নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুজনের একসাথে পথ চলা

দাম্পত্য

দাম্পত্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিম গাছ- 'বনফুলের' ছোট গল্প

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫০

কেউ ছালটা ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে।

পাতাগুলো ছিঁড়ে শিলে পিষছে কেউ।

কেউ বা ভাজছে গরম তেলে।

খোস দাদ হাজা চুলকুনিতে লাগাবে।

চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ।

কচি পাতাগুলো খায়ও অনেকে।

এমনি কাঁচাই.....

কিংবা ভেজে বেগুন- সহযোগে।

যকৃতের পক্ষে ভারী উপকার।

কচি ডালগুলো ভেঙে চিবোয় কত লোক...। দাঁত ভালো থাকে।

কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

বাড়ির পাশে গজালে বিজ্ঞরা খুসী হন।

বলেন-"নিমের হওয়া ভাল, থাক, কেটো না।"

কাটে না, কিন্তু যত্নও করে না।

আবর্জনা জমে এসে চারিদিকে।

শান দিয়ে বাধিয়েও দেয় কেউ- সে আর এক আবর্জনা।

হঠাৎ একদিন একটা নূতন ধরণের লোক এল।

মুগ্ধ দৃষ্টিতে বেয়ে রইল নিমগাছের দিকে। ছাল তুললে না, পাতা ছিঁড়লে না, ডাল ভাঙ্গলে না। মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল শুধু।

বলে উঠলো, "বাঃ কি সুন্দর পাতাগুলো.....কি রূপ। থোকা থোকা ফুলেরই বা কি বাহার....এক ঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে। বাঃ--"

খানিকক্ষণ চেয়ে থেকে চলে গেল।`

কবিরাজ নয়, কবি।

নিমগাছটার ইচ্ছে করতে লাগল লোকটার সঙ্গে চলে যায়। কিন্তু পারলে না।মাটির ভেতর শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে। বাড়ির পিছনে আবর্জনার স্তূপের মধ্যেই দাঁড়িয়ে রইল সে।

ওদের বাড়ীর গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্ণী বউটার ঠিক এই দশা।



(বনফুল-বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়)



বনফুল অনেক আগে এই গল্পটা লিখছিলেন। কিন্তু মানুষের জীবনের পাওয়া না পাওয়ার দোলাচলে গল্পটা হয়ে গেছে চিরকালীন। আধুনিক জীবনে আমরা হ্য়তো সেই আগের 'কম্প্রোমাইজ' মেনে চলতে চাই না, কিন্তু তারপরেও খুব কি বদলেছে? বদলায়নি।

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।



মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:০৩

বরুণা বলেছেন: বাপরে!! শরৎচন্দ্র, বনফুল সবাই দেখি শুধুই নারীদের মনের কথাই জানে। আহা আমার সাথে যদি দেখা হত তাদের।

নজরুল কবির একটা গান গাই নিমফুল নিয়ে.....


নিম ফুলের মৌ পিয়ে
ঝিম ধরেছে ভোমরা ঝিম ধরেছে ভোমরা.......

০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৪৮

দাম্পত্য বলেছেন: হমম!! ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:১২

রাজামশাই বলেছেন: চমৎকার

০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৫০

দাম্পত্য বলেছেন: আপনার পছন্দ হবেই- জানতাম। ধন্যবাদ

৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চিরকালীন গল্প। এটি প্রথম ও শেষবার পড়েছি ৮৭-তে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৫১

দাম্পত্য বলেছেন: অনেকেই চিনেনা!!

৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৮

মেহবুবা বলেছেন: আমার প্রোফাইল ইমেজ নিমফুল দেখে ভালই লাগল ,আমি খুশী হলাম। ধন্যবাদ ।

০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১:৫২

দাম্পত্য বলেছেন: মজার তো!! এক সাইট থেকেই নিয়েছি মনে হয়। ভাল থাকবেন। গল্পটা কেমন বল্লেন না তো?!

৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:১১

সুরভিছায়া বলেছেন: আমাকে ব্লগে আগেই একজন বলেছিল এ গল্পটা পড়তে ,আপনার এ পোষ্টে ভাল হল ,পড়া হয়ে গেল ।একটু অবাক হচ্ছি মূল বিষয় বস্তু অনেকটা কাছাকাছি,তবে বনফুলের লেখা অবশ্যই আমার থেকে ভাল ।অনেক ধন্যবাদ।(প্রিয়তে নিলাম)

০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৯

দাম্পত্য বলেছেন: এই গল্পটা সম্ভবত গ্রাজুয়েট এর পাঠ্য ছিল। এর আবেদন চিরন্তন । সামনে আরো কিছু লেখার ইচ্ছা আছে এই বিষয়ে। ধন্যবাদ

৬| ০৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৮:৪৮

কঁাকন বলেছেন: ধন্যবাদ
অসাধারন এই লিখাটি পোষ্ট করার জন্য

১১ ই নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪৫

দাম্পত্য বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ , পড়ার জন্য

৭| ০৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:০৩

অপ্‌সরা বলেছেন:
কঁাকন বলেছেন: ধন্যবাদ
অসাধারন এই লিখাটি পোষ্ট করার জন্য

আসলেই অসাধারন!! আমি এই বইটিও পড়িনি।



নিমগাছটার ইচ্ছে করতে লাগল লোকটার সঙ্গে চলে যায়। কিন্তু পারলে না।মাটির ভেতর শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে। বাড়ির পিছনে আবর্জনার স্তূপের মধ্যেই দাঁড়িয়ে রইল সে।
ওদের বাড়ীর গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্ণী বউটার ঠিক এই দশা।

সবথেকে সুন্দর ও কষ্টকর কথাগুলি।বাংগালী গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্ণী বউটির সৌন্দয্যের দিকে কেউ ফিরেও তাকায়না একসময় আর! যেন সে এক শুধু সকলের প্রয়োজন যুগাবার এক মেশিন!!পান থেকে চুন খসাবার উপায়টি নেই!!

১১ ই নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪৬

দাম্পত্য বলেছেন: উপায় নেই কিনা জানিনা। কিন্তু শেকড় ছিড়ে কি কেউ বেরুতে পারে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.