নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হে উৎসব প্রমান করলো বাংলা একাডেমি'র নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে!!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৪

বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মত আর বাংলা একাডেমিতে দ্বিতীয়বারের মত তথাকথিত তুমুল বিতর্কিত হে উৎসব হচ্ছে। কারা এই হে উৎসবের আয়োজক? একটি ইংরেজি দৈনিক। সেটির নাম কি? দ্য ডেইলি স্টার। এদের সঙ্গে আর কে কে আছে? এ বছর ডেইলি স্টারে প্রকাশিত স্পেশাল ফিচার থেকে মোট ৪৭ টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া যায়। যার মধ্যে বাংলা একাডেমি নাকি হোস্ট, যাত্রিক নাকি প্রজেক্ট পার্টনার, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশান হল গ্লোবাল পার্টনার, এছাড়া প্লাটিনাম, গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ স্পন্সর আছে, আছে হসপিটালিটি পার্টনার, আর আছে কিছু ইনস্টিটিউট পার্টনার। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেমন আছে, তেমনি আছে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। আছে জাতীয় কবিতা পরিষদেরও নাম। এবার হয়তো আপনি ভাবতে পারেন, এরা সবাই তো জেনে শুনেই এই হে উৎসবে যোগ দিয়েছেন, তাহলে এর বিরোধীতা কেন? চলুন, আপনার সেই প্রশ্নের একটি বিশ্লেষণি জবাব দেওয়া যাক।

১. ডেইলি স্টার যে বিশেষ সাপ্লিমেন্টারি প্রকাশ করেছে সেখানে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও বাংলা একাডেমি'র মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের বক্তব্য আছে 'এডিটর'স নোট' আর 'ওয়েলকাম টু বাংলা একাডেমি' আকারে দুই কলামে। বাম কলামে এডিটর'স নোট আর ডান কলামে ওয়েলকাম টু বাংলা একাডেমি আকারে। কিন্তু মাঝখানের ছয় কলামকে চার কলাম বানিয়ে বিশাল আকারে 'থ্রি ইয়ারস অফ হে' নামে একটি বিষয় আছে। সেখানে দেখা যায় দুইজন প্রডিউসার আছেন, তারা হলেন সাদাফ সাজ সিদ্দিকি ও তাহমিমা আনাম। এবার হয়তো আপনার সন্দেহের প্রথম অংশের প্রমাণ পেয়ে গেলেন। যদি হে উৎসবের আয়োজক বাংলা একাডেমি হত, তাহলে একাডেমি'র সভাপতি প্রফেসর আনিসুজ্জামানের বক্তব্য থাকতো, এমন কি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সংস্কৃতিমন্ত্রী ও সংস্কৃতি সচিবের শুভেচ্ছা বক্তব্য থাকতো। তার মানে ঢাকায় হে উৎসবের আয়োজক ডেইলি স্টার আর তার দুইজন প্রধান কারিগর হলেন সাদাফ সাজ সিদ্দিকি ও তাহমিমা আনাম। সৌভাগ্যগুনে তাহমিমা আনাম হলেন মাহফুজ আনামের মেয়ে। মেয়ের সাহিত্যিক খ্যাতি ছড়িয়ে দেবার জন্যই এই হে যজ্ঞ।



২. হে উৎসবের প্রধান বিষয় কি? ইংরেজিতে যারা সাহিত্য চর্চা করেন তাদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তারা কারা? আমাদের দেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কলেজগুলোতে যেসব ছাত্রছাত্রী আছে, আর বাংলাদেশের বাইরে আমাদের ধনীর দুলাল-দুলালী যারা ইংরেজি ভাষায় পড়াশুনা করেন, তাদের মধ্যে যারা আবার সাহিত্য মনস্ক তারাই প্রধান। এছাড়া দেশে যারা ইংরেজিতে সাহিত্য কসরত করেন তারাও আছেন এই দলে। আর দেশের কিছু স্বনামধন্য সাহিত্যিককে এই দলে ভেড়ানোর অংশ হিসেবে নামমাত্র তাদের কিছু লেখার ইংরেজি অনুবাদ হাজির করা।



৩. হে উৎসব কাদের উৎসব? এক কথায় দেশের ধনীক শ্রেণীর মধ্যে যারা ইংরেজিতে সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের উৎসব। তো সেখানে দেশের গরিব বা নিম্নবিত্তের যারা বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের টানাহেচড়া কেন? কারণ, তাদের উপস্থিতি ধনীদের সাহিত্যকে যেমন স্বীকৃতি দেবে, তেমনি তোমরা যে গরিব লেখক আর বাংলায় লেখালেখি কর, সেটা যে কত্তোবড় হীনরুচির কাজ, তা মেনে নিয়ে বাড়ি গিয়ে আলু সিদ্ধ খাও, এটা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দেওয়া। লেখকদের ধনী আর গরিব দুই শ্রেণীতে সুস্পষ্ট বিভাজন করে উপস্থাপন করা আর বাংলার পরিবর্তে ইংরেজিকে অগ্রাধিকার হিসেবে ফুটিয়ে তোলা। তারপরও তারা কেন এই শ্রেণী বিভাজিত সাহিত্য উৎসবে যাবেন? কারণ, সেখানে অনেক বিদেশী লেখক আসবেন। বিনা পয়সায় তাদের সঙ্গে একটু আলাপ করা যাবে, ভাব-বিনিময় করা যাবে, একসঙ্গে বসে একটু র-টি খাওয়া যাবে, আর কিছু পরামর্শ যদি পাওয়া যায়, ক্ষতি কি? আর কি কি কারণ থাকতে পারে দেশীয় গরিব লেখকদের হাজির হবার? যদি কাউকে পটিয়ে-পাটিয়ে নিজের লেখার ইংরেজি অনুবাদ করিয়ে নেওয়া যায়, এই ফ্রি সুযোগ ব্যবহার করে। আর কি? আর হচ্ছে বিনা পয়সায় তথাকথিত আন্তর্জাতিক লেখক উৎসবে যোগ দেবার কীর্তি নিজের অভিজ্ঞতায় যোগ করানো। এই বা কম কিসে?



৪. বাংলা একাডেমি কেন একটি কর্পোরেট গোষ্টির বিতর্কিত এই হে উৎসবের ভ্যেনু? কারণ, বাংলা একাডেমি'র যিনি মহাপরিচালক, তিনি শামসুজ্জামান খান। কোট-টাই-প‌্যান্ট পড়ায় অভ্যস্থ এক আপাদমস্ক কলোনিয়াল ফোকলোর গবেষক। ইংরেজদের পচা গুও এই খান সাহেবের কাছে ঘি'র সমতুল্য। জনাব শামসুজ্জামান খান এই উৎসবকে বলছেন, আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন! বাংলা একাডেমি কেন নিজেই এরকম আন্তর্জাতিক লেখক উৎসবের আয়োজন করতে পারে না? প্রথমত জনাব শামসুজ্জামন খানের সেই যোগ্যতা নেই। দ্বিতীয়ত তিনি তেল মর্দনে এবং তেল গর্দনে ভারীই গদগদ হন। তাই দেশের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্নধার হয়েও তিনি এই তৈল নীতিতে এতোই আপ্লুত যে, তিনি বাংলা একাডেমি যে একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, সেই কথাটি বেমালুম ভুলে গেছেন। তিনি আর কি কি ভুলে গেছেন? বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধন ও বর্ধনে যে একাডেমি'র ভূমিকা রাখার কথা, তিনি সেই মূল মন্ত্রটিও ভুলে গেছেন। আর কি কি ভুলে গেছেন তিনি? বাংলা একাডেমি'র উদ্যোগে দেশের প্রখ্যাত লেখকদের বিশেষ বিশেষ লেখার কোনো মানসম্মত অনুবাদ করানোর কাজটি যে করার কথা একাডেমি'র সেটিও ভুলে গেছেন। একাডেমি'র অনুবাদ বিভাগের যথাযথ দায়িত্বের কথাটি তো সবার আগেই ভুলে গেছেন। তিনি কেন এতো সব দায়িত্বের কথা বারবার ভুলে যান? কারণ, তিনি বাংলাদেশের লোক সাহিত্য নিয়ে এতোই ধ্যানমগ্ন যে, একাডেমি'র কোথায় কি কি কাজ সেগুলো সব সময়ই ভুলে যান। তাহলে এই লোকটি একাডেমি'র মহাপরিচালক পদে আছেন কি করে? কারণ, বাংলাদেশের নষ্ট রাজনীতি। রাজনৈতিক নিয়োগের শক্তিতে তিনি একাডেমি'র মহাপরিচালক হয়েছেন। ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যে একাডেমি'র শুভ সূচনা করেছিলেন, সেখানে জনাব খানের মত অযোগ্য অথর্ব মহাপরিচালক কি করে সুযোগ পায়? কারণ, বাংলাদেশের দুবৃত্তায়নের রাজনীতি। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তাই জনাব খান সাহেব একাডেমি'র মহাপরিচালক আছেন। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তখন বিএনপি পন্থী আরেক বুদ্ধিজীবী একাডেমি'র মহাপরিচালক হবেন। এটাই বাংলাদেশের আইন।



৫. ডেইলি স্টারের কেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাদ দিয়ে বাংলা একাডেমিকে হে উৎসবের ভ্যেনু বানাতে হবে? কারণ, ২০১১ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলে প্রথম হে উৎসব করে তেমন সাড়া মেলেনি। দেশের লেখক সমাজ পর্যন্ত সেই উৎসবে কি ঘটেছিল জানতে পারেনি। তাই উৎসবের ভ্যেনু বাংলা একাডেমি হলে, আর এটাকে বাংলা একাডেমি'র নাম লাগিয়ে দিয়ে একটি চমক আনার পাশাপাশি দেশের সকল লেখকদের জানানো যে, এই দ্যাখো কত্তো বড় টিএ। টিএ মানে তাহমিমা আনাম। ইংরেজি সাহিত্যে বাংলাদেশের একমাত্র বুকার প্রত্যাশি লেখিকা। এই লাইনে আর কে কে আছেন? আছেন সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, আছেন শাহিন আকতার, আছেন কায়সার হক। কিন্তু সেখানে হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ শামসুল হক বা সেলিনা হোসেনদের কেন দেখা যায়? ওনাদের দাওয়াত করেছেন আয়োজকরা, তাই। তাছাড়া হাসান আজিজুল হকের 'থ্রি স্টোরিজ' নামে একটি অনুবাদ বই প্রকাশ পাবে হে উৎসবে। আর উৎসবে হাসান আজিজুল হক আর সৈয়দ শামসুল হকের একটি সাহিত্য আড্ডা হবে। সেই আড্ডার সঞ্চালক হলেন দেশের বিশিষ্ট তুঘলকি কবি সাজ্জাদ শরিফ। ভাই, এই আড্ডা কি বিদেশী লেখকরা বুঝবেন, যারা বাংলা জানেন না? তাতে কোনো অসুবিধা নাই। এই আড্ডায় দেশীয় লেখক যারা আসবেন, তারা সেখানে সদর্পে উপস্থিত থাকবেন। জমজমাট আড্ডা হবে। মুহূর্মুহু তালিয়া বাজবে। যা দেখে বিদেশী আগত লেখকরাও চোখ বড় বড় করে নেড়ে চেড়ে উঠবেন!



ভাই, সব বুঝলাম, কিন্তু শিশুদের নিয়ে আর শর্ট স্টোরি ওয়ার্কশপের কথা তো কিছু বললেন না? ওইটা কিছু সুনির্বাচিত ধনীর শিশুপুত্রকন্যাদের জন্য সংরক্ষিত। হে উৎসবে আগত বাংলাদেশী গরিব লেখকদের বা তাদের পুত্রকন্যাদের সেখানে প্রবেশাধিকার রাখা হয়নি। কেন রাখা হয়নি? আপনারা একটা জিনিস বুঝতে চান না। গোটা হে উৎসবের খরচ যোগান দিচ্ছে মহামান্য কিছু কর্পোরেট স্পন্সরগণ। তারা একটি তালিকা করেছেন। সেই তালিকাই হে উৎসবের সংবিধিবদ্ধ নীতিমালা। নীতিমালার বাইরে তো কাউরে সেই ওয়ার্কশপে সুযোগ দেওয়ার উপায় নাই। ভাই, এই নীতিমালা কে করলো? এটা মাহফুজ আনাম তার কয়েকজন সুহৃদকে নিয়ে করেছেন। সেখানে বাংলা একাডেমি'র কি কোনো ভূমিকা আছে? পাগল নাকি আপনি? বাংলা একাডেমি স্পন্সরদের দেওয়া অর্থের একটা ভাগ পাবে। যার একটা বিশাল অংশ যাবে খান সাহেবের পকেটে। একাডেমি চত্বর ও দালানকোঠা ব্যবহার করার সুযোগ দিছে, এই তো বেশি।



ক্যান ভাই, একাডেমি নাকি আয়োজক? একাডেমি আয়োজক হলে সেখানে তাহমিমা আনামের মতো লেখকরা হয়তো নিমন্ত্রণপত্রই পেতেন না। আর আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন, এই হে উৎসবের প্রধান ব্যক্তিই হলেন তাহমিমা আনাম। ভাই উনি কত্তো বড় লেখিকা? ওনার ইতোমধ্যে দুই খান উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। 'গুড মুসলিম' আর 'দ্য গোল্ডেন এজ'। একখান অন্তত ২২টি ভাষায় টাকা খরচ করে অনুবাদ করা হয়েছে। ওনার ত্রিলজি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খুব শীঘ্রই তৃতীয় উপন্যাস বাজারে আসবে। ভাই উনি কি বাংলায় লেখেন? এতোক্ষণ আপনি কি রামায়ন শুনলেন? উনি মস্তবড় ইংরেজি সাহিত্যের লেখিকা। উনি ব্রিটিশদের মত উচ্চারণে অবশ্য কিছু কিছু বাংলা বলতে পারেন বটে। আর উনি যে কোনো সময় বুকার পুরস্কার পেতে পারেন, এই খবর রাখেন মিঞা?



ভাই আরেকটা ছোট্ট প্রশ্ন ছিল, করব? করেন? এ বছর প্রথম আলো'র কোনো নাম হে উৎসবের কোথাও দেখি না কেন? ওনাগো কথা কি ডেইলি স্টার ভুলে গেছে? এটা একটি রাজনৈতিক কৌশল। আপনি হয়তো জানেন, প্রথম আলো'র প্রথমা নামে একটি প্রকাশনা আছে। সেখান থেকে বাংলা বই প্রকাশ পায়। প্রথম আলো'র নাম কৌশলগত কারণে এবার অ্যাভয়েড করা হয়েছে। কারণ, আমরা তো ইংরেজি ভাষায় যারা সাহিত্য চর্চা করে হে উৎসবে তাদেরই আলোকিত করতে চাই। কিন্তু প্রথম আলো'র এ টু জেড সবাই দেখবেন আমাদের সকল কাজে সব সময় সঙ্গে আছেন। ওনারা সঙ্গে না থাকলে তো আমরা বাংলা একাডেমিতে এই যজ্ঞ করার দুঃসাহসই পেতাম না।



ভাই, আরেকটা জিনিস মুখে আসছিল, বলবো? বলেন, যা মুখে আসে কইয়া ফেলান? হে উৎসব কি অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে ধীরে ধীরে চ্যালেঞ্জ করতাছে? হে হে হে, আপনি ভাই সকালে নাস্তা খাইছেন? অমর একুশে গ্রন্থমেলা হল বাংলাদেশের সর্বসাধারণের প্রাণের মেলা। হে উৎসব তো সর্বসাধারণের না। এটা ধনীর দুলাল দুলালীদের প্রমোদ সাহিত্য উৎসব। দেখেন নাই, জারী গান গাইবে, পিঠা খাবে, আরো কত্তো কিছু খাবে? তো ভাই, বাংলা একাডেমি কেন এই বিতর্কিত ধনী'র পুত্রকন্যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে গেল? সব টাকার খেলা। আপনি জানেন তো, টাকার জোরে বাঘে-মহিষে একঘাটে জল খায়। আপনি জানেন তো, টাকায় কুমিরের চোখ মেলে। আপনি জানেন তো, টাকায় কিনা হয়?



ভাই, টাকা দিয়ে কি লেখক হওয়া যায়? আরে ধুর মিঞা? আপনে থামেন তো! আগে নাস্তা খাইয়া লই। প‌্যাট চো চো করতাছে। একটা কথা মনে রাইখেন, আমাদের দেশে ধনীক শ্রেণী'র ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে। তারা ইংরেজি মাধ্যমে দেশে বিদেশে পড়াশুনা করছে। তাদের কেউ কেউ সাহিত্য চর্চাও করছে। তাতে আমাদের কোনো অসুবিধা নাই কা। কিন্তু বাংলা একাডেমি দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। সেখানে কর্পোরেট বাণিজ্যের সুযোগ নিয়ে এবং ডেইলি স্টারকে হে উৎসবের মত জঘন্য ভিনদেশী একটি অপ্রচলিত লেখক উৎসবকে বারবার ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে আমরা ব্রিটিশ কলোনির সেই স্মৃতিকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই। ব্রিটিশদের গোলামি করলে যদি দু'চারখানা বুকার পুরস্কার জোটে তাতে আপনার তো কোনো ক্ষতি হবার কথা না। কিন্তু বাংলা একাডেমিকে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এভাবে ব্যবহার করার পায়তারাটি মোটেও শুভ নয়। বাংলাকে হেয় করার এই সুপ্ত চালাকিটা একদিন এদেশের গুড় খাওয়া মুখোশধারী লেখকদের একটি অংশ বুঝতে না চাইলেও, যারা বাংলাকে ধারণ করে জীবন উৎসর্গ করেছেন, যারা বাংলা ভাষায় লেখার জন্য গোটা জীবন ইনভেস্ট করেছেন, বাংলাকে যারা মনে-প্রাণে লালন করেন, ধ্যান-জ্ঞান করেন, সর্বপরি ভালোবাসেন, তারা এই সব অনুচর ও তাদের দালালীর একদিন উচিত শিক্ষা দেবে। বাংলা একাডেমিতে নানান ভাষার নানান দেশের লেখকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন হতে পারে, সেটির আয়োজক হতে হবে বাংলা একাডেমিকে। ভাড়া খাটা আর নিজে আয়োজক মোটেও এক জিনিস নয়। বাংলা ভাষাকে খাটো করার জন্য, বাংলা একাডেমিকে কর্পোরেট স্বার্থের কাছে বলি দেবার জন্য, খান সাহেবদের একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তখন সেই মিছিলের শক্তি কতো বড় হবে তা আপনারা সবাই জানেন।



বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত হে উৎসব নিপাত যাক। বাংলা একাডেমি'র মহাপরিচালক জনাব শামসুজ্জামান খানকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। বাংলা একাডেমি'র মান-সম্মান বাঁচাতে সচেতন লেখক-শিল্পী ও সর্বস্তরের বাংলা ভাষাবাসির সবাইকে দুর্বার আন্দোলন করতে হবে। বাংলা একাডেমি চত্বরের বাইরে হে উৎসব হতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একাডেমিকে তালেব্বর বানিয়ে এমন ঠুটো জগন্নাথ মার্কা কোনো কর্পোরেট স্বার্থের ভেলকি আমরা দেখতে চাই না।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৬

সাইফ হাসনাত বলেছেন: এই লেখাটা স্টিকি করার সাহস দেখান, জনাব মডারেটররা...

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: আপনার লেখার সাথে একমত প্রকাশ করলাম।


এই বাংলা একাডেমি যখন দেশের সেরা গবেষক হিসাবে মহি উদ্দিন খান আলমগীকে পুরষ্কার দেওয়ার জন্য মনোনীত করে তখন বুঝতে বাকি থাকে না এটি এখন কোন ছাগলরা চালায়।


+

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

বিশ্বাস করি 1971-এ বলেছেন: হয়তোবা এরপর আমরা গে উতসবের দেখা পাবো!!! X(

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৬

মুদ্রা সংগ্রাহক বলেছেন: চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন বাংলা একাডেমীর নৈতিক অবক্ষয় টাকে....
অর্থের কাছে বিকিয়ে যাচ্ছে সব।

দুঃখ একটাই এই পোস্ট কোনদিন স্টিকি হবে না।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

পারভেজ রানা বলেছেন: আপনার লেখার পুরোটিই পড়লাম। সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।

৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: সৌভাগ্যগুনে তাহমিমা আনাম হলেন মাহফুজ আনামের মেয়ে। মেয়ের সাহিত্যিক খ্যাতি ছড়িয়ে দেবার জন্যই এই হে যজ্ঞ।

৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

দিশার বলেছেন: লেখাটা স্টিকি করার সাহস দেখান, জনাব মডারেটররা.

৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: বাংলা একাডেমি কেন একটি কর্পোরেট গোষ্টির বিতর্কিত এই হে উৎসবের ভ্যেনু? কারণ, বাংলা একাডেমি'র যিনি মহাপরিচালক, তিনি শামসুজ্জামান খান। কোট-টাই-প‌্যান্ট পড়ায় অভ্যস্থ এক আপাদমস্ক কলোনিয়াল ফোকলোর গবেষক। ইংরেজদের পচা গুও এই খান সাহেবের কাছে ঘি'র সমতুল্য।

৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৯

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: ৩. হে উৎসব কাদের উৎসব? এক কথায় দেশের ধনীক শ্রেণীর মধ্যে যারা ইংরেজিতে সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের উৎসব।

১০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪০

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: বাংলা একাডেমি দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। সেখানে কর্পোরেট বাণিজ্যের সুযোগ নিয়ে এবং ডেইলি স্টারকে হে উৎসবের মত জঘন্য ভিনদেশী একটি অপ্রচলিত লেখক উৎসবকে বারবার ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে আমরা ব্রিটিশ কলোনির সেই স্মৃতিকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই। ব্রিটিশদের গোলামি করলে যদি দু'চারখানা বুকার পুরস্কার জোটে তাতে আপনার তো কোনো ক্ষতি হবার কথা না।

১১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: একাডেমি নাকি আয়োজক? একাডেমি আয়োজক হলে সেখানে তাহমিমা আনামের মতো লেখকরা হয়তো নিমন্ত্রণপত্রই পেতেন না। আর আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন, এই হে উৎসবের প্রধান ব্যক্তিই হলেন তাহমিমা আনাম। ভাই উনি কত্তো বড় লেখিকা? ওনার ইতোমধ্যে দুই খান উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। 'গুড মুসলিম' আর 'দ্য গোল্ডেন এজ'। একখান অন্তত ২২টি ভাষায় টাকা খরচ করে অনুবাদ করা হয়েছে। ওনার ত্রিলজি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খুব শীঘ্রই তৃতীয় উপন্যাস বাজারে আসবে। ভাই উনি কি বাংলায় লেখেন? এতোক্ষণ আপনি কি রামায়ন শুনলেন? উনি মস্তবড় ইংরেজি সাহিত্যের লেখিকা। উনি ব্রিটিশদের মত উচ্চারণে অবশ্য কিছু কিছু বাংলা বলতে পারেন বটে। আর উনি যে কোনো সময় বুকার পুরস্কার পেতে পারেন, এই খবর রাখেন মিঞা?

১২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: আমি জান্তাম ঈ না

১৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: আমি জান্তাম ঈ না

১৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৭

সাদাবিলাই বলেছেন: B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) X(( X(( X((

১৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

জনাব মাহাবুব বলেছেন: সাইফ হাসনাত বলেছেন: এই লেখাটা স্টিকি করার সাহস দেখান, জনাব মডারেটররা...


দিশার বলেছেন: লেখাটা স্টিকি করার সাহস দেখান, জনাব মডারেটররা.

১৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

জনাব মাহাবুব বলেছেন: সাইফ হাসনাত বলেছেন: এই লেখাটা স্টিকি করার সাহস দেখান, জনাব মডারেটররা...

মুদ্রা সংগ্রাহক বলেছেন: চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন বাংলা একাডেমীর নৈতিক অবক্ষয় টাকে....
অর্থের কাছে বিকিয়ে যাচ্ছে সব।

দুঃখ একটাই এই পোস্ট কোনদিন স্টিকি হবে না।


দিশার বলেছেন: লেখাটা স্টিকি করার সাহস দেখান, জনাব মডারেটররা.

১৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: লেখাটি স্টিকি করার জন্য তিব্র দাবি জানাচ্ছি। আমাদের বাংলা সংস্ক্রিতি আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে। দালালদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না।

১৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৫

রহমান জর্জ বলেছেন: হু। গোছালো লেখা। হে ফেস্টিভালের চাকচিক্যে আগেই সন্দেহ করেছিলাম। তবে নিজে উপস্থিত থেকে কান্ড কারখানা দেখার সৌভাগ্য হয়নি বিধায় স্পস্ট ছিলাম না। ধন্যবাদ।

১৯| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২০

ডি মুন বলেছেন: পোস্ট স্টিকি করা হোক

২০| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৯

চাদের জোসনা বলেছেন: পোস্ট স্টিকি করা হোক

২১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২০

সত্যাশ্রয়ী বলেছেন: মেরুদন্ডহীন মডুগণ লেখাটা স্টিকি করেন ...... আলোচনা চলুক

২২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৪

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: পোস্ট স্টিকি করা হোক

২৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪

রওশন জমির বলেছেন:
তাল রাখতে গিয়ে জাত খুয়াচ্ছে বাংলা একাডেমি!!!

২৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

রেজা ঘটক বলেছেন: সবাইকে হে হে হে ধন্যবাদ। শুনলাম হে উৎসবে যোগ দেওয়া পাকিস্তানি লেখক তারেক আলী এর বিরোধীতা করেছেন। আমার অনেক অতি উৎসাহী বন্ধুরা হে ঘুরে ধিক্কার তুলেছেন। অনেকে বলছেন, টাকা ছিটিয়ে উৎসব করা যায় না। যা উৎসব তা এমনি এমনি উৎসবে রূপ নেয়।
অনেক বিদ্রোহী লেখক কবি বন্ধুরা প্রতিবাদ স্বরূপ অমর একুশে বইমেলায় বইপ্রকাশে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমিতে না ঘোরার ঘোষণাও দিয়েছেন। অনেকে বলছেন, মাহফুজ আনামের ব্রিটিশ একাউন্টের টাকা শেষ। তাই এই হে আমদানি করে মেয়েকে সাহিত্যিক খ্যাতি আনিয়ে দেবার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে বিখ্যাত মতিকণ্ঠ একটি ভারী সুন্দর রম্য রচনা করেছে।
মোট কথা জনাব শামসুজ্জামান খান বাংলা একাডেমি'র সকল ক্রেডিট ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছেন। বাংরা একাডেমি'র মতো একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে এমন হে উৎসবে জাতির বিবেককে দংশন করেছে। যে কারণে জনাব খানের আর ওই পদে থাকা শোভা পায় না। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক আর্শিবাদপুষ্ট এমন একজন খান সাহেবকে লড়ানি দেবার মত সেই দুঃসাহস কার আছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.