নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় মিরপুর এলাকার স্থানীয় বাঙালীদের কাছে কসাই নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। স্বাধীনতার পর পরই মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি গণকবরের সন্ধান মেলে। তখন ঢাকার এই অংশে মূলত বিহারী মুসলিমরা বসবাস করত,এরা ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোর বিরোধী পাশাপাশি পাকহানাদার বাহিনী এ এদের দেশীয় দোসরদের সহায়ক। এই গণকবর এখন দেশের অন্যতম বৃহৎ গণকবর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। শিয়ালবাড়ি ও রূপনগরসহ সারা মিরপুর এলাকায় হাজার হাজার বাঙালী হত্যার প্রধান নায়ক ছিল এই কাদের মোল্লা। '৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে যখন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন চলছিল তখনই কাদের মোল্লার নেতৃত্বে মিরপুরে বাঙালী নিধন শুরু হয়। ৭ মার্চের জনসভা সফল করতে ৬ মার্চ মিরপুরে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে কাদের মোল্লা আক্রমণ চালায়। কাদের মোল্লাই পাক হায়েনাদের আগে বাংলার স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর বর্বর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। কাদের মোল্লার সশস্ত্রবাহিনী মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস শিয়ালবাড়ি, রূপনগর, বালুঘাটসহ নানা স্থানে ধরে নিয়ে নির্বিচারে গুলি করে অগণিত মানুষ হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা হিসেবে বৃহত্তর মিরপুরে বাঙালী নিধনের কমান্ডার ইন চীফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। কাদের মোলা এক সময় জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ পদেও ছিল। মিরপুরের সাংবাদিক কলোনির বাসিন্দা কাদের মোল্লা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়েও পরিচিত করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
স্বাধিনতার পর এই এলাকায় রাজাকার,আলবদর,আলশামস এবং তাদের দেশীয় ও বিহারী সহযোগীদোসরদের বর্বতার স্বাক্ষী শিয়ালবাড়ী বধ্যভূমি আবিস্কৃত হয়।¯হানীয় জনসাধারনের জানায় আব্দুল কাদের মোল্লা ও তার সঙ্গীরা মুক্তিযুদ্ধের সময় শিয়ালবাড়ী,রূপনগর এলাকা থেকে হাজারো মুক্তিকামী বাঙালী হত্যা করা হয়েছে। এখানে অতিউৎসাহী আব্দুল কাদের মোল্লা পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরুর বহু আগেই তার বাহিনীর হত্যা নির্যাতন শুরু করে।
৬ ই মার্চ ১৯৭১ মীরপুরের ৬ সম্বর সেকশানে সিরামিক ইন্ডাষ্ট্রিজ্এর গেটে আহূত ¯হানীয় বাঙ্গালীদের এক সভায় জয় বাংলা স্লোগান দেয়া হয়।প্রত্যক্ষদর্শী এম শহীদুর রহমান জানান,এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কসাই বলে খ্যাত আব্দুল কাদের মোল্লা এ তার সহযোগীরা খোলা তলোয়ার,রামদা,কৃপান ইত্যাদি নিয়ে ওই জনসভার নিরীহ বাঙালীদের উপর হিংস্র হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পড়ে।ক্ষত বিক্ষত করে অনেককে। হামলার মাধ্যমে কাদের মোল্লার বাহিনী নিরস্ত্র স্বাধীনতাকামীদের বিচ্ছিন্ন করে দিতে সম হয়। পাকবাহিনীর আগে কাদের মোল্লা এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর আক্রমণ চালায়।
কাদের মোল্লার হাতে সন্তান হারানো এক পিতার বক্তব্য -কাদের মোল্লা অনেক মায়ের বুক খালি করে এখনও বহাল তবিয়তে আছে। রাজনীতি করছে। রাষ্ট্রমতার অংশীদারিত্বও পেয়েছিল। তুমি কি সেই কাদের মোল্লার কথা বলছ যার গড়ন ছোটখাটো, কিন্তু কাজকর্ম বীভৎস। পোশাকে আশাকে ধর্মীয় লেবাস ধারণ করলেও কার্যত সে ও তার সহযোগীরা ধর্মের সবচেয়ে বড় শত্রু, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেও আজ সে উপায়ান্ত না পেয়ে, পিঠ বাঁচাতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করে বেড়ায়। আমি তার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি; কিন্তু কিছুই বলব না। অনেক বলেছি কিছুই হয়নি, ওরা মা পেয়ে গেছে। রাজধানীর মিরপুরের এক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বাবা আফাজউদ্দিন সরকার। সমপ্রতি তাঁর কাছে মুক্তিযুদ্ধের সময় মিরপুরে পাক হায়েনাদের যারা সহযোগিতা করেছিল তাদের অন্যতম জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোলস্না সম্পর্কে জানতে গেলে আবেগজড়িত কণ্ঠে না থেমে এক নিশ্বাসে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথাই বলেন।
আব্দুল কাদের মোল্লার কৃতকর্র্মের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী এম শহীদূর রহমান চৌধুরী জানান, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশানের প্রথীতযশা মহিলা কবি মেহেরুন্নেছাকে কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা নির্মম ভাবে হথ্যা করে। এই বীভৎস দৃশ্য দেখে সিরাজ নামের ওই বাড়ির একজন সদস্য মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে,স্বাধিনতার ৩৮ বছর পরও তার অব¯হার পরিবর্তন হয়নি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আফাজউদ্দিন আরও বলেন, মহান '৭১-এ কাদের মোলার জুলুমবাজি থেকে মহিলা কবি মেহেরুন্নেসা রা পাননি। তাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল কাদের মোল্লার হাতে। প্রাণ দেয়ার আগে হয়ত তাঁকে শারীরিক নির্যাতনের শিকারও হতে হয়। অথচ স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদ কবি মেহেরুন্নেসার কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। তিনি আরও বলেন, কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীদের অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে এমন অনেককে এখনও খোঁজ করলে পাওয়া যাবে। এককথায় তিনি কাদের মোল্লাকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মিরপুরে অগণিত গণহত্যার জন্য 'কসাই' হিসেবে অভিহিত করেন। কসাই কাদের মোলস্না এখন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিজেকে এবং নিজেদেরকে 'সাধু' বলে দাবি করছে। মিথ্যা কথা বলতে এদের মুখ এতটুকু আটকায় না, ঠোঁট এতটুকু কাঁপে না। অথচ এরাই নিজেদের শান্তির ধর্ম ইসলামের কাণ্ডারি বলে প্রচার করছে। নিজেদের অপকর্মের বিরুদ্ধে যখনই প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, আলোচনা হয়, সরকার বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে তখনই ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আত্মরক্ষার অভ্যাসগত প্রচেষ্টা চালায়। তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে ইসলামের শত্রু হিসেবে তুলে ধরার রীতিসিদ্ধ কৌশল অবলম্বন করে।
মিরপুরের প্রবীণ বাসিন্দা আফাজউদ্দিন সরকারের বয়স নব্বই পেরিয়ে গেছে। ৫ সন্তানের জনক আফাজউদ্দিনের এখন সময় কাটে নাতি-নাতনির সঙ্গে পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করে। স্মৃতিচারণের সময় মাঝে মাঝে তাঁর দু'চোখ বেয়ে অশ্রু পড়ে। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভেঙ্গে যখন পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রের জন্ম হয় তখন আফাজউদ্দিন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। দু'টি পৃথক রাষ্ট্রের জন্মের ধারায় অন্য অনেকের সঙ্গে তাকেও মুর্শিদাবাদ ছেড়ে তৎকালীন পাকিস্তানে আবাস গড়তে হয়েছিল। সে সময় তিনি যা হারিয়েছিলেন তা আর কখনই ফিরে পাননি। আর ১৯৭১ সালে তিনি হারান তাঁর প্রিয় সন্তান আলাউদ্দিনকে। আলাউদ্দিন ছিল আওয়ামী লীগের এক তরুণ কর্মী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বন্ধুদের সঙ্গে তিনিও প্রশিণ নিতে ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ফলে স্থানীয়ভাবে যারা পাক হায়েনা ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে দেশে থেকেই প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলেন তাঁদের দলেই যোগ দেন আলাউদ্দিন।
'৭১-এর আগস্টে পাক হায়েনারা আলাউদ্দিন ও তাঁর ৭ বন্ধুকে হত্যা করে। মিরপুরের বহুল আলোচিত শিয়ালবাড়ি বধ্যভূমিতে নিয়ে তাঁদের প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে হাত ও চোখ বেঁধে গুলি করা হয়। আফাজউদ্দিনের ভাষায়, এসব হত্যাকাণ্ডের অন্যতম নায়ক ছিল বর্তমানে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা। এই কাদের মোল্লা স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে পাক আর্মিদের সহযোগিতায় শুধু মিরপুরে নয়, ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতেও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার না হওয়ায় এবং তাদের গ্রেফতারে শাসকগোষ্ঠীর অপারগতায় সেই '৭২ সাল থেকেই ক্ষুব্ধ আফাজউদ্দিন মিরপুরে কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীদের কর্মকা- সম্পর্কে বিশেষ কিছু না জানালেও কয়েকজনের সন্ধান দেন যাঁরা কাদের মোল্লা সম্পর্কে অনেক তথ্যই জানান। তাঁদের ভাষ্য থেকে জানা যায়, জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় মিরপুর এলাকার স্থানীয় বাঙালীদের কাছে কসাই নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। স্বাধীনতার পর পরই মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি গণকবরের সন্ধান মেলে। এই গণকবর এখন দেশের অন্যতম বৃহৎ গণকবর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। শিয়ালবাড়ি ও রূপনগরসহ সারা মিরপুর এলাকায় হাজার হাজার বাঙালী হত্যার প্রধান নায়ক ছিল এই কাদের মোল্লা। '৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে যখন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন চলছিল তখনই কাদের মোল্লার নেতৃত্বে মিরপুরে বাঙালী নিধন শুরম্ন হয়।
ফরিদপুরের সদরপুরের পশ্চিম আমিরাবাদের বাসিন্দা কাদের মোল্লা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও বরাবরই সে নিজ এলাকায় প্রত্যাখ্যাত ও ঘৃণ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের পক্ষে সদরপুর এলাকা থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিল। জীবনে ওই একবার নির্বাচনে দাঁড়ায়। সেবার মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ভোট পেয়ে ভবিষ্যতে আর কখনও নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ব্যাপারে তওবা করেছে বলে জানা গেছে। '৯১-এর সংসদ নির্বাচনে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ভোট পাওয়ায় সে সদরপুরের জনগণকে 'উজবুক' বলে গালি দিয়েছিল বলে জানা যায়। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, কাদের মোল্লা বরাবরই নিজ এলাকা বিচ্ছিন্ন। তার সব কর্মকাণ্ড ঢাকাকে ঘিরে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা হিসেবে বৃহত্তর মিরপুরে বাঙালী নিধনের কমান্ডার ইন চীফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। কাদের মোল্লা এক সময় জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ পদেও ছিল। মিরপুরের সাংবাদিক কলোনির বাসিন্দা কাদের মোল্লা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়েও পরিচিত করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। জাতীয় প্রেসকাবেরও সদস্য এই নরঘাতক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ শুরম্নর আগেই স্বাধীনতাকামী বাঙালীর মনোভাব বুঝেই কাদের মোল্লা মিরপুরের মনিপুর, শেওড়াপাড়া, সেনপাড়া, কাজীপাড়া, চিড়িয়াখানার ঢাল, মাজার রোড, কাফরুল, ইব্রাহিমপুর, লালমাটিয়া, কালাপানি ও পল্লবী এলাকায় বসবাসকারী পাকিস্তানপ্রেমী বাঙালী ও বৃহত্তর মিরপুরে বসবাসকারী বিহারীদের সশস্ত্রবাহিনী গঠন করে। কাদের মোল্লার সশস্ত্রবাহিনী মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস শিয়ালবাড়ি, রূপনগর, বালুঘাটসহ নানা স্থানে ধরে নিয়ে নির্বিচারে গুলি করে অগণিত মানুষ হত্যা হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কাদের মোল্লার কর্মকাণ্ডের প্রত্যদর্শীরা জানান, অনেক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে (যে আবার টুনটুনি নামে সে সময় মিরপুর এলাকায় বহুল পরিচিত ছিল) হত্যা করে। পল্লব ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের একনিষ্ঠ অনুসারী। এটাই চক্ষুশূল হয় আব্দুল কাদের মোল্লা ও তার দোসর রাজাকার বাহিনীর কাছে।'৭১-এর মার্চে বঙ্গবন্ধুর 'এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম' ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদ পলস্নব স্থানীয় বাঙালী ও অবাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেন। আর এ উদ্যোগই তাঁর দেশমাতৃকার জন্য শহীদ হওয়ার পথ সুগম করে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই শহীদ পল্লব কাদের মোল্লা গোষ্ঠীর টার্গেটে পরিণত হয়। এ অবস্থায় পল্লব তাঁর শুভাকাঙ্কীদের অনুরোধে মিরপুর থেকে নবাবপুর আশ্রয় নেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি পলস্নবের।
কাদের মোল্লার সশস্ত্র ক্যাডাররা তাঁর নবাবপুরের অবস্থান জানতে পারে। '৭১-এর ২৯ মার্চ নবাবপুর থেকে কাদের মোল্লার কাছে তাঁকে মিরপুরের আস্তানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কাদের মোল্লার নির্দেশে সশস্ত্র ক্যাডাররা পল্লবকে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১ নম্বর সেকশন শাহ আলী মাজার পর্যন্ত হাতপা দড়ি বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় । ক্ষতবিক্ষত পল্লবকে তারপর ¯হানীয় একটি ঈদগাহ মাঠের একটি গাছের সাথে বেধে রাখে। পরে ওইদিন ই আব্দুল কাদের মোল্লার সহযোগীরা পল্লবের আঙ্গুল কেটে নেয়।সেখানে গাছের সঙ্গে বেঁধে পল্লবের দেহ ঝুলিয়ে রাখা হয় টানা দু'দিন। এর পর হায়েনারা তার হাতের আঙ্গুলগুলো কেটে ফেলে। এ রকম চলার একপর্যায়ে ৫ এপ্রিল আবদুল কাদের মোল্লা তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আখতারকে পল্লবকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী ঘাতকরা গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা পলস্নবের দেহে গুলি করে। পল্লবের শরীর অনেক গুলির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। কথিত আছে, প্রতিটি গুলির জন্য কাদের মোল্লা ঘাতককে আর্থিক মূল্যে পুরস্কারও প্রদান করে। আর শহীদ পল্লবের ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া মৃতদেহ আরও দু'দিন গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এই বর্বরতার মাধ্যমে আব্দুল কাদের মোল্লা জানিয়ে দেয় যারা বঙ্গবন্ধু বা স্বাধিনতার পক্ষে কথা বলবে তাদের এই পরিনতি হবে বলে ফিরোজ আলী জানান।
কারণ এ ঘটনায় যাতে মুক্তিকামী মানুষ মুক্তিপথের যাত্রায় যেতে নিরুৎসাহিত হয়; কিন্তু এই মৃতদেহ কার্যত শক্তিতে পরিণত হয়। পল্লবের মৃতদেহ দু’দিন ঝুলিয়ে রাখার পর ঘাতকরা লাশ পল্লবীর কালাপনি ঝিলের পাশে আরও ৭ জনের লাশের সঙ্গে মাটি চাপা দেয়।
©somewhere in net ltd.