নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাসেম বিন আবুবকর সাহেব কে নিয়ে কিছুই লিখব না ভেবেছিলাম, তাঁর লিখা আমি পড়িনি, তাঁর নাম আমি জানতাম না, এই অজ্ঞতা নিয়ে আমি লজ্জিতও নই। অনেক বই পড়েছি, এখনো পড়ছি, তারপরও সমগ্র পৃথিবী থাক বাংলা সাহিত্যেরও এধার ওধার করতে পারিনি, কত কি পড়ার আছে বাকী। কাসেম সায়েবের লিখা না পড়া কোন অপরাধ না। এই তোলপাড়ে কিছু অনলাইনে পড়া হয়েছে, আমার খুব ভালো লাগেনি, এটা হতেই পারে এক একজনের রুচি এক এক রকম। তাঁকে নিয়ে আমি মশকরা করার পক্ষপাতি নই, আবার মাথায় তুলে নাচতেও রাজি নই। সময়ের বিচারে যার যার লিখা বেঁচে থাকবে, থাকবে। এতে সাহিত্যের কিছু আসে যায় না। রবিঠাকুরের লিখা নিয়ে ডি, এল রায়ের নাক সিটকানো সংলাপ, এখন প্রায় প্রবাত প্রতিম। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ঠাকুর রবি হয়েই আছেন, সাহিত্যের আকাশে। কাসেম সাহেব সে রকম বড় কিছু হয়ে উঠবেন আমার সে রকম মনে হয় না, না হলেও তাঁর পাঠক প্রিয়তায় কিছু ভাটা পরবে বলে মনে হয় না।
হিরো আলম, অনন্ত জলিল, কাসেম এই ধরনের ব্যাক্তিদের নিয়ে সাধারন মানুষের হাসি তামাশা আমার কাছে নিতান্তই অন্যায় মনে হয়, এদের হেও করে নিজেদের বেশ “শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি” আদলে প্রকাশ করার চেষ্টা হাস্যকর নিঃসন্দেহে। আবার একেই সাথে এদের মাথায় নিয়ে নাচার কিছু নেই। সব কিছুর ভালো মন্দ আছে, থাকবেই। হিরো আলম, অনন্ত জলিল, কাসেম তারা এমন কোন কাজ করেন নাই যে তাঁদের জন্য অন্যদের যাতা বলতে হবে। “আফসান” সাহেবের লিখা পড়লাম “কাসেইম্মা আইসা গেসে... ইত্যাদি ইত্যাদি” তো হয়েছেটা কি! আম জনতা পড়ছে, আম জনতার জন্য লিখা তো আম জনতাই পড়বে। আরনেস্ট ফিসার এর লিখায় পড়েছিলাম “আর্ট ফর আর্টস সেইক”- শিল্পের জন্যই শিল্প, সব শিল্প সবার জন্য না। কেউ রাগ দরবারী কানাড়া শুনবে মৃদু মাথা দোলাবে আতর খুসবু শুঁকবে, কেউ বা সিস্টেম অফ অ্যা ডাউন শুনে হেড ব্যাঙ্গিং করবে! তারপরও ভালো মন্দের বিচার আছে সব শিল্পতেই! সব “কলা”ই যে কলা তা নয় কিছু কিছু গ্যাঁড়া “কলা”ও হয়ে যায়।
যার তেমন সুদীর্ঘ আবেদন নেই, শুধুই কিছু উপরি তলের আন্দোলন আছে এর কোন মুল্য নেই, এ গ্রহের বিশাল শিল্প ভাণ্ডারে। যে কারনে মমতাজের “ফাইট্টা যায়” কিংবা “ আগুনেরই গোলা” যখন কোন জাতিও কিংবা আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের ওপেনিং এ গাওয়া হয় আমার লজ্জা লাগে। কিন্তু এরও তো শ্রোতা আছে (আমি বিদগ্ধ শ্রোতা তা দাবি করছি না, একটু সংগীত শোনা হয় আর কি, অত কিছু জানি তাও নয়)। কাসেম সাহেবের সাহিত্যও উঁচু দরের কিছু না, এটা বলা যেমন দোষের না, আবার হ্যাকছি করবারও কিছু নয়। আবার শরৎচন্দ্র কিংবা হুমায়ুনের জনপ্রিয়তার সাথেও তুলনা করার মত কিছু না, যে মাথায় নিয়ে নাচতে হবে, আর কাসেম সাহেব কেন, মিলন, আনিসুল হক এদেরও অনেক নিম্ন মানের লিখা আছে, (মিলনের “লাভ স্টোরি” বা এই জাতিও কোন নাম, আনিসুল হকের “ফাজিল”) কিন্তু সব মিলিয়ে তাঁদের অনেক ভালো লিখা তাঁদের এই জায়গাটায় নিয়ে এসছে।
রোমেনা হাফাজ, নিহার রঞ্জন, জরাসন্ধ এমন আরও কত লেখক আছেন প্রতিটি ঘরে ঘরে মানুষ আগে পড়ত। আজ কোথায় সে “বনহুর” ( বেনহার কিন্তু এখনো মানুষ পড়ে), কোথায় সে নিহার রঞ্জনের “কালো ভ্রমড়া”। এই হচ্ছে বাস্তবতা! নিষ্ঠুর সময় যাকে চাইবে তাকেই রাখবে আর বাকী সব ভেসে যাবে। জেমস জয়েস এর চেয়ে নিঃসন্দেহে সিডনি শ্যাল্ডনের পাঠক বেশি তাতে কি জেমস জয়েস ভেসে যাবে?
আসুন স্পষ্ট কথা বলি, কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলি, বলার সাহস রাখি। অযথা মানুষকে নিয়ে মশকরা করে নিজেদের হাস্যস্পদ না করি, আবার এঁদের মাথায় তুলে অযথা নিজেদের নষ্ট হতে থাকা কালচারকে পিঠ চুলকে আর নিঃশেষ না করি।
২| ০২ রা মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৭
জাহিদ হাসান বলেছেন: ফুটন্ত গোলাপ কিশোর বয়সে পড়েছিলাম। তাও এক মামার বাড়িতে গিয়ে। দেখলাম বইটা সাজানো আছে- একটা বইয়ের তাকে। হাতে পড়তে শুরু করলাম। পুরোটা পড়ার পর আমার মনে হয়েছে এইসব বাজে জিনিস পড়তে আমি দুনিয়াতে আসি নাই।
অন্তত আমার মত লোকের জন্য এইসব বই না। এত বছর এই বইয়ের আলোচনা দেখে মেজাজ খারাপ হচ্ছে। যার ভালো লাগে সে পড়ুক, আমাদের এ নিয়ে ঘাটার দরকার কি?
আমাদের জন্য গ্রিক দার্শনিকদের কত্ত কত্ত মূল্যবান গ্রন্থ পড়ে আছে। কত কত নজরুল, রবীন্দ্রনাথ সমগ্র পড়ে আছে। আমরা সেটা পড়বো। কি দরকার খামোকা সেইসব নিম্নরুচির বই এবং তার লেখককে নিয়ে মাতামাতি করার?
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা মে, ২০১৭ রাত ১২:০৩
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: গতবছর উনার নাম শুনেছিলাম। বলেছিলাম আমি চিনি না। এই বছর নাম জেনেছি উনার ছবি দেখেছি। উনার লেখা হয়তো পড়া হবে না।
আপনার সাথে একমত। "নিষ্ঠুর সময় যাকে চাইবে তাকেই রাখবে আর বাকী সব ভেসে যাবে।"
সবার মঙ্গল হোক।