![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চৌধুরীদের ভিটে
এই হোল আমাদের চৌধুরীবাড়ি!
তালগাছ, শান বাধানো ঘাট, শ্যাওলা পড়া
সিড়িগুলো আভিজাত্যের বয়স!
পুরনো কাঁঠালগাছ পাশ ঘেষে তারই
দাড়িয়ে, অতন্দ্র পাহাড়ায়-
ময়রা-কুমোরেরা ঘাট ছেড়ে হাটে যায়
কারো মাথায় ঝুড়িতে নতুন মাটি,
পুড়বে বলে আনে কেটে কেটে-
কারো কাধবাইকে মেটে পোড়া হাড়ি!
বয়ে যায় যমুনা, বাল্য-কৈশোর,
ঝাঁপাঝাঁপি দাপাদাপি যুবতীর সাঁতার।
অমোঘ স্মৃতি পটে আঁকা
ঠিক গেথে যায় মনে, কিছু পড়ে ঢাকা।
মোটরের আওয়াজ, শুনে ছুটে যায়
ছেলেমেয়ে, চৌধুরীর গাড়ি।
দোকানদার মতিয়ারের বউ
কেঁচে যায় কাপড়,
প্রতিটি আঘাতে কেঁপে ওঠে সিড়ি,
না-না! সেতো ভারি অনেক।
সিড়ি কাঁপে না, কাঁপে পথিকের মন।
প্রতি স্পন্দনে তার
দোকানী মতিয়ার লিখে যায় জের
হিসেবের খেরোখাতায়।
পাশেই কলুপাড়া
কলু আর মুচি ভিন্ন ধর্মের ভিন্ন দু’টো জাত
মিলেমিশে করে বাস।
তাঁদের সদয় আশ্রয়ে
বাঁচে ওরা, মেনে চলে প্রভুর মতন।
ব্যাংক ছেড়ে হেথা জমা রাখে টাকা কড়ি,
এ সেই চৌধুরীবাড়ি!
দিন যায়, বরষায় বাউল আসে
সাড়া দেয় আমগাছ
উঠোনের মাঝখানে পাতা নেড়ে নেড়ে,
গান শুনে আমুদে লোক মাতে। কত উল্লাস!
আনন্দে করে চিৎকার।
নাচে-গায়-হাসে মিলেমিশে ঘুরে চারপাশ
বয়স বাড়ে, বাড়ে কঙ্কাল
নদীতে আসে জোয়ার।
নতুন মানুষ এ মাঝি,
নবোদ্যমে চালায় জীবন- নৌকা
প্রবীণ থেকে প্রবীণতম ঘাট, বৃদ্ধ মতিয়ার
চোখে তার ছানি পড়া, দিন থেকে গভীর অন্ধকার।
এক রাতে ত্রাস আসে, কেঁপে ওঠে মন
ফাঁকা বিছানা, বেহুলা শোকে কাঁদে লখিন্দর
কিশোর চালায় ভেলা, মাঝনদী প্রমত্ত
ছুটে দিগি¦দিক, দিশাহারা।
দুঃস্বপ্ন ভর করে দিনের আলোয়।
টুকরো হৃদয় ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে,
গৃহের অংশ এ নয়! স্বামী শোকে হয় বিধবা
গৃহশোকে হয় কী -সে!?
কাঁদে বৃদ্ধা -মতিয়ারের বউ,
কাঁদে পথিকের মন।
ভেসে যায় আশ্রয়, বস্তা-বালি-খোয়া-ইট-পাটকেল
মানে না কিছু না তার -যুবতী এ নদী,
রাতপাখি করে হাহাকার।
ভেসে যায় গ্রাম, মাইল পর মাইল
ভাসে তালগাছ-ইশকুল-মসজিদ-নর-নারী।
সে ছিল আমাদের চৌধুরী বাড়ি!!
_______________________________
_____________চৌধুরীদের ভিটে________
______________________রাকিবুল হাসান
জানুয়ারি ১৬, ২০১৪,
রাত ১টা ৩৫মিনিট
মিরপুর, ঢাকা।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৪
শায়মা বলেছেন: খুব খুব খুব সুন্দর!!
আমি মুগ্ধ!