নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা বলি..... বর্তমানের- কথা বলি ভবিষ্যতের.......

মাই নেম ইজ রেজাউল ইসলাম। এন্ড আই অ্যাম নট এ রাজাকার !!!

মোঃ রেজাউল ইসলাম

আমি নতুন সর্বদা----

মোঃ রেজাউল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

৩ বছর দলীয় কার্যালয় বন্ধ জামায়াতের

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৯

নিজেদের ঘরবাড়ি ও দলীয় কার্যালয়; দুই অর্থেই গৃহহারা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় ও মহানগর কার্যালয়। তালাবদ্ধ হয়ে প্রায় বন্ধ হতে চলেছে দলটির সহযোগী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও।

তবে এর মধ্যেও সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে জামায়াত-শিবির। প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে দলীয় কৌশল। দলবদ্ধ না হয়ে ব্যক্তি-ব্যক্তি, ই-মেইল, স্কাইপে ও গ্রুপ চ্যাটিং ব্যবহৃত হয় যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে। এছাড়া নিজেদের সংগঠনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়িতেও চলছে সাংগঠনিক তৎপরতা। তবে সবকিছুই চলে অত্যন্ত সতর্কতা ও গোপনীয়তার রক্ষা করে।

অাজ ১৯ সেপ্টেম্বর সংগঠন দুটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধের ৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে এই সময় পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের প্রায় কেন্দ্রীয় নেতা ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা একধরনের যাযাবর জীবন কাটাচ্ছেন। ফিরতে পারছেন নিজেদের বাসায়, বসতে পারছেন না দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কার্যালয়ে। এর বাইরের সময়টুকু হয় পলাতক, না হয় কারাগারে গিয়েই থাকতে হচ্ছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দীর্ঘ দিন তিন বছর ধরে পলাতক রয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত অামির মকবুল অাহমাদ. ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, মহানগর অামির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল, নায়েবে অামির হামিদুর রহমান অাযাদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সকল সদস্য ও নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার প্রায় সদস্যরাই আড়ালে থেকে যুক্ত রয়েছেন দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে। এর বাইরে বেশিরভাগ শীর্ষ নেতারাই যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আটক আছে। একই পরিস্থিতি ছাত্রশিবিরের। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে জামায়াত-শিবিরের সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার গ্রেফতার রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রশিবিরের সহকারী প্রচার সম্পাদক জামাল উদ্দীন।

২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাকরাইল-শান্তিনগরসহ ১৩টি জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর জামায়াতের মগবাজার রেলগেইটের পাশে অবস্থিত ৫০৫, এলিফ্যান্ট রোড, বড় মগবাজার কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ৪৮/১/ এ পুরানা পলটনের মহানগর কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয় অাইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একইসঙ্গে তালা দেয় মহানগর কার্যালয়ের লাগোয়া ভবনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরানা পল্টনে জামায়াতে ইসলামীর মহানগর কার্যালয়ের গলিমুখে পুলিশ-পাহারা থাকলেও মগবাজার রেলগেটের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোনও পুলিশ-পাহারা নেই। কার্যালয় দুটিতেই বিরাজ করছে ভুতুড়ে নিরবতা। কয়েকজন সিকিউরিটি গার্ড ছাড়া আর কারও উপস্থিতি নেই সেখানে।

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় কথা হয় গার্ড মুহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, ২০১১ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর অফিস বন্ধ হওয়ার পর কোনও নেতা-কর্মী এমুখো হননি। কারও নামে কোনও চিঠিপত্র এলে দলের পিয়ন এসে সেগুলো সংগ্রহ করে। চারতলা এ কার্যালয়ের নিচে দলের গাড়ির একটি গ্যারেজ থাকলেও তা অনেকদিন ধরে অব্যবহৃত।

কার্যালয় বন্ধ হওয়ায় কতটা সমস্যা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে সম্প্রতি পল্টনে একটি অনুষ্ঠান শেষে এ প্রতিবেদককে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, অবশ্যই সমস্যা হচ্ছে। জামায়াত কোটি মানুষের দল। সেন্ট্রাল ও সিটি অফিস বন্ধ থাকলে তো সমস্যা হবেই। তবে জামায়াতের প্রত্যেক কর্মীর বাসা-ই জামায়াতের অফিস। আমরা এখন সেখানেই কাজ করি।

কার্যালয় বন্ধ করা একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের কাজ বলে উল্লেখ করে জামায়াতের প্রচার সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যাপক তাসনীম অালম বলেন, সরকার একটি গণতান্ত্রিক দলের কার্যালয় বন্ধ করে রেখেছে, অাবার মুখে বলছে গণতান্ত্রিক। তবে কার্যক্রমে তেমন কোনও বিপত্তি হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, এক বছর ধরে বড় দুটি অফিস ব্যবহার করতে না পারলেও ক্যাডারভিত্তিক দল হওয়ায় সাংগঠনিক কাজ করতে বড় কোনও সমস্যা পোহাতে হচ্ছে না জামায়াতকে। জামায়াত-শিবিরের প্রত্যেক নেতাকর্মী প্রশিক্ষিত। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে না তাদের। তাছাড়া ঢাকা মহানগরের প্রায় প্রতিটি থানায় জামায়াতের অফিস আছে ছদ্মনামে।

পল্টন কার্যালয়ের গলির মুখে দায়িত্বরত সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জয় কুমার বলেন, আমরা জামায়াতের কার্যালয় কেন ঘিরে রাখব? আমরা আছি পুরো এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। তারা বরং গ্রেফতার এড়ানোর জন্য অফিসে আসেন না।

২০১২ সালের আগস্টে ‘কেন জামায়াতের অফিস খুলে দেওয়া হচ্ছে না’ এ মর্মে হাইকোর্ট সরকারের প্রতি রুল জারি করেন। জামায়াতের নেতা ডা. তাহের বলেন, কোর্ট থেকে স্টে অর্ডার দেওয়ার পরও সরকার কোনও জবাব দেয়নি। তাই বাধ্য হয়েই বাইরে কাজ করছি। বাইরে কোথায়? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের বাসায়। এছাড়া উপায় নেই।

একই অবস্থা পল্টনের মহানগর কার্যালয়েরও। মারুফ ফাউন্ডেশনের ৯ তলা ভবনটিতে গিয়ে দেখা যায় দুজন নিরাপত্তারক্ষী বসে অাছেন। ভবনের প্রায় সবগুলো ফ্লোরেই পুলিশি অভিযানের চিহ্ন। ভাঙা অালমারি, উপুড় করা চেয়ার, ধুলোবালি, মাকড়সার ঝুল রয়েছে প্রায় সব ফ্লোরেই।

নিরাপত্তারক্ষীদের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ অাগস্ট সর্বশেষ তল্লাশি চালিয়েছে পল্টন থানা পুলিশ। জুনের মাঝামাঝিতে কার্যালয় থেকে বিপুল পরিমাণ সাংগঠনিক কাগজপত্র, বই জব্দ করে পুলিশ। এর অাগে ২৬ মার্চ পুরো ভবনে তল্লাশি চালায় পল্টন পুলিশ।

নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, সব সময় গোয়েন্দাদের নজরে থাকে অফিসটি। নেতাকর্মীরা না অাসলেও মাঝে মাঝে পুলিশ এসে খোঁজখবর নেয়। ৬ জন নিরাপত্তারক্ষী পালা করে প্রহরায় থাকেন। রাতে অফিসে ৯ তলায় নির্ধারিত স্থানে বিশ্রাম নেন সবাই। তিন বছর ধরে তালা রয়েছে মহানগর কার্যালয়ের পাশে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও।

৪৮/১-বি, পুরানা পল্টনে অবস্থিত কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ভাড়ায় নেওয়া তিনটি ফ্লোরের প্রথম ও তৃতীয় তলা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু দ্বিতীয় তলাটির ভাড়া দিচ্ছে শিবির। ফ্লোরটিতে শিবিরের জাদুঘর থাকায় সহসা ছাড়তে পারছে না সংগঠনটি। তবে ভবনের মালিক ইব্রাহিম জানান, দুটো ফ্লোর শিবির ছেড়েছে প্রায় মাস তিনেক অাগে। এখন তৃতীয় তলার ভাড়া দিচ্ছে তারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিবিরের প্রচার সম্পাদক মনির অাহমেদ বলেন, কার্যালয় বন্ধ হলে তো সমস্যা হবেই। এটা স্বাভাবিক। নেতাকর্মীদের একটু কষ্ট হলেও সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অামরাই একমাত্র ছাত্র সংগঠন যারা সমস্ত প্রতিকূলতা ছাপিয়ে সংগঠনের সব কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।



উৎসঃ বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.