নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জলের ধারায় মুক্তো খুঁজে বেড়ানো রূপকথার কোনো এক ঘোড়সওয়ারী

মানুষের ভালোবাসাই তো মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি,সফল হওয়ার পেছনে।"

মোঃ নুর রায়হান

বন্ধুরা ভুল বুঝে আমাকে, আমি কেমন তা কেউ বুঝতে পারে না, যা সবচেয়ে পীড়াদায়ক। মুখলুকিয়ে কেঁদে কেঁদে সুসময়কে বিদায় দেয়ার আনন্দে মত্ত থাকি। সরাসরি কথা বলতে ভালো লাগে। খুব কষ্ট হয় যখন কেউ আমাকে ভুল বুঝে। আড্ডা মারতে ভালো লাগে না তেমন, কোথাও ঘুরতে যেতেও ভালো লাগে না। চরম ফাঁকিবাজ, বিশেষ করে পড়াশোনায়। আত্মবিশ্বাসী, চঞ্চল, ভাবুক এবং কিছুটা অহংকারী। অবসরে কবিতা লিখতে ভালবাসি, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করা আমার নেশা। যুক্তিবাদী হতে শিখছি, সাথে একজন ভালো মানুষ। সব মানুষকেই সমান চোখে দেখি। উপকার করতে ভালবাসি কোনো প্রকার প্রতিদান ছাড়া। উপকার করে বাঁশ খেতেও ভালো লাগে। ভালবাসতে পারি অনেক, বাবা মা, ভাই বোন সকলকে। আমি আমার আকাশটা ছুঁতে চাই।যাতে আমি সবার আকাশকে রাঙাতে পারি। আমি স্বারথপর নই,আমি চাই সবাই তার বিবেক কে চিনুক;আবেগ কে নয়। মানুষের ভালোবাসাই তো মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি,সফল হওয়ার পেছনে। আমার ফেসবুক আইডি https://www.facebook.com/osfutoartonad/info

মোঃ নুর রায়হান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার অপমৃত্যু

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫

স্টেশনে বসে আছে নীরা আর অভিক। আজ তাঁদের বিয়ে করার কথা। নীরা ধনীর দুলালী। ওর বাবার প্রচণ্ড ক্ষমতা। আর অভিক জীবন সংগ্রামে যুদ্ধ করা এক সাহসী যুবক। নীরার পরিবার মেনে নেবে না বলে সবার অলক্ষে তারা অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। যেখানে শুধুই তারা দুজন, পরস্পর মুখোমুখি বসে গল্প করতে পারে। কেউ বাঁধা দিবে না যেখানে।



নীরার বাসা থেকে বারবার ফোন দিচ্ছিল নীরাকে। নীরা ফোন অফ করে রেখেছে। না জানি বাসায় এখন কতই না হুলস্থূল কাণ্ড ঘটে গেছে! অভিকের বাবা নেই। একমাত্র বোন আর মাকে নিয়ে টানাটানির সংসার। ছোট্ট একটা চাকরি করে সে। যা বেতন পায়, ও দিয়ে কষ্টে কোনোরকমে চলে অভিকরা। কিন্তু, অভিকের এখন রাজ্যের চিন্তা। কোন কিছু না ভেবেই নীরাকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে সে। হাজার হোক, ধনীর দুলালী। ওর অভাবের সংসারে মানিয়ে নিতে পারবে তো?



:এই কী ভাবছ?

:কিছু না।

: আর লুকাতে হবে না। আমি জানি কী ভাবছ?

:কী ভাবছি?

:দেখো, আমি কিন্তু সব জেনেই তোমাকে ভালবেসেছি। আমাকে নিয়ে তোমার এতো ভাবতে হবে না। মেয়েরা ইচ্ছে করলেই সবখানে মানিয়ে নিতে পারে। তুমি তো না খেয়ে থাকবা না, তাই না? যা খাও, আমিও তাই খাব। এতো চিন্তা করো না তো। প্লিজ।



এই তুমি আমি এখন পাশাপাশি বসে আছি। এতো রোমান্টিক একটা মুহূর্তকে তুমি শুধু শুধু নষ্ট করছ।



:ওকে। যাও। আর চিন্তা করবো না। বলেই অভিক হেসে উঠে।



ওরা এখন তাঁদের ভবিষ্যৎ সাজাতে ব্যস্ত। কে কী করবে, ছেলে মেয়ের নাম কী রাখবে, ঠিক করছে।



নীরা কথা বলেই যাচ্ছে। আর অভিক শুধু ওর মুখের দিকে অপলক তাকিয়েই আছে। এতো সুন্দর একটা মেয়ে তার কপালে এসেছে। তার সাত পুরুষের ভাগ্য।



ট্রেন চলে এসেছে। কিন্তু একি! স্টেশনে এতো পুলিস কেন? তবে কী বাবা ……………….. ??



নীরার বাবাকে সবাই এক নামে চিনে। সে হিসেবে নীরাকেও অনেকে চিনে। তাই নীরাকে খুঁজতে পুলিশের বেশি বেগ পেতে হয় নাই। দুজনকেই থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।



নীরার বাবার অগাধ টাকা। ধরাকে সরাজ্ঞান করে। এক রকম টাকার জোড়েই অভিকের নামে অপহরণের মামলা করে। অভিকের অগাধ বিশ্বাস ছিল, নীরা হয়তো অস্বীকার করবে। কিন্তু নীরা অস্বীকার করে নি। আদালতে দাঁড়িয়ে নীরা যখন বলেছিল যে, অভিক তাঁকে অপহরণ করতে চেয়েছিল, সেদিন অভিকের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল। পৃথিবীটা তখন অভিকের কাছে অর্থশূন্য মনে হয়েছিলো।



বিচারে অভিকের ১২ বছরের জেল হয়।



অভিকের কাছে নীরা এখন শুধুই একটা অভিশাপ। সব কি তাহলে মিথ্যে ছিল? নীরার খুনসুটি, একসাথে বসে চাঁদ দেখা, বিকেল বেলায় চটপটি ফুসকা নিয়ে কাড়াকাড়ি, হাত ধরে পাশাপাশি হেঁটে চলা মুহূর্তগুলো কি সব মিথ্যে ছিল? জেলে বসে অভিক শুধুই এইসব ভাবতো আর নীরাকে অভিশাপ দিতো।



কিন্তু নীরা কেন মিথ্যাসাক্ষী দিয়েছিল, এটা কেউ জানে না।



ঠিক তিন মাস পর , নীরা একটা সুইসাইড নোট লেখে তার বাবাকে।



“বাবা, তোমার কথামত অভিককে জীবিত রাখতে আমি মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছিলাম। অভিককে আমি ভালোবাসি বাবা। অনেক বেশি ভালোবাসি। ও অন্য সবার মত ছিল না। ও তোমার টাকাকে ভালবাসে নাই। ও তোমার মেয়েকে ভালবেসেছে বাবা।



আমি এটা কখনোই মানতে পারতাম না, আমি বেঁচে থাকতে অভিক এই দুনিয়ায় থাকবে না। তাই, অভিককে বাঁচিয়ে রাখতে তোমার কথার মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছিলাম। ভালবাসা তো তাই বাবা, যেখানে ভালোবাসার মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখা যায়।



কিন্তু বাবা, আমি অভিককে কিছুতেই ভুলতে পারছি না। আমি পারছি না বাবা, তার সাথে কাটানো ভালোবাসার রঙ্গিন মুহূর্তগুলোকে ভুলতে। প্রতি মুহূর্তে বিবেক আমাকে আঘাত করছে বাবা। এই হৃদয় অভিকের সান্নিধ্য ছাড়া বাঁচতে পারছে না বাবা। তাই আমি চলে যাচ্ছি বাবা। তোমাদের সব মায়া ছেড়ে, এই পৃথিবী ছেড়ে।



বাবা, একটা অনুরোধ, অভিককে কিছু জানিও না বাবা। ও সহ্য করতে পারবে না। বিদায় বাবা। শুভ বিদায়। “



অভিক তার প্রচণ্ড ঘৃণা নিয়েই বেঁচে আছে। কোনোদিন কি নীরার পরিণতির কথা জানতে পারবে? জানলে কী মনে হবে তার?



মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩২

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: ভালবাসাময় একটি সম্পর্কের কি দুঃখজনক পরিণতি! বেশিরভাগ পিতামাতারা এটা বুঝতেই চাননা যে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ ভালবাসার বিয়ে সুখের হয়। অথচ এত বাধা দিয়ে তারা দু’টি ছেলেমেয়ের জীবনকে অনর্থক নষ্ট করে দেন।

সুন্দর একটি লেখা উপহার দেওয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৪

মোঃ নুর রায়হান বলেছেন: আপনার গঠমূলক মন্তব্যের জন্যও অনেক ধন্যবাদ

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৮

নূর আদনান বলেছেন: @অর্থনীতিবিদ,
অর্থনীতিবিদ হয়েও আপনার ভালবাসা সম্পর্কে উপলদ্ধি খুব ভাল। কে বলে অর্থনীতিবিদগণ খুব কমার্শিয়াল হয় B-)

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫

মোঃ নুর রায়হান বলেছেন: ঠিক ঠিক ঠিক বলেছেন ভাই :D

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: খারাপ লাগল গল্প পড়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.