নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অচল কথন

কাজী সোহেল রানা

১৯৮৭

কাজী সোহেল রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের ‘খয়রাতির’ পরিমাণ কত?

২১ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২৫

বিগত কয়েক দশক ধরেই চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা সুখকর নয়। সবশেষ লাদাখ সীমান্তে এক কর্নেলসহ ২০ ভারতীয় সৈন্য নিহতের ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এ অবস্থার মধ্যেই বাংলাদেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্ক ছাড় দিয়েছে চীন। তবে এই সুবিধা দেওয়াকে সুনজরে দেখছে না ভারত। ভারতের বেশ কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশের এই সুবিধাকে পাওয়াকে ‘খয়রাতি’ হিসেবে উল্লেখ করে খবর প্রকাশ করেছে। আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ চয়নে এ সংবাদ প্রকাশের পর বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকরা। অনেকের অভিমত বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের গণমাধ্যম থেকে এমন ব্যবহার আশা করেনি বাংলাদেশের জনগণ।

ভারতের সংবাদ মাধ্যম জি নিউজ শিরোনাম করেছে ‘‘ভারতকে চাপে ফেলতে বাংলাদেশকে ‘খয়রাতি’ চীনের!” এছাড়া পশ্চিম বঙ্গের আরেক জনপ্রিয় পত্রিকা আনন্দবাজার শিরোনামে এমন শব্দচয়ন না করলেও খবরের ভেতরে লিখেছে, ‘বাণিজ্যিক লগ্নি আর খয়রাতির টাকা ছড়িয়ে বাংলাদেশকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা নতুন নয় চীনের’।

তবে তুলনা করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ শুল্ক সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু ভারত নিজেই ঋণ বা খয়রাতিতে জর্জরিত।

ভারতের বিদেশ থেকে নেয়া মোট খয়রাতির বা বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৩১ মার্চ, ২০২০ পর্যন্ত ৫৬৩.৯ বিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণ খয়রাতি দেশটির মোট জিডিপির প্রায় ২০ শতাংশের বেশি।

এই ঋণ ভারত নিয়েছে বিভিন্ন মাল্টিল্যাটারাল, বাইল্যাটারাল উৎস থেকে- যার মধ্যে রয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আইডিএ, আইবিআরডি, আইএফআইডি এবং অন্যান্য জায়গা থেকে।

মাল্টিল্যাটারাল উৎস থেকে ভারতের নেয়া খয়রাতি বা ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬০.২২ বিলিয়ন ডলার। এর বাইরে বাইল্যাটারাল উৎসের ভেতর ভারত ঋণ করেছে জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এমনকি চীন থেকেও। এসব উৎস থেকে পাওয়া ভারতের মোট ঋণ এখন ২৬.৩৩ বিলিয়ন ডলার।

আইএমএফ’র রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের পাবলিক ঋণ ২০২১ অর্থবছরে ৪০.১২ শতাংশ হতে পারে। ফিস্কাল মনিটরের এপ্রিল ২০২০ অনুযায়ী আইএমএফ শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালের গ্রস ঋণ প্রকাশ করেছে। আইএমএফের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের মোট ঋণ এখন তাদের জিডিপির ৭৩.৮০ শতাংশ। এই হিসাব অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণ মিলিয়ে।

এত ঋণ বা খয়রাতির বিপরীতে ভারতের রিজার্ভ আছে ১২ জুন, ২০২০ পর্যন্ত ৫০৭.৬৪৪ বিলিয়ন ডলার; যেখানে বিদেশ থেকে নেয়া তাদের ঋণের পরিমাণ ৫৬৩.৯ বিলিয়ন। এখানে উল্লেখ্য ভারতের এই রিজার্ভ তাদের স্বর্ণ রিজার্ভসহ। আরো নির্দিষ্ট করে বললে তাদের ৫০৭.৬৪৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের ভেতর Foreign Exchange Assets (FCA) এর পরিমাণ ৪৬৮.৭৩৭ বিলিয়ন, স্বর্ণের রিজার্ভের বাজার মূল্য ৩৩.১৭৩ বিলিয়ন, SDRs (Special Drawing Rights with the IMF) ১.৪৫৪ বিলিয়ন এবং বাকি ৪.২৮০ বিলিয়ন রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কাছে।

এদিকে বাংলাদেশের মোট ঋণের পরিমাণও ভারতের থেকে অনেক কম। শতাংশের হিসাবে অর্ধেক। এখন প্রশ্ন থেকে যায় বাংলাদেশ শুল্ক সুবিধা পেলে ভারতের মিডিয়ায় যদি তা খয়রাতি বলে আখ্যায়িত হয় তবে ভারতের ঋণ কেন খয়রাতি হবে না?

সূত্র: ডিফেন্স রিসার্চ ফোরাম

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভারতের রাজনীতির অবস্থা ভালো না। রাজনীতিবিদরাও ভালো না।
দূর্নীতির কারনে দেশটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

২১ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: লেখাটা মূলত ভারতের পত্রিকার পাল্টা জবাব স্বরুপ। বাংলাদেশ কে নিয়ে তাদের মন্তব্য ঐধত্যপূর্ণ ও কুরুচির পরিচয় বহন করে।

২| ২১ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪১

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:


খবরগুলো পড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর ওপর আমার আস্থা আরও কমে গেছে।

এখানে লক্ষ্য করার মতো একটি বিষয় হলো, চীনের সাথে না পেরে ভারতের অস্থিরতা।
নেপালকেও এক ঘা মেরেছে! কিন্তু বাংলাদেশ আর সেই সত্তরের দশকে নেই।

২১ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: োন দেশের সাথে না পেরে বাংলাদেশ কে নিয়েই মেতেছে ভারত।

৩| ২১ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

পদ্মপুকুর বলেছেন: এইখানে বোধহয় শব্দের কিছু মারপ্যাচ আছে। আমার মনে হয় এই শব্দটা আমরা যেমন নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করি, ওরা সেভাবে ব্যবহার করে না। সম্ভবত ওরা 'খয়রাতি' দিয়ে অনুদান বোঝাতে চাচ্ছে। যেহেতু আমাদের এখানে খয়রাতি মানেই একটা ভিক্ষুক-মিসকিন সংশ্লিষ্টতা চলে আসে, ওদের ওখানে হয়তো তা নয়, এ কারণেই মুলধারার গণমাধ্যমে এই শব্দটা নির্দ্বিধায় ব্যবহার করছে।

এটা আমার ব্যক্তিগত মত। ব্লগার পদাতিক চৌধুরী বা গেছোদাদা ভালো বলতে পারবেন।

২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:০২

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: সমস্যা কি? আমরাও তাদের মত শব্দ ব্যবহার করলাম।

৪| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:২০

ঢাবিয়ান বলেছেন: বাংলাদেশের সরকার কি এই খবরের বিরুদ্ধে কোন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে?

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩৪

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: না। বরং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাগো নিউজকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ এর প্রতিক্রিয়া জানাবে না।

৫| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৩৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভারতের এই কথার প্রচণ্ড নিন্দা জানাই। অথচ আমাদের সরকার চুপ । স্ত্রী আর স্বামী কথায় প্রতিবাদ কেন করবে। মেরুদণ্ডহীন ।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩৫

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: হা হা হা.......।

৬| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভারত একটা খয়রাতি রাষ্ট্র আপনার পোস্টে সে তথ্য আছে । আমি আরও এড করি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে ভারতের সরাসরি অংশগ্রহন সেখানে ছিল। আমাদের অর্জন ছিল স্বাধীনতা আর ভারত লাভ করেছে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের থ্রেট থেকে মুক্তি। ভারতের অর্জন কিন্তু কম নয় । তবু ভারত বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে বারে বারে সেটিও মনে রাখতে হবে । চীনের সঙ্গে বৈরীতা দেশের কোন মঙ্গল ডেকে আনবে না ।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩৭

কাজী সোহেল রানা বলেছেন: কথায় কথায় বাংলাদেশকে অপমান করা ভারতের স্বভাব হয়ে গেছে। আমাদেরও এর যুক্তিযুক্ত প্রতিবাদ করা উচিৎ। এ জন্যই এতসব তথ্য তুলে ধরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.