নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল!

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।

রমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি দুঃখের গল্প ও কিছু কথা

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৪

একটি দুঃখের গল্প ও কিছু কথা

------------------------ ড. রমিত আজাদ



২০০৭ সালের কোন এক মাসের ঘটনা। তার কয়েকমাস আগে আমি মোটা টাকার বিদেশী চাকুরী ছেড়ে দেশে ফিরেছি। উদ্দেশ্য - দেশের শিক্ষায় অবদান রাখার চেষ্টা করবো। একদিকে দেশমাতৃকাকে নিয়ে চোখে তখন অনেক রঙিন স্বপ্ন, আরেকদিকে বহুবছর পর দেশে ফেরার কারণে দেশটাকে নতুন করে তখনও বুঝে উঠতে পারিনি। ঢাকার ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি তখন সহকারী অধ্যাপক। গণিত বিষয়ক একটি প্রতিযোগিতামুলক অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম বিচারকদের একজন, অনেকের মধ্যে আরো ছিলেন একজন প্রবীন অধ্যাপক (ও সেলিব্রেটি) । প্রতিযোগিতার আয়োজকদের আমন্ত্রণে তিনি এসেছিলেন। উনার দুয়েকটা লেখা আমি ছোটবেলায় পড়ে অভিভূত হয়েছিলাম। তাই উনার প্রতি কিছুটা দুর্বলতাও তখন ছিলো। প্রতিযোগিতা শেষে আমরা নবীন-প্রবীন অধ্যাপকরা সব একজায়গায় বসলাম চা-চক্র ও আলাপ-আলোচনার জন্য। আমি উনার কাছেই বসেছিলাম। নানা কথাবার্তা হচ্ছিলো। তিনি ঠাট্টা করে বললেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকারে নানা পেশার লোক নিলো, শিক্ষকদের কাউকে তো নিলো না!" আমি হেসে বললাম, "স্যার, শিক্ষকরা বোধহয় সুযোগ পেলেই লেকচার দেয় আর ক্লাস নেয়া শুরু করে দেয় তাই।" আমার কথা শুনে সবাই হেসে ফেললেন। তারপর দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কথা উঠলো আমরা সবাই কমবেশি চলমান শিক্ষাব্যবস্থার দোষ-ত্রুটি তুলে ধরালাম। তিনি হঠাৎ বললেন, "আমরা একটা নতুন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবো, এর নাম হবে সৃজনশীল।" আমি প্রশ্ন করলাম, "এর ফলে কি হবে বলে আপনি মনে করেন?" তিনি বললেন, " সব দোষ সিস্টেমের, সিস্টেম পাল্টে ফেললেই শিক্ষার মান উন্নয়ন শুরু হবে।" আমি বললাম, "স্যার, ইউথ ডিউ রেসপেক্ট টু ইওর অপিনিয়ন, আমি আপনার সাথে এক মত হতে পারলাম না। সিস্টেম একটা ফ্যাক্টর বটে তবে ভালো শিক্ষার প্রথম শর্তই হলো ভালো শিক্ষক। আপনি যতদিন ভালো শিক্ষক না দিতে পারবেন ততোদিন ভালো শিক্ষাদান সম্ভব নয়।" তিনি আমার কথা এড়ানোর চেষ্টা করলেন। আবারো প্রস্তাবিত নতুন পদ্ধতির উপকারিতার কথা বলতে শুরু করলেন। আমি আবারো বললাম, "আপনার এই নতুন পদ্ধতিটি পড়াবে কে? ভালো শিক্ষক না হলে কোন সিস্টেমই কাজ করবে না।" তিনি নাখোশ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "কাজ করবে।" আমি বললাম, "এইভাবে ভালো শিক্ষকবিহীন নতুন পদ্ধতি চালু হলে ছাত্ররা সমানে ফেল করবে।" তিনি বললেন,"প্রথমে দুয়েক বৎসর ফেল করবে তারপর ঠিক হয়ে যাবে।" আমি ভাবলাম, 'এ কেমন কথা! প্রথম দুয়েক বৎসর যে ছাত্ররা ফেল করবে তাদের জীবনের কি কোন মূল্য নেই?' বললাম, "দুয়েক বৎসর পর কিভাবে ভালো হবে, বাতাসে? ভালো শিক্ষক ছাড়াই?" এরপর পাশ থেকে আরেকজন প্রবীন অধ্যাপক আমাকে সমর্থন করে বললেন, "না, ভালো শিক্ষক ছাড়া ভালো শিক্ষাদান সম্ভব না।" এরপর সবাই চুপ হয়ে গেলো।



সিস্টেমটি চালু হওয়ার আগেই আমি তার প্রয়োগজনিত ত্রুটি ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আমার কথা আমলে নেয়া হয়নি। এখন কি হলো? 'ফ্রাংকেনস্টাইন হিটস ব্যাক'। ইন্ট্রোডিউসার নিজেই দুঃখ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন।



আবারো উচ্চকন্ঠে বলতে চাই, 'হিউম্যান রিসোর্স ইজ দ্যা বেস্ট রিসোর্স'। দেশ ও জাতির উন্নয়নে গড়ে তুলতে হবে দক্ষ জনশক্তি। যে জনসংখ্যাকে আমরা সমস্যা বলছি তা কোনক্রমেই সমস্যা নয় বরং আশির্বাদ। সেই জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। সেই মহান কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন যে শিক্ষকরা তাদের কথাই ভাবতে হবে সর্বাগ্রে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৩

সোহানী বলেছেন: সহমত। শিক্ষক যদি সঠিক না হয় তাহলে শিক্ষা কিভাবে হবে? আর শিক্ষককে পিপার/বিষাক্ত গ্যাস স্প্রে করবেন বেতনের কথা বললে তাহলে তারা সঠিক শিক্ষা কিভাবে দিবে ????

আসলেতো গোড়াতেই আমাদের গলদ... কিছু না ভেবেই গিনিপিগ বানাই.. আবার কিছুদিন পরপর নতুন তত্ব প্রয়োগ আবার গিনিপিগের খোজঁ...... লং চিন্তা ভাবনা কি জিনিস তা ভুলেই গেছি যেন।

ধন্যবাদ অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে লিখার জন্য। আসলে দেখুন শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কারো যেন মাথাব্যাথা নেই........

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২১

রমিত বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৬

আজমান আন্দালিব বলেছেন: সৃজনশীল নামক ফ্রাঙ্কেস্টাইন শিক্ষা ব্যবস্থার বারটা বাজাচ্ছে। লেখার সাথে সহমত। :

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২১

রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫

খালেদা আকতার বলেছেন: যে জনসংখ্যাকে আমরা সমস্যা বলছি তা কোনক্রমেই সমস্যা নয় বরং আশির্বাদ। সেই জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। সেই মহান কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন যে শিক্ষকরা তাদের কথাই ভাবতে হবে সর্বাগ্রে।

সহমত!

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০১

রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫২

ডি মুন বলেছেন: সিস্টেম একটা ফ্যাক্টর বটে তবে ভালো শিক্ষার প্রথম শর্তই হলো ভালো শিক্ষক।

পূর্ণ সহমত জ্ঞাপন করছি। শিক্ষকদের মানোন্নয়নে কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত আগে তারপর অন্যকিছু।

ধন্যবাদ।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪

রমিত বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ

৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৪

কলমের কালি শেষ বলেছেন: আগেরকালে সমাজে সবচেয়ে গুণীজ্ঞানী লোকেরা শিক্ষক হত নিজ ইচ্ছেতেই । আর এখন হয় পয়সা কামানোর ধান্দাতে গুনজ্ঞান তো দূরের কথা ।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৬

রমিত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৫

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: সিস্টেম একটা ফ্যাক্টর বটে তবে ভালো শিক্ষার প্রথম শর্তই হলো ভালো শিক্ষক। আপনি যতদিন ভালো শিক্ষক না দিতে পারবেন ততোদিন ভালো শিক্ষাদান সম্ভব নয়।"

১০০% সহমত


প্লাস

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০

রমিত বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৮

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
রমিত,
কথায় চিড়ে আর ভিজছে না ...

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৭

রমিত বলেছেন: তাইতো মনে হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.