নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃত সত্য-তুমি একা।কেউ তোমার নয়,তুমিও কারও না।সব কিছুই আপেক্ষিক!!\nআমি আছি মিঠু মামা...........০৮০৮০৫

আর এইচ রিমন

আমি একজন অতি ক্ষুদ্র মানুষ । নিজকে লুকাতে পছন্দ করি। আমাকে খুজে নাও। সবার কাছ থেকে সমালোচনা আশা করছি।। আমি ধৈর্যশীলদের কাতারে থাকতে চাই। এটাই আমার ব্রত।

আর এইচ রিমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ(পর্ব-১)"

১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:০৯

লেখক:-RH Rimon{আবেগী মন}
বিবাহ দুই প্রকার।এ্যারেন্জ ম্যারেজ আর লাভ ম্যারেজ।কিন্তু কেনো জানি কোনো প্রকার বিবাহেই আমার তেমন আগ্রহ নেই।নিজে আছি নিজের মতো,দরকার কী ঝামেলায় জড়ানো?আসলে ম্যারেজ বলতে শুধু নতুন সম্পর্ক সৃষ্টি না,নিজের দায়িত্ব তো আছেই সাথে বউ বাচ্চা নাতি পুতি সবার দায়িত্ব নেওয়া।এতো কিছু সামলানো ঝামোলা তো মনে হবেই।কিন্তু আমার থেকে বড় বড় জ্ঞাণী-গুণী মানুষই এই ঝামোলা থেকে রেহায় পাননি তো আমি কোন ছাড়।বিবাহ নামের সেই গোলকধাধা ধীরে ধীরে আমার দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।
আমি মোন।সবে মাত্র ছাত্র জীবনের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন শেষ করে কর্ম জীবনের দায়িত্ব পালন করতে শুরু করছি তাতেই আবার বিবাহ জীবনের দায়িত্ব-কর্তব্য চাপিয়ে দিতে আমার পরিবার মরিয়া হয়ে উঠেছে।জীবন শেষ হলো কিন্তু দায়িত্ব-কর্তব্য শেষ হলো না।
এখন আসি মূল ঘটনায়-
আজ অফিসে ৯টায় জরুরী একটা মিটিং ছিলো।তাই মাকে বলছিলাম সকালেই উঠিয়ে দিতে।মা এসে যথাসময়েই ডাক দিয়ে গেলেন।৫মিনিটের কথা বলে আবার চোখ বুঝতেই কখন যে আধা ঘন্টা পার হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না।উঠে দেখি সাড়ে আটটা বাজে।তারাতারি করে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়েই বের হচ্ছিলাম মা বলল:-কীরে খাবি না?
আমি->>লেট হয়ে গেছে মা!অফিসে খেয়ে নিবো।
->>আজ আয় অফিস থেকে তোর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মা কিসের ইঙ্গিত করলো ঠিক বুঝতে পারলাম না।বোঝার সময়ও ছিলো না,লেট হয়ে যাচ্ছে।তাই তারাতারি অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম।সৌভাগ্য বসত অফিসিয়াল কারণে মিটিং একঘন্টা লেটে শুরু হয়েছিল বলে সে যাত্রায় বেঁচে গেলাম।অফিসের কাজ শেষে বাসায় আসলাম সন্ধায়।বাসায় ঢুকে দেখি মা ড্রয়িং রুমে বসে কী যেন দেখচ্ছন।তেমন গুরুত্ব না দিয়ে নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।একটু চোখ বুঝে বিশ্রাম নিতেই মায়ের ডাক,চা-নাস্তার জন্য ডাকছেন।ড্রয়িং রুমে বসে টিভি চালু করে এক হাতে চা আর এক হাতে বিস্কুট নিয়ে চ্যালেনগুলা ঘুরে দেখছিলাম সেই সময় মায়ের আগমন,হাতে একটা খাম।
মা-দেখতো ছবি গুলা কোনটা ভালো লাগে।
ছবি গুলো হাতে নিয়ে দেখি তাতে কতোকগুলো আটা সুন্দরীর ছবি।আটার গোডাউনের সব আটাই মনে হয় শেষ করছে।
আমি->>এতো সব আটা সুন্দরী।সবগুলার বাপ নিশ্চয় আটার ব্যাপারী।
->>এসব কী কথা?ভালো করে দেখ কোনটাকে পছন্দ হয়।যেটাকে পছন্দ করবি তার সাথেই তোর বিয়ে।
->>বিয়ে???আমার???(আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম।)
->>তো আর কার?
->>কিন্তু আমি তো সবে মাত্র চাকুরী জয়েন করলাম।
->>সেই জন্যই তো তোর জন্য পাত্রী দেখছি।যখন বউ আসবে তখন দেখি কী করে সকালে ঘুম থেকে দেরী করে উঠিস আর না খেয়ে কী করে অফিসে যাস।
->>এতো ছোট অপরাধের জন্য এতো বড় শাস্তি??
->>শাস্তি হতে যাবে কেন?আমারও তো বয়স হয়েছে।তোরা সবাই থাকিস বাহিরে।ঘরে একা থাকতে আর ভালো লাগে না।তাই তোর জন্য একটা লাল টুকটুকে পরী নিয়ে আসবো আর শাশুড়ি-বউমা মিলে সারাদিন গল্প করবো।
->>হইছে তাইলে।এমন মেয়ে পেতে হলে মিউজিয়ামে যেতে হবে।ডাইনোসরের সাথে যদি তাদেরও দুই একটা কে সংগ্রহ করে থাকে তাইলে পাওয়া যেতে পারে।কারণ ওমন মেয়ে ডাইনোসরের সাথেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
->>তোর শুধু আজে বাজে কথা।এখনও ওমন মেয়ে আছে।সময়ের পরিবর্তনে অনেকে পাল্টেছে ঠিকই কিন্তু এখনও ভালো মেয়ের অভাব নেই।আর আমার ছেলের জন্য যেমন তেমন মেয়ে আনবো নাকি?বেছে বেছে আসল হিরাটাই তুলে আনবো।
->>মা কে এখন কে বুঝায় যে আজকালকার হিরাদেরই ধার বেশি।হাতে নেওয়ার আগেই কেটে ফালা ফালা হয়ে যায়।তবুও মায়ের মুখে খুশীর কিরণটাকে ছায়ায় ঢাকাতে চাইনি।তাই বললাম যে,যদি ওমন মেয়ে পাওয়া যায় তাইলে ভেবে দেখা যায়।
->>হুমম।ছবি গুলা দিয়ে গেলাম দেখ কোনটা পছন্দ হয়।তারপর কথা বলে সব ঠিক করা যাবে।
মা চলে গেলেন রান্না ঘরে।আমি ছবিগুলো নিয়ে চলে আসলাম আমার ঘরে।প্রায় ৮/১০টার মতো ছবি।সবগুলোই মুখে একগাদা আটা মাখা।দেখেই বোঝা যাচ্ছে রুপচর্চায় তারা কতো সচেতন আর বিয়ের পর আমার পকেটের অবস্থা কীরুপ হবে তাও কল্পনায় দেখে নিলাম।সব ছবি থেকে একটা ছবি দেখলাম সম্পূর্ণ আলাদা।তেমন কোনো মেকআপ নেই।একদম সিমপল সাঝগোজ।চোখে চশমা দেওয়া,চুল গুলো একপাশে ছড়ানো,ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক,লম্বাটে মুখ।অদ্ভুত রকম মায়া সে চেহারায়।এটা তবুও অন্য গুলোর থেকে ভালো।মাকে ডাক দিলাম।
->>মা!মা...
->>কী হলো?পছন্দ হলো কোনোটা?
->>এই মেয়েটা অন্যগুলো থেকে আলাদা মনে হচ্ছে।এটা দেখতে পারো।
->>মাশাল্লা!আমিও এটাই পছন্দ করছিলাম।তোর বাবা শহরের বাহিরে গেছে।ফিরে আসুক তারপর কথা বলে দেখতে যাওয়ার দিন ঠিক করা যাবে।
->>সে তোমরা যা ভালো মনে করে।
ঠিক হলো সামনে শুক্রবার মেয়ে দেখতে যাওয়া হবে।মেয়ের বাড়িতেও জানিয়ে দেওয়া হলো।ও মেয়ের নাম হলো হিনা।নির্ধারিত দিনে চলে এলাম পাত্রী দেখতে।বসে আছি ১০মিনিট হলো।কে জানে কয় কেজি আটা যে মাখতেছে। মেয়ের বাবা আর আমার বাবা মা কথা বলছে।আমাকেও জিজ্ঞেস করলো কী করি?কই থেকে স্টাডি শেষ করছি?ইত্যাদি ইত্যাদি।আবশেষে সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কন্যার আগমন মাথায় ঘোমটা দিয়ে।যা ভাবছিলাম তা না। মুখে আটার কোনো কারসাজী নেই।ছবির মতোই সিম্পল সাঝ।এসে সালাম দিলো সবাইকে।মা তাকে পাশে বসিয়ে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছেন।কথা বার্তার একপর্যায়ে আমাদের আলাদা কথা বলার জন্য ছাদে যেতে বলা হল।মেয়ে চলছে সামনে সামনে আমি চলছি পিছে পিছে।এখন থেকেই পিছে পিছে ঘোরাচ্ছে না জানি বিয়ের পর কী হাল হয়।
ছাদে এসে কিছুক্ষণ দু'জনেই চুপ।আমি বললাম,
->>তো,পছন্দ হলো কী আমাকে?
->>সবে তো দেখা।পছন্দ অপছন্দ কী এতো তারাতারি হয়ে যায়।
->>তা ঠিক।তবে সবাই তো লাভ ম্যারেজে আগ্রহী।যাকে চেনেনা জানে না তার সাথে ঘর বাঁধার কথা তো ভাবতেই পারে না।তো আপনি এ্যারেন্জ ম্যারেজ করছেন?
->>এই ভাবনাটাও ঠিক।চিনি না জানি না হুট করেই তো কাউকে বিয়ে করা যায় না যার সাথে জীবনের বাকী দিনগুলো কাটাতে হবে।তার মানে এইও না যে যার তার সাথে প্রেম করে বিয়ে করতে হবে।প্রেমের ক্ষেত্রে বিয়ের আগে যতোটা ভালোবাসা থাকে বিয়ের পর তা কমতে থাকে আর শেষ পরিণতি ডিভোর্স। সব ক্ষেত্রে না হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই পরিণতি ঘটে।
->>তো আপনার প্লান কী?কোনোটার পক্ষেই তো প্রতিকূল যুক্তি দিলেন না।
->>আমার প্লান এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ করার।
->>এ আবার কেমন প্লান??
->>হা হা হা!এটা হাইব্রিড প্লান।ছেলে বাবা-মাই ঠিক করবে কিন্তু পছন্দ করবো আমি।আগে মাস চার পাচেক কিছু সময় একসাথে কাটাবো,একে অন্যকে বোঝার চেষ্ঠা করবো,অপরিচিত থেকে পরিচিত হবো,একে অন্যের ভালো লাগা মন্দ লাগাকে গুরুত্ব দিতে শিখবো,একে অন্যের প্রতি বিশ্বাস তৈরী হবে তারপর ভালোবাসা জন্মাবে তার পর বিয়ে।হলো তো এ্যারেন্জ লাভ ম্যারেজ।
(এমন নিরীহ মায়াবী চেহারার পিছে এতো বুদ্ধি থাকতে পারে কেউ ভাবতেও পারবে না।আমি তো ওর কথা শুনে এখনও হা হয়েই দাড়িয়ে আছি।)
->>এভাবে হা হয়ে দাড়িয়ে আছেন কেন?তো আপনি কেন এ্যারেন্জ ম্যারেজে আগ্রহী?
->>আমি তো কোনো ম্যারেজেই আগ্রহী না।সবে মাত্র চাকুরীতে জয়েন করলাম তাতেই মা ঘরে বউ তোলার জন্য ব্যস্ত।
->>হা হা হা!এতোদিন তো দেখছি বা শুনছি মেয়েরা পরিবারের চাপে পরে বিয়ে করে।আপনার ক্ষেত্রে দেখছি উল্টা।
->>(মেয়েটা এতো সুন্দর করে হাসে কী করে?) হুমম।চলুন এবার নিচে যাওয়া যাক।
->>ঠিক আছে চলুন।
->>ওহ্!যদি কিছু না মনে করেন আমি কী আপনার ফোন নাম্বারটা পেতে পারি।
->>এতো জলদি কেনো সাহেব।আস্তে আস্তে সব হবে।চলুন সবাই অপেক্ষা করছে।
তারপর নিচে চলে আসলাম।মাকে বললাম মেয়ে পছন্দ হয়েছে।মেয়ে পক্ষও নাকি আমাকে পছন্দ করেছে।কিন্তু যে পাত্রী হতে যাচ্ছে সে পছন্দ করলো কিনা বুঝতে পারছি না।পছন্দ করেছে মনে হয়, নাইলে তো বিয়ের জজন্য হ্যা বলতো না।বিয়ের পাকা কথাবার্তা মোটামুটি শেষ করে চলে আসলাম।বিয়ের দিনক্ষণ পরে ঠিক করা হবে।বাসায় এসে হিনার সাথে কাটানো সেই কিছু মুহূর্ত বার বার মনে পড়ছে।সত্যি অনেক মায়াবী মেয়ে।রাতের খাবার শেষ করে ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছিলাম হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো।অচেনা নাম্বার তবুও রিসিভ করলাম,
->>হ্যালো কে বলছেন?
->>জানু আমায় চিনতে পারছো না?
->>এক্সকিউজ মি!কে আপনার জানু?রং নাম্বারে ফোন দিছেন মনে হয়।
->>রং নাম্বার না।এটাই আমার জানুর নাম্বার।প্রতিদিন এই নাম্বার থেকেই ফোনে কথা হয়।জানু লিখে নাম্বার সেভ করে রাখছি রং নাম্বার হবে কী করে?
->>জি না এ নাম্বার থেকে কেউ কখনও কাউকে ফোন দেয়নি।নাম্বার ভালো করে চেক করে ফোন দেন।বাই!
ফোন কেটে দিয়ে আবার কাজে মন দিলাম।কিছুক্ষণ পর আবার ফোন।রিসিভ করলাম ওপাশ থেকে,
->>জানু রাগ করো কেন?এতো রাগ কিন্তু তোমায় মানায় না। রাগ করবে মেয়েরা।আর ছেলেরা রাগ ভাঙ্গাবে।তোমার দেখি সব কিছুতেই উল্টা।
->>আজব তো!বললাম তো আমি আপনাকে চিনি না।প্লিজ আর ডিস্টার্ব করবেন না
আবার কেটে দিলাম।আবার কিছুক্ষণ পর ফোন।ধরলাম না।কেটে গলো,আবার ফোন আসলো।৪/৫বার হলো তবুও ফোন দিয়েই চলছে।বিরক্ত হয়ে ফোন রিসিভ করলাম একগাদা গালি পারতে কিন্তু ফোন রিসিভ করতেই মিষ্টি কন্ঠে ভেসে আসলো,
->>সরি!আমি হিনা।একটু দুষ্টামি করছিলাম আপনার সাথে।কিছু মনে করেন নি তো?
->>ওহ্ আপনি!নাম্বার কই পেলেন?
->>আপনার পিছনে সি.আই.ডি লাগিয়ে দিছি তারা এনে দিছে। হি হি হি হি!
->>এতোটুকু সময়ের মধ্যে সি.আই.ডি ও লাগিয়ে দিছেন।খুব সাবধানে থাকতে হবে তো তাইলে।
->>হুমম।খাওয়া-দাওয়া হইছে?
->>হুমম।আপনার?
->>আমারও।আচ্ছা আমরা কী আপনি থেকে তুমি হতে পারি না?
->>চাইলেই পারেন।
->>তাইলে তুমি করে বলছেন না কেন?
->>আচ্ছা তুমি করেই বলবো।
->>ঠিক আছে।কাল কী ব্যস্ত থাকবে?
->>ব্যস্ততা বলতে অফিস।এছাড়া আর কোনো কাজ নেই।
->>তাইলে কী আমরা কাল দেখা করতে পারি?
->>ঠিক আছে।কখন কোথায় দেখা করতে হবে?
->>বিকাল ৪টাই লেকের ধারে।
->>ঠিক আছে।পৌছে যাবো।
->>আচ্ছা ঘুমান তাইলে এখন।কাল দেখা হবে।শুভ রাত্রি।
->>শুভ রাত্রি।
চলবে...........

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৩৫

আরিফুজ্জামান সরকার বলেছেন: খুব সুন্দর চালিয়ে যাও

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.