নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অচল কথন

কাজী সোহেল রানা

১৯৮৭

কাজী সোহেল রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের রপ্তানি বন্ধ-ই কি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ?

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৫২

কয়েক মাস আগেও যে পেঁয়াজ ২০-২৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটি গত শনিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ২৪০-২৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ আগস্ট মাসে একই পেঁয়াজ বাজারে পাওয়া গেছে কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকায়। তার এক মাস আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়।

উনত্রিশে সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর পণ্যটির দাম এক ধাক্কায় বেড়ে ১২০-১৫০ টাকায় ঠেকে। এরপর দাম বাড়তেই থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে অভ্যন্তরিণভাবে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন করতে না পারলে যে কোন সময় এমন সংকট আবার দেখা দিতে পারে।

এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, চাইলেই কি পেঁয়াজের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব?

দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন হলেও এই ফসল উৎপাদনে কৃষকদের বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। চাল উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষক যতোটা আগ্রহী, পেঁয়াজের ক্ষেত্রে তেমনটা নয়। কারণ চাল উৎপাদন অপেক্ষাকৃত লাভজনক।

যে জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়, সেই জমিতে অন্যান্য ফসলও ফলানো হয়, তাই বলা যায় যে জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন একটি প্রতিযোগিতার মধ্য থাকে।

বাংলাদেশে সাধারণত শীতকাল পেঁয়াজ উৎপাদনের উপযোগী আবহাওয়া, এখন নতুন জাতের পেঁয়াজ গরমকালে উৎপাদন করা গেলেও সেগুলো বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। এছাড়া বৃষ্টিপাতের কারণে জমিতে পানি জমে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে পড়ে।

পচনশীল এই পণ্যটি সংরক্ষণ করা জরুরি হলেও বাংলাদেশে পেঁয়াজের জন্য উপযুক্ত কোল্ড স্টোরেজের যথেষ্ট অভাব রয়েছে, এটাও পেঁয়াজ চাষ কম হওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া জমিতে পেঁয়াজের ফলন না হওয়াকে উৎপাদন কম হওয়ার আরেকটি কারণ।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে ১৭ থেকে ১৯ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে। যা কিনা পেঁয়াজের মোট চাহিদার ৬০%। চাহিদার বাকি ৪০% অথবা ৭ থেকে ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আমদানির ৯৫% আসে ভারত থেকে। বাকি পেঁয়াজ আসে মিয়ানমার, মিশর, তুরস্ক থেকে।

পেঁয়াজ আমদানির ওপর ভারতের ওপর এই অতি নির্ভরশীলতার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পণ্যটি পচনশীল হওয়ায় কম সময়ের মধ্যে বাজারে ছাড়ার জন্য কাছের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এতে পরিবহন খরচও অনেক কম পড়ে।

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় আশা করা হচ্ছিল দাম স্থিতিশীল হবে। কিন্তু এ'কদিন বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেনি, উল্টো বেড়েছে।

তবে প্রশ্ন জাগে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলেই কি পেঁয়াজের বাজার এরকম হবে। কারণ ক’বছর আগেও একই রকম পরিস্থিতি আমরা দেখেছি। সে বছর কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম দাড়ায় ১৫০ টাকা।

বারবার একই পরিস্থিতি তৈরি হলেও আমরা দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না কেন? অথবা আগে থেকেই তৈরি থাকতে পারছি না কেন?

এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থা মোটেই কৃষকবান্ধব ও ভোক্তাবান্ধব নয়। আমাদের বাজার ব্যবস্থা পুরোটাই মধ্যস্বত্তভোগীদের সুযোগ করে দেয়। তাইতো কৃষক দাম না পেয়ে ফসলে আগুন ধরিয়ে দেয়, আর অন্যদিকে সেই পণ্যই ভোক্তাদের চড়া দামে কিনতে হয়।

দ্বিতীয়ত, দায়সারা বাজার মনিটরিং। মহাসংকট যখন আমরা বলছি এই সময়ও বাজারে পেঁয়াজের কমতি নাই। বরং চাহিদার তুলনায় বেশি পেঁয়াজ বাজারে রয়েছে। অথচ দাম বেড়ে গেছে আট থেকে নয় গুন। এরজন্য ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া একমাত্র দায়ী নয়, বরং বেশি দায়ী ব্যবসায়ীদের অধীক লাভের আশা, নৈতিকতার অভাব আর অশুভ সিন্ডিকেট।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভাইরে শুধু পেঁয়াজ না। আরো বহু কিছুর দাম বেড়েছে।
শুধু পেঁয়াজ নিয়ে পরে থাকলে হবে??

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৯

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: কিছু জিনিস ফোকাসে আসে। পেঁয়াজও তাই। আর আসল বিষয় হচ্ছে দাম বৃদ্ধিতে আমরা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। তাই কোন কিছুর দাম কমলে বরং আমরা অস্বস্তিতে ভুগি।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫০

নুরহোসেন নুর বলেছেন: আমাদের উচিত পেঁয়াজহীন রান্না ভোঁজনে অভ্যস্ত হওয়া,
যেহেতু আমরা পেঁয়াজ চাষ করতে পারছিনা তাই এটাই একমাত্র বিকল্প সমাধান।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৭

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: হাজার বছরের রান্নার অভ্যাস পাল্টাবেন কিভাবে? আপনার বাসায় বলে দেখেন, তারা রাজি হন কিনা। আমাদের জন্য আসলে এটা অতটা বাস্তবসম্মত নয়।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: কিছু জিনিস ফোকাসে আসে। পেঁয়াজও তাই। আর আসল বিষয় হচ্ছে দাম বৃদ্ধিতে আমরা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। তাই কোন কিছুর দাম কমলে বরং আমরা অস্বস্তিতে ভুগি।

দাম আর কমে কই?? কমে না। কমে না। দাম শুধু কমে মানুষের।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৩

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: সঠিক বলেছেন ভাই। তবে কিছুদিন পর যখন পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা হবে তথন দেখবেন মন্ত্রীরা বলবেন, ‘পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৮০ টাকা কমিয়েছি। এটা বিরাট সফলতা।’
যদিও পেঁয়াজের স্বাভাবিক দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তবে তখন কিন্তু আমরাই মন্ত্রীদের কথায় স্বস্তি প্রকাশ করে বলবো, ‘আসলেইতো দাম কমেছে।’

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.