নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রি হোসাইন

কবিতা তার অগ্রজ কবিতার অনুকরন করে কথা বলা মাত্র ...... যারা নতুন কিছু বলে তারা কবি না যতক্ষন পর্যন্ত সেই নতুন কথার অনুকরন না করা হয়।

রি হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কালো কবিতা

১৪ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩২

নিঃসন্দেহে এগুলো কবিতা নয়। এগুলো শুধু কালো কবিতা।



কালো কবিতা-১



অনুতাপহীন পাপ গুলো একে একে পুড়ে যাচ্ছে

উড়ে যাওয়া নকশিকথায় ফুটে যায় ফুল

জন্মের ঘোরে উদ্ভ্রান্ত অন্ধকার

আমাদের ভুলে ইশ্বর মশগুল



কালো যাপনে

বয়ে যায় সফেদ জীবন



কালো কবিতা-২





রাত্রি যাপন শেষ হলে

যে অন্ধকার নেমে আসে

তুমি বিরহের আলোতে মুড়ে ফেল

আর আমি বিদ্রোহ করি .................



আমাদের মৃত্যু গুলো একইরকম

গল্পহীন





কালো কবিতা -৩



কিছুটা পূর্ণ হতে গিয়ে শূন্য হয়ে ফিরে এলাম

তোমার মশগুল অন্ধাকরে

দ্বিধার বসন্ত গুলো ঠিক মানবিক নয়

এবং কিছু কাটা



আমি হাত ভর্তি দ্বিধাগ্রস্থ শুন্যতা নিয়ে দাড়িয়ে আছি



কালো কবিতা-৪





খোলস ছেড়ে বেরিয়েয়ে এসেছেন তিনি ......

আমার বিষন্ন দৃষ্টির ক্রোধে কিছু উপহাস

ভিতরে ভিতরে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলি

আমি অনুভব করি ইশ্বরের হাহুতাশ



এখানে আমার কোনো মিত্র নেই

অথচ

কেবল ইশ্বর-ই আমার একমাত্র শত্রু .....



কালো কবিতা-৫



একটা পরিত্যক্ত ঈশ্বর আমাকে অস্তিত্ব দান করে যাচ্ছে

আর আমি জানালার কাচ দিয়ে বাইরে বৃষ্টি দেখি

আমার ইশ্বর কেদে যায় কেবল বুকের ভিতর

আমি সেই সাথে তাল মিলিয়ে ঝাপসা কাচে কোমল দু:খ মাখি





কালো কবিতা-৬





এখানে একটা ব্যর্থ নদী ছিল

বালিয়ারী জুড়ে পদচিন্হ গুলো এটা বিশ্বাস করেনি

তারা এটাকে পথ বানিয়ে পরিশ্রান্ত করেছে

তারা বহু দূর হতে একটা দাবি নিয়ে এসেছে চিরায়ত বৃক্ষের কাছে



পরিশ্রান্ত পথ যেটুকু ক্লান্তি ফিরিয়ে দিল

সেখানে অনেক উত্তর ছিল



অথচ অভিমানী বৃক্ষরা আমাদের ক্ষমা করেনি





কালো কবিতা-৭





আমি ভুল করে বিপ্লবী চোখ খুজি ব্যর্থ শহরে

হাহাকার জেগে থাকা বিষন্ন বহরে

তাড়া খাওয়া মানুষের ভীর দেখে আমি বার বার ভুল করি......



আসলে বিপ্লব নয়

কোনো বিপ্লব পরাজিত মানুষের নয়





কালো কবিতা-৮



তোমার কুমারিত্ব কে শ্রদ্ধা করিনি

সততার বিশ্বাসে চুম্বন ছেড়েছি বাতাসে

ঘন রাতেও তোমার ঘরের বাতি নিভলো না

বেচারা প্রেম উবে গেল কামের হুতাশে





কালো কবিতা-৯





আমার ভিতরে যে অভিমানী ঈশ্বর আছেন

আমি তোমাদের সেটা খুলে দেখাবো

চিরে ফেলা হৃদয় থেকে যেটুকু রক্ত ঝরবে

সেটুকু আমার দাবি

দাবি থেকেই যাবে ...... ঈশ্বর যদি তার দায় নিতে পারে

আমি তোমাদের সেটা খুলে দেখাবো



অথচ আমার চোখে

ইশ্বরের অশ্রু ঝরে





কালো কবিতা-১০



মাঝে মাঝে মানুষ হতে ইচ্ছে করে

ইচ্ছে করে মানুষের মত ডাকাত হতে কিংবা পবিত্র

অবিরাম অংক করে করে মানুষেরা যেভাবে হাসে

ইচ্ছে করে একবার হিসেব করে দেখি

অথচ আমি হিসেবের বেহিসেবে চমকে উঠি





অনুধাবন না করেই আমাকে স্পর্শ করেছ

তুমি সেই থেকেই অভিশপ্ত



কালো কবিতা-১১





জন্মের দোষে আজন্ম লালন করি রক্তের দায়

আমার অভাগা ঈশ্বর শুধু দেখে যায়





কালো কবিতা -১২





রাতারাতি ডুবে যাচ্ছি

ভাসমান বোধশক্তি অকেজো কাঠের নৌকা

সত্যের গন্ধ মাখা মিথ্যার কুঠারে ক্ষত বিক্ষত



আহাজারি করে লাভ হলো না

সত্য বিভ্রান্ত মিথ্যার-ই প্রতিচ্ছবি





কালো কবিতা-১৩





ব্যার্থ সঞ্চালনে হৃত্পিণ্ড ঋণী রক্তের কাছে

তাই দায় হীন পেশীর বিদ্যুতে

বিপ্লব মরে যাচ্ছে মাথা কুটে





কালো কবিতা-১৪





জবাবের খাতায় কিছু নির্বোধ সমুদ্র লিখেছি

তোমার প্রশ্ন গুলো

সারা রাত আধার একে গেলো ... শূন্য দৃশ্যপটে

উদ্ভ্রান্ত মৃত্যুর কাছাকাছি জীবনের দায় নিয়ে .....



কালো কবিতা-১৫





মুখ ভরে থুতু আসে

ডাক্তার বলেন রোগ হয়েছে ... তুমি অসুস্থ

আমি থুতু গিলে ফেলি ...... বমি বমি আসে তবুও



আমি থুতু গিলে ফেলি ........

আমি প্রমান করি আমি ঠিক আছি ..খুব ঠিক আছি



কালো কবিতা-১৬





আরো কিছু সাধু হবো

তার পর মানুষ খাবো





কালো কবিতা-১৭



সূর্যের কথা বলতে গিয়ে বার আধার কেই টেনে অনি

আধার বিলাসের সুখ বন্টন করি চোখ হতে চোখে .....সমস্ত আলো অবধি

তীব্র ক্লান্তির প্রশান্তি নিয়ে ফিরে যাই আবার আধারে



তুমি ভালো থেকো আলোকিত শহরে







কালো কবিতা-১৮





এখনতো পরিচয় ই হলো না

এরই মাঝে সন্ধ্যা হলো

যতদুর চেনা জানা ছিল ঠিক অচেনা হলো

এরই মাঝে রাত হলো



আচ্ছা ঠিক, আছে প্রেম শুরু করো

সকাল হলে না হয় পরিচয় সেরে নেবো



সকাল সকালে কোথার কোন প্রেম জানি

পাপ ঝেড়ে ফেলে পালিয়ে গেলো



কালো কবিতা-১৯





এইবার হবে

তোমার সমস্ত কোষে কোষে, স্নায়ুর ভিতর

আমার একটা কিছু হবে



কালো কবিতা-২০



তোমার ভেতরে ঢুকি

ভেতরের সব এলোমেলো করে

তোমাকেই শুধু খুজি!!!



কালো কবিতা-২১



যত শত জোনাকির হাহুতাস

কিছু কালো, কিছু শোক, কালো পূর্ণিমা

জাগতিক সূর্যের কোন দায় ছিল না



কালো কালো দাগ পরে গেছে সূর্যের গায়ে

বিলোড়িতো বিপ্লব ছিল অহেতুক সকালে



সূর্যের কালো দাগে ইতিহাস জমে না



কালো কবিতা-২২



ছোঁয়াচে উষ্ণতা ঘিরে আমাদের যাপন গুলো দীর্ঘ হচ্ছে

আমাদের বোধ গুলো পড়েই আছে বিষণ্ণ বরফের তলে

আথচ যাপন গুলো দীর্ঘ থেকে আর দীর্ঘ-ই হচ্ছে

আমাদের চোখে কোন উত্তাপ জমে না এখন

আমাদের কবিতা গুলো এখন শুধুই কালো





পরাজিত বিপ্লব গুলো হাহুতাশ করে বিষণ্ণ বরফের তলে

কালো কবিতা -২৩



তুমি কখনো নিঃস্ব মানুষ দেখনি

তোমার চারপাশের আয়না গুলো কালো আলোর সস্তিতে

নগ্ন শুন্যতাকে লুকায়

তুমি এখনো শুন্য হতে শেখনি



দেখা হলে তার থেকে পূর্ণ হওয়া শিখে নিও



কালো কবিতা-২৪





চমৎকার সূর্যের সখ্যতা তবুওতো রাত্র আসেই

এই ঘুম তোমাকেই মানায়



নির্বোধ পাপ গুলো আমাদের খেয়ে যায়

যাকে তুমি অন্ধকার বলো

অথচ তোমার দেখা হয়নি রাত্র কখনো

তুমি জানতে চাওনি অন্ধকার কতটুকু কালো



এই প্রেম কোন কিছু নয়, তোমার দুঃস্বপ্নের কাছাকাছি

আমাদের একবেলা নিঃশ্বাস

এই প্রেম তুমি তুমি উন্মাদনায় তোমার বিরক্তিকর উচ্ছাস



এই দিন শেষ হয়ে যায়

অথচ এই ঘুম তোমাকেই মানায়



কালো কবিতা -২৫





আমাকে সাজা দিতে হলে কিছুটা ধুরন্ধর তোমাকে হতেই হবে

আসলে আমি খুব আলস, ঘুম থেকে দেরি করে জাগি

এবং এর কোন নিদৃষ্ট সময় ও নেই ......

তাই তোমাকেই আর কিছু অধ্যাবসয়ী হতে হবে

আমাকে সাজা দিতে হলে কিছুটা এলো মেলো তোমাকে হতেই হবে

আসলে আমি খুব এলোমেলো হাটি

পুরোটা জীবন গোছাতে গোছাতে কাটিয়ে দিয়ে ভুলেই গেছি গোছাবার নিয়ম

তাই তোমাকেই এলোমেলো সব রাস্তার ধারে লুকোতে হবে



আমাকে সজা দিতে হলে কিছুটা কালো তোমাকে হতেই হবে

আমি খুব একরোখা প্রেমিক

আমি থাকি পরাজিত বিল্পবে

আমাকে কেবল অন্ধকারেই খুজে পাবে





কালো কবিতা-২৬



শৈশবে যখন প্রথম কাগজের নৌকা বানানো শিখি

এর পর থেকে কতো বার বৃষ্টির লোভে আকাশ কে ঈশ্বর বলে ডাকতাম

অথবা ঈশ্বর কে আকাশ বলে ভাবতাম আর

সাদা সাদা মেঘগুলো আমাকে আশান্বিত করে চলে যেতো

কিংবা কখনো আমার ঈশ্বর স্বয়ং নেমে আসতো স্বতঃস্ফূর্ত জলের সিঁড়ি বেয়ে

আমি খুব যত্ন করে নৌকা বানাতাম

কাগজের শৈল্পিক ভাজে ভাজে আরো একটা ঈশ্বর আবিস্কার করলাম নিজের ভিতর

তারপর আমরা দ্বৈত ঈশ্বর মিলে এইবার নৌকা ভাসাবো

আঙ্গিনার পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা খালের অনুকুল স্রতে



এইভাবে সব ঠিক ছিল

শৈশবে ঈশ্বর আমার খেলার সাথি

কিংবা বৃষ্টি এবং স্রোত



আমার ভিতরের ঈশ্বর খুব ভিতু ছিলেন

আর ছিলেন প্রথাভক্ত এবং বাধ্যগত

কাগজের নৌকা গুলো ভাসিয়ে দেওয়ার পর শিল্পের সমাপ্তি হতো

কিংবা আমার ভিতরের সেই ঈশ্বর হয়তো কোথাও পালিয়ে যেতেন

একদিন কোন এক নতুন ঈশ্বর আমি খুজে পেলাম আমার কৌতূহলে

একদিন প্রথা ভেঙ্গে পিছু নিলাম স্রোতের

আমার ভাসানো নৌকা গুলোর, কোমল স্নেহ গুলোর খোঁজে



অনুকুল স্রোতের অবশেষে

খুঁজে পেলাম বীভৎস ঘূর্ণিপাক

আমার কোমল স্নেহের নৌকা পলকেই মিলে গেলো কোথায়

আমি বহুকাল অপেক্ষায় ছিলাম

একদিন ঘূর্ণিপাক থেমে গেলেও আমি আমার ঈশ্বর খুঁজে পেলাম না



এখন আর স্রোতের অনুকুলে চলি না

অথবা স্রোত আমার বিপরীতে চলে







কালো কবিতা -২৮





যে কবিতা গুলো শেষ হয়ে গেছে

আমি বার বার সেগুলই লেখি

যে ফুলের গন্ধ শুকিয়ে গেছে

আমি সেই ফুল দিয়ে অযথাই মালা গাথি



বিষণ্ণ বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে গেছে

অথবা সূর্যটাই কালো হয়ে গেছে





কালো কবিতা-২৯





আদতে এই অন্ধকারও মশগুল হয়ে আছে

যেমনটা আসক্ত মাতালের চোখ ও তার বিবিধ ঘোর

দুঃখ ছিল কতেক রাতারাতি ভোর

আমাদের দৃষ্টির ধাধা কেবল আটকে গেছে

অপ্রস্তত নীলিমায়

আদতে এই অন্ধকারও মশগুল হয়ে আছে



আমাদের নেশা গ্রস্থ চোখ

দিগন্তে তাকানো ভুলে গেছে

সেখানে

প্রতিদিন অযথাই সূর্য উঠে





কালো কবিতা ৩০



উত্তর গুলো অপেক্ষাকৃত সহজ প্রশ্ন গুলোর থেকে

ঠিক যেমনটা তুমি চেয়েছিলে

সার্কাসের সং দের মত হতেই চেয়েছি

কিংবা নদীর কিনারায় স্যাঁতস্যাঁতে বালিয়াড়ি

কি নিপুন সমাধান চাঁদ আর প্রেমে



ইদানিং সহজ সহজ প্রশ্ন গুলো

দ্বিধাগ্রস্থ ভগ্নাংশের উত্তরে বিদ্ধস্ত আমাদের জীবন জাপন গুলো





কালো কবিতা ৩১



দিক ভুলে গেছি আমি

কেবল মৌনতা চাই এখন

থেমে যাওয়া ঝরের মতন

প্রশ্রয় পেয়ে যাওয়া উত্তাপ গুলো এইবার জমে যাক

প্রেম থেমে যাক



আমি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকবো

প্রাচীন দেবদারুর পাতা গলে বেরিয়ে আসা সূর্যের চোখে

কালো কবিতা - ৩২





দেখবো বলে অন্ধকারের শেষ

অন্ধ হয়ে অবাক হয়েছি

মৃত্যু কে-ই কালো ভেবে বসে থাকো বেশ



অথচ

মৃত্যুর চেয়েও বেশি কালো আমাদের যাপন

আর অহেতুক জীবন



কালো কবিতা - ৩৩





প্রেমের আকারের কিছু স্ফুলিঙ্গ ছিটিয়ে ছিটিয়ে কবেই ক্লান্ত হয়ে গেছো

ভুলে গেছো যে শুন্যতা ছড়িয়েছিলে

সেখানে আগুন লেগেছে

প্রেম পোড়া বাতাসে



উত্তপ্ত নিঃশ্বাস গুলো আদতে ছাই ছিলো



কালো কবিতা-৩৪



আগুন পুড়ে গেছে আর জল গেছে ভিজে

সেই ব্যথা নিয়ে বিলুপ্ত ঘাসের শিশির

আজকাল জমাট বাতাসে বরফের ছাই



বিমূর্ত চাঁদ হাহুতশ করে

কোত্থাও কি একটু কুয়াশা নাই



শীতার্ত পূর্ণিমা কালো হয়ে গেছে





কালো কবিতা- ৩৫





আমার শুন্যতা ভালো আছে

আমার পূর্ণতা উড়ে গেছে বিকেল হয়ে

একটা সাদা বক তার ধারালো ঠোট চুম্বন বিলাপে

একটা সাদা বক সাদাই থেকেছিলো আকাশে উড়েও



কোন এক একলা বিকেলে

ঝরে যাবে আমার ভালো থাকা কালো মেঘ থেকে বেড়িয়ে





কালো কবিতা-৩৬



কাকতারুয়া হতে পেরে আমি অনন্দিত

খুব কালো কালো সকাল দেখে ক্লান্ত হইনা

আমি যাযাবর নই

বিস্তর স্থির আমি ইশ্বরের মত

আমি আনন্দিত, আহা আনন্দ .........



একটা রুগ্ন অন্ধকার

দাড়িয়ে থাকবে সবুজ বিপ্লবে

তার পর কোন দিন রাত আসবে না





কালো কবিতা-৩৭





কালো কালো আলো গুলো অদ্ভুত

বিরুদ্ধ বসন্ত চেপে ধরে নির্বোধ রাতের পাজর

লজ্জিত সূর্যের ছায়া আর অর্ধেক পূর্ণিমা



বিষণ্ণ মৃত্যুর চেয়েও কুৎসিত আর নির্লজ্জ উন্মাদনা

মানুষের মানচিত্র ভেঙ্গেচুরে



আসহায় আধার কি প্রতিবাদ জানে





কালো কবিতা-৩৮





খুব রাত্রে কিছু শিশির ফিরে এসেছিলো

আবার কুয়াশা হতে চায়

ঘাস গুলো নাকি সর্বভুক ছিলো ...

যা খুশি তাই খায়



সকালে সূর্য ঘাস ফুল হয়ে-ই জন্মেছিলো

শিশিরের শীতকাল এ পর্যন্তই

এলোমেলো বসন্ত তো আর বিপ্লব নয়





কালো কবিতা-৩৯



জোনাকির আগুনেও পুড়ে যেতো শীতকাল

উন্মাদ ভ্রমর গুলো বেছে নিতো সূর্য হলুদ গাঁদায়

ইদানিং প্রেম আর বিপ্লব বড় আসহায়



আমার লোমকূপ গুলো অলস হয়ে গেছে





কালো কবিতা- ৪০





আমি বিব্রত হয়ে ছিলাম একবার ভেতরে ভেতরে, মগজের ভেতরে

তার পরও নগ্ন হয়েছি, আমি অজানাকে ভয় করি, মৃত্যু কে

এখোনো বুকের পাঁজর কেঁপে কেঁপে উঠে, ভয় করি অন্ধকার

আর তাই নগ্ন-ই থেকে যাই, কদাচিৎ বিব্রত বটে



আমি তো আর একলা নই ঈশ্বরের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যাই

এরকম মিছিল দেখে ভয় কেটে যায়,

কালো কালো আলো দেখে ভয় কেটে যায়



দ্বিধা আর বিব্রতবোধ ঝেড়ে ফেলি এক ঝটকায়





কালো কবিতা-৪১





আমার..................

কবিতা লেখার প্রয়োজন কি ?

আমি তো আর একমাত্র নই, যে কিছুটা অন্য কিছু ভাবে

সকলেই লিখে থাকেন, ভেবে থাকেন একের ভেতরে আর দশটা

তাদের দাড়ি কমায় দারুন জ্ঞ্যানও আছে, আছে বিশুদ্ধ শব্দের সমুদ্র

বসন্তের ভিতরে প্রেম থাকে আর শীতের ভীতরে কাম প্রয়োজন এটা সকলেই জানে

তাহলে শব্দের বোঝা বাড়িয়ে কি লাভ?



প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যাতিত আমি আর কোনো যতি চিহ্নের ব্যাবহার জানিনা।





কালো কবিতা -৪২





মানুষ গুলো মানুষ খেকো

হায় রে কবি

মানুষ খেয়ে-ই কবিতা লেখো?



কবি ও তো মানুষ কিংবা মানুষের-ই খাদ্য





কালো কবিত- ৪৩





ঈশ্বরের চোখ ফাকি দিয়ে বুঝলাম ঈশ্বরেরও চোখ আছে

তুমি বললে ঈশ্বর কে ফাকি দেয়া যায় না এবং দৃঢ় ভাবে

তার পর আমি আবিস্কার করি চোখ হীন ঈশ্বর





কালোকবিতা- ৪৪



কবিতার সংগ্রাম থেমে গেছে বহুকাল আগে

এখন কবিতারা মৃত





কালো কবিতা-৪৫





শুনেছি তুমি নাকি সভ্য মানুষ; কুকুর পোষো বেড়াল পোষো

তুমি নাকি সাদা মানুষ; কালো জামায় দুঃখ মুছো



কালো কবিতা -৪৬





প্রয়োজনহীন কবিতা গুলো ভিতরে ভিতরে পুড়ে যাচ্ছে যন্ত্রনাতে

প্রয়োজনহীন মানুষ গুলো কবির মত-ই এলো মেলো

প্রয়োজনহীন মিছিল গুলো অন্ধ স্লোগান বয়ে যাচ্ছে যেনো একটা মরা নদী



আজ কোনো বিপ্লব নেই; আজ কোনো প্রয়োজন নেই কবিতা লেখার





কালো কবিতা-৪৭





একবার একটা সিঁড়ি পেয়েছিলাম আকাশের উপর উঠে যাওয়ার

আর আমার দ্বিধা গুলো প্রতারিত হতে চায় নি বলে ইশ্বরহীন থেকে গিয়াছিলো

চোখ খুলে ঝলমলে আলো আমাকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি

তুমি বিশ্বাস করো সেই সিঁড়িতে আমার কোনো পদচিহ্ন নেই

এক মাত্র তুমি ছাড়া আমার কোনো ইশ্বর নেই



আমার কালো পায়ের চিহ্ন আমি এঁকে যাই নরম মাটির ঈশ্বরের বুকে





কালো কবিতা -৪৮



দূষিত আবর্জনা খেয়ে শহুরে কাকের মৃত্যু

গত রাতে বিষাক্ত খোলস ছেড়েছো তুমি?

তাহলে কি গত রাতে চাঁদ একটু বেশি-ই নগ্ন ছিলো?

অথবা, নিষিদ্ধ সূর্য উঠেছিলো সকাল হয়ে?



এতকাল আমাদের মগ্নতা খেয়ে ভালো-ই তো ছিলো



কালো কবিতা-৪৯



জন্মের ভেতরে বাস করে মানচিত্রের কংকাল

মাতৃ গর্ভের নাম নাগরিক কারখানা



এখন আর মানুষ জন্মে না.........





কালো কবিতা- ৫০





আমার পাপের পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে জন্মের সমান্তরালে

কেবল মাত্র মৃত্যু-ই হতে পারে আমার একমাত্র পূন্য

আমি ঠিক বুঝতে পারছি না এতটুকু পূন্য আর কতটুকু আড়াল করতে পারবে

আমার জন্ম গুলো

আর তাই ভয় হচ্ছে মৃত্যুকে



আমি ইশ্বরকে দোষ দিতে-ই পারি দূষিত জন্মের দায়ে



কালো কবিতা- ৫১





আরো কিছুটা নির্বোধ হতে চাই

নিজের প্রতি ঘৃণা জন্মাবার আগে পর্যন্ত

যতক্ষন দুঃখ দুঃখ লাগবে আর যতক্ষন ক্রোধ থাকবে রক্তের অণুতে

যতক্ষন জয়ী হতে চাই কিংবা পরাজিত হবার ভয় তাড়া করবে

নিজেকে প্রেমিক ভাবার চেয়ে নির্বোধ হবো সেটাই ভালো

যতক্ষন না বিপ্লব ঘরে ফিরে যাবে আমি কেবল নির্বোধ হবো

আর নির্বোধ হতে থাকবো



একবার সম্পূর্ণ নির্বোধ হয়ে গেলে

একবার অনুভূতিহীন হয়ে গেলে

হয়তো স্বাধীন হবো





কালো কবিতা-৫২





মানুষের রক্ত লাল !!!

আমি হলুদ রক্তের লাশ গুলো মাড়িয়ে যাচ্ছি

সম্ভ্যবত বিষাক্ত সাপের বিষের রঙ হলুদ হয়



তার আগে কে বা কাহারা আমার চশমার কাঁচে

হলুদ রঙের প্রলেপ মেখে দিয়ে দিয়েছিলো



কালোকবিতা-৫৩





যথার্থ মানুষ বরাবর খুন হয় অথবা খুনি

এর চেয়ে ভালো হয় যাথারিতি অন্ধকার জড়ো করো তুমি

তার পর খুন হয়ে গেলে কেউ দেখবে না





কালো কবিতা-৫৪





চাঁদ ছোয়া হলোনা

সূর্যের রোগে পেয়ে বসেছে

যাকিছু ছুই

অর্থহীন আকাশ হয়ে যায়



অথচ চাঁদ ছোয়া হলোনা

আজো আমি জোৎসনা বুঝিনা



কালো কবিতা-৫৫





সমস্ত অন্ধকার এমন ভাবে গিলে ফেলোছো যে,

এখন আর ভাবার সুযোগ নেই কোনো অন্ধকার ছিলো



যেহেতু অন্ধকার নেই কিংবা ছিলো না

তাই আলো বলতে কোনো অনুভুতি নেই





কালো কবিতা-৫৬



ঠিক আছে, আমি আর জন্ম নবো না

তার পরিবর্তে একটা অন্ধকার কবিতা লিখে রাখবেন

হারিয়ে যাওয়া কলমের কালি আর বিষন্ন কাগজ

একটা রাত্রিকে ধারন করুক

যদিও বা কেউ পড়বেনা

যদিও বা কাগজে সূর্য আঁকা থাকবেনা

কালো কবিতা কেউ পড়বে না

ঠিক আছে, আমি আর জন্ম নেবো না





কালো কবিতা-৫৭





বলেছিলে কবিতার একটা যাদুকরী গুন আছে

এরা রাত্রের স্থায়িত্ব কমিয়ে দেয়

আমি দীর্ঘ রাত গুলো যাদু দেখবার আশায় আশায় কাটিয়ে দিয়েছে



নিষ্পাপ কবিতারা রাত্রির বয়েস চুরি করেনি

স্বর্গের মত অন্ধকারের ভিতর আমাকে ঢুকিয়ে দিয়েছে

তার পর থেকে আমি আর দিন দেখিনি





কালো কবিতা- ৫৮





এরকম দুপুর

মৃত্যুর কাছি কাছে থেকে এসেছে

আমি বার বার ভাবি নিরবতা ভেঙ্গে উত্তাপ হয়ে যাই



আমার নিরবতা বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা ঘনায়







কালো কবিতা-৫৯





তোমার কাছে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর বিন্দুর মত

কিংবা অবহেলিত বিষণ্ণ

আজ অবধি শব্দ গুলো দিশেহারা

আর ছটফটে রাত্রিও পরাজিত হলো না



আমার শোকার্ত আলো

একটা দিশেহারা কবিতার অন্ধকারে হারিয়েছিলো



কালো কবিতা- ৬০





একটা বিত্তহীন ঘোড়ার পিঠে চড়েছিলাম

একজন বিষণ্ণ দৌড়বিদ সেজে



কেউ জানতো না অন্ধ ছিলাম

আমার পথ খোড়া বলে

বিজয় ছিনিয়ে নিলে



অন্যায় ছিলো সবকিছু

তবু কিছু ভুল হয়ে গেলো



কালো কবিতা-৬১



যেখানে সমুদ্র থাকার কথা

সেখানে সূর্য এঁকে রাত্রির রুপকথা

সে কেমন বিরহ গাথা



অবাধ চোখের জলের নিঃশব্দ স্বাধীনতা

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬

আনজির বলেছেন: অনেক কালো কবিতা তবে কিছু পড়লাম।.... কবিতা কালো হবে কেনো?

১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২২

রি হোসাইন বলেছেন: আসলে কবিতার বিষয় বস্তু খুব একটা পরিষ্কার না। এলোমেলো এবং কবিতা নির্মাণের ব্যাকরন বিবর্জিত। এগুলো আসলে হতাশা, উদ্বেগ, ক্ষোভ, দুঃখ ও নিরানন্দের বহিঃপ্রকাশ। এগুলো কবিতা হবার কোনো শর্ত-ই পুরন করেছে বলে আমার মনে হয় না। মন্তব্য করে উৎসাহ দেবার জন্যে ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬

হায়দার সুমন বলেছেন: পড়তে অনেক সময় লাগবে। কিছু পড়লাম।ৃপ্ত হলাম , বাকি টুকু পড়ার জন্য প্রিয়তে নিলাম এবং ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম

১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২১

রি হোসাইন বলেছেন: অনুপ্রাণিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ

৩| ১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩

আরজু পনি বলেছেন:

আপনিতো বেশ লিখেন! এতোদিন তবে কি আমি দেখি নি নাকি আপনিই পাবলিশ করেন নি...এটাই কবিতার প্রথম পোস্ট ?

১৪ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬

রি হোসাইন বলেছেন: আরো কিছু কবিতা পোস্ট করেছিলাম। সেগুলো হয়তো খুব একটা সুখপাঠ্য ছিলনা বলে আপনার নজরে আসেনি। ধন্যবাদ

৪| ১৪ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ৬১ টি কালো কবিতা !!!একটা পূন্য শব্দটা ব্যবহার করেছেন।ওটা বোধ করি পূণ্য হবে।কবিরা অনেক সময়ই বানানের ও গ্রামারেরউর্দ্ধে আফটার অল কবির ইজ্জত একটু আলাদা ধরণের।

১৪ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৪

রি হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ। এখানে বেশ কিছু বানান ভুল আছে। আসলে সম্পাদনা করা হয় নি। আস্তে আস্তে চোখে পড়লে ঠিক করে নিচ্ছি।

৫| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:০৫

ক্ষণিকের আগুন্তক বলেছেন: রাত্রি যাপন শেষ হলে
যে অন্ধকার নেমে আসে
তুমি বিরহের আলোতে মুড়ে ফেল
আর আমি বিদ্রোহ করি .................

আমাদের মৃত্যু গুলো একইরকম
গল্পহীন



..................সুন্দর।

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৮

রি হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম

৬| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩২

রোজেল০০৭ বলেছেন: কিছু পড়লাম।

ভালো ই লাগছে।

আপাতত প্রিয়তে, আস্তে আস্তে পড়ব।

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩৮

রি হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম

৭| ১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৩

সোহাগ সকাল বলেছেন: কালো কবিতা ভালো লাগলো।

৮| ১৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আস্তে আস্তে পড়তে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.