নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন ব্যর্থ মানুষ।ব্যর্থতার মাঝেই সফলতাকে খুঁজি।

ফেক রুধির

ফেক রুধির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঠাই হীন জীবন এবং চাপা আর্তনাদ

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৫২

অন্তরা অদ্ভুত একটা নাম।ঠিক তার নামের সাথে ওর চেহারার ও অনেক মিল।একটা আলাদা মায়া আছে ওর চেহারায়।তবুও ছোট থেকে বড় হয়ে উঠার সময় সে লক্ষ্য করলো সে হঠাৎ করেই পাল্টে যাচ্ছে।তার কাছে মেয়েদের সাজটাকে কষ্ট কর লাগে।ছেলেদের সাজ আর ছেলেদের মতো করে চলার ইচ্ছেটাই যেন বেশী।মেয়েদের কোন কিছুই যেন তার ভালো লাগে না।অসহ্য লাগে তবুও মেনে চলার চেষ্টা করতে লাগলো।প্রাইমারীর গন্ডি পেরুতেই সে বুঝতে পারলো সে অন্যদের চেয়ে আলাদা।না ছেলে না মেয়ে।পরিবার এর সদস্যদের থেকেও তেমন কোন উৎসাহ নেই।আর প্রতিদিন তাকে নিয়ে বাবা-মার ঝগড়া থেকেই সে বুঝতে পারলো তাকে হয়তো আর বাসায় রাখা হবে না।ঘুমের মধ্যে প্রতিধ্বনি শুনতে পায় বাবার সেই রাগত কণ্ঠ স্বর-
- তোমার মাইয়া এমন পোলাগো মতো চলে ক্যান?
- ও তো বাচ্চা মানুষ অন্তরার বাবা!! বড় হইলেই ঠিক হইয়া যাবে।
- হু হিজড়া কোন দিন ঠিক হয়! কি যে কউ না, অন্তরার মা।
- তুমি যাই কউ আমার মাইয়া ঠিক হইবই।বড় হইলেই ঠিক হইব।
- হু ঠিক হইব!!জন্ম নিছে হিজড়া হইয়া।শোন হিরণের বাপ কইল,রাম নগর গ্রামে নাকি হিজড়া গো বস্তি আছে অইখানে অন্তরারে রাইখা আসতে।এই হিজড়া মাইয়া দিয়া কি হইব শুনি??
- কি কইলা অন্তরার বাপ!তুমি তোমার মাইয়ারে হিজড়া বস্তিতে রাইখা আসার কথা ক্যামনে মুখে আনলা?তোমার একটু বুক কাপলো না?
- হিজড়া মাইয়া কেডা জন্ম দিছে শুনি?তুমার পেট থেকে বাহির হইছে না আমার?অইডা আমার মাইয়া না।কোনখানে কি পাপ করছ তার শাস্তি আমি ক্যান নিমু?
- অ্যাঁ এইডা তুমি কি কইলা?ছি ছি ছি।কার ঘরের ভাত খাই আমি?খবরদার আমার মাইয়ারে তুমি কথাও নিবার পারবা না।
- কালকেই অরে রাইখা আসুম।হিজড়া মাইয়া পালতে পারুম না।
বাবা অন্তরা কে কোথায় রেখে আসবে তা বুঝতে না পারলেও,তার যে বাসায় থাকা হচ্ছে না এটা সে নিশ্চিত হয়ে গেছে।এরপর থেকেই তার কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে।সারাক্ষণ মা র কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছে সে।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তরা।অন্তরার মা নদীর ঘাটে পানি আনতে গেছে।তাই সুযোগ বুঝে অন্তরার বাবা অন্তরার ঘরে গিয়ে অন্তারাকে বলল
- কি রে মা মেলায় যাবি?
মেলায় যাবার কথাশুনে রাতের কথা বেমালুম ভুলে গেছে অন্তরা।
- হ বাবা যামু।
- তাইলে ল যাই।
অন্তরাদের গ্রাম থেকে হিজড়া বস্তি প্রায় মাইল দশেক হবে।হিজড়া বস্তিতে যাওয়ার সাথে সাথেই ছো মেরে অন্তরাকে নিয়ে গেলো এক হিজড়া।এক ঝলকের জন্য ও শেষ দেখা দেখতে পারলো না মেয়ে-বাবা একে অপরকে।এইটাই হয়তো নিয়ম!শেষ দেখা দেখতে দিলে শেষে হয়তো আর মেয়েকে রেখে যেতে চাইবে না বাবা.........

এরপর অন্তরার ভাগ্যে কি ঘটেছিলো জানা নেই তবুও তাদের আবেগ কিন্তু রক্ত মাংসের মানুষের মতই।যারা কি না স্বাভাবিক লিঙ্গের।স্বাভাবিক মানুষের মতো বাঁচতে দিলে ওরাও দেশের জন্য অনেক কিছুই করতে পারবে।শুধু একটু দৃষ্টি ভঙ্গি বদলান দরকার।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: হিজড়াদের নিয়া করুণ গল্প। শুভেচ্ছা রইল।

২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

ফেক রুধির বলেছেন: ধন্যবাদ। হিজড়া রা আসলেই বঞ্চিত।ওদের আমরাই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে রেখেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.