নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশেষ কোন পরিচয় নাই।

আমি রাছেল খান

বলার মত কিছু নেই

আমি রাছেল খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ: বোহেমিয়ান এক অপদার্থের দেশ

২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:৩৯


স্বাগতম! আপনি এখন আছেন এক আশ্চর্য দেশে— নাম তার বাংলাদেশ। একে শুধু দেশ বললে ভুল হবে, এটা এখন রত্নভাণ্ডার নয়, বরং ‘চাঁদাভাণ্ডার’। যেখানে ১৮ কোটি জনগণের ৩৬ কোটি হাত— শুনে ভাববেন, বাহ, কী কর্মক্ষম একটা জাতি! না না ভাই, ভুল ভেবেছেন। এই হাতগুলো পাট চাষ করে না, প্রযুক্তি বানায় না, বরং কায়দা করে চাঁদা তোলে। এখানে ‘কাজ’ একটা পুরনো আদর্শবাদ— সেকেলে চিন্তা। এখনকার ধর্মই হলো, ‘চাঁদা খাও— না হয় দাও।

পৃথিবীর অন্য প্রান্তে মানুষ কাজের লোক খুঁজে হাহাকার অবস্থা, আর আমাদের দেশে কাজের লোক পাওয়া গেলে তাকে রাজনীতির পোস্টে বসিয়ে 'ইলেকট্রিক পোলিটিক্যাল বেকার' বানিয়ে দেওয়া হয়। ফেসবুকে দু'টো পোস্ট দিলেই নেতা, দু’জনকে গালি দিলে সিনিয়র নেতা— আর পাঁচজনকে মারলে... ওহ, আপনি তো এখন “সার্ভিস হোল্ডার”।

আজকের দিনের অভিজ্ঞতা! পুরানা পল্টনে আমার ব্যবসা। ঈদের পর দেখি চায়ের গলির ঝালমুড়ির দোকান বন্ধ। আজ আবার দোকান খুলছে। খুশি হয়ে মামাকে জিজ্ঞেস করলাম— “মামা, এতদিন কোথায় ছিলেন?”
মামা এমন হাই তুললেন, মনে হলো পৃথিবীর সকল হতাশা ওনার ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে—
“ভাই, এতদিন যুবদলরে চাঁদা দিছি। এখন স্বেচ্ছাসেবক দলও চায়! প্রতিদিন ৫০০ টাকা! আমি মুড়ি বিক্রি করি, না NBR-এর সাবলেট অফিস চালাই?”

ভাবলাম, বাহ, একদম স্টার্টআপ আইডিয়া হয়ে গেলো— ‘চাঁদা ইনক.’, স্লোগান হবে, “পে করো, না হলে কাঁদো!”

পরবর্তী গন্তব্য: দারুস সালাম আর্কেড। চারতলায় এমন চিৎকার, মনে হচ্ছিল কোনও ব্যান্ড রিহার্সাল চলছে। না, ভাই! এটা টাকা আদায়ের ‘ন্যায়বিচার’। দেনাদার দুই বছর ধরে গায়েব ছিলো, আজ খোঁজ পেয়ে অফিসে বিচার বসেছে। এবং হ্যাঁ, বিচারে উভয় পক্ষের কেউ ডাকেনি তবুও যুবদল নেতা খলিল হাজির— সাঙ্গপাঙ্গসহ! বাংলাদেশে না ডাকলেও হাজিরা দেওয়া সামাজিক দায়িত্ব, এটা যেন একটা অলিখিত সংবিধান।

বিচার শেষে উভয় পক্ষকেই চাঁদা দিতে হয়— কারণ "ন্যায়বিচার, ইউ নো, কামস উইথ সার্ভিস চার্জ!"
এমনকি দেনাদারের স্ত্রী আসলে খলিল বাহিনী এতই আগ্রহী হয়ে ওঠে, মনে হলো ওনারা পারিবারিক 'পরিকল্পনা'তেও হাত লাগাতে চান। ভাবলাম, এরা হয়ত UNICEF-এর ভলান্টিয়ার! দেনাদার তো চাঁদা দেয়ই শেষে পাওনাদারকেও জিম্মি করে রাখে চাঁদা দেওয়ার জন্য। পাওনাদার পরে বিকাশে টাকা এনে এই ‘বিচার সভা’ থেকে নিজেকে মুক্ত করেন— মানে জামিন নয়, মুক্তিপণ।

তৃতীয় দৃশ্য: অফিসের কাজে গেলাম সোলেমান প্লাজা। ষষ্ঠ তলায় এক দল লোক চেঁচাচ্ছে। এক ভিসা অফিস ভিসা দিতে দেরি করেছে, সেই অপরাধে ছাত্রদলের বাহিনী ভাড়া করে এনেছেন এক ‘গ্রাহক’। হ্যাঁ, আমাদের ছাত্ররাও এখন ‘পেশাদার কালেকশন এজেন্ট’। পুরো টাকা উদ্ধার হয় ঠিকই, তবে ছাত্রদলের পকেট ভরে। আর যে ব্যক্তি এই সার্ভিস নিয়েছেন, শেষে তিনিই হতাশ।

এটাই আমাদের বাংলাদেশ— যেখানে চাঁদাবাজি একমাত্র শিল্প, রাজনীতি হলো ‘ফ্রাঞ্চাইজড বেকারত্ব’, আর নাগরিকত্ব একটা ফাঁদ— আপনি আসলে এক ‘চাঁদার উৎস’। এ দেশ রাষ্ট্র না— এটা এক ব্যর্থ সার্কাস, যার নাম হতে পারত: "চাঁদা কোম্পানি লিমিটেড— আমাদের পেশা, আপনার পকেট"। অভিনন্দন বাংলাদেশ: বোহেমিয়ান এক অপদার্থের দেশ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫৮

রিফাত হোসেন বলেছেন: বাংলাদেশ: বোহেমিয়ান এক অপদার্থের দেশ। +
জাহান্নামে মই দিলেও জান্নাতে পৌঁছাতে পারবে না। বাপ আর স্বামীর জিকির তুলতে তুলতে অজ্ঞান এগুলো।


২| ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: যে দলই ক্ষমতায় আসুক চাদা দিতেই হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.