নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাড্ডি খিজিরের মত ঠোঁটকাটা হইতে চাই শেষমেশ ওসমান অরফে রঞ্জু হয়াই দিন কাটে। রোগা শালিকের বিবর্ণ ইচ্ছা কী আছিলো সেইটা অনুভব করার খুব শখ আছিলো, জীবনদা তো আর নাই। তার কথা মনে হইলেই শোভনার ব্যর্থ প্রেমিক, লাবণ্যের ব্যার্থ স্বামী মনে হয়।

রেজাউল করিম সাগর

একজন লক্ষ্যহীন পথিক, পথে নেমেই পথকে চিনি - লক্ষ্যকেও।

রেজাউল করিম সাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানসিক দেউলিয়াত্ব ও কিছু ব্যাক্তিগত অভিমত - ১

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৫:১৫



বাংলাদেশের বড় শহরগুলোতে বিশেষ করে ঢাকায় তরুণ প্রজন্ম দিন দিন আরো বেশি করে ভোগবাদী হয়ে যাচ্ছে।
এরা দামী রেস্তোরায় খেতে যাওয়া, দামী ব্র্যান্ডের দামী কাপড় পরা,বড়সড় শপিং মলগুলোতে গিয়ে কেনাকাটা করাটাকে স্মার্টনেস মনে করে, ভালো রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে ফেসবুকে চেকইন দেওয়াটাই আজকালের স্মার্টনেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা খাওয়ার জন্য শহরের এ মাথা থেকে ও মাথা চষে ফেলবে( একইধরনের খাবার আশেপাশে পেলেও শহরের ওই মাথার রেস্তোরায় গিয়ে খাওয়া চাই , ট্রাফিক জ্যাম কিংবা সময় এক্ষেত্রে বিষয় না) অধিকাংশ সময় শপিংমলে ঘুরে বেড়াবে , দেখে মনে হবে পুরোপুরি ভোগের জন্যই এদের মনপ্রাণ নিবেদিত। পূঁজিবাদী সমাজ এরকম তরুণদের স্মার্ট হিসেবে দেখাবে সবসময়, এদের এগিয়ে থাকা অংশ হিসেবে বিবেচনা করবে ( ভোগ্য পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো দেখলেই বুঝবেন)। অবশ্য এদের এই প্রপাগান্ডার পেছনে সামাজিক দায়ের চেয়ে ব্যবসায়িক মুনাফাই বড় প্রশ্ন। যত বেশি এইরকম ব্রেনওয়াশ করে ম্যানিয়াক বানানো যাবে ততই ব্যাবসা রমরমা।
.
এই ছেলেমেয়েদের কখনো রক্ত দিতে বলেন, কোন আর্ট এক্সিবিশনে যেতে বলেন, সাহিত্য আড্ডা, বিতর্ক উৎসব, গণিত, বিজ্ঞান উৎসবে যেতে বলুন, কথা দিচ্ছি এদের বেশিরভাগকেই পাবেন না । প্রায় সবাই ব্যস্ততা, ট্রাফিক জ্যাম, দূরত্বের অজুহাত দিবে তখন। একবার বলে দেখুন ," চল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যাই, বাতিঘরে যাই, বেঙ্গল বুক, পাঠক সমাবেশ কিংবা দীপনপুরে যাই!" পাবেন না ওদের। একে মানসিক শূন্যতা ছাড়া আর কি বলা যাবে! ভোগবাদ আমাদের মন ও মননকে ক্রমশ এতোটাই দাস করে ফেলছে যে মুক্তভাবে চিন্তা করা, চিন্তার খোড়াক যোগানোর চেয়ে নিজের খাওয়া-পরাই আজকাল মুখ্য হয়ে গেছে। এবং এই শূন্যতার আগুনে ঘি ঢালছে আমাদের অতিআধুনিক পূঁজিবাদী সমাজ, এদের লক্ষ্য একটাই বিপুল আর্থিক মুনাফা। দেশের তরুণরা গোল্লায় যাচ্ছে যাক।
আবার এই সমস্যাটা সমাধান করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে কারণ যারা এর ভিক্টিম তারা একে পজিটিভলি দেখছে, নিজেদের বিশেষ যোগ্যতা হিসেবে ভেবে বসে আছে। অন্যদের চেয়ে নিজেদের চমৎকারীত্ব, স্বাতন্ত্র্য বোঝানোর জন্য তাই এদের ভোগবাদী আচরণ বেড়েই চলে। কেননা তারা এটাকে কখনোই দূর্বলতা হিসেবে জানেনা, জানে এটা তাদের শক্তি। অথচ এটি যে শক্তির আড়ালে কতবড় দূর্বলতা সেটা বুঝতে না পারার পেছনে আছে বড় বড় কোম্পানী , টিভি চ্যানেলের আইওয়াশ। সেই সাথে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব আছে না?
.
আবার মফস্বলের ছেলেমেয়েরাও এক্ষেত্রে সুযোগের অভাবে অনেকখানি পিছিয়ে থাকে। তবুও তাদের ভোগবাদী চরিত্র বাড়ছে দিনদিন। বিশ্বায়নের যুগে বাজার দখলই যখন প্রধানতম লক্ষ্য তখন মফস্বল আর গ্রামগুলোই বা বাদ থাকবে কেন?
কিন্তু এখানে পূঁজিবাদী সমাজ শহরের মত সুবিধা করতে পারেনা। একেতো শহরের তুলনায় এখানে মানুষের আয় কম, তার উপর সুযোগও ঢাকার মত বড় শহরের চেয়ে অনেক কম।
আর যদি সবচেয়ে বড় কারণটি বলতে চাই আমার মতে সেটি হচ্ছে , মফস্বল বা গ্রামের মানুষের সাইকোলজি শহরের মানুষের সাইকোলজির চেয়ে বেশ খানিকটা আলাদা। এখানে অধিকাংশ শিক্ষিত তরুণ মানসিক শূন্যতা, ভোগবাদীতাকে নিজেদের দূর্বলতা হিসেবেই জানে। সেক্ষেত্রে তাদের চেষ্টা থাকে এর থেকে উত্তরণের। ফলে এইসব আইওয়াশ, ব্রেনওয়াশ খুব বেশি শেকড় ছড়াতে পারেনা।
.
সামগ্রিক দিক বিবেচনা করলে এই সময় সমাজের ভোগবাদী চরিত্র ক্রমশই বাড়ছে, আর বাড়ছে মানসিক দেউলিয়াত্ব। এই বিষয়গুলো নিয়ে গভীরতর বিশ্লেষণের প্রয়োজন বোধ করি। এবং এগুলো নিয়ে ভাবা উচিত এখন থেকেই। নাহলে পরের প্রজন্মের মানুষগুলো ভালো খাওয়া-পরা, একাডেমিক সার্টিফিকেটধারী পড়াশোনা, উচ্চবেতনের চাকরি, উচ্চ হারে ঘুষ খাবার সুযোগ আছে এমন চাকরি প্রাপ্তি ছাড়া আর কোন কিছু নিয়েই ভাববে না। কিছুই করবে না নিজের স্বার্থের বাইরে গিয়ে। একদল অনুগত ভেড়ার পাল চাইলে অবশ্য এসবকে বাড়তে দেয়াই উচিত। যদি চিন্তায় ও মননে স্বাধীন মানুষ চান তাহলে এসব অশনীসংকেত দেখে চোখ বুজে থাকলে চলবে না। কিছু করতেই হবে।

বিঃ দ্রঃ
১। কাউকে আঘাত করা এই লেখা উদ্দেশ্য নয়। কেউ নিজের উপর নিয়ে কষ্ট পাবেন না।
২। এগুলো আমার ব্যাক্তিগত অভিমত। পর্যবেক্ষণ থেকে যা পেয়েছি অকপটে বলে দিয়েছি। তাই ভুল থাকতে পারে। এই বিষয়টা নিয়ে আরো সময় নিয়ে ভালো বিশ্লেষণ প্রয়োজন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি সত্য কথাই লিখেছেন।
এজন্য দায়ী সরকার এবং বাবা মা।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:১৯

রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: আমার মনে হয়, শুধু এই দুই দলই না। এই প্রভাব বা দোষ জালের মত বিস্তৃত। এক দুই জন বা দলে ব্যাখ্যা করা যাবেনা।

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৪০

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে, অথচ নীতি নৈতিকতা আজ ভাগাড়ে...:(

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৪

রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: উন্নয়নের সাথে কি নীতি - নৈতিকতার সরাসরি সম্পর্ক আছে?

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:১১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: সময়ের সাথে সাথে সমাজ ব্যবস্থা বদলায়, কাকে আর দোষ দিবেন ভাই?

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫৬

রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: সমাজ ব্যবস্থা বদলায়, বদলাবেই সেটা আমিও মানি। চাই বা না চাই বদলাবেই। কিন্তু সে পরিবর্তনটাকে যদি অন্যের ব্যবসার উপকরণ করে ফেলে অন্যের হাতের খেলনা হয়ে যাই তাহলে কীভাবে হবে? সতর্ক হওয়া জরুরি। এবং যে মানুষগুলো সমাজের এসব সমস্যা নিয়ে সচেতন তাঁদের হাত ধরে পরিবর্তনটা ইতিবাচক দিয়েও তো হতে পারে? সেই ইতিবাচক পরিবর্তনের আশাতেই বুক বাধি। লিখি, চিৎকার করি।

৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৮

আখেনাটেন বলেছেন: নন-সাসটেইনেবল ডেভালপমেন্টের এটি একটি বিশেষ দিক। সিএসই পড়ছি কিন্তু কোডিং জানি না; বায়োটেকনোলজি পড়ছি কিন্তু ডিএনএ আইসোলেশন করতে পারি না বা বুঝি না; বিবিএ-এমবিএ করে পাড়া মাত করে ফেলছি কিন্তু মিড-লেভেল ম্যানেজারি করার মতো জ্ঞান লাভ করছি না।

দেশের নীতি-নির্ধারকদের সমাজবিজ্ঞানীদের সাথে নিয়ে এখনই এগুলোর কারণ খুঁজে বের করে প্রতিকার না করলে জাতির লং টার্ম বিকাশে অশনি সংকেত হিসেবে দেখা দিতে পারে।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:৫০

রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যা পড়ি তা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে প্রয়োগযোগ্য কিনা তা না ভেবেই সিলেবাস সাজানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা বিদেশে পড়তে যান তাঁদের ক্ষেত্রেও কথাটা মিথ্যা না। তো তাঁদের দিয়ে থিওরি কপচানো আর বিদেশের কোন বিজ্ঞানী কি করলেন না করলেন তাঁর ইতিহাস বর্ণনা করে আর বিজ্ঞানের আবিষ্কারের মহিমা কীর্তন করা ছাড়া তাঁর আর কি কাজ থাকে?

৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আখেনাটেন বলেছেন: নন-সাসটেইনেবল ডেভালপমেন্টের এটি একটি বিশেষ দিক। সিএসই পড়ছি কিন্তু কোডিং জানি না; বায়োটেকনোলজি পড়ছি কিন্তু ডিএনএ আইসোলেশন করতে পারি না বা বুঝি না; বিবিএ-এমবিএ করে পাড়া মাত করে ফেলছি কিন্তু মিড-লেভেল ম্যানেজারি করার মতো জ্ঞান লাভ করছি না।

এই প্রসঙ্গে একটা কথা না বলে পারছি না, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সিলেবাস, স্টাডি প্যাটার্ন, এক্সাম এন্ড কোয়েশ্চেন এগুলো এমনভাবে করা হয় যা প্রাকটিক্যাল ইমপ্লিমেন্টেশন এর মত পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরণের দাবী রাখে না। ফলে এক্সাম এ পাশ করা এবং গ্রেড নিশ্চিত করার মত স্টাডি করেই ডিগ্রি হাসিল হয়ে যায়; ইন ডেপথ নলেজ গড়ে ওঠার সুযোগ হয়ে উঠে না।

আর লেখকের উদ্দেশ্যে বলব, শিল্প বিপ্লবের পর থেকেই কিন্তু সমাজ বদলেছে ব্যবসায়ীদের হাত ধরেই। দুই দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সহ প্রায় বেশীরভাগ যুদ্ধের পেছনের কলকাঠী নেড়েছে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। এমনকি হালের মোবাইল, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ সহ সকল পণ্যের দ্বারা কি ভয়াবহভাবে আমরা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছি একবার ভেবে দেখবেন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:৫৫

রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: এই নিয়ন্ত্রণ বাহ্যিকভাবে সীমাবদ্ধ থাকলেও কথা ছিলো। কিন্তু তা মন মগজ পর্যন্ত দখল করে ফেললে তাতো মানা যায়না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাজ করছেন, কিন্তু যারা সমাজের মাথা সেই লেখক, কবি, শিল্পি, বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের করতব্য ভুলে গেলেই কিন্তু এরকম সমস্যা বেড়ে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.