নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অলস-খেয়ালি

Razib Abdullah

Razib Abdullah › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুয়াকাটায় সুমুদ্দ্রস্নান

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৪

কুয়াকাটায় সুমুদ্দ্রস্নান
পর্ব-১: অনিশ্চয়তা

শুরর দিকে কোন কিছুই আমাদের অনুকুলে ছিল না, শুধু আমরা কজন BACKPACKERS ছিলাম অদম্য, অপ্রতিরোধ্য। আবহাওয়া ছিল আমাদের প্রধান শতরু , এই ভাল এই খারাপ। শুধুমাত্র আবহাওয়ার কারনে আমাদের একমাত্র গাতক বন্ধু Hossain Shahid Mohammad Shish কে মিস করেছি। তারউপর আবার সপ্তাহ আগে থেকে এই বৃস্টি, এই রোদ, এই ঝড় সব মিলিয়ে হিজিবিজি অবস্থা। আর এই বছরেই বরিশালে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমান বৃস্টিপাত হয়েছে। একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে আবহাওয়া অনুকুলে আসছে। তারপরেও যাত্রার দিন হাল্কা বৃষ্টিপাত কলিজার মধ্যে আতংকের আচর কেটে গেছে।

দ্বিতীয়ত, টানা তিন দিনের ছুটি হওয়ায় লঞ্চের টিকিট ক্রাইসিস হবে এটা আগেই ধারনা করছিলাম। দুই তিন সপ্তাহ আগে যখন ট্যুরের প্লান করি তখনই লঞ্চের বুকিং নাম্বারে ফোন দেই। ওরা বলে ভাই ২৪ তারিখ দেরি আছে পরে ফোন দিতে বলে। আরো কয়েক জায়গায় ফোন দিলে সবাই একই কথা বলে। কেউ ত বলল যাবার তিন চারদিন আগে ফোন দিতে। যাত্রা শুরুর ৮ দিন আগে অর্থাৎ ১৬/৮/১৬ তে যখন লঞ্চের বুকিং এর নাম্বারে ফোন দিলাম সবার থখন একই কথা টিকিট নাই। আবারো এক ধরনের অনিশ্চয়তায় মধ্যে হাবুডুবু খেতে থাকলাম। এর ওর রেফারেন্সের খাতিরে ভরসা না পেয়ে অবশেষে ভগ্নিপতির বুদ্ধিতে পরদিন নিজেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল চলে গেলাম। ওখানে কোন ঝামেলা ছাড়াই নিজে নিজেই ৪ খানা ডাবল কেবিনের টিকিট বুক করলাম।

তৃতীয়ত, এই ছুটির কারনেই অফ সিজনেও হোটেলে রুমের ক্রাইসিস। প্রথমে হোটেল কুয়াকাটা ইনে উঠবার প্লান ছিল। কাপল/টুইন শেয়ার সব মিলায়া ৫ টা রুমের জন্য আগেই বলে রেখেছিলাম একেবারে শেষ সময়ে এসে তারা বেকে বসল ৫ টা রুম নাকি অই দিন একসাথে ব্যবস্থা করা যাবে না। ট্যুর আবারো মনে হয় ১০০০ ফুট খাদের মধ্যে পড়ল। শুধু মাটি চাপাই দিলেই ট্যুরটার সম্পুর্ন কবরে আটকা পড়ত। এবার বন্ধু Pallab Sarker ত্রানকর্তার ভুমিকায় অবতীর্ন হয়ে ট্যুরটাকে খাদ হতে টেনে আনল। ওর রেফারেন্সে হোটেল Sea View তে এক রাত দুইদিনের বাসস্থানের বন্দোবস্ত হল।

আর একদম শেষ মুহুর্তে যাত্রার ঠিক আগের দিন নতুন এক ঝামেলা সারাদেশে নৌ ধর্মঘট। সবার মধ্যে যাতে প্যানিক না ছড়ায় সে জন্য কাউকে এই দু:সংবাদ টা দিলাম না। কিন্তু কথায় আছে না দু:সংবাদ বাতাসের আগে ছড়ায়, সবাই একে একে ফোন দিয়া আমারেই এই দু:সংবাদ শুনাতে থাকল। তখন আমিই উলটা পেইন খাইতে থাকলাম। এক সপ্তাহ আগেই ফুল পেমেন্ট করে লঞ্চের টিকিট বুক করে রাখা ছিল। লঞ্চে ফোন দিলাম বলল, টাকা পরের দিন ফেরত দিবে। এত কিছুর পরে যোগ হইল ফাইনান্সিয়াল প্যারা, এই আকালের দিনে কত্তগুলা টাকা আটকা পইড়া গেল। মাথায় তখন খালি বিকল্প চিন্তা ঘুরপাক খাইতাসিল। এর আগেও বৈরি আবহাওয়ার কারনে একবার বান্দরবন ট্যুর বাতিল করতে হয়েছিল, পরে সেই বান্দরবন ট্যুর আর হয়ে ওঠে নাই। সেই বাজে অভিজ্ঞতার কারনেই কিনা জানি না মনে জেদ চেপে গেল, যতইই বাধা আসুক না কেন সবকিছু অতিক্রম করে কুয়াকাটায় সুমুদ্দ্রস্নানে যাবই যাব। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম বাসে যাব কুয়াকাটা। যেই চিন্তা সেই কাজ। বাস কাউন্টারে ফোন দিলাম, টিকিট নাই। আসলে একই বাসে এতগুলা টিকিট একসাথে দিতে পারবে না। আবারো অনিশ্চয়তা। গাবতলি, সায়দাবাদ থেকে কুয়াকাটা যায় এমন সবগুলা পরিবহনেই একের পর চেষ্টা করলাম, লাভ হইল না, ফলাফল আগের মতই। সবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম যে সবাই একসাথে একই বাসে না গিয়ে দুইটা গ্রুপে ভাগ হয়ে আলাদা দুইটা বাসে যাব। পরদিন সকালে (২৪/৮/১৬) অফিস ছিল তাই চিন্তার বাক্সে তালা দিয়ে ঘুমায়া পড়লাম।

সকালে ঘুম থেকে উঠে BACKPACK গুছিয়ে পুরা দস্তুর BACKPACKER হয়ে গেলাম যদিও জানি না গাড়িতে নাকি লঞ্চে যাব। আর গাড়িতে গেলে কিভাবে যাব। এতগুলা BACKPACKERS এর টিকিট ম্যানেজ হয় নাই। ভরসা শুধু এতটুকুই যে আমরা BACKPACKERS, একটা BACKPACK কাধে ঝুলিয়ে আমরা টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া যেকোন জায়গায় যেকোন পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত আছি।

সকাল বেলা নিরস বদনে অফিসের বসে ফেসবুকিং করসিলাম। হটাৎ লঞ্চ স্পটার্স বাংলাদেশ থেকে মেসেজ আসল যে পারাবাত, ফারহান এবং টিপু কোম্পানির লঞ্চ চলবে। কলিজায় পানি আসল। প্রথমে আমাদের লঞ্চ পারাবাত-১১ এর কেরানি শিকদার ভাইকে ফোন দিলাম। শিকদার ভাই নিশ্চিত করল যে পারাবাত-১১ আজ ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ঠিক সময়মত টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাবে। একটু স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেই সবাইকে ফোনে সুখবরটা জানিয়ে দিলাম এবং সন্ধ্যা ৭:৩০ এর মধ্যে সদরঘাট লঞ্চ টারমিনালে উপস্থিত থাকতে বললাম। (edited)

.....(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.