নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন অন্যতম সদস্য নাসির হোসেন। কয়েক দিন আগে তিনি ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে রংপুর বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছোট বোনের আবদার রক্ষা করতে নিজের ফেসবুক পেইজে বিমানের সিটে বসা দুজনের একটি ছবি আপলোড করেছিলেন। সেই ছবি নাসির অবশেষে ঘোষণা দিয়ে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। রাগে ক্ষোভে নাসির নিজের আরেকটি ছবি পোস্ট করে সেখানে লিখেছেন, ''Dear fans, I really get hurt by your comments. I posted this pic on request of my younger sister; many of you put bad comments on it. And some of them made fun posts with it. I have removed the picture. Are you happy now? I do not need fans like you. Whoever do not like me, please don’t follow me and put comments in my picture.Thank you! আপনাদের খারাপ মন্তব্য দেখে অনেক কষ্ট পেলাম। আমার ছোট বোনের আবদার মেটাতে তার সাথে আমার ছবি পেজে পোস্ট করেছিলাম। আপনারা অনেকেই বাজে মন্তব্য করেছেন। যেটা নিয়ে অনেকেই ফান পোস্টও করছেন। পোস্টটা ডিলেট করে দিলাম এখন খুশিতো? আপনাদের মত ফ্যান আমার দরকার নাই। আমাকে যারা পছন্দ করেন না, তারা আমার ছবিতে লাইক দিবেন না। আমাকে ফলো করবেন না। ধন্যবাদ।''
বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কি টের পাওয়া যাচ্ছে? এই হচ্ছে দেশের বর্তমান চিত্র। এমন ডিজিটাল শিক্ষিত মানুষের ভারে এই দেশ এখন ধ্বংসের চূড়ান্ত দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট একটা দেশ। যেখানে কোনো পরিবার-পরিকল্পনা নাই। নাই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা। হাজার হাজার মাদ্রাসায় দেশ সয়লাব। দেশের শাসকবর্গ শিক্ষার হার বেশি করে দেখানোর ভূতুরে নেশায় মত্ত। সারা দেশের কোথাও মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। ইভ-টিজিং, ধর্ষন, খুন কত কিসিমের খবরের ছড়াছড়ি।
এবার জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নাসিরের ছোট বোনকে ফেসবুকে আক্রমন করেছে সেই দুবৃত্তের দল। পহেলা বৈশাখে যে লোকগুলো মেয়েদের যৌন নিপিড়ন করে পুলিশের সহায়তায় এখন সংবাদেরও আড়ালে। স্বয়ং পুলিশের সদস্য ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে এক মেয়েকে যৌন নিপিড়ন করেও কিভাবে যেনে এখন ঘটনারও আড়ালে! সেই সংখ্যাটি যে দেশে জোয়ারের পানির মত কেবল বাড়ছে, তা শাসক দল স্বীকার করুক আর না করুক, দেশের এই চিত্রটি তাই বলছে। এই চিত্রটি কিন্তু সত্যি সত্যিই খুব ভয়াবহ।
এই দুবৃত্তদের স্বয়ং দেশের পুলিশ আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেই এরা এতো বাড়ার সুযোগ পাচ্ছে। এদের এই ক্রমোন্নতি শাসকবর্গের এখনো দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়নি! যেদিন কোনো মন্ত্রী/এমপি-র মেয়েরা এদের নির্যাতনের শিকার হবে, হয়তো সেদিন এদের টনক নড়লেও নড়তে পারে। তার আগে শাসকবর্গ দিয়ে এসব দুবৃত্তদের সায়েস্তা করার আশা করা বাতুলতা।
আমরা এমন একটি রাষ্ট্রে বসবাস করি, যেখানে পরিবারের সদস্যদের ছবি ফেসবুকে দেওয়া যাবে না। সেখানেও এসব দুবৃত্তদের কুদৃষ্টি। সেখানেও এরা এসে নাক গলাবে। তাহলে, এই রাষ্ট্র, এই সমাজ আর কবে সভ্য হবে? কিভাবে সভ্য হবে? এসব মুর্খের দল জুকারবার্গের ফেসবুক ব্যবহার শিখেছে। কিন্তু কোথায় কী বলতে হবে, তা শেখেনি। কোথায় তার প্রবেশাধিকার তাও এরা জানে না। সুযোগ পেলেই এরা ছোবল মারে। এসব হায়েনার দল থেকে কী এই জাতির মুক্তি নাই???
ফেসবুক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যারা এটি ব্যবহার করেন, তাদের হাজারো সচেতন চেষ্টা স্বত্ত্বেও এখানে এসব অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করছে। আর আমাদের পুলিশ বাহিনী বসে বসে বাতক ব্যাধি বাধাচ্ছে। ফেসবুকে কেউ যদি কোনো জঘন্য অপরাধ করেন, তাদের সনাক্ত করার জন্য পুলিশ তাহলে কি নিয়ে বসে আছে?
শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফেসবুকে কেউ কোনো কটাক্ষ করলে পুলিশ তাহলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনতে খুব সচেষ্ট। কিন্তু প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে ফেসবুকে যে হাজার হাজার অপরাধ হচ্ছে, সেসব অপরাধীদের তাহলে কোন দেশের পুলিশ ধরবে? পুলিশ সেসব অপরাধীদের ধরার জন্য নিরব কেন?
পুলিশের এই যে একচোখা নীতি, এ কারণেই দেশে অপরাধের আওতা ও সংখ্যা দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা নিয়ে শাসকদের কোনো মাথা ব্যথা নাই। পুলিশের রাতের ঘুমেরও কোনো সমস্যা নাই। অথচ কেবল ফেসবুকে আড়ি পেতেই পুলিশ এসব দুবৃত্তদের অতি সহজেই আইনের আওতায় আনতে পারে। এদের যতক্ষণ না আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া না হবে, ততক্ষণ এসব অপরাধ চলতেই থাকবে। এসব অপরাধীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
নাসির তার ফেসবুক ওয়ালে নিজের একটি ক্ষুব্ধ ছবি দিয়ে সেখানে লিখেছেন, ''ডোন্ট ফলো মি''। একজন ব্যক্তি কতোটা অসহায় হলে নিজের ফেসবুক পেইজে এমন কথা লিখতে পারেন, তা কি আমরা অনুধাবন করতে পারি? আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেট খুব পছন্দ করেন। জাতীয় দলের সকল ক্রিকেটারকে তিনি নিজের সন্তানদের মত ভালোবাসেন। আশা করি, নাসিরের এই বিষয়টি নিয়ে তিনি এবার ইভ-টিজিং করা বা মেয়েদের সম্পর্কে আজেবাজে কমেন্ট করা এসব দুবৃত্তদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে যথাযথ নির্দেশ দেবেন।
নইলে বাংলাদেশ যতই ডিজিটাল হোক, এসব দুবৃত্তদের বংশ বিস্তারে কেবল ব্যক্তি নাসির নয়, হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন নানাভাবে নাজেহাল হতেই থাকবে। যে দেশে একজন ভাই তার ছোট বোনের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে এভাবে নাজেহাল হয়, সেই দেশের আইন-আদালত তাহলে কোথায় কী নিয়ে বসে থাকে? আমরা কী এসব বসে বসে দেখতেই থাকব নাকি আমাদের এসব নিয়ে প্রতিবাদ করার এখনই সময়? নাকি নিজের উপর আঘাত না আসা পর্যন্ত আপনি চুপ মেরে তামাশা দেখে যাবার দলে?
জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসির হোসেনের ফেসবুক পেইজে অশ্লিল কমেন্টকারী সেসব দুবৃত্তদের এখনই আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হোক। আমরা গোটা জাতি হাজার ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছি। কেবল এই ক্রিকেট এখনো আমাদের একটি সুতায় বেধে রেখেছে। সেই গৌরবের ক্রিকেটের একজন জাতীয় দলের সদস্যকে এভাবে প্রকাশ্যে নাজেহাল কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
২৭ জুন ২০১৫
ঢাকা
২| ২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯
এসব চলবে না..... বলেছেন: মু হা হা হা হা....
সাজা চাইলেন নাকি?
যেই দেশে খুন ধর্ষনের সাজা না হইয়া মামলা যুগের পর যুগ চলতে থাকে সেই দেশে বাজে কমেন্টকারীদের সাজা !!
কি মজা কি মজা ...
৩| ২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৩৬
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: কে দেবে এর শাস্তি। যেখানে অগনিত পাপীরা আরো পাপে লিপ্ত হচ্ছে,পাপের শাস্তি ভোগ না করার ফলে।
সেখানে এটা তো খুব সামান্য কিছু তাইনা।
নতুন আইন নয়, আইনের সঠিক প্রয়োগ চাই।
৪| ২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
ডি মুন বলেছেন: বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কি টের পাওয়া যাচ্ছে? এই হচ্ছে দেশের বর্তমান চিত্র।
মানুষের রুচি দিন দিন এত নিচে নেমে যাচ্ছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই।
যারা বাজে কমেন্ট করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত সন্দেহ নেই। কিন্তু যে দেশে খুনের বিচারই হয় না; সে দেশে এসব অন্যায়ের বিচার যেন আকাশ-কুসুম কল্পনা।
যাহোক, মানুষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
৫| ২৮ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:৩২
আমি শঙ্খচিল বলেছেন: শিক্ষার হার বৃদ্ধি করলেই দেশের মানুষ শিক্ষিত হবে এটা আশা করা ঠিক হবে না , স্বশিক্ষিত মানুষ ই সুশিক্ষিত মানুষ ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪
ফেরদৌসুর রহমান বলেছেন: বিষয়টা আসলেই খারাপ লেগেছে। আমাদের কমেন্টসে।