নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবাহূত

রবাহূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগামীতে কি আছে কে জানে!!

৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ১২:১৩

ক্রিকেট আমদের পিছুই ছাড়ছেনা।

আমি কম্বল কে ছড়লেও কম্বল আমাকে ছাড়ছেনা। যে কদিন খেলা চলছিলো বুঁদ হয়ে ছিলাম, খেলা শেষে অনলাইনে চোখ বড় করে বসা যেন কোনও খবর মিস না হয়, রেকর্ড গুলো আতিপাঁতি করে খোঁজা; গভীর রাতে ছ’ইঞ্চিতে আটকান চোখ, মৌতাত এখনো কাটছেনা, এরি মাঝে একি কান্ড! বেচারা নাসির এর নিরীহ একটা পোস্ট কে ন্যাশনাল ইস্যু বানিয়ে ফেললাম। সমবেদনা বেচারা নাসির এর জন্য। ধিক্কার অর্বাচীন বালকদের।

আজ দেখলাম, কমেন্ট ওয়ালা সবার ডিটেইল চলে এসচে। এবার বুঝবে বাছাধনেরা “কত বলে কত রান”!আমাদের কোটাল বাহিনী বলেছেন নাসির চাইলে এদের আইনের আওতায় আনা হবে! সাব্বাশ! এই না হলে চলে!পুরুক শব কয়টাকে চোদ্দ শিকের ভিতর। বাঁশ ডলা, পানি থেরাপি, ডিম থেরাপি, চলুক এবার। মাউস কি-বোর্ড পেয়ে সাপের পাঁচপা দেখেছিস, বেল্লিক কোথাকার, গেরিগুগ্লির ঝাঁক! বদন বিগড়ে “বদনা” হবে এবার।

তা হউক নিঃসন্দেহে এটি অন্যায়! শাস্তিযোগ্য অপরাধ!
কিন্তু কিউরিয়াস মাইন্ডে একটি প্রশ্ন ভুরভুরি কাটছে, হালিম, জিলাপ্‌ ছোলা গুলোর সাথে তাই না উগ্রে আর পারছি না। যদি এই কান্ড আমার, আপনার সাথে ঘটে, হরহামেশা তো ঘটছেই, তা হলে কি হবে? আপনি গেলেন থানায় কি হবে, জিডি করলেন, তারপর? আইন কি আপনার পাশে থাকবে?

আহা হা কি হচ্ছে!
আইন বেচারার চোখ বাঁধা চাইলেই উনি আপনাকে খুঁজে আপনার পাশে এসে দাঁড়াতে পারবেন না। আইন অন্ধ, তাকে যারা চালান তারা ঠিক করবেন কাকে উনি দেখবেন কাকে নয়। এটা ডিস্ক্রিনিমেশন ! এটা হতে পারে না! নাসির হউন বশীর হউন হিন্দু হউন বৌদ্ধ হউন, আইন একই নিক্তিতে সবাই কে মাপবে, এমনটি তো হবার কথা! এ পোড়ার দেশে তাই কি হয়? কবিরা তাহলে কিভাবে লিখবেন “বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদিছে ওই”… কাঁদুক বিচারের বানী… আমাদের কিসসু আসে যায় না; আমাদের চামড়া অনেক মোটা!এই ডিস্ক্রিনিমেশন আমাদের চারিদিকে আমাদের যাপিত জীবনের অবিচ্ছেদ অংশ। এই সমাজে কে বলতে পারবেন আপনি আমি এই ডিস্ক্রিনিমেশন শিকার নই। একটা ছোট্ট দুঃখের গল্প বলি…
আমার অফিস ডিওএইচএস; মহাখালি ডিওএইচএস।প্রায় সময়ই ক্যান্টনমেন্ট দিয়ে শর্টকাট মারি, কি সুন্দর চারিদিক ঝকঝকে তকতকে, খোলামেলা এখানে বুঝি আকাশটাও বড়! খালেদা জিয়ার বাড়ী ভেঙ্গে অনেক গুলো ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং হয়েছে, প্রতিটি বাড়ির সামনেই খোলা মাঠ, বাচ্চাদের খেলার জন্য মজার মজার সব রাইড, সি-স, স্লাইড সব ইন্সটল করা, কারপেটিং করা রাস্তায় ফুটফুটে বাচ্চারা সাইকেল কিংবা স্কুটার চালায়। বড্ড ভালো লাগে (যদিও প্রতিটি গাছ মোজা পড়া, আর সবুজ গার্ডেন লাইট বাই ডিফল্ট অত্র এলাকায় থাকবেই থাকবে)।কিন্তু এই ভালো লাগার মাঝেও আমার মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়, খুব কষ্ট হয়! নিজেকে বড্ড এলেবেলে মনে হয়। আচ্ছা আমি না হয় মাউস পেষা আর্কিটেক্ট, আমি না হয় শৌর্যে বীর্যে ইনাদের সমক্ষও নই, যদিও বুয়েটে অনেক মেজর রা আমাদের মত মাইনর দের সাথে শিং ভেঙ্গে বাছুর হয়ে পড়াশোনা করেছেন, তারপরেও তো কোথায় আমি আর কোথায় উনারা তুলনাই চলে না! সুকুমারের হিংসুটিদের গান টা উল্টে বলতে হয়…
“তোমরা ভালো লক্ষ্মী সবাই, আমরা ভারি বিশ্রী’
আমরা খাবো নিমের পাঁচন, তোমরা খাবে মিশ্রী।
তোমরা পাবে খেলনা পুতুল, তোমরা পাবে চমচম,
আমরা তো তা পাচ্ছিনা কেউ, পেলেও পাব কমকম।“
আমরা কমেই সন্তুষ্ট, এছাড়া উপায়ও নেই হে “গোলাম হোসেন”, কিন্তু যখন আমাদের ছানা পোনাদের কথা মনে হয়! ওরা কেন পাবে “কমকম” একজন আর্মি অফিসার এর সন্তানদের সাথে এদের তো কোন ফারাক নেই, এদের তো খোলা মাঠ, সুন্দর নিরাপদ বিকেল পাওয়ার অধিকার আছে, আমাদের মত তো ডিস্কয়ালিফাইড না, ওদের মাঝে তো কোন ফারাক নেই, তবে ঢাকায় কোথায় এই রকম একটা স্পেইস আছে, যেখানে আমরা নিশ্চন্তে ওদের ছেড়ে দিতে পারি, আমার নেইবারহুড পার্কটি সুমন চাটুজ্যের “পাড়ার ছোট্ট পার্ক”-এর এই নামান্তর, “ঘাস নেই শুধু ধুলো”। এটা কি “ডিস্ক্রিনিমেশন” নয়?এটা কি অন্যায় নয়? আহা আমি জানি আপনি কি কইবেন কত শিশু পথে পরে আছে, তোমার শিশু খেলার জায়গা পাচ্ছে না তাই নাকি কান্না কাঁদছ, তোমার জুতো নেই দেখ্ হে অর্বাচীন শাখামৃগ আরেক জনের পা’ই নেই। আমার কোন উত্তর নেই, আসলেই তো? আমাদের মাথার উপ্র ছাদ আছে, তিন বেলা খেয়ে পরে বেঁচে আছি আল্লাহ্র রহমতে, আবার পার্ক চাই; বিনোদন চাই, ধিক ধিক! আমাদের মনে রাখতে হবে “আমরা তো তা পাচ্ছিনা কেউ পেলেও পাব কমকম।“
নতুন একটা সিটি হচ্ছে “পুরবাচল” (আসলে পুরাই অচল) উত্তরার লারজ স্কেল ডিটো কপি তিন কাঠা, পাঁচ কাঠার বস্তি, এসব নিয়ে ভাববার অবকাশ কার কোথায়? আমাদের ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করে দিন গুজরান টাই সব “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে” এর বদলে আমাদের বলতে হয় “আমার সন্তান যেন বেঁচে থাকে”। “ য পলায়তি স্ব জীবতি”…এই আমাদের লাইফের স্ট্র্যেটেজি। নুরুলদিন “আমরা আর কত পালাবো”, আর কত নিচে নামবো একজন নিশ্চিন্তে তাঁর বোনের সাথে ছবিও আপলোড করতে পারবেন না, এতেও থানা পুলিশ করতে হবে!এর কোন শেষ আমি দেখছি না আপাতত।
নাসিরের প্রসঙ্গে আবার এসছি একটা ছোট্ট অব্জারভেশন শেয়ার করতে, এই অদ্ভুত অসভ্য অভব্য আচরণের মুলে কিন্তু আমাদের শিক্ষা। কি পারিবারিক কি স্কুলের, কোথাও কিন্তু আমরা আর মোরাল এডুকেশন পাই না, যেমন আমরা হাতের লিখায় লিখতাম “সদা সত্য কথা বলিবে”, “সততা উত্তম পন্থা” ইত্যাদি, এইসব সাদা কাগজের কালো কালির ইম্প্রেশন আমাদের মনোছবিতে গভীর ভাবে স্থির হয়ে আছে, চাইলেও একটা স্তরের নিচে আমরা নামতে পারব না, এদের এই আচরণ আইন শোধরাতে পারবে না, এটা সোশ্যাল ইস্যু, আমদের থিঙ্ক ট্যাংদের ভাবতে হবে।
সবে তো কলির সন্ধ্যে! আগামীতে কি আছে কে জানে!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.