![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নের সীঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে পিছলে পড়া একজন স্বপ্নচারী। স্বপ্নের পথে নই এখন বাস্তবতাই লক্ষ্য
১.
গালি দেয়া, অশ্লীল কথা বলা, অশ্লীলতা ছড়ানো আমাদের সমাজের এক মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এটি একটি মানসিক ব্যধিও বটে। গালিগালাজ করা কোনো সুস্থ মানসিকতার পরিচয় নয়। মুদ্রাদোষ বা অভ্যাসবশত অনেকেই কথায় কথায় গালি দেন, এটি মুলত অফলাইন থেকেই সৃষ্টি হয়। যখন আপনি বাস্তবে এমন অভ্যাসে জড়িত হবেন তখন আপনি যেখানে সেখানেই আপনার এই অভ্যাসকে উগ্রে দিতে চাইবেন এটাই সহজাত প্রবৃতি।
বুখারি শরীফের চতুর্থ খন্ডে ২২৯৭ হাদিসে মুনাফিকের চারটি স্বভাবের একটিতে বলা হয়েছে, 'যখন তারা ঝগড়া করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে"।
তিরমিজি শরীফের ২০৪৩ হাদিসে বলা হয়েছে নবী (সঃ) বলেন, 'মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না'।
আমরা খারাপিকে আকড়ে ধরায় মত্ত। অনেকেই মনে করেন যে আমি তাকে গালি দিতে পারলাম মানেই জিতে গেলাম। অনলাইনেও অনেক মুসলিম ভাইকে দেখা যায় কুশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করেন, এতে যাকে গালি দিচ্ছেন তার কিছু না হলেও আপনার কলব কলুষিত হয়। আপনি হয়তো ভাবছেন এতে মুসলমানদের বীরত্ব প্রকাশ পাচ্ছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনি মুসলিম জাতির সন্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। চাইলে আপনি খারাপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করতে পারেন তবে নিজের কলব কলুষিত করে নয়।
হযরত আলী (রাঃ) বলেন, 'গালি হলো নিচু লোকের হাতিয়ার'।
সর্বোপরি ধর্মীয় ছোট কোন বিষয়ে অহেতুক বিতর্ক ও গালিবাজদের সবসময় এড়িয়ে চলতে হবে।
২.
কোনো ব্যক্তির মধ্যে যে দোষ নেই তাকে সে জন্য দোষী সাব্যস্ত করাকে অপবাদ বলা হয়। কারো নামে অপবাদ দেয়া কবিরা গোনাহ। কেউকে কোন অপরাধে দোষী বলার আগে সেই বিষয়ে যথেষ্ট প্রমান নিয়ে তবেই দোষী বলতে হবে।
অপবাদের প্রতিকারে করণীয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে সূরা হুজরাতের ৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, 'হে মুমিনগণ! যদি কোনো পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো খবর আনে তাহলে তা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও'।
আল্লাহর নির্দেশ হলো, আমরা যখন কারো ব্যাপারে কোনো কথা বা অপবাদ শুনব তখন আমাদের দায়িত্ব হলো প্রথমে তা পরীক্ষা করে এর সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক এবং প্রমাণ ও তদন্তবিহীন মূল্যায়ন নিষিদ্ধ। এটাই ইসলামের পথনির্দেশ।
৩.
আখেরি জামানার মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বেশি যে আমলের প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তা হলো নামাজ। সহীহ নামাজ আদায়ের জন্য অবশ্যই এবং অবশ্যই সহীহভাবে আমাদেরকে কুরআন তেলাওয়াত করা জানা আবশ্যক। আজই এই মুহুর্তে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, 'আমি কুরআন তেলাওয়াত করতে জানি তো?'
কুরআন তেলাওয়াত বলতে সব সময় সহীহভাবে কুরআন তেলাওয়াতকে বুঝতে হবে। আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে সুরা মুযযাম্মিলের ৪ নম্বর আয়াতে বলেন, 'তোমরা তারতীলের সাথে কুরআন তেলাওয়াত করো'।
কুরআন তারতীলের সাথে তেলাওয়াতের জন্য আপনাকে ধীরস্থিরভাবে তেলাওয়াত করতে হবে এবং যে বিষয়গুলো জানতে হবে তা হলো মাখরাজ, মদ, গুন্নাহ। ব্যক্তিগত মতামতে বলবো আপনি প্রথমে মাখরাজ, এরপর মদ এবং শেষে গুন্নাহ বিষয়ে শিখুন। তাহলে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সহজেই সহীহভাবে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন।
নামাজের জন্য কম করে হলেও সুরা ফাতিহা সহ চারটি সুরা সহীহভাবে মুখস্ত করতে হবে। এছাড়াও বাকী দুয়াও সহীহভাবে মুখস্ত করতে হবে। সহীহভাবে তেলাওয়াত না জানলে আমার-আপনার আমল কোন কাজে আসবে না।
৪.
সর্বোপরি আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সহীহভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। ফাসেকী গালিগালাজ, মিথ্যা অপবাদ দান থেকে দুরে রাখুন। সেই সাথে সহীহভাবে কুরআন তেলাওয়াত সহ আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
©somewhere in net ltd.