নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
হ ম এরশাদ-এর শাসনামল -৮: (কুখ্যাত লালদীঘি ময়দান হত্যাকান্ড)
------------------------------------------------ ড রমিত আজাদ
ঘটনা ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারীর। বাংলাদেশে তখন চলছিলো হ ম এরশাদের শাসনামল, যাকে আমরা স্বৈরাচারী শাসনামল বলতাম। সেই সময় এই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি তদানিন্তন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী-র গাড়িবহরে ও নিরস্ত্র জনতার উপর পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে সৃষ্টি হয় কলংকজনক এ ইতিহাস। নিহত হয় ২৪ জন, আহত হন কমপক্ষে দু’শতাধিক মানুষ।
আহত-নিহতদের মধ্যে ছিল ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী এবং সাধারণ জনতা। ইতিহাসের এই নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নির্বিশেষে সকলকে সেদিন নগরীর অভয়মিত্র মহাশ্মশানে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পুলিশের কড়া প্রহরার মধ্যে শ্মশানের ডোমদের নিহতদের পুড়য়ে ফেলতে বাধ্য করা হয়।
২৪ জানুয়ারির কলংকজনক ঘটনা নিয়ে ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা: প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি’ নামে একটি বই লিখেছেন চট্টগ্রামের সাংবাদিক নিরুপম দাশগুপ্ত।
নৃশংস এ ঘটনা ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে নিরুপম দাশগুপ্ত বলেন, সেদিনের হত্যাযজ্ঞ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বারুদ ঢেলেছিল। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র, পতন হয় স্বৈরাচারের।
`চট্টগ্রাম গণহত্যা: প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি` শীর্ষক বইটিতে প্রত্যক্ষদর্শী বিভিন্নজনের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে সেদিনের ভয়াবহ পরিস্থিতি, যে বইটি ইতোমধ্যে নিষ্ঠুর ওই গণহত্যার প্রামাণ্য দলিল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বিকেলে চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘি ময়দানে তৎকালীন ৮ দলীয় ঐক্যজোটের একটি পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মাননীয় আওয়ামীলীগ সভানেত্রী-র উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ওইদিন সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা থেকে বিমানযোগে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আসেন। এরপর দুপুর ১টার দিকে কয়েক হাজার মানুষের মিছিল নিয়ে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী-র গাড়ীর বহর নগরীর কোতোয়ালী থানার কাছে পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের সামনের সড়ক অতিক্রমকালে পুলিশ নির্বিচারে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর হামলে পড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতাড়ি চালাতে থাকে গুলি, টিয়ারগ্যাস। সাথে বেপরোয়া লাঠিচার্জ।
জনতা মানব জাল তৈরী করে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী-কে রক্ষা করে আইনজীবী ভবনে নিয়ে যান। সেদিন আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর সঙ্গে ছিলেন অনেক কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা।
২০০৪ সালের ৮ আগস্ট আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল আদালতে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, `আমরা দল বেঁধে আদালত ভবন থেকে রেজিস্ট্রি ভবনের সামনে পৌঁছার পর দেখি হিংস্র পুলিশের আক্রমণে অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়ে পড়ে আছে। সাধারণ মানুষ প্রাণরক্ষা ও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাগলের মত ছোটাছুটি করছে।
২০০০ সালের ২১ মে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত`র কাছ থেকে নেয়া একটি সাক্ষাৎকার ছাপানো হয় বইটির ২৮ থেকে ৩২ পৃষ্ঠায়। তিনি বলেন, `চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টেলিফোন করে জানা গেল, গুলিবিদ্ধ বহু লাশ ও আহত ব্যক্তিকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে এবং আরও অনেক মৃতদেহ ও আহত মানুষ শহরের বিভিন্ন স্থানে তখনও পড়ে আছে।
সে সময় চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ছিলেন মীর্জা রকিবুল হুদা। সে সময়কার পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো যে, তিনি ওয়ারলেস সেটে নির্দেশ দিচ্ছিলেন, "শোয়াইয়া ফ্যাল, হামাইয়া ফ্যাল, গুলি কইরা হাসপাতাল ভরাইয়া ফ্যাল।"
গোল্ডফিশ মেমোরির বাংলাদেশীদের কাছে অনেক ঘটনার মত এরশাদের শাসনামলে সংঘটিত এই রোমহর্ষক ঘটনাটিও মুছে যেতে শুরু করেছে। আর নতুন প্রজন্ম সম্ভবত এটা জানেই না। বয়সের ভারে এরশাদ আজ নুয়ে পড়েছেন হয়তো, কিন্তু তাঁর এই অতীত অপকর্মগুলো কি মুছে যেতে পারে?
২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২১
আজকের বাকের ভাই বলেছেন: ইহাই রাজনীতি!
৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
বয়সের ভারে এরশাদ আজ নুয়ে পড়েছেন হয়তো, কিন্তু তাঁর এই অতীত অপকর্মগুলো কি মুছে যেতে পারে?
নাঃ পারে না।
এর জন্যই এরশাদকে দেখলে ঘৃনায় মানুষ কথা বলে।
যাকে ইহজ়ীবনেই নরকবাস বলে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৯
সামুরাই_কাতানা বলেছেন: সেই দিনের সাথে আজ বর্তমানে অনেক চিত্র মিলে যায়। আর সেইদিনের সৈর শাসকের সাথে আজ হাসিনা হাত মিলিয়ে নিজে সৈর শাসক হয়েছে। এরশাদ সাহেব বয়সের ভারে সব ভুলে গেলেও হাসিনা কি করে ভুললো ?