নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি রিফু।বয়স সদা পরিবর্তনশিল।তাই বয়সের কাছে হাত পাতি না।পেশা বলতে কিছুই নেই,ছাত্র মানুষ।আমৃত্যু ছাত্র।রগচটা।মুখে হালকা দারি।শেভ করা পছন্দ করিনা।চুল ২ মাসে একবার কাটি।গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা(লোকে বলে)।আমি বাঙ্গালি,ভাত মাছ পছন্দ,মাংস খাইনা,আবার খাওয়া হয়,

রিফু আলম

রিফু আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন জ্যাকুলিন মিথিলা

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:০২

এক জ্যাকুলিন মিথিলা, জন্মালো, বড় হলো, শরীর দেখালো, মরে গেলো, চিতায় পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। অনেকেই বললো মাগীদের পরিনতি এমনই হয়, উচিত কাজ হইসে। কেউ কেউ ডিফেন্ড করলো এই বলে, অন্যদের মতো লাক না থাকায় পরীমনিদের মতো উঠে আসতে পারলো না। কিন্তু একটা কথা কেউ বলে নি, হয় এড়িয়ে গেছে, নয়তো স্বীকার করার সাহস নেই তাই মুখ লুকিয়েছে। সেটা নিয়েই কিছু কথা বলবো।

এই মিথিলাদেরকে কারা তৈরী করে? এরা কিভাবে জয়া শীল থেকে জ্যাকুলিন মিথিলা হয়ে উঠে? কেনোই বা এদেরকে শীল থেকে মিথিলা হতে হয়? জন্মের পরে নিশ্চয়ই কারো প্ল্যান থাকে না নিজেকে নগ্ন করার মাধ্যমে বাজারে বিক্রির জন্য তোলার? তাহলে, আল্টিমেটলি কেন মিথিলাকে এমনটা করতে হয়েছিলো? মিথিলার উত্থানে কারা সহযোগিতা করেছিলো? তারা, যারা মিথিলার প্রথম কাপড় ছাড়া ছবিতে লাইক দিয়ে, কমেন্ট করে বন্যা বইয়ে দিয়েছিলো। তারাই, যারা মিথিলার ভিডিওগুলো দেখার জন্য হুড়মুড় করে পড়তো। মিথিলার দোষ আছে, তার চরিত্র খারাপ, সে নষ্ট মেয়ে- সব ঠিক আছে। কিন্তু সে তার নষ্টামী ছড়াতে পারতো না যদি না আমরা পুরুষরা তা এপ্রিশিয়েট করতাম। সে তাকে নগ্ন থেকে নগ্নতর করতে পারতো না যদি না আমরা তারর নগ্ন শরীর দেখতে চাইতাম। যদি প্রথম দিন থেকেই আমরা তাকে বাধা দিতাম, তার পর্যাপ্ত সমালোচনা করতাম, উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতাম তাকে রুখে দেয়ার, তাকে ব্লক দিতাম- আনফ্রেন্ড করতাম -আনফলো করতাম, তাহলে মিথিলা আর মিথিলা হতে পারতো না। কিন্তু, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মিথিলার ফলোয়ার ছিলো দেড় লাখ। দ্যাট মিনস, দেড় লাখ পুরুষ তাকে নগ্ন হতে সাপোর্ট দিচ্ছিলো, তার নগ্নতা উপভোগের অপেক্ষায় ছিলো।

মিথিলা বা রাস্তাঘাটে, পার্কে, রিকশায়, হোটেলে, বন্ধুর ফ্ল্যাটে, ডার্ক ক্যাফেগুলোতে তার মতো বাকিরা আর কিছুই নয়, শাসন-পরিচর্যাহীন-অবারিত-উদ্দাম পরিবেশে বেড়ে উঠা, হলিউড-বলিউড-ফ্যাশন-ড্রামা-মডেলিং-ক্যামেরা-স্পটলাইট-সেলেব্রিটি-ব্যবসা-উপার্জন ইত্যাদি টার্ম মাথায় ঢুকার ক্ষেত্রে বাধা না পাওয়া এবং আমাদের পুরুষদের ইচ্ছা বা চাহিদার যোগান দেয়ার মিশেল মাত্র। মিথিলা বুঝতে পেরেছিলো এই যুগে নারীর কাছে পুরুষরা কেবল শরীরটাই চায়, শরীরটা ছাড়া পুরুষদের কাছে নারীর আর কিছুই মূল্য পায় না। এরপর যখন দেখলো এই শরীরটাকে কাজে লাগিয়ে যেহেতু পয়সা কামানো যাচ্ছে এবং সেই পয়সা খরচ করার মাধ্যমে গাড়ি-আইফোন-এপার্টমেন্ট কেনা যাচ্ছে, পাশাপাশি হাজার হাজার পুরুষকে চরকির মতো রাতের বেলা ঘোরানো যাচ্ছে, সেই সুযোগটাই সে লুফে নিয়েছে। সে চারিত্রিকভাবে দূর্বল ছিলো, কনসিউমারিজম আর পুরুষত্বের শক্তির সাথে পেরে উঠার ক্ষমতা তার চরিত্রের ছিলো না, তার অশিক্ষিত, নাপিত বাবা তাকে এই শক্তিটুকুর শিক্ষা দিতে পারে নি, দেওয়ার মতো জ্ঞান তারও ছিলো না। এবং এসবেরই সম্মিলিত ফসল, জ্যাকুলিন মিথিলা।

গরীব ঘরের মাথামোটা মেয়ে ছিলো, একদিকে ছিলো অভাব, আরেকদিকে ছিলো এই জ্ঞান যে শরীরটা দেখালেই আসবে টাকা, পাওয়া যাবে সব শ্রেনীর মানুষের এটেনশন। পাশাপাশি, মাথা খাটাতে হবে না, দশ বারোটা করে সাব্জেক্ট বিশ বছর ধরে পড়ে টাকা কামাতে হবে না, কাপড়টা খুলে ফেললেই হুড়মুড় করে চলে আসবে টাকার বান্ডেল। শুধু নিজের দোষে মাগী হয়নি মিথিলা, এই বিশ্বব্যবস্থা, এই সমাজব্যবস্থা এবং আমরা অর্থাৎ অভুক্ত, বিকৃত পুরুষদের রুচিবোধ এবং একনিষ্ঠ সমর্থনের পরেই একজন জ্যাকুলিন মিথিলা এবং তার মতো আরো অনেকের উত্থান। অবশেষে, এক্সপেক্টেশন এবং রিয়েলিটির মাঝে ব্যালেন্স না করতে পেরে নিজেই নিজেকে শেষ করে দেয়া। জীবিকা, ভোগ বিলাসিতা ও এটেনশনের যোগানদাতা শরীরের পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.