুর্তেই তরবারীর এক আঘাতে মানসিংহের মস্তক ছিন্ন করতে পারেন তিনি। কিন্তু না ঈসা খাঁ কিছুই করলেন না। "আপনি আমাকে আঘাত করছেন না কেন।" কম্পিত ও বিস্মিত কন্ঠে প্রশ্ন করলেন মানসিংহ। "এই মুহুর্তে আপনি অস্ত্রহীন। নিরস্ত্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন বীর পুরুষের ধর্ম নয়। এই নিন আপনি আমার তরবারী। আমি আরেকটি তরবারী নিচ্ছি, আবার শুরু করি লড়াই।" বললেন বীর ঈসা খাঁ। মানসিংহ আর যাই হোক বীরের মর্যাদা দিতে জানতেন। "না। আর লড়াই হবে না। আমি হার মেনে নিলাম। ফিরে যাবো আমি ফতেপুর সিক্রিতে।"
এই ইতিহাসটি সেই ছোটবেলায় আমার মনে খুব দাগ কেটেছিলো। সত্যিই বীর সেইই যে নিরস্ত্র, অসহায়, দুর্বলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেনা। আর কাপুরুষ সেইই যে সুযোগ পেলেই নিরস্ত্র, অসহায়, দুর্বলের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালে যেমন কাপুরুষ হানাদাররা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো নিরস্ত্র ঘুমন্ত ঢাকাবাসীর উপরে, সীমান্তে যেমন গুলি চালিয়েছিলো কিশোরী ফেলানীর বুকে, আজ যেমন গাজায় মুহুর্মুহু বিমান হামলা চালাচ্ছে নিস্পাপ শিশুদের বুকে।
১৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭
রমিত বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮
রমিত বলেছেন: লেখাটি নির্বাচিত পাতায় দেয়ার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
৩| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬
সাইকো দি গ্রেট বলেছেন: সেইরকম লাগলো
১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:০৫
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৪| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২০
আলম 1 বলেছেন: লেখাটি নির্বাচিত পাতায় দেয়ার জন্য সামু কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
হায় হুতাশ না করে ফিলিস্তিন / ইস্রায়েল মধ্যে শান্তির লক্ষ্য যেটা দরকারী ,অনুগ্রহ করে সেটা করেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক ।
২০ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩
রমিত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
৫| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৩৮
ফা হিম বলেছেন: মাঝে মাঝে অবাক লাগে। কি ছিলেম আমরা, আর এখন কি হয়ে গেছি!!
২০ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭
রমিত বলেছেন: আমিও তাই ভাবি। তবে আমাদের মনোবল ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
ধন্যবাদ।
৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: সত্যিই বীর সেইই যে নিরস্ত্র, অসহায়, দুর্বলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেনা। আর কাপুরুষ সেইই যে সুযোগ পেলেই নিরস্ত্র, অসহায়, দুর্বলের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।
২০ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৯
রমিত বলেছেন: জ্বী।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮
তানভীর এফ আখতার বলেছেন: মুগ্ধ!
২০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:০০
রমিত বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৮| ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৫৩
আহসানের ব্লগ বলেছেন:
২০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:০১
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯
শাহাদাত হোসেন বলেছেন: আপনার ইতিহাসের বাস্তব গল্পটা খুব ভালো লেগেছে।