নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর - G-4-B/FK-1'এর ফরিদপুর সদর থানার FF কমান্ডার মোকাররম হোসেনের অধীনে জেলা কমান্ডার ফয়েজ শাহনেওয়াজের সাথে যৌথ ভাবে থানা 2-I/C এর দায়িত্ব পালনকারী অমিত সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, স্থপতি কাজী নুরুল করিম দিলু। নিভৃতচারী মানুষটি বিজয়ের ৪৬ তম বার্ষিকীর মুহূর্তে স্মৃতিচারণ করেছেন ঠিক ৪৬ বছর পূর্বের মুহূর্ত।
বিজয়ের আগের রাত ১৯৭১
১৫.১২. ১৯৭১
*************************
রাইফেলে আর মর্টারের গর্জনটা হঠাৎই থেমে যাওয়ায় ভয়াবহ নিরবতা চারিদিকে। মনে হচ্ছিল যেন মৃত্যুপুরী। স্বাধীনবাংলা বেতার আজ যেন একটু জোড়েই শোনা যাচ্ছে। ভয়ে ভয়ে নীচু ভলিয়্যুমে শোনার দিন আজই যেন শেষ! সর্বত্রই বিজয়ের সংবাদ শুনছিলাম সারাদিন। তার মাঝেও সহযোদ্ধা আর প্রিয়জন হারানোর বেদনায় বারবারই ঝাপসা হয়ে আসছিল চোখ দুটি। গভীর প্রতিক্ষা আর উৎকন্ঠায় রাত আর কাটতে চাইছিল না আমার। অনিশ্চয়তাই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নিত্য সহচর।
ঘন অন্ধকারে ভেদ করেই নিঃশব্দে এগিয়ে গেলাম ক্যাম্পের এক কোনায় সেন্ট্রি ডিউটিতে থাকা মহিউদ্দিনের কাছে। অতিরিক্ত নিরবতায় আমার সাবধানতা কাজেই এলো না। আমার উপস্থিতি টের পেয়েও সে তার ডিউটিতে ভুল করলো না "হল্ট! হু ইস দেয়ার?" এই বলে সাবধান করলো। আমি পরিচয় দিলাম পাস-ওয়ার্ড বলে। কাছে আসতেই মহিউদ্দিন কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
--"ভাইজান ! আজ কেন যেন ভয় ভয় করছে! "
আমি সাহস দিয়ে বললাম
--- ভয় নাই রে ! আর বেশী দিন এই যুদ্ধ চলবে না, আমরা দেশ স্বাধীন করবো খুব তারাতারিই । ভয় নাই।
আমি নিজেও ভয়ে কাঁপছিলাম, হাতে থাকা সদা উষ্ণ সাব-মেশিন কার্বাইনটা ডিসেম্বরের হাড়া কাঁপানো শীতে আজ বড্ড বেশী ঠান্ডা মনে হচ্ছে। নেতার দুর্বলতা টের পাবে এই আশঙ্কায় তারাতারি মহিউদ্দিনের কাছ থেকে ফিরে এলাম আমার হাইড-আউটে।
--------------------------------------------------------------------------------------
★★ ছবিটি ৩১শে জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ঢাকা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে যাবার পূর্ব মুহূর্তে স্টুডিও'তে তোলা হয়েছিল।
©somewhere in net ltd.