নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার বনাম তারেকের বেকসুর খালাস!!!

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৭

আমাদের রাজনীতিবিদরা প্রায়ই একটা কথা আউরে থাকেন- রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই! আমাদের রাজনীতিবিদদের পাল্টি খেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি তাদের ভোল্ট পাল্টাতেও বেশি দেরি হয় না। দলীয় নমিনেশান না পেলে রাতারাতি তারা নৌকা ছেড়ে ধানের শীষে যেতে পারেন। ধানের শীষ ছেড়ে নৌকায় উঠতে পারেন। নৌকায় জায়গা না হলে লাঙ্গল চষতে পারেন। কিংম্বা ধানের শীষে নৌকায় ভরসা না পেলে দাড়িপাল্লায় মাপতে পারেন কোন দিকে যাবেন। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি নৌকা ভালো চলে তো সেদিকে জোয়ার দেন। যদি ধানের শীষে হাসি ফোঁটে তো সেদিক হাসতে থাকেন। যদি লাঙ্গলে চাষাবাদ ভালো হয় তাহলে ট্রাকটর ছেড়ে সবাই লাঙ্গলের উপর ভরসা করেন। নীতি নৈতিকতার কোনো বালাই নাই। একটাই দাওয়া টাকা বানানো মেশিন। যে দলে গেলে টাকা বানানো যতো সহজ হবে, তারা সেই দলে রাতারাতি চলে যেতে দ্বিধা করেন না। গ্রামের হাট-বাজারের বিভিন্ন পন্যের যেমন ফেরিওয়ালা থাকে, ক্যানভাচার থাকে, মলম বিক্রেতা থাকে, তারা যেভাবে পন্যের গুনগান করে ক্রেতাকে পন্য ধরিয়ে দেন, পন্য কি সেটা ফেরিওয়ালার বিষয় নয়, বিক্রিটাই আসল বিষয়, তেমনি আমাদের রাজনৈতিক ক্যানভাচারগণ দল পাল্টিয়ে তখন নতুন দলে যোগ দিয়ে সেই দলের বেশি বেশি গুনকীর্তনে গলা ফাঁটাতে থাকেন। এ এক ভারী মধুর কাহিনী। যে গল্পের শেষ নেই...

আজ সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০১৩, বিকাল তিন ঘটিকায় বঙ্গভবনে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় মন্ত্রীসভা শপথ গ্রহন করবেন। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় মন্ত্রীসভায় কোন কোন দল যোগ দিচ্ছে? বাংলাদেশে যেসব দলের বর্তমান নবম জাতীয় সংসদে সদস্যপদ আছে, কেবল সেসব দল থেকেই এই সর্বদলীয় মন্ত্রীসভায় যোগ দেবার সুযোগ আছে। তো চলুন একনজরে নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনী ফলাফলটা একটু দেখে আসিঃ- ৩০০ আসনের নির্বাচনে সেই ফলাফল ছিল এরকম-

১. বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩০টি আসন

২. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল পেয়েছিল ৩০টি আসন

৩. জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭ টি আসন

৪. জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ পেয়েছিল ৩টি আসন

৫. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পেয়েছিল ২টি আসন

৬. বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পেয়েছিল ২টি আসন

৭. লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এলডিপি পেয়েছিল ১টি আসন

৮. বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি পেয়েছিল ১টি আসন

৯. স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছিল ৪টি আসন

এছাড়া সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন তখন ছিল ৪৫টি। যার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৩৬টি আসন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল পেয়েছিল ৫টি আসন এবং জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ৪টি আসন। সংবিধানের পঞ্চাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০। এই নতুন ৫টি আসন পেয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অর্থ্যাৎ সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমানে আসন সংখ্যা ৪১টি।



মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী'র নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। বিষয়টি এখনো আদালতে আপিল বিভাগে বিচারাধীন। সুতরাং আজকের সর্বদলীয় মন্ত্রীসভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী'র অন্তর্ভূক্তি হবার কোনো সুযোগ নেই। বাকি ৭টি দল থেকেই এই নির্বাচনকালীন সরকারে নতুন মুখ দেখা যাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে মন্ত্রীসভার আকার হবে প্রায় ৩০ সদস্য বিশিষ্ট। এবার চলুন আজকের নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় মন্ত্রীসভায় সম্ভাব্য মন্ত্রীদের একটা তালিকা প্রস্তুত করা যাক। গণমাধ্যমে ইতোমধ্যে যেসব নাম চাউর হয়েছে প্রথমে সেগুলো দেয়া যাক-

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে:

প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা আর অন্যান্য সম্ভাব্য মন্ত্রীগণ হলেন

আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল মাল আবদুল মুহিত, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মতিয়া চৌধুরী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, নুরুল ইসলাম নাহিদ, দীপু মনি

জাতীয় পার্টি থেকে:

রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জি এম কাদের, রুহুল আমিন হাওলাদার, মজিবুল হক চুন্নু ও অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ থেকে:

হাসানুল হক ইনু ও মঈন উদ্দীন খান বাদল

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে:

রাশেদ খান মেনন ও ফজলে হোসেন বাদশা

জাতীয় পার্টির (জেপি) থেকে:

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

আপাতত গণমাধ্যমের কাছে এই নামগুলো মোটামুটি চূড়ান্ত। শপথের আগে সেখানে আরো অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। এবার আসা যাক তারেক রহমানের বেকসুর খালাসের মামলায়।

টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ নির্মাণ কনস্ট্রাকশনস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর দায়ের করা এ মামলায় তারেক-মামুনের বিচার শুরু হয় ২০১১ সালের ৬ জুলাই। গতকাল সেই মামলার রায়ে, ঘুষ হিসাবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের মামলায় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। আর তারেকের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই অভিযোগে একজনের সাজা এবং একজনের বেকসুর খালাসের রায় যদিও খুব আশ্চার্যজনক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো'র বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে এবং ইতোমধ্যে যেগুলো'র রায় হয়েছে, সেগুলো একটি বিরাট বাধা। তারেকের বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে তার মধ্যে প্রথমটির রায় হল গতকাল। রায়ের মোটিভ থেকে এটা স্পষ্ট যে, তারেক রহমানের অন্যান্য মামলার রায়ও বিএনপি'র দাবী অনুযায়ী একই রকম হতে পারে। যেটি রাজনৈতিক সমঝোতার একটি অন্যতম লেনদেন। বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে এটা এক ধরনের অদৃশ্য মুচলেকা। এই মুচলেকার আরেকটি ভিন্ন অর্থ করছেন কেউ কেউ। যদি আগামী দশম সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় যায়, তাহলে যাতে আওয়ামী লীগের বড় বড় দুর্নীতিগুলোর এবং ঝুলে থাকা রাজনৈতিক মামলাগুলোর অনুরূপ বিচার হয়, কিংম্বা এক ধরনের ছাড় পাওয়া যায়, সেটাই তারেকের বেকসুর খালাসের পেছনের আসল রহস্য। আরেকটি পক্ষ বলছে, আজ বঙ্গভবনে বিএনপি'র কিছু উচ্চ পর্যায়ের নেতাও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন। সদ্য কারাগারে প্রেরিত হওয়া ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া এবং বিএনপি নেতা ডক্টর আব্দুল মঈন খান ও ওসমান ফারুক নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় মন্ত্রীসভায় যোগ দিতে পারেন!! এছাড়া লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এলডিপি'র কর্নেল অলি আহমেদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি'র আন্দালিব রহমান পার্থও সর্বদলীয় মন্ত্রীসভায় যোগ দিতে পারেন!!!

তবে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের এবং এলডিপি ও বিজেপি'র মন্ত্রীসভায় যোগদান কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে। সে অনুযায়ী মন্ত্রীসভা আজ আরো ছোট হতে পারে। তাদের যোগদানের জন্য নির্বাচনকালীণ সর্বদলীয় মন্ত্রীসভা আরো দু-চারদিন পরে হয়তো আরো বড় হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিএনপি'র সঙ্গে সরকারের লেনদেন এবং অদৃশ্য আপোষের নতুন নতুন মাত্রায় ঐক্য হলেই সেটি দেখা যাবে। নতুবা বিএনপি এই মন্ত্রীসভার বাইরে থেকেও নির্বাচনে যোগ দিতে পারে কৌশল হিসেবে। কিন্তু আপোষের যেসব অনুসঙ্গ এবং শোধবোধ তা তলেতলে সরকারের সঙ্গে হয়ে যাবে। তো আমরা আপাতত বিকাল তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করি...







মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪১

সরলপাঠ বলেছেন: "তবে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের এবং এলডিপি ও বিজেপি'র মন্ত্রীসভায় যোগদান কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে। " - এ বিষয়টি হচ্ছে অনকেটাই এমন - সহসাই ১৮ দলভূক্ত দলগুলো সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিয়ে রাজনৈতিক ভাবে আত্নহত্যা করতে পারে।

সর্বদলীয় সরকারতো নয় বরং এ হচ্ছে মহাজোট সরকারের সাময়িক পুনর্গঠন, যাতে বন্চিতদের সাময়িক স্টেক বাড়িয়ে দিয়ে খুশি করার চেষ্টা মাত্র।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ সরলপাঠ

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৭

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: +

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ অন্যমনস্ক শরৎ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.