নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল!

রমিত

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।

রমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিল্লী কা লাড্ডু - পর্ব ৯

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৭

দিল্লী কা লাড্ডু - পর্ব ৯
--------------------------- রমিত আজাদ




(পূর্ব প্রকাশিতের পর থেকে)

হাসান: দিল্লীতে ক্যাসিনো আছে?
সুনিতা: হঠাৎ ক্যাসিনো-র কথা মনে হলো কেন তোমার? ওহ! তোমরা ব্যবসায়ীরা তো আবার ক্যাসিনো, নাইটক্লাব এগুলোর খুব ভক্ত!
এই বলে খিল খিল করে হাসতে লাগলো রূপসী সুনিতা। তার রূপের জেল্লায় তখন আলোকিত পুরো ম্যাকডোনাল্ডস্!

অপ্সরা হলো মেঘ এবং জল থেকে উদ্ভুত নারী আত্মা। সংস্কৃত শব্দ অপ্ ( বাংলা অর্থ জল বা পানি) হতে এদের উৎপত্তি তাই এদের অপ্সরা বলা হয়। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী অপ্সরাদের সংখ্যা নাকি মোটামুটি ৬০ কোটি। সেই ষাট কোটির একজন বোধহয় স্বর্গলোক থেকে এই ধরায় নেমে এসেছে!


(ছবি আকাশজাল থেকে নেয়া)

ক্যাসিনোর কথা হাসান প্রথম পড়েছিলো সত্যজিত রায়ের ফেলুদায়। 'যত কান্ড কাটমান্ডুতে' নামক গোয়েন্দা উপন্যাসটিতে। জ্যাকপট, রুলেট, আরো কত কি! স্কুল জীবনে পড়া বই। তাই মাথায় তত ঢোকেনি। যতদূর বুঝেছিলো এগুলো এক ধরনের বিলাসী জুয়াখেলা। ছেলেবেলায় সে দেখতো যে, মুরুব্বীরা তাস খেলা পছন্দ করে না। ছোটদের হাতে তাস দেখলে আর রক্ষা নেই! বকাঝকা তো আছেই, মারও কপালে জুটে যেতে পারে! আবার দেখতো তরুণ-রা ঘরোয়া পরিবেশেই তাস খেলছে! হাসানের ছোট চাচা তখন তরুণ ছিলেন, তিনি ছুটির দিনে তার শয়নকক্ষেই বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দেদারসে তাস খেলে যাচ্ছেন। তাদের হাসিঠাট্টা তামাশার শব্দে ঘর ভরে উঠতো। হাসানের মা আবার মাঝে মাঝে তাদেরকে চা-নাস্তা পৌছে দিতেন! হাসান তখন ভাবতো যে, এই শুনি তাস খেলা খারাপ, আবার এই দেখি তাস খেলা ভালো; ব্যাপার-স্যাপার কি? তারপর তার কাজিন বড় ভাই তাকে বুঝিয়েছিলো যে, তাস খেলা খারাপ কিছু নয়, তবে জুয়া খেলা খারাপ। তাস তো ব্রেইনের খেলা! এক ধরনের গণিত। যে যত বুদ্ধিমান সে ঐ খেলায় তত ভালো করবে। হাসান বুঝতে চেয়েছিলো যে, জুয়া মানে কি? তাসের সাথে জুয়ার কি কোন সম্পর্ক আছে? বড় ভাই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, জুয়া মানে টাকা দিয়ে খেলা। টাকা পবিত্র কিছু, যা শ্রম ও মেধা খাটিয়ে উপার্জন করতে হয়। কিন্তু জুয়া হলো এমন একটা খেলা, যা লাভ বা লোকশানের মধ্যে ঝুলন্ত থাকে। সেখানে মেধা খাটানোর কিছু নেই, জাস্ট সৌভাগা-অভাগার ব্যাপার। শিশু হাসান প্রশ্ন করেছিলো যে, ধরেন আমি জুয়া খেললাম, আর আমার সৌভাগ্যের দ্বার খুলে গেলো আর আমি অনেক টাকার মালিক হয়ে গেলাম! বড় ভাই হেসে বলেছিলেন, "আরে মূর্খ, অভাগারা অভাগাই থেকে যায়, অভাগাদের ভাগ্যে ভালো কিছু কখনো-ই জোটে না।" কথাটা হাসানের কাছে পুরোপুরি বোধগম্য ছিলো না। তবে পরবর্তী জীবনে ভাইয়ার কথার আংশিক সত্যতা সে দেখেছে। ভাগ্য ভালো থাকলে সে কি আর অভাগা হয়? হাসানের মনে আছে যে ঐ কাজিন বড় ভাই-ই তাকে প্রথম তাস খেলা শিখিয়েছিলো। 'স্পেকট্রাম' নামক একটি তাসের খেলা সে প্রথম শিখেছিলো। এবং ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো অল্প সময়ের মধ্যেই সে খেলাটি তার ভাইয়ের চাইতে ভালো খেলতে শুরু করে। তাসের সাথে জুয়ার যে একটা সম্পর্ক আছে, সেটা কিশোর হাসান দেখেছিলো। তাদের বাড়ীর কাছাকাছি একটা বড় বিল ছিলো। হাসান মাঝে মাঝে খেয়াল করতো যে, বিলের পাশে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে কিছু যুবক তাস খেলতো। আর তাদের সামনে থাকতো টাকা। এই টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে একবার মারামারিও হতে দেখেছে সে। যুবা বয়সে যাযাবরের 'দৃষ্টিপাত'-এ হাসান পড়েছে যে, সেই বৃটিশ আমলে সো কলড ভারতীয় লর্ড আইসিএস অফিসারদের বৌ-য়েরা স্বামীর টাকায় দেদারসে তাসের জুয়া খেলতো! সব চাইতে দুঃখজনক একটা ঘটনা হাসান দেখেছিলো, তার কলেজ জীবনে। যা এখনো তার মনে দাগ কেটে আছে। এক আন্টির ছেলেকে তখন হাসান পড়াতো, টিউশনি যাকে বলে। বাংলাদেশের সেই দরিদ্র সময়ে রাজধানী ঢাকার বুকে আন্টির ছিলো একটি maisonette বিল্ডিং (একতলা-দোতলা মিলিয়ে বাহারী বাড়ী)। হাল ফ্যাশনে সাজানো ছিলো সেই বাড়ির ভিতর-টি। হাসান মাঝে মাঝে খেয়াল করতো যে, আন্টি এবং আরো কয়েকজন ড্রয়িংরূমে বসে তাস খেলছেন। সেই আসরে দু'একজন রাজনৈতিক নেতাকেও দেখেছিলো হাসান। এটাকে নেগেটিভলি নিত না হাসান, কারণ সে ভাবতো উনারা জাস্ট টাইম পাস করছেন, সিম্পলি বিনোদন! একদিন হাসান তার মাকে এই তাস খেলার বিষয়টি বললে, তিনি হেসে বলেছিলেন, ওরা বসে বসে জুয়া খেলে! একটা ধাক্কা খেয়ে হাসানের মুখ থেকে বেড়িয়েছিলো, "জ্বী আম্মা!" কারণ নারী-পুরুষ মিলে এমন জুয়া খেলার আসর সে কেবল বিদেশী সিনেমায়ই দেখেছিলো। হাসানের মা বলেছিলো, " নেতা তফুও তো বসে ওখানে, দেখিসনি?" হাসান সেদিন বুঝেছিলো, বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ হলেও টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার একটা শ্রেণী দেশে আছে! এরপর হাসান বিদেশে পড়তে চলে যায়। ছুটিতে একবার দেশে ফিরে যা শুনলো তাতে তার মন একেবারেই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো; সেই আন্টি নাকি কোন এক জুয়া খেলায় তার বাড়িটি হারিয়েছেন! আরো ইন্টারেস্টিং হলো আসরের যে বন্ধুর কাছে বাড়িটি হারিয়েছিলেন, সে রীতিমত জোড় খাটিয়ে আন্টিকে ঐ বাড়ী থেকে তাড়িয়ে নিজেই উঠে যায়। জুয়া খেলার ফলাফল যে কতটা হিংস্র ও ভয়াবহ হতে পারে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে হাসান বুঝতে পেরেছিলো!



খুব ছোটবেলায় হাসান তার গ্রামের বাড়ীতে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখেছিলো। পরে জেনেছিলো যে, ঐ প্রতিযোগিতায়ও জুয়া খেলা হয়, যাকে রেসের বাজী বলে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রেও ছিলো সেই রেসকোর্স ময়দান। যার বর্তমান নাম 'সোহরাওয়ার্দী উদ্যান'। যতদূর জানা যায়, স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবেই জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করা হয় বাংলাদেশে, কেননা ইসলাম ধর্মে জুয়া খেলা নিষেধ। তাই ঢাকার রেসকোর্স ময়দান তুলে দিয়ে সেখানে পার্ক তৈরী করা হয়। ( উল্লেখ্য যে, প্রাচীন ইহুদি সম্প্রদায়েও জুয়াকে নিকৃষ্ট নজরে দেখা হত।এমনকি আদালতে কোনো জুয়ারীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হত না। এদিকে খ্রীষ্টধর্মে ক্যাথলিক চার্চ জুয়াকে অবৈধ বলে না। পৌরাণিক কাহিনী "মহাভারত" অনুযায়ী প্রাচীন ভারতে জুয়া খেলা বেশ জনপ্রিয় ছিল বলে জানা যায়)।

বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে হাসান ফেলুদা উপন্যাসে পড়া সেই জ্যাকপট, স্লট মেশিন এগুলো চোখের সামনেই দেখেছে। সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে একসময় এগুলো নিষিদ্ধ ছিলো। কিন্তু ধরে রাখতে না পারা সেই সমাজতান্ত্রীক কাঠামোর ধ্বসের সাথে সাথে সামাজিক চিন্তাভাবনায়ও ধ্বস নামে, খুব দ্রুতই সোভিয়েত সমাজে প্রবেশ করে ক্যাসিনো বা বড় জুয়ার প্রাথমিক পর্যায় স্লট মেশিনগুলো। কমরেড-রা সব নেমে গেলো জুয়ায়! (পেরেস্ত্রোইকা-র স্রোতে রাশিয়াতে স্লট মেশিনগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। যা সেই সময়ে অদম্য ছিলো। তবে নব্য রাশিয়ায় ২০০৯সালে সরকার নতুন ভাবনায়, জুয়া খেলাকে নিষিদ্ধ করে, এবং খুব সীমিত আকারে তা অল্প কয়েকটি জায়গায় চালু রাখে)। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিশ-একুশ বছর বয়সের হাসান। ঐ বয়সে মানুষ এ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হয়! বন্ধুবান্ধব নিয়ে খেলতে নেমে গেলো হাসান। প্রথমে দু'একবার হারার পর, হাসান বুঝতে পেরেছিলো যে, ঐ মেশিনে মূল বিষয়টা ঠিক কি। মূল সূত্র আসলে অল্প কয়েকটি, ওটা ধরতে পারাটাই ব্যাপার। পরবর্তী দানে হাসান খুব হিসাব করে টান দিয়েছিলো। ঝরঝর করে পড়তে শুরু করলো কয়েন। ব্যাস, কেল্লা ফতে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাসানের বন্ধু বাবু বলেছিলো, "জিতে গেলাম তো! পাইছি রে পাইছি!" আরেকজন বললো, "আর খেলবি? যদি আরো টাকা পাই!" হাসান বলেছিলো, "একদম না। হাওয়া থেকে টাকা আসতে পারে না। ঐ মেশিনের মধ্যে আর কয়েন নেই। এগুলো সেই কয়েন যা পূর্ববর্তী-রা হারিয়েছিলো। আমরা যদি আবার খেলতে শুরু করি, আমরাও হারাবো। সো, আর নয়, চল যাই।" হৈ হৈ করে সবাই মিলে, পাশের ম্যাকডোনাল্ডসে গিয়ে জুয়ায় জেতা টাকায় মজাসে খেয়েছিলো। আজ দিল্লীর ম্যাকডোনাল্ডসে ঊর্বশী সুনিতার সাথে বসে সেই পুরোণো দিনের কথা মনে পড়লো হাসানের।



সুনিতা: তুমি দিল্লীর জুয়ার আড্ডায় যেতে চাও?
হাসান: আজ থাক। ভেবে দেখি।
সুনিতা: তুমি তাস খেলো?
হাসান: হ্যাঁ, তাস খেলি।
সুনিতা: টাকা দিয়ে?
হাসান: খেলতাম একসময়। এখন আর খেলি না।
সুনিতা: সত্যিই তুমি টাকা দিয়ে তাস খেলতে?
হাসান: হ্যাঁ। থ্রী কার্ডস বলে একে।
সুনিতা: ওকে এক্সপ্লেইন মি।
হাসান: তুমি প্লেয়িং কার্ড চেনো?
সুনিতা: হ্যাঁ, চিনি। আমি কার্ড খেলতে পারি। তবে 'তিন তাস' খেলিনি কখনো! ধনীরা এই খেলা খুব খেলে তাই না?
হাসান: হ্যাঁ খেলে। আমি বড় বড় ধনীদেরকে এক টেবিলে বসে এই খেলা ধুমসে খেলতে দেখেছি। একবার হয়েছি কি জানো? কয়েকজন ধনী এক টেবিলে বসেছে তিন তাস খেলতে। ওরা সবাই ফ্রেন্ড, তবে তাদের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র ছিলো। তাদের মধ্যে দুজন মিলে ইশারায় চোখ টিপে স্থির করলো যে তাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সিনিয়র যিনি, তাকে আজ ঘায়েল করা হবে। ঐ সিনিয়র ভদ্রলোক আবার খুব ইন্টেলিজেন্ট এবং প্রচুর টাকার মালিক তবে ষড়যন্ত্র না ধরতে পারলে তো আর তার সাথে পারা যায় না। যাহোক, ঐ দিন তিনি গো-হারা হারলেন। নাস্তানাবুদ হয়ে ঘরে ফিরলেন। তারপর কয়েকদিন পরে কেউ একজন উনাকে জানিয়ে দিলো যে, মূল ঘটনা কি ছিলো। ব্যাস এরপর শুরু হলো খেলা।
সুনিতা: কি তাস খেলা?
হাসান: আরে না। জীবনের খেলা! ঐ সিনিয়র ব্যবসায়ী খুব মেপে মেপে একটা ব্যবসায়ীক প্যাঁচে ফেলে দিলো ঐ দুজনকে, বিশাল অংকের টাকার লস হয়ে গেলো তাদের। হা হা হা!!!
সুনিতা: হাসছো কেন?
হাসান: জুয়া খুব ভালো খেলা না বুঝলে! বন্ধু-বন্ধু, ভাই-ভাইয়ের সম্পর্ককে নষ্ট করে ফেলে!
সুনিতা: আচ্ছা! এখন তিন তাস বোঝাও আমাকে।

হাসান যতটুকু সম্ভব খেলাটি ব্যাখ্যা করলো সুনিতাকে। সব শুনে সুনিতা বললো, "যা বুঝলাম যে, এই খেলায়, ভাগ্যটাই মুখ্য নয়। এখানে সাইকোলজিকাল কিছু ব্যাপার-স্যাপার আছে।"

হাসান: ইয়েস। আসলে মূল গেম তো ঐটাই। সাইকোলজিকাল গেম খেলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা।
সুনিতা: আমি নিশ্চিত, তুমি ঐ গেমটি খুব ভালো খেলতে। এবং বোর্ডে সব টাকা তোমার ঘরেই যেত।
হাসান সুনিতার কথায় প্রথমটায় বিস্মিত হলেও, তারপর ধাতস্থ হলো। হাসান বুঝে নিলো, মেয়েটি অল্পবয়স্ক হলেও যথেষ্ট বুদ্ধিমতি!
আবার আনিতা বললো,
আনিতা: হাসান, তোমার মধ্যে একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। তুমি মানুষকে খুব সহজেই ভীষণ প্রভাবিত করতে পারো। বেশীরভাগ মানুষই না বুঝেই তোমার দ্বারা প্রভাবিত হয়। অনেক মানুষ আছে যাদের বাইরেটা দেখেই ভিতরটা পড়া যায়, তোমার ক্ষেত্রে কিন্তু মোটেও তা নয়।



কি বলবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলো না হাসান। তাকে ঠিক এইভাবে আরেকজনই চিনতে পেরেছিলো, সেটা ছিলো আনিতা। এতগুলো বছর পর আবার আরেকজন চিনেছে, তাও মাত্র কয়েকঘন্টার পরিচয়ে! এ কেমন নাটক? নারী-পুরুষের সঙ্গমোহ চিরন্তন, সেই সঙ্গমোহেই হয়তো তারা একসাথে বসেছে! কিন্তু কতদূর গড়াতে পারে এটা? নাহ্, নাটকটার অবসান ঘটাতেই হবে।

হাসান: আমার ভিতরটা পড়া যায় না! তা তুমি পড়তে পারলে যে?
সুনিতা: আমি বলেই তো পারলাম।
হাসান: আমাকে যদি জটিল মনে হয়, তাহলে আর আমার সঙ্গ কেন?
সুনিতা: ঐ জন্যই।
হাসান: মানে?
সুনিতা: তুমি জটিল হতে পারো, তবে কুটিল নয়। আসলে তুমি রহস্যময়। রহস্য মানুষকে টানে!

ম্যাকডোনাল্ডসের একটি ছোট টেবিলে, পাশাপাশি নয়, মুখোমুখী বসে আছে তারা দু'জন। তাদের সামনে প্লেট ভরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বড় বিক ম্যাক, স্যান্ডউইচ, চিকেন নাগেটস, আইসক্রীম ও কোল্ড ড্রিংকস। সুনিতা বললো, "খাও তাড়াতাড়ি। তারপর কোথাও বেড়াতে যাবো।"
কখন যে আপনি থেকে তুমি-তে নেমে এসেছে তারা। সেটা টেরও পায়নি হাসান! এত অল্প পরিচয়েই এতটা অন্তরঙ্গ হয়ে গেলো তারা!

(চলবে)

-------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সাল
সময়: দুপুর ১টা ০১ মিনিট



ক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্সক্স

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: জুয়া এবং নেশা খুব প্রাচীন খেলা। দু'টা কোনো দিন বন্ধ হবে না। বরং দিন দিন বেড়েই চলবে।
আমার প্রচুর টাকা থাকলে আমিই জুয়া খেলতাম। মদ খেতাম।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৯

রমিত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার কথায় ধার আছে।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩৪

ইমরান আশফাক বলেছেন: খাবারের বিলটা দিচ্ছিলো কে?

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৪

রমিত বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন!

ধন্যবাদ।

৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৬

বনসাই বলেছেন: দু জায়গায় সুনিতার স্থানে আনিতা লিখেছেন।

এখনকার পর্বগুলোর গতি একটু শ্লথ মনে হল।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৮

রমিত বলেছেন: খেয়াল করি নাই। ঠিক করে দেব।
ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আজকে পরবর্তি পর্ব দিয়ে দেব।
ধন্যবাদ আপনেকে।

৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: রহস্য মানুষকে টানে!

আসলেই !

রহস্য ভেদ হয়ে গেলে স্রষ্টাও যদি আটপৌড়ে রুপে সামনে এসে দাড়ায়মানুষ হতচকিত হয়ে যাবে!! ;)

যাই পরের পর্ব পড়ি :)
দেরি করে পড়লে এই সুবিধা অপেক্ষা করতে হয় না্ =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.