নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

বিদ্রহীসূত

রাকীব আল হাসান, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি।

বিদ্রহীসূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবার জীবনেই কি বসন্ত আসে?

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫০


দিনপঞ্জীর শুকনো পাতা দেখে হিসেব মিলালাম আজ বসন্তের আগমন ঘটেছে। ঋতুরাজের সাক্ষাৎ লাভের আশায় বেরিয়েছিলাম রাস্তায়। গ্রামে ফেলে আসা বসন্তের অতীত স্মৃতি মনে মনে ভাবছিলাম- প্রকৃতি দক্ষিণা দুয়ার খুলে দিয়েছে। দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। বসন্তের আগমনে কোকিল গাইছে গান। ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ।

মনে মনে আবৃত্তি করছিলাম রবিঠাকুরের সেই কবিতার লাইনগুলো-

ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল,
ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল।
চঞ্চল মৌমাছি গুঞ্জরি গায়,
বেণুবনে মর্মরে দক্ষিণবায়


এতো কেবলই স্মৃতিগাথা। বাস্তবতা যা দেখলাম তা তো সম্পূর্ণ উল্টো। কোথাও পেলাম না বসন্তের ছোঁয়া। ফুলের সুবাস নেই, আছে নর্দমার গন্ধ। কোকিলের কুহু কলতান শুনতে পাইনি, কেবলই কর্কশ কাকা ধ্বনি আসছিলো কানে। পলাশ-শিমুলের গাছ কোথায়, কেবলই নতুন-পুরনো বিল্ডিং, সামান্য অক্সিজেন প্রদান করবার মতো সাধারণ বৃক্ষও খুঁজে পাওয়া যায় না। খাচায় বন্দী পাখির মতো কিছু ফুলগাছ দেখেছি বড় বড় বিল্ডিঙের বারান্দায়, ছাদে। খাচায় বন্দী পাখিকে কিছু দিয়ে কি আনন্দিত করা যায়? প্রকৃতি ক্রন্দন করছে মানুষের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য। প্রকৃতিতে বসন্তের ছোঁয়া কোথায়?

দেখলাম বস্তির ছেলেগুলোকে ডাস্টবিনের নোংরা খাবার খেতে, ব্যস্তসমস্ত হয়ে গার্মেন্টস কর্মীদের ছোটাছুটি, দরিদ্র মানুষগুলোর করুণ দৃষ্টি, রিক্সাওয়ালাদের ঘামা শরীর আর খিটখিটে মেজাজ, ফেরিওয়ালাদের হাঁকডাক, খাদ্যের সন্ধানে ছুটেছে ক্ষুধার্ত কুকুরগুলো, সাথে মানুষও। বসন্ত শব্দটি তাদের কাছে হয়ত অপরিচিত। ফুল আর কোকিলের ডাক তাদের হৃদয় কাড়বে না, তারা চায় একটুখানি ভাত, এক টুকরো রুটি। গাছে গাছে যদি রুটি ধরত আর কোকিল যদি ভাত ছিটিয়ে বেড়াত তবে হয়ত তারা বসন্তের নামটা জানত ভালোমতোই।

মার্সিটিজ গাড়িতে ছুটে চলা মানুষকেও দেখলাম, সাথে কুকুরও। মসজিদ পানে দ্রুত পায়ে হেঁটে যাওয়া নির্বিকার মুসল্লিদের দেখলাম, বসন্তকে বরণ করতে বাসন্তীরং শাড়ি পরা রমণীদেরও দেখলাম, কপোত-কপোতীদের নির্লজ্জতা দেখলাম--- ফুল ফুটুক বা নাই ফুটুক বসন্ত হয়ত এদের জীবনে সবসময় লেগে থাকে কিন্তু সবার জীবনে বসন্ত কবে আসবে জানি না। আমি বসন্ত খুঁজে পাইনি, আমি যে ক্ষুধার্ত, হাড্ডিসার মানুষগুলোর দলে। এখনো তাদের দুঃখ-কষ্ট আমায় স্পর্শ করে। মার্সিটিজ গাড়িতে বসে থাকা সাহেববাবু, মসজিদে ছুটে চলা মুসল্লি, বাসন্তী রং এর পোশাক পরাদের দলে এখনো ভিড়তে পারিনি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫৭

তারেক ফাহিম বলেছেন: ফাল্গুনের শুভেচ্ছা জানবেন।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪২

বিদ্রহীসূত বলেছেন: শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম। আপনার প্রতিও শুভ কামনা রইল।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬

কামরুননাহার কলি বলেছেন: শুভেচ্ছা রইলো। লেখাটি ভালো লেগেছে।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৩

বিদ্রহীসূত বলেছেন: শুভেচ্ছা গ্রহণ কলাম। লেখাটি ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল। শুভ কামনা রইল।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল ভাষায় সুন্দর লিখেছেন।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪

বিদ্রহীসূত বলেছেন: মূল্যায়নের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.