নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রযুক্তি ভালোবাসি, টেকনোলজি আমার পেশা ও নেশা। নতুন কিছু শিখতে চাই, নতুন পৃথিবী গড়তে চাই।
মিথ্যা অভিনয় করতে করতে আমরা একসময় সত্য ও সুন্দর জীবনটাকে মিথ্যায় হারিয়ে ফেলতেছি!!! একবার ভেবে দেখুন...... স্ট্যাটাসটি পড়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন...
.
➡ ফেসবুকে আপনার বন্ধু বা বান্ধবীর প্রায়ই অভিজাত রেস্টুরেন্টে চেকইন আর খাওয়া-দাওয়ার ছবি দেখেন।আসলে সে প্রতিদিন রেস্টুরেন্টে খায় না, হয়তো মাসে দু' এক বার যায়। আর এই ২/১ দিন সে হাইলাইট করে প্রচার করে,
কিন্তু তার এই ধরণের ছবি আপলোড দেখে নিজেকে তুচ্ছ বা অসহায় ভাবার কোন অবকাশ নাই কারণ এগুলো শোঅফ। তিনি খাওয়ার তৃপ্তির চেয়ে আসলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে বেশি তৃপ্তি বোধ করেন
.
➡ আর যিনি শোঅফ করতে মাঝে মাঝে এইরকম ছবি আপলোড করছেন তিনি কি একবার ভেবে দেখেছেন, আপনার ফেন্ডলিস্টে থাকা গরীব/মধ্যবিত্ত বন্ধুটি আপনার এই ছবিটি দেখে উপরে উপরে লাইক দিচ্ছে, কমেন্টে লিখছে Wow.. Have a nice moment.
আসলে আপনার বন্ধুটি লাইক/কমেন্ট করলেও, সে নিজে ভাল রেস্টুরেন্টে বসতে না পারার কস্ট মনে মনে অনুভব করছে!!!
.
➡ Toyota Axio/Primo/X-Corolla গাড়ী নিয়ে কোথাও আপনার বান্ধবী বেড়াতে গিয়েছিল। সেই গাড়ী সহ ফেসবুকে একটা ছবি দিল আর স্ট্যাটাসে লিখলো- I am very happy but tried. Fallings : ঘুরাফিরা এন্ড শপিং, চেক ইন : বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স।
➡ স্ট্যাটাস আর গাড়ীর ছবি দেখে হঠাৎ বিচলিত হবেন না- খোজ নিয়ে দেখেন আপনার বন্ধু/বান্ধবী গতকাল Toyota Axio/Primo/X-Corolla গাড়ি নিয়ে ফেসবুকে যে ছবি দিয়েছিলো, সেই গাড়িটা কিন্তু আপনার বন্ধু/বান্ধবীর নয়। আসলেই এটি ছিল উবার থেকে ভাড়া করা
.
➡ আর আপনার বান্ধবীর একবস্তা মেকাপ মারা চেহরার ছবিটাও কিন্তু তার আসল ফেস নয় সন্ধান করে দেখেন PicsArt এ্যাপস বা ফটোশপ দিয়ে এটি এডিট করা অথবা তার কোন বন্ধু ডিএসএলআর দিয়ে ছবি তুলে এডিট করে তাকে ইনবক্সে দিয়েছিলো।
.
➡ আর যিনি ফেসবুকে এইরকম মিথ্যা অভিনয় করছেন, তিনি একটু ভেবে দেখেন-
আপনার যেসকল গরীব বন্ধু উবারে ভাড়া করা গাড়ীতে বা রিকশাতেও চরে কোথাও যাওয়ার সামর্থ্য রাখে না তারা আপনার ছবিটি দেখে মনে মনে কি ধরণের হতাশা অনুভব করছে।
আসলে এইসব হয়ত ভাবার সময় আপনার হাতে নেই.. কারণ দুনিয়া চলছে শোঅফের উপর তাহলে আপনি চলবেন না কেন???
.
➡ ফেসবুকে একধরণের বন্ধু বা বান্ধবী আছে যারা প্রায়ই তার অফিসে এসি রুমে/ডেস্কের লম্বা রিভলভিং চেয়ারে বসে ছবি আপলোড দেয়, আর দেখায় যে সে অনেক সুন্দরভাবে অফিসে কাজ করছে।
অফিসের মাসিক সমন্বয় সভা বা ছোট ছোট প্রেগামের ছবিও বাদ দেন না। With College, Boring Office, Long time Office Working etc
.
➡ আহারে কি সুন্দর অফিস!! কি পরিপাটি আবার মাথার উপর ওয়ালে একটা এসিও ঝুলছে!! আসলে এসবকিছুই সাজানো, তার রুম/ডেস্ক মোটেও এমন সাজানো গুছানো থাকে না। সন্ধান করে দেখেন টেবিলের ফাইলগুলো এলোমেলো থাকে এবং সে সব সময় অফিসে এইরকম বসেও থাকে না বা কলিগদের সাথে এত আনন্দও করে না। যাস্ট ছবি তুলার জন্য মাঝে মাঝে দু্ই/একটা পোজ দেয় মাত্র। বিস্বাস না হলে, আপনি নিজে গিয়ে এক দিন দেখে আসবেন।
.
➡ আর যিনি এইরকম করে ছবি আপলোড দেন তিনি কি একবার ভেবে দেখেছেন আপনার পাশের বন্ধুটি এমএসসি বা বিএসসি করে বসে আছে যিনি চাকুরী পাইতেছেন না। মিথ্যা করে হলেও তিনি আপনার ছবি লাইক দেন/লাভ রিয়্যাক্ট করেন আর কমেন্টে লিখেন- বন্ধু তোমার উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করছি তোমার দ্রুত প্রমোশন হোক
.
➡ কিন্তু অন্তরে যে তার শুধু হাহাকার আর হাহাকার। তা কখনও কেউ কি উপলবদ্ধি করেছেন ?? নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারার যন্ত্রণাটা তিনি হাসিমুখে চাপা দিচ্ছেন !!!
.
➡ অনেক বন্ধু বা বান্ধবীকে দেখি তারা প্রায়ই তাদের টাইমলাইন বা বিভিন্ন সাংসার বিষয়ক গ্রুপে পোস্ট দেয়- “এই গিফট আমার আমার স্ত্রী/স্বামী দিয়েছে দেখতো বন্ধুরা/বান্ধবীরা কেমন হয়েছে”? স্বামী-স্ত্রী ২জনের যৌথ ছবি ঘন ঘন আপলোড করে আর হাসি দিয়ে দেখায় তারা অনেক সুখি।
.
➡ আসলে যারা বাস্তব জীবনে যত অসুখী, তারা ফেসবুকে নিজেদের তত সুখী প্রমাণ করার চেষ্টা করে। শো অফ করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। আগের যুগে মেয়েরা নতুন ড্রেস, গহনা কিনলে পাশের বাসার ভাবীর বাড়িতে কোন এক ওসিলায় গিয়ে দেখিয়ে আসত। এখন ফেসবুকের কল্যাণে বাসায় আর যাওয়া লাগে না। এক ছবি আপলোডেই সবাই তা দেখে।
.
➡ Dinner With my Family. Always I love my Family- এরপর খাবারের টেবিলে ২০/২৫ রকমের খাবারের ছবি ফেসবুকে আপলোড দেয়। ভালো করে খোজ নিয়ে দেখেন আপনার ফেসবুকের সেই বন্ধু/বান্ধবী মাসে হয়ত ২/৪ দিন পরিবারকে সাথে নিয়ে এইরকম একসাথে ডিনার/লাঞ্চ করেন আর বাকীদিনগুলোতে সে কিন্তু ঠিকই ভর্তা বা ডিম ভেজে ডাল ভাত খায়।
.
➡ এইবার আসেন ফেসবুকে সামাজিক ও মানবিক কাজে শোঅফের কথা বলি
ফেসবুকে অনেক শত শত সামাজিক, মানবিক ও আইনী সহায়তা সংগঠন আছে। কিছু সংগঠন (সকলকে বলছিনা) তাদের সংগঠনের কাজের চেয়ে আবার শোঅফের আবেগঘন স্ট্যাটাস আর ছবিগুলো অনেক বেশি। ভিক্টিমের চেয়ে তার নিজের ফেসসহ ফেসবুকে আপলোডকৃত ছবিটি হাইলাইট বেশি। কোন কোন সংগঠন আবার তাদের প্রত্যোকটি ইভেন্টে মিডিয়া কভারেজ করে, সাংবাদিকদের আগে থেকেই বলে রাখে।
.
➡ আবার কিছু কিছু আইনী সহায়তা সংগঠনের চেয়ারপার্সনকে দেখি প্রায়ই মাঝে মাঝে স্ট্যাটাস দেয় “আর পারিনা, সব বন্ধ করে দিব, সংগঠন ছেড়ে দিব, মানুষকে ফ্রি ফ্রি সেবা কেন দিব? আমার ভলেন্টিয়ারকে ধরে মারছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
-- আরে ভাই, ছেড়ে দেন। কে আপনাকে ধরে রাখছে? একবারও ত দেখলাম না ছেড়ে দিলেন। বললেই হয় আগে ফ্রি ফ্রি সেবা দিয়ে ফলোয়ার ও গ্রুপ মেম্বার বৃদ্ধি করেছি। এখন ফলোয়ার/মেম্বারদেরকে নিয়ে ব্যবসা করবো। -- আর আপনারা বন্ধ করে দিলে কি আইনী সহায়তা দেয়ারমত আর কোন সংগঠন বাংলাদেশে নেই ?
.
➡ অনলাইন জগত সবাইকে মানসিক রুগী বানিয়ে দিচ্ছে, শুধু চলছে শো অফ আর মিথ্যার ভেলকিবাজী।
.
আর এইগুলা দেখে অনেকেই নিজেকে অসহায় মনে করছেন।
হা-হুতাশ করতেছেন আর ভাবছেন জীবনে কিছুই করতে পারলাম না, প্রতিষ্ঠিত হতে পারলাম না। আমার জীবনটা শেষ। কতো রকম বাজে চিন্তা যে আপনার মাথায় আসতেছে।আল্লাহ ভাল জানে .....
.
আসলে ফেসবুকের দেওয়া স্ট্যাটাস আর ছবিগুলো সব সাজানো, সিনেমার স্ক্রিপ্টের মতো, এইটা শুধু মাত্র একটা পোচ আর কিছুই নয়। এইটা তাদের দৈনন্দিন জীবন নয়।
.
সর্বদা অল্পে তুষ্ট থাকুন। সৃষ্টিকর্তাকে (আল্লাহ)-কে ভালোবাসুন। প্রকৃত সুখ শান্তি নিজের কাছে, এটি নিজের তৈরি, আপনার জীবন আপনার মতো আপনি সাজিয়ে নেন।
.
শোঅফ মানুষগুলি বা মানুষিক রুগীগুলোর সাথে তাল মিলাতে গিয়ে কিংবা তাদের দেখে হা- হুতাশ না করবেন না। নিজেকে মানুষিকভাবে বিপর্যস্ত করাটা চরম বোকামী । মনে রাখবেন ইহা তাদের দৈনন্দিন জীবন বা প্রকৃত জীবনের সবসময়ের ঘটনা নয়।
সময় নস্ট করে কস্ট করে এ পর্যন্ত পরেছেন এজন্য অন্তর থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবার স্ট্যাটাসটির সমালোচনা করুন।
স্ট্যাটাসটি কপি করবেন করেন, পেস্ট করবেন করেন। নিজের নামে চালিয়ে দিবেন দেন কোন আপত্তি নাই। কার্টেসী না দিলে না দেন সমস্য নাই।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০২
চিটাগং এক্সপ্রেস বলেছেন: আমার একটাই দুঃখ শো অফ করতে পারি না।। নিজেকে সুপার ভাবতে সবাই পছন্দ করে। কেউ প্রকাশ করে কেউ পারে না।
৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২২
মুমু পাখি বলেছেন: রেজাউল ভাই, আপাত দৃষ্টিতে আমরা বৃহত্তর পরিবর্তন আনতে না পারলেও নিশ্চই ক্ষুদ্র পরিবর্তন আনতে পারবো সমাজে। নিজ নিজ যায়গা থেকে আমরা যদি পরিবর্তন হই তাহলে নি:সন্দেহে সেটা একটা বৃহত্তর পরিবর্তন আনবেই। সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন যে কাজটি আমরা করতে পারি তা হলো ভবিষৎ প্রজন্মকে সঠিক ভাবে দিক নির্দেশনা দেওয়া। আপনার সন্তান সহ পরিবারের আগামী ভবিষৎ প্রজন্ম আমাদের উপলব্দি আর মৌলিক শিক্ষা গুলি শক্ত ভাবে দিয়ে গড়ে তুলতে পারি। আমি আবারো বলবো এটিই সবচেয়ে গুরুত্ব পুর্ন এখন, আমাদের সন্তানরা যেন মানুষের মতো মতো মানুষ হয়। তবে কি জানেন আমি যেটা বোঝার চেষ্টা করি আপনিও নিশ্চই মানবেন আজ আমরা যা দেখছি তার দায় ভার কি রাতারাতি হয়েছে ? এর দায় ভার কি অর্ধেক পুর্ব প্রজন্মের ঘাড়ে বর্তায় না ? আমরা কি পেরেছি বর্তমানকে সুসময়ের রুপ দান করতে ?
তবে অপর দিকে সেই ৮০ দশকেও যখন সেলফোন ও ফেসবুক ছিলো না তখনো পাড়ার ধনাড্য পরিবারকে সোঅফ করতে দেখেছি, সারা বছর সেই বাড়ী গুলোতে এলাকার ছেলে হিসাবে প্রবেশাধিকার না থাকলেও ঈদের দিনে তারা সাদরে আমাদের ঢুকতে দিতেন, ছোট ছিলাম শুধু এটাই ভাবতাম আন্টিকে সালাম করতে ১০ টাকা পাওয়া যাবে। লাইন ধরে তিনি তাই করতেন পাড়ার ছেলেদের জন্য। সোঅফ ছিলো থাকবেও আমাদের দায়িত্ব নিজে ভালো হওয়া ও ভবিষৎকে ভালো করা। এই সোঅফ করতে অর্থের প্রয়োজন হয়, আজ যদি আপনার প্রচুর অর্থ থাকে আসুন শুকরিয়া আদায় করি, সোঅফ নয়।
লিখায় ভুলত্রুটি মার্জনীয়।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:১৪
rezaul827 বলেছেন: সহমত
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫৯
মৌমুমু বলেছেন: আমি শো অফ করা পছন্দ করিনা
আজকাল এই লাইনটাও অনেকে শো অফ করার জন্যই ব্যবহার করে থাকে।
আল্লাহ্ সকলকে হেদায়াত দান করুক। আমীন।