নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি নিয়া চিন্তা করা যায় আপাতত সেইটা নিয়া চিন্তা করতাছি!

বাধ ভাইঙ্গা যায় আওয়াজের ঠেলায়!

ঘুমাইলে চোখে দেখি না!

ঘুমাইলে চোখে দেখি না, জাইগা থাকলে ঘুম আসে না! টেনশনে থাকি ইদানিং কারন একটা জিনিস চিন্তা কইরা পাই না যে কি নিয়া চিন্তা করন যায়! আজব বিলা!

ঘুমাইলে চোখে দেখি না! › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথম সাগর দেখা

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:০৩

শুনেছিলাম সাগরে নাকি সবসময় একরকম গরম থাকে। প্রচন্ড শীতেও নাকি এর পাড়ে এক উষ্ঞ আবেশ পাওয়া যায়। সাগর নিয়ে আমার কোনো ফ্যাসিনেশন ছিলো না, ছিলো না পাহাড় পর্বত। এমন না যা সাগর আমি দেখেছি ব হুবার অথবা পাহাড়ের নৈসর্গিত দৃশ্য আমার খুব পরিচিত। জীবন সংগ্রামে যখন ধরেই নিয়েছিলাম আমাকে দিয়ে কিছু হবে না, শুধু বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলা আর দারিদ্র‌্যতার সাথে অসুখী ঠিক তেমনি সময়ে জীবনে বাঁক নিলো। দাড়িয়ে ছিলাম বহুক্ষন ১০ নং জেটীর কাছে। দূর থেকে লাল সূর্য্যটাকে দেখে মনে হলো এতটা স্বর্গীয় লাল জীবনে দেখা হয়নি।



জীবনে প্রথম চট্টগ্রাম আসলাম। টাইগার পাসের রাস্তার চারপাশে বৃক্ষরাজী মনে করিয়ে দেয় খুব ছোটবেলায় দেখা বিটিভির এক ইংলিশ ছবির কথা। নাম মনে নেই, শুধু মনে আছে স্বর্গ বুঝি বিদেশীরাই তৈরী করতে পারে।



টাইগার পাস, আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা সীবিচ (ওখানে যেতে একটা কন্টেইনারের ডিপো পড়ে), সীপোর্ট, আনোয়ারা, ওয়ার সিমেট্রি....নাহ! পুরো চট্টগ্রামটা দেখা হলো না আর। হোটেল থেকে সব কিছু গুছিয়ে ঢাকার জন্য ছাড়তে হবে। ঢাকার এক ঘেয়ে যান্ত্রিক কোলাহলে থেকে ভুলেই গিয়েছিলাম শ হুরে জীবনও এত ধ্রুপদী হয়।



প্রতিদিনকার মতো সিএনজি করে অফিসে আসলাম। একটা সময় লোকাল বাসের জ্যামে বসে যখন সিএনজির দিকে তাকাতাম তখন মনে পড়তো এই বিলাসীতা আমার নয়। এমনি মাসের বেশ কিছু দিন খালি পকেটে মানুষের সাথে গাঁ ঘষতে হতো খাবারের জন্য এমনকি কিছু দিন চলে যেতো শুধু পানি খেয়ে। এখন যখন সিএনজিতে উঠি তখন মনে হয় জীবনটা শুধু সুন্দর না, অদ্ভুত সুন্দর।



অফিসে ঢুকেই প্রথম যে কাজটা করি ল্যাপটপটা ডেস্ক থেকে বের করি, অন করে অনেকক্ষন চেয়ে থাকি ডেক্সটপ ওয়ালপেপারে। উইন্ডোজ সেভেনে এই একটা জিনিস চমৎকার। ওয়ালপেপারটা খুব স্মুথ যেখানে ছবিগুলো এসএম গার্মেন্টসের সবাই। যেদিন কাজ ছেড়ে দিলাম সেদিন মালিক এসে একটা প্যাকেট উপ হার দিলো আর সাথে কলম (প্যাকেট খুলে দেখি ওখানে ৫০০০ টাকা সবাই চাঁদা তুলে দিয়েছে আর একটা কার্ড)। রাতভর কেদেছিলাম, মনে হচ্ছিলো এই চাকরীটা না হলেই ভালো হতো না।



: ডেস্কটপের এই ছবিগুলো আর কতক্ষন দেখা হবে?

: (আমি তাকিয়ে দেখি স্বর্না আপা) আরে আপা, গুড মর্নিং। আসলে আমি খুব মিস করছি।

: মিস করা ভালো, স্বাস্হ্যের জন্য উপ কারী। অফিস শেষে কি কোনো কাজ আছে?

: না তেমন কিছু নেই। আজকে কিছু রিপোর্ট পোর্টফলিও আর নেক্সট লটের ইনডেক্স প্রোফাইল তৈরী ব্যাস এগুলোই।

: রাতে একটা পার্টি আছে, ওয়েস্টিনে। ড্রপ আছে পার্টি শেষে। ভাইয়া স্পেশালী আপনাকে যেতে বলেছে।

: কোনো বিশেষ দরকার?

: কিছু লোকের সাথে পরিচয় হতে হবে, নেক্সট ভাইয়া বলে দেবে।



এই অফিসে স্যার বলার চল নেই। জাকির সাহেব আমার সুপারভাইজার। এখানকার ম্যানেজার। দেখলে মনে হয় আমেরিকায় জন্ম উনার, ইংলিশ যখন বলে তখন মনে হয় লোকটার জন্ম আমেরিকাতে।



যাই হোক, অফিসের কাজ শেষ করলাম, দুপুরের লান্ঞ্চ ফারজানা আপা করালো। একটা কথা না বললেই নয় পুরো ফ্লোরটা এই গ্রুপের লিগ্যাল আর ইনভেন্টরী আর ফরেন রিলেশন এই তিনটা সেকশন দখল করে আছে। আমাকে প্রথমে লিগ্যালে নেয়া হলেও আমাকে এই তিনটা ডিপার্টম্যান্টে তো ঘুরতে হয়ই সাথে অডিটের সাথেও কাজ করতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি ৪ টা ডিপার্টম্যান্টের ইন্টারফেস হিসেবে কাজ করছি। যদিও কাজটা আমার ভবিষ্যত ক্যারিয়ারের জন্য ভালো নয় তবু আমি এনজয় করছি।



: কালকে কি বিজি?

: অফিস শেষে তেমন কোনো কাজ নেই। বাজারে কিছু কেনা কাটা আছে।

: ওয়াও, গ্রেট। আমারও অনেকদিন শিপিং করা হয় না। বসুন্ধরা না ধানমন্ডি?

: আসলে আমার বাজারটা চাল ডাল সম্পর্কিত।

: ও আচ্ছা। ভাইয়ার সাথে কথা বলে আপনি আমার সাথে যাবেন, আমি ভাইয়াকে বলে দেবো।

: আমি তো এসব কিছুই বুঝি না।

: বুঝতে হবে না, সময় গেলে সব বুঝে যাবেন।



আসলেই আমি বুঝি না। সেদিন রাতে পার্টিতে গেলাম। জাকির ভাই আশে পাশে ছিলেন না। কিছু লোকের সাথে হাত মেলালাম, তারপর এক কোনায় গিয়ে বসে রইলাম। খাবার হাতে নিয়ে যখনই বসি তখনই কলিগের সাথে এদিক ওদিক। সব শেষে ডিজে পার্টি, চারিদিকে লাল নীল লাইট, খাদ্য পানীয়ের চূড়ান্ত অপচয়। যখন বুফের টেবিল দেখছিলাম তখন মনে হলো একটা ডীশে যে খাবার আছে সেই খাবার দিয়ে আমার মেসে আমার রহিম ভাই, মিলন শফিকের দুদিনের তিনবেলা খাবার অনায়াসে হয়ে যাবে। খুব মন চাইছিলো প্যাকেটে করে নিয়ে যাই।

মনে পরে এরকম কত রাত আমি রহিম ভাই এক প্যাকেট বিরিয়ানী দু'জনে ভাগ করে খেয়েছি। মাঝে মাঝে রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে কোনো বিরিয়ানীর দোকানের সামনে দাড়িয়ে দেখতাম ক্ষুধার্ত মানুষগুলো মজা করে খাচ্ছে।

ন গরীর এই জীবনে আমি অভ্যস্ত নই। মন চায় দৌড়ে বাড়ি যাই, বাবা শয়ে থাকে যখন রাতের বেলা, মাথার চুল নেড়ে বলি,"বাবা, তোমাকে ছেড়ে থাকতে ভালো লাগে না। যতটা দিন তোমার সাথে কথা বলিনি, আমাকে মাফ করে দাও!"



বোনটার কথা মনে পড়ে, খুব মনে পড়ে আমার..................



মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৫৫

গ্রীনলাভার বলেছেন: চমৎকার লিখছেন। চালিয়ে যান। কয়েকদিন থেকে সারাদিন ব্লগেই সময় চলে যাচ্ছে। এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করি ভাল লিখার খোজে।

ভাল থাকবেন।

১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:২৮

ঘুমাইলে চোখে দেখি না! বলেছেন: সেই কবে এই লেখা লিখেছি আর আপনি এই প্রথম কমেন্ট করলেন। আমি তো ভেবেছিলাম লেখা আমার যা তা।

২| ১২ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ঢাকার এক ঘেয়ে যান্ত্রিক কোলাহলে থেকে ভুলেই গিয়েছিলাম শ হুরে জীবনও এত ধ্রুপদী হয়।



আপনার লেখায় মাদকতা আছে, পড়তে ভাল লাগে :)

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২৭

ঘুমাইলে চোখে দেখি না! বলেছেন: একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম, গতকাল স্বর্নার বাসায় গিয়েছিলাম, সে ধ্রুপদী নৃত্য জানে।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

শের শায়রী বলেছেন: খুব কম লেখা মনে দাগ কাটে। আপনার লেখা আমার মনে দাগ কেটে গেল।

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২৮

ঘুমাইলে চোখে দেখি না! বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, এরকম কমেন্ট পেলে তো ভাই সারা দিন লেখা লিখিই করতে হবে আমাকে।

আপনিও ভাই সুন্দর লেখেন। আপনি তো সব বিষয়েই লেখেন, ইতিহাস, পদার্থবিজ্ঞান, কবিতা। আপনার এত গুন কিভাবে ভাইয়া?

৪| ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:০৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার উন্নতি তো মিয়া ভাই চোখে পড়ার মত B-))

এই অভিজ্ঞতার বিশদ বর্ণনা কাম্য ;)

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১৮

ঘুমাইলে চোখে দেখি না! বলেছেন: বিশদ বর্ননার কিছু নেই। চাঁদের মোহে যে পড়ে তাকে নিঃস্বই হতে হয়। আর আমি তো একেবারেই নিঃস্ব। আরও নিঃস্ব হলে বাবা মা বোনটার আর কেউ থাকবে না

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:২৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হু অনেক সমজদার :)

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:১১

ঘুমাইলে চোখে দেখি না! বলেছেন: এছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.