নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Rehman Rahat

রাহা২০০৯

ভালো কিছু দিতে চাই সব সময়

রাহা২০০৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘আস্তে আস্তে চুম্মা দিও কামড় দিও না’

১৩ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ২:০৯

এই লেখাটি সেই সব মানুষদের জন্যে যারা বিখ্যাত হবার জন্যে অখ্যাত সব প্রচেস্টাকে নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন।যারা লম্বা লেখা পড়তে আগ্রহী নন অথবা নিজেই বুঝতে পারছেন আমি অখ্যাত কাজ করে বিখ্যাত হয়েছি তারা নিজ দায়িত্বে এড়িয়ে যাবেন।পরে মনে মনে আমাকে গাল দিয়ে লাভ নেই।

প্রথমেই বলে রাখি অখ্যাত কর্ম বলতে আমি আমাদের চারপাশের সেই সব কর্মকে বোঝাতে চাচ্ছি যা না করলেও হতো এবং যে কাজ মানুষের অস্বস্তি থেকে আনন্দের সৃস্টি করে।কথাটা বুঝতে কঠিন মনে হলে একটা উদাহরন টানি।প্রথম উদাহরনটা আমাদের সবার প্রিয় হিরো আলম ভাই।কি করেছিলেন উনি? বাংলাদেশের হাজার হাজার হিরো আলম আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।কিন্তু শুধু হিরো আলম কেনো? কারন উনি আমাদের মনে প্রথমে অস্বস্তি সৃস্টি করেছিলেন,তারপর আমাদের ইন্দ্রিয় এই অস্বস্তির মাঝে চারপাশের সাথে খাপ না খাওয়ানো ব্যপারগুলো এক করে সে এক ধরনের আনন্দ অনুভব করেন।এটা অনেক স্বাভাবিক বিষয়,যাকে বলি আমরা হিউম্যান নেচার।যেমন ধরুন একজন বাচ্চা ছেলে রাস্তায় প্যান্ট নামিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিচ্ছে,বিষয়টা কিন্তু নোংরা না।স্বাভাবিক বিষয়।কিন্তু আপনি দেখে প্রথমে নাক ঢেকে ছিঃ ছিঃ করবেন,তারপর রাস্তার ধার ঘেষে এমন ভাবে হেটে যাবেন যেন এটা স্বাভাবিক বিষয় হতেই পারে।তবে একবার ভাবুনতো যদি সেই বাচ্চা ছেলের যায়গায় কোন মধ্যবয়স্ক নারী জরুরী মূহুর্তে এ কাজ করছে তবে? হ্যা,আমি বাচ্চার সাথে যে কাজ করেছেন এই মধ্যবয়স্ক নারীর সাথেও সে কাজ করবেন, আর তা হলো নাক চেপে ছিঃ ছিঃ করে রাস্তার ধার ঘেষে হেটে যাবেন।তবে বাচ্চা আর সেই মধ্যবয়স্ক নারীর দু’জনার ক্ষেত্রে যে পার্থক্য হবে তা হচ্ছে আপনি দু’বার বেশী তাকাবেন সেই ভদ্রমহিলার দিকে।তারপর অফিসে গিয়ে বলবেন “আজকে একটা মহিলাকে দেখলাম রাস্তায় বইসা বাথরুম করতেছে,হা হা হা....”
বিষয়টা হচ্ছে যা আপনি দেখে স্বাভাবিক ভাবে অভ্যস্ত তা আপনি যদি আপনার চারপাশে না দেখেন তাহলেই সেটি আপনার অস্বস্তি সৃস্টি করবে।আর সেটা আপনি অন্যজনকে জানাতে চাইবেন।আর সেই অন্যকে জানানোর বিষয়টা আপনাকে অন্যদের কাছে করে তুলবে ব্যাতিক্রম(সবাই ব্যতিক্রম হতে চায়,কারন সবাই চায় একদল লোক তাকে ঘিরে থাকুক),আর সেই ভদ্রমহিলা নিজের অজান্তেই হাজারো মানুষের কাছে গল্পের পাত্র হয়ে যেতে পারে।হিরো আলম ভাইয়ের বিষয়টাও তাই। আমরা তাকে নিয়ে কথা বলতে ভালোবেসেছি,সে অন্যদের থেকে আলাদা অস্বস্তি সৃস্টি করেছিল।এখনো আমরা তাকে নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসি।তবে আমি তাকে ছোট করছি না,সে যা করে দেখিয়েছে তার জন্যে অনেক অনেক সাহস প্রয়োজন যা আমাদের মত ছিঃ ছিঃ করে রাস্তার ধার ঘেষে হেটে যাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
তো,এ গেল শুধু অস্বস্থি নিয়ে কথা।এখন আসি খ্যাতির জন্যে এই অস্বস্তি গুলো কাজে লাগিয়ে যারা অখ্যাত সব পন্থা অবলম্বন করেছেন তাদের কথা।যেমন ধরুন সম্প্রতি আমি তরুন একটা ব্যান্ডের ডকুমেন্টারী ও মিউজিক ভিডিও নির্মান করেছি।তাদের অন্য সবার থেকে পার্থক্য হচ্ছে তারা হেভি মেটাল গান করে।যদিও আজও আমি হেভি মেটাল গান বুঝি না,কারন তাদের নৃত্য এবং মাথা ঝাকুনি ছাড়া আমার তাদের গানে আর কিছুই বোধগম্য হয় না। পার্ভতি বাউল এ ধরনের গায়কদের টিকটিকির নাচের সাথেই তুলনা করেছেন।তার চেয়েও বড় মজার বিষয় হচ্ছে ব্যন্ড দলটির ভোকাল মানে গায়ক মুখোশ পরে।কেউ তার চেহারা কখনও দেখেনি।বিষয়টা আমাকে কৌতুহলী করেছিল।তো,ডকুমেন্টারীর একটা পর্যায়ে যখন গায়কের কাছে প্রশ্ন আসে আপনি কেন মুখোশ পড়েন তখন সে জবাব দিয়েছিলো “আমি গলা দিয়ে গান করি,চেহারা দিয়ে না” ।আমি তার জবাব শুনে হা করে তাকিয়ে রয়েছিলাম,এর মানে কি? গান তো গলা দিয়েই গেতে হয়,তাহলে মুখোশ পরার আসলে কারনটা কি? উত্তরটা অনেক দিন পরে পেয়েছি যখন প্রায় দেড় বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সে ফলাও করে বলতে শুরু করেছিল আমিই সেই মুখোশ মানুষ। তার মানে আমরা কি ধরতে পারি,সেই মুখোশটা শুধু মাত্র একটা মার্কেটিং এর অংশ যাতে করে খুব সহজে মানুষের অবচেতন মনে অস্বস্তির জায়গা সৃস্টি করে সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে নেয়।আর যখন সেই জায়গাটা সবার কাছে স্থান পায় তখন সে ব্যক্তি সেই মুখোশ মানুষের জন্যে তার খ্যাতি বা জনপ্রিয়তা চায় না,সে চায় তার নিজের জন্যে।আর তাই সে সবাইকে জানিয়ে দেয় সে সেই অজানা মুখোশ মানুষ। এতো শুধু একটা উদাহরন,প্রযুক্তির দৌরাত্বে আরো অনেকে অনেক উপায় অবলম্বর করে এই খ্যাতি অর্জন করেছে।কেউবা অধিক মেকা-আপ নিয়ে,কেউবা না জেনে গান গেয়ে অথবা কেউ অধিক মেদ সম্পন্ন হবার পরও নিজেকে স্লিম দাবী করে।কেউ কেউ আবার নেশাগ্রস্থ হয়ে সবার কাছে নিজেকে ব্রান্ডের আকারে প্রকাশ করেছে যার নাম হয়েছে জুনায়েদ।কিন্তু এই জুনায়েদকে আমি কিছুদিন আগে একটা ভিডিওতে দেখেছি সে অতীতের জন্যে নিজেও অনুতপ্ত। যদিও আমরা চাই না তারা আমাদের চারপাশে বা বন্ধু মহলে বা সাথে থাকুক তবু আমরা তাদের দেখতে ভালোবাসি। এর জন্যে আমরা যেমন দায়ী তেমনি কিছু ব্যক্তির মানুষিকতাও দায়ী।তার অস্বস্থি তৈরী করে শুধু, আমরা তা বিস্তার করি।তা না হলে “ফুল দিও কলি দিও কাটা দিও না,আস্তে আস্তে চুম্মা দিও কামর দিও না” এ ধরনের গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় হতে পারতো না। কাল সকালে যদি রাস্তা দিয়ে হেটে যাবার সময় কোন ছেলে এই গান কোন স্কুল বালিকাকে উদ্দেশ্য করে গায় তবে তা আমাকে অবাক করবে না।কারন আমরা অস্বস্তি প্রিয় এবং তা ছড়াতে ভালোবাসি।তবে আফসোস হয় সেই স্কুল বালিকার জন্যে যে হয়তো বাসায় গিয়ে ব্যগটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে কাদবে আর নিজেকে প্রশ্ন করবে কেন তার সাথে এমন করছে।এই ইভটিজিং এর দায়ভার শুধু সেই ছোকরাদের নয়,এর দায়ভার আমাদের সকলের যারা অস্বস্তিকে ভালোবেসে,অস্বস্তিকে পুজি করে ব্যবসা করে যাচ্ছি আর অবশেষে ছিঃ ছিঃ বলে রাস্তার ধার ঘেষে হেটে যাচ্ছি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:২৬

তমা আহম্মেদ বলেছেন: লম্বা লেখা না পড়া ব্যপারটা দারুণ বলেছেন। এখন লম্বা লেখায় সকলের এলার্জি জনিত সমস্যা হয়।তবুও ফেমাস হওয়ার জন্য নিজের স্বকীয়তা বিসর্জন দেব এমন মানসিকতা এখনো হয়নি।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২২

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা নিলয় বলেছেন: :)

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

শব্দ অর্থ বলেছেন: বর্তমানে নেগেটিভ মার্কেটিং সবচেয়ে কাজের। মানুষ সহজে ভুলে যায় সে কিভাবে জনপ্রিয় । জনপ্রিয়তা এবং টাকায় অনেক কিছু নির্ধারণ হয়।

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৪৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: হ্যালো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.