![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি গর্বিত আমি বাঙালী।জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের একটাই পরিচয় আমরা বাংলাদেশী।
দিনটি ছিল ১৭ মে, ১৯৮১। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা ফিরে এলেন তাঁর প্রিয় মাতৃভূমিতে। এদেশের ভাগ্যাকাশে যখন দুর্যোগের কালো মেঘের ঘনঘটা, ক্যু-হত্যা যখন নিত্যনৈমত্তিক, জাতি যখন নেতৃত্বশূন্য ও লক্ষ্যভ্রষ্ট, তখনই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। । ১৫ আগস্টের সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি দেশপ্রেমিক মুক্তিকামী জনতা বঙ্গবন্ধুর রক্ত ছুঁয়ে শপথ নিয়েছিল এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব সৃষ্টি হবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেবে । পুরো বিমানবন্দর এলাকা লোকে লোকারণ্য, যেন জনসমুদ্র। গণতন্ত্রের মুখোশধারী স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু আর অপপ্রচারকে উপেক্ষা করে সেদিন জনসমুদ্র ছুটে এসেছিল প্রাণের নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে। সবার মুখে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান। হাতে বঙ্গবন্ধুর ছবি, রঙ্গিন পোস্টার, ব্যানার, নৌকার প্রতিকৃতি। সেই জনসমুদ্র দেখে আবেগে অশ্রু গড়িয়ে পড়েছিল প্রায় অর্ধ কোটি জনতার। পিতা এবং তাঁর কন্যার প্রতি মানুষের এত গভীর ভালবাসা দেখে আবেগের অশ্রুকে রুদ্ধ করতে পারেনি কেউ সেদিন।আকাশ ছিল মেঘলা। জাতির পিতার রক্তে ভেজা মাটিতে বিমান স্পর্শ করার খানিক পরেই আকাশ ভেঙ্গে নেমেছিল বৃষ্টি। বাংলার আকাশ বঙ্গবন্ধুর প্রাণপ্রিয় তনয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খুশিতে আবেগে অঝোরে কেঁদেছিল সেদিন। নেতাকে বহনকারী বিমানটি রানওয়ে স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে জনতার মিছিল যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। হাতের নাগালের মধ্যে পেয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে বহনকারী বিমান ছুঁয়ে আবেগে কেঁদে ফেলেছিলেন অনেকেই। এর কিছুক্ষণ পর বিমানের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পুষ্পার্ঘ্যে শোভিত বঙ্গবন্ধুর কন্যা জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদন জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই আনন্দ-বেদনায় কান্নার রোল ওঠে সমগ্র বিমানবন্দর এলাকাজুড়ে। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’স্লোগানের মাধ্যমে নেত্রীকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হচ্ছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম-পিতৃ হত্যার বদলা নেব’ স্লোগানটি । এই স্লোগানটির মধ্য দিয়েই প্রকাশিত হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি, শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের তীব্র আবেগ ও ভালবাসা। মানুষের সেই তীব্র ভালবাসা দেখে শেখ হাসিনা নিজেও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। এতদিন হৃদয়ের রক্তক্ষরণ জমাট বেঁধেছিল বুকের ভেতরে, তা অশ্রুবিন্দু হয়ে দুচোখ বেয়ে নেমেছিল ।শেখ হাসিনার শরীরে প্রবাহিত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী অকুতোভয় দেশপ্রেমিক শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত। । স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে তিনি তার চেয়েও বেশি সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন। আজ আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার দ্বারপ্রান্তে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধুর পরই ক্যারিশমেটিক নেতা হিসেবে তাঁকে বিবেচনা করা হচ্ছে। কর্ম ও গুণের স্বীকৃতিস্বরূপ সাউথ সাউথ, চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থসহ বিভিন্ন পুরস্কারে তাঁকে ভূষিত করছে দেশ-বিদেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। ধৈর্য ও সাহসের প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনা বহুমাত্রিক এক জ্যোতিষ্ক। তাঁকে কেন্দ্র করে, তাঁর নেতৃত্বেই আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। সেজন্যই প্রয়াত কবি ত্রিদিব দস্তিদার শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই বলতে হয়, ‘আপনিই তো বাংলাদেশ’। আপনি দীর্ঘজীবী হোন।
©somewhere in net ltd.