নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি প্রযুক্তি প্রিয় মানুষ; ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি ভালোবাসি। এছাড়াও ভালোবাসি বই আর লেখালেখি পড়তে। মাঝে মাঝে লিখতেও ইচ্ছা করে। এখানে যোগ দিয়েছি হঠাৎ কোন কিছু লিখে ফেললে সেটা সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য।

রিহানুর ইসলাম প্রতীক

রিহানুর ইসলাম প্রতীক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুখে আমার টান পড়েছিল

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:২৯

সেদিন আমার এক বন্ধু বিশ হাজার টাকা দিয়ে একটি স্মার্ট ওয়াচ কিনেছে। ক্লাসে এসে দেখাচ্ছিল সবাইকে, আমার না খুব আফসোস হচ্ছিল দেখে। ইশ! আমার যদি ওমন একটা থাকতো! কিন্তু আমার সেটা কেনার সামর্থ্য নেই। কম দামী স্মার্ট ওয়াচ দূরে থাক, আমি পরি কেবল একটা ছয়শো টাকা দামের হাত ঘড়ি। এ কারণে অনেক মন খারাপ আর আফসোস নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি ফুটপাতে একলোক নিজের পাশে একটি গামছা বিছিয়ে শুয়ে কাতরাতে কাতরাতে মানুষের কাছে ভিক্ষা চাচ্ছে। ভিক্ষা নেওয়ার মত হাতদুটোও ছিল না তার!

আমার বন্ধুর দেখাদেখি এবার ঈদে আমারও খুব শখ ছিল ব্রিটিশ ক্লার্ক ব্র্যান্ডের আট হাজার টাকা দামের এক জুড়ো জুতো কিনবো। বাবাকে গিয়ে এটা বলার পর বাবা আমার হাতে তিন হাজার টাকা দিয়ে বলেছিল বাটার এক জুড়ো জুতো কিনে নিতে। আমি রাগে ক্ষোভে পাশের বেলকনি থেকে টাকা ছুড়ে ফেলতে গিয়ে দেখি এক লোক স্ট্রেচারে করে হেটে যাচ্ছে যার একটা পা হাটুর নিচ থেকে কেটে ফেলা।

বাড়ি থেকে অনেক দূরে পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স হওয়ায় মেসে থাকি এখন, হলে সিট পাইনি। রাতে মেঝেতে তোষক বিছিয়ে শোই। প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হলেও এখন সয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে আমার পাশের রুমের একজন শোয়ার জন্য ফোম কিনে এনেছে। আমি সেদিন শখ করে একটু শুয়েছিলাম, অনেক ভালো লেগেছিল। বাবাকে বলেছি টাকা পাঠাতে আমিও কিনবো, কিন্তু সপ্তাহখানেক হয়ে গেলো এখনো টাকা পাঠানোর কোন খবর নেই। এজন্যে রাগ করে ফোন-টোন অফ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে অন্যত্র এক ফ্রেন্ডের মেছে থাকবো কিছুদিন যাতে আমার মেছের কাউকে ফোন করেও বাবা-মা আমার কোন খবর না পায়। বেরিয়ে পড়লাম রাত নয়টায়। ফুটপাতের একটা জায়গা আছে যেখান দিয়ে যাওয়ার সময় দূর্গন্ধের কারণে নাক-মুখ বন্ধ না করে উপায় নেই। অথচ সেখানেই খেয়াল করলাম একলোক একটা ময়লা পাটি বিছিয়ে দেদারছে প্রশান্তির ঘুম ঘুমোচ্ছে। মুখে বিরক্তি, কষ্ট কিংবা দূর্গন্ধের ছাপটুকু পর্যন্ত নেই।

জানেন, এখন না আমি অনেক সুখে আছি। আমার না পাওয়ার কোন কষ্ট নেই। আমার দুটো হাত আছে বলে আমি সেদিন আনন্দে কেঁদে দিয়েছিলাম। মনের কষ্ট আর আফসোস দুটোই হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়ে সেখানে স্বর্গীয় প্রশান্তি বাসা বেঁধেছিল। আমার দুটো পা আছে বলে আমি সেদিন সাথে সাথে দৌড়ে রুমে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছিলাম। বাবার দেওয়া ঐ তিন হাজার টাকা যত্ন করে রেখে দিয়েছি, আগের জুতো জুড়ো ছিড়লে তবে নতুন জুড়ো কিনবো বলে। তোষক বিছিয়ে হলেও থাকার জন্য আমার সুন্দর একটা জায়গা আছে বলে আমি সেদিন সেখানেই ফোনটা অন করে নিজের মেছে ফিরে এসে বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছিলাম টাকা লাগবে না বাবা। রোদে দেওয়ার পর তোষক আজ এমনিতেই অনেক নরম লাগছে।

লিখায়: রিহানুর ইসলাম প্রতীক

ফেসবুকে লেখক: Rihanoor Protik

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৬

আনিসা নাসরীন বলেছেন: বাস্তবতার এক রূপ তুলে ধরেছেন যেনো।

শুভ কামনা রইলো। অনেক ভালো থাকবেন।

০৬ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৮

রিহানুর ইসলাম প্রতীক বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য এবং শুভ কামনার জন্য।
আপনিও ভালো থাকবেন বোন।

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: আত্মতৃপ্তির চেয়ে পরম শান্তি কী হতে পারে+

৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৪২

আমি চির-দুরন্ত বলেছেন: মধ্যবিত্ত রা পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুস।ভাল লেগেছে আপনার লেখা,

৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৫২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভাল লাগল লেখা

৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:১১

শূন্যভুবনের মেহেদী বলেছেন: মধ্যবিত্তদের না পাওয়ার বেদনা আর না পেয়েও পাওয়া আত্মতৃপ্তির গল্প ! বেশ লাগলো :)

৬| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:১৪

জল্লু ঘোড়া বলেছেন: পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী মানুষ সেই যার আত্মতৃপ্তি নেই। আমাদের যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.