নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক ও তালিবুল ইলম।

ররুহুল্লাহ নোমানী

রুহুল্লাহ নোমানী

তালিবুল ইলম

রুহুল্লাহ নোমানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমকালীন ভাবনাঃ নাস্তিকতার সয়লাব রোধে স্থায়ী করণীয়

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:০৯



(লেখাটা একটু বড়ো। তবুও পুরোটা পড়ার অনুরোধ করছি। লাইক নয়, উপযুক্ত হলে চাই ‪#‎শেয়ার‬।)

স্ব-ঘোষিত এক নাস্তিককে নিয়ে দেশ এখন সরগরম। আত্মসমর্পণের জন্য থানায় গিয়ে তার অভিব্যক্তি ছিলো- ‘ওসি সাহেব! আপনার কাছে চলে এলাম।’ গণমাধ্যম অনুসন্ধান করে জানিয়েছে- ‘তার মাঝে চিন্তা-পেরেশানীর কোনো ছাপ..ই নেই। নেই অনুশোচনার ‘অ’...ও। সে নির্ভীক-নির্লিপ্ত।’ গ্রেফতার হওয়ার আগ মুহূর্তেও সে ‘সমকাল’কে বলেছে- ‘অনুতপ্ত নই। আমি আমার আগের অবস্থানেই আছি।’ হ্যাঁ, পত্রিকার দেয়া তথ্য মতে ‘গ্রেফতার হওয়ার পরেও সে চিকন চালের ভাত খেয়ে ডিভিশনপ্রাপ্ত আসামী হিসাবে কারাগারে ভালোই আছে। ঢোকার সময়ও অন্যসব আসামীর মতো মাথা নুইয়ে পকেট গেট দিয়ে প্রবেশ করেনি, প্রবেশ করেছে বড়ো গেট খুলিয়ে মাথা উঁচু রেখে বীরদর্পে।’ সকালের সূর্য..ই যেনো কিছু একটা বলে দিচ্ছে, তা..ই-না! এসব অভাবিত নয়, বরং এমনটাই হওয়ার। কারণ তাসলীমা-আসিফরা তো যুগে যুগে পুরুস্কৃত..ই হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী ইসলাম বিদ্বেষীরা তাদের দ্বারা এসব করায়, এরপর তাদেরকে পুরুস্কার দিয়ে পরিতৃপ্ত করে। আর তাদেরকে সহায়তা করে এ দেশীয় দালাল-দোসররা। সবগুলোকে আল্লাহ হয় হেদায়াত দান করুন, নতুবা ধংস করে দিন।

মন্ত্রীপরিষদ-এলিটশ্রেণী থেকে নিয়ে নিম্নশ্রেণী পর্যন্ত অমন লতিফ সিদ্দিসী এক দু’জন নয়, শতো শতো। ক্ষণে ক্ষণে তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়। আশ্বাস পেয়ে বা কাউকে পুরুস্কৃত হতে দেখে মত্ত হয়ে ওঠে। তাতে দেশে থাকতে পারা গেলো, না আখেরাত গেলো, তা নিয়ে সামান্য মাথা ব্যাথাও নেই। কেননা তারা দেশের নয়, আর তারাও জানে যে, আখেরাত তাদের নয়। তারা যশ চায়, সম্পদ চায়। তা পেলেই সন্তুষ্ট। সে উদ্দেশ্য সাধনে খ-কালীন আরাম-কারাবাস কোনো ব্যাপার..ই নয় তাদের কাছে। একেতো মানসিক প্রস্তুতি থাকায় কষ্ট লাঘব হয়ে যায় বা অনুভূত..ই হয় না। সাথে এসব তাদেরকে বিশ্বময় পরিচিত করে তোলো। দাতা ও দাদাদের কাছ থেকে ঘোষিত পুরুস্কার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা তো আছে..ই। কেমনে কখন কিভাবে কি হবে, তার আগাম বার্তা থাকার পরও মাত্র ক’দিনের পরিকল্পিত আয়েশী কারাবাসে মন খারাপ করবে কেনো লতিফ সিদ্দিকীরা?

তবে এ দেশীয় মুসলমানদের একটি স্বভাবগত দুর্বলতা আছে। তারা ইসলাম বিরোধী কথা-কাজ বা শক্তিকে একদম সহ্য করতে পারে না। এ দুর্বলতা এ দেশীয় মুসলমানদের প্রতি আল্লাহর এক বিশেষ রহমাত। তাই তারা যখনই ইসলাম বিরোধী কিছু দেখে, ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কমবেশী ফলাফল অর্জন করেই তবে ঘরে ফিরে। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসেই তাসলীমা আজ নীড়হারা, আসিফরা দেশছাড়া, মালঊন কারার ভেতরে। থাকুক না সেখানে শতো সুযোগ-সুবিধা, তবুও ঝাড়– দর্শন, জুতা বর্ষণ, থুথু ভক্ষণ, গালি শ্রবণের বিনিময়ে দু’দিনের আয়েশী জীবন কি লাঞ্ছনার মোহরাঙ্কন নয়? চারিেিদকে ঘৃণা-বঞ্চনা থেকে মানুসিক যন্ত্রণা এবং পরকালীন স্থায়ী শাস্তির বিনিময় কি হতে পারে ওই সামান্য নাম, সামান্য আয়েশ? আসলে এরা হলো ‘মাখতুম আলাল কলব’, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। কুরআনে এসেছে...
{خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةَ ذَلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ} [الحج: ১১]
দুনইয়া ও আখিরাতের ক্ষতিগ্রস্ত। এটা..ই হলো প্রকাশ্য ক্ষতিগ্রস্ততা। (হজ্জ-১১)
{ أُولَئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالْآخِرَةِ فَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ } [البقرة: ৮৬]
যারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনইয়া ক্রয় করলো, তাদের আযাবকে হালকা করা হবে না। তাদেরকে সাহায্য করাও হবে না। (বাকারা-৮৬)
{خَتَمَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ وَعَلَى أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ} [البقرة: ৭]
আল্লাহ তাদের অন্তর ও কানের ওপর মোহর মেরে দিয়েছেন। তাদের চোখের ওপর পর্দা পড়ে আছে। আর মহাশাস্তি রয়েছে তাদের জন্য অপেক্ষমাণ। (বাকারা-৭)
{وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ لَهُمْ قُلُوبٌ لَا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ آذَانٌ لَا يَسْمَعُونَ بِهَا أُولَئِكَ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُولَئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ} [الأعراف: ১৭৯]
আমি জাহান্নামের জন্য অনেক মানুষ ও জীন সৃষ্টি করেছি। তাদের অন্তর আছে, কিন্তু তা দ্বারা অনুধাবন করতে পারে না। তাদের চোখ আছে, কিন্তু তা দ্বারা তারা দেখতে পারে না। তাদের কান আছে, কিন্তু তা দ্বারা তারা শুনতে পারে না। তারা হলো জানোয়ারের মতো, বরং তার থেকেও বেশী পথভ্রষ্ট। তারাই হলো উদাসীন। (আরাফ-১৭৯)
সুতরাং সব যমানায়..ই কিছু জানোয়ার থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হলো তাদের আস্ফালন রোধ করা। আর সেজন্য প্রয়োজন দেশী-বিদেশী সব ষড়যন্ত্রকে ভেদ করে লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ও প্রস্তুতি-অপেক্ষা। তাসলীমা নরকীর ‘মৃত্যুদ-’ হলে আসিফদের জন্ম হতো না। ইমরান-আসিফদের ‘মৃত্যুদ-’ হলে আজকের মালঊনের প্রকাশ ঘটতো না। এ কারণে কুরআনে বলা হয়েছে-
{وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ} [البقرة: ১৭৯]
হে বিবেকবানেরা! ‘কিসাসে’ তোমাদের হায়াত রয়েছে’। (বাকারা-১৭৯)
হত্যার দায়ে কারো মৃত্যুদ- কার্যকরের মাঝে অন্যদের হায়াত কিভাবে নিহিত? ঠিক সেভাবে..ই ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র বিধান করে নাস্তিকতার এ ঢল থামানো সম্ভব, বরং থামানো আবশ্যক। নতুবা আগামী প্রজন্মের গন্তব্য খুব..ই অনিশ্চিত হয়ে যাবে, তারা আরো বিপথগামী হয়ে যাবে। সময় মতো কিছু করতে না পারলে, সন্তান বিপদগামী হওয়ার পরে কান্না করে আর কী লাভ হবে? এখন কিছু করা সম্ভব না হলে ‘তা’য়ে থাকা আ-াগুলো ফুটে কিছু দিন পর পর..ই নাস্তিকদের আগমন ঘটবে। কারণ পরিবেশ-পরিস্থিতি, শিক্ষা-দীক্ষা সহ সবই দিন দিন ওদিকেই ঝুঁকে পড়ছে। সব ধরণের আনুকূল্য থাকা অবস্থায় অন্তরের কদর্য প্রকাশ করে দিতে নাস্তিকরা দ্বিধা করবে কেনো? তবে মৃত্যুদ-ের বিধান ও মৃত্যুদ- কার্যকর করা হলো প্রশাসনিক ব্যাপার। এটাও যরূরী, তবে এর দ্বারা চাপিয়ে রাখা যায়, নির্মূল করা যায় না। এর দ্বারা সাধারণতঃ অন্তরের পরিবর্তন হয় না। তাই সমূলে নির্মূল করার জন্য ছিদ্রপথও বন্ধ করে দিতে হবে, অন্তরের ওপর মেহনত করতে হবে, নাস্তিকতার প্রজননকেন্দ্রের বিপরীতে বিকল্প মেহনতও চালু করতে হবে।

‪#‎স্থায়ী_পাঁচ_দফা‬

হ্যাঁ, সে মেহনতও বর্তমানেও চলছে। তবে তা আরো বেগবান করার তাগাদা অনুভুত হচ্ছে। সে হিসাবে আমি পাঁচটি দফা পরিবেশন করছি। কারো মতভিন্নতাও থাকতে পারে। মূলতঃ পর্যালোচনার জন্যই পরিবেশন করা। এসব কর্মসূচী হবে পর্যায়ক্রমিক, সময় সাপেক্ষ ও সু-দূর প্রসারী। আমার মতে- স্থায়ী ফলাফলের জন্য ‘পরিমার্জিতরূপে’ হলেও নিম্নোক্ত স্থায়ী কর্মসূচীগুলো হাতে নেয়ার গত্যান্তর নেই। আল্লাহ আমাদের ভুল থেকে হেফাযত করুন এবং ভালোগুলো গ্রহণ ও বাস্তবায়নের তাওফীক দান করুন। আমীন।

‪#‎এক‬.
নাস্তিক তৈরীর উপাদান প্রচলিত শিক্ষা-সিলেবাসের বিরুদ্ধে আওয়ায বুলন্দ করে ক্রমান্বয়ে তা আন্দোলনের রূপ দান করতে হবে। সে সম্পর্কে জনমত গঠন ও গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ইসলামী আক্বীদার আলোকে ইসলামের মৌলিক শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির শিক্ষা-সিলেবাস প্রণয়ণের দাবী গণদাবীতে পরিণত করতে হবে। আর সেজন্য প্রচলিত শিক্ষা-সিলেবাসের আক্বীদা বিধংসী ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে সকলের সামনে পরিবেশন করতে হবে। পাঠ্য-সিলেবাসে ডারউনের বান্দর মতবাদ বা ফ্রয়াডের যৌনমতবাদ পড়ে মুসলমানদের সন্তানরা আল্লাহ-আখেরাতের প্রতি দ্বিধাগ্রস্ত হবে সর্বত্র যৌনতার উপস্থিতি দেখে যৌনতার জন্য উন্মাদ হয়ে যাবে, এতে সন্দেহের কী আছে? তবে এটা একপ্রহর বা দু’প্রহরের কাজ নয়। তাই যতদিন না সেই অভীষ্ট অর্জিত হয়.......

‪#‎দুই‬.
সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ইসলামী আক্বীদা-আমলের প্রসারের জন্য এমন একটি মেহনত অবশ্যই জারী রাখতে হবে, যা চলমান মাদ্রাসা রূপে খিদমাহ আঞ্জাম দিবে। যাতে যে যখন সময় পায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে। যাতে আগ্রহী ব্যক্তিরাও অংশগ্রহণ করবে, আগ্রহীনরাও অংশ গ্রহণ করবে দাওয়াতে সাড়া দিয়ে। এ দাওয়াত হবে সর্বস্তরের মানুষের জন্য। তাই তারা শুধু ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলীর দাওয়াত দিবে। তাদের লক্ষ্য হবে- নাস্তিকতার ঢল ঠেকানো। কতো মানুষ তো আছে, যারা জানেও না যে, তাদের অন্তরে নাস্তিকতার বীজ সুপ্ত হয়ে আছে। তাদেরকে বুঝাবে যে, চাকরি বা শিল্প থেকে নয়, যা হয় সব আল্লাহ থেকে..ই হয়। তাই যা চাও সব আল্লাহর কাছে চাও। প্রকৃতি যেমন কোনো দাতা নয়, দাতা নয় মাঝারের ওলীরাও। ইত্যাদি ইত্যাদি।

তারা ইখতিলাফী বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে না। কারণ সেখানে আলেমে আলেমে মতভেদ হয়। ‘কাযিয়া বানী কুরাইযা’ প্রমাণ করে- ইখতিলাফসহ-ই ওসব আমল আল্লাহর নিকট গৃহীত। মানুষের স্বভাবগত প্রবৃত্তি হলো- আস্থাভাজন আলেমের প্রতি তার যে পরিমাণ নমনীয়তা থাকে, তা অন্যের ওপর থাকে না। তাই ওইসব ইখতিলাফী ইজতিহাদী বিষয়গুলোকে দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত করলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশী হবে। মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়ে মূল কাজ ব্যহত হবে।

মূলতঃ আমলী ইখতিলাফ দাওয়াতের কোনো বিষয়ও নয়। দাওয়াতের বিষয় হলো কতইয়্যাত বা অকাট্য বিষয়াবলী। সে সবে যার আস্থা হবে, আমলের প্রক্রিয়া সেই অনুসন্ধান করে নিবে। মূল বিষয় যখন ঠিক হয়ে যাবে, তখন শাখাগত বিভিন্নতা আর বিভেদের রূপ নেবে না, যেমন সাহাবা-সালাফ ও আমাদের আকাবরের বেলায় নেয় নি। তাই এই জামাআত মৌলিক বিষয়াবলীর দাওয়াত দিয়ে শাখাগত বিষয়াবলীর জন্য আলেমগণের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য উৎসাহিত করবে। আল-হামদু লিল্লাহ, একাজটি তাবলীগ জামাআত সুচারুরূপে আঞ্জাম দিয়ে আসছে।

জ্ঞাতব্য যে, দাওয়াতের প্রয়োজন কোনোদিন ফুরাবে না। এই কালো যুগে যেমন এর প্রয়োজন রয়েছে, সে দিনও প্রয়োজন অবশিষ্ট থাকবে যেদিন সোনালী দিন ফিরে আসবে। কেননা সেই সোনালী যুগেও সাহাবায়ে কেরাম দাওয়াতের কাজ করতেন। তারা পরস্পরকে বলতেন-
وَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ: ্রاجْلِسْ بِنَا نُؤْمِنْ سَاعَةًগ্ধ
আমাদের সাথে বসো। আমরা কিছুক্ষণ ঈমান র্চ্চা করবো। (সহীহ বুখারী)
এর ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে হাজার রহ. বলেছেন-
وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا كَانَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ يَقُولُ لِلرَّجُلِ مِنْ إِخْوَانِهِ اجْلِسْ بِنَا نُؤْمِنْ سَاعَةً فَيَجْلِسَانِ فَيَذْكُرَانِ اللَّهَ تَعَالَى وَيَحْمَدَانِهِ
‘অন্য বর্ণনায় রয়েছে: মু‘আয ইবনে জাবাল রা. তার ভ্রাতৃবর্গের থেকে কাউকে বলতেন- আমাদের সাথে বসো। আমরা কিছুক্ষণ ঈমান র্চ্চা করবো। এরপর তারা দু’জন বসতেন এবং আল্লাহর যিকর ও হামদ করতেন। (ফতহুল বারী)

‪#‎তিন‬.
তবে স্মরণ রাখতে হবে- তাবলীগের মাধ্যমে মানুষের মাঝে ইসলামের মৌলিক বিধি-বিধানের দাওয়াত পৌঁছানো তখনই ফলপ্রসূ হবে, যখন মানুষের অন্তরও পরিশুদ্ধ হবে। কেননা সব কাজের কেন্ত্রবিন্দু অন্তর। যারা ফিৎনা করে, তাদের অন্তর ফেৎনাপ্রবণ বলেই তারা ফেৎনাবাজ। অনুরূপ অহংকারী, লোভীদের বেলায়ও একই কথা। কোনো কাজ বাস্তবে আসে না, যতক্ষণ অন্তর থেকে ডাক না আসে। তাই অন্তরের ওপর মেহনত করে অন্তর পরিশুদ্ধ করতে হবে। কুরআনে যাকে বলা হয়েছে তাযকিয়াহ। আর যাকে হাদীছে ইহসান নামে অভিহিত করা হয়েছে। এটাকে রব্বানিয়্যাহও বলা যায়। পরবর্তীতে যা তাসাউফ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। এ হলো নাম বা পরিভাষার বিভিন্নতা। মূল বিষয় বা এর প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই এটাকে একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসাবে চর্চা করতে হবে। তবে তা হতে হবে সম্পূর্ণ বিদআতমুক্ত, কুরআন-হাদীছের নির্দেশিত ও অনুমোদিত পন্থায়।

‪#‎চার‬.
নাস্তিকতা সাধারণতঃ তাদেরকেই পেয়ে বসে, যারা বাল্যবয়সে ধর্মীয় অনুশাসনের ছোঁয়া পাননি। মিশনারী স্কুলগুলোয় যখন শিশুদেরকে বলা হয়- ‘চোখ বন্ধ করো। শিশুরা চোখ বন্ধ করে। হাত খুলে প্রসারিত করো। বলো- আল্লাহ! চকলেট দাও। এবার চোখ খুলো। দেখো...তো হাতে চকলেট আছে কিনা! শিশুরা বলে- না, চকলেট নাই। এরপর আবার একই ধারায় বলা হয়, বলো- আপা চকলেট দাও। চোখ খুলো। দেখোতো হাতে চকলেট আছে কিনা! হ্যাঁ, আছে। তাহলে চকলেক কে দেয়, আপা না আল্লাহ? সবাই সমস্বরে- আপা।’ (নাঊযূ বিল্লাহ) এ কোনো কাল্পনিক চিত্র নয়, বাস্তবতা থেকে নেয়া। নাস্তিকতার এমন প্রাক্টিকাল শিক্ষা শিশুদের অন্তরে গভীর রেখাপাত করে। তাই বাল্য বয়সেই ইসলাম-শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য পাড়ায় মহল্লায় মক্তব-মাদ্রাসা গড়ে তুলতে হবে।
মনে রাখতে হবে- পথশিশুরাও সমাজের অংশ। মুসলমানদের সন্তান। তাদের ঈমান-আক্বীদার হেফাযতের জন্যও চিন্তা করতে হবে। আমরা তাদের থেকে বেখবর। আর বিদেশী এনজিওগুলো তাদের প্রতি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে যতœবান। অথচ সমাজের নিম্ন শ্রেণীই সর্বদা ইসলামের জন্য নিঃস্বার্থ ত্যাগ স্বীকার করেছে। তাদের হারানোর কিছু থাকে না, না অনুসারী, না সম্পদ। আবু সুফইয়ান রা.-র ইসলাম গ্রহণের অনেক আগের ঘটনা। হিরাক্বলা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলো- মুহাম্মাদের সা. অনুসারী সংখ্যায় অধিক কারা, উচ্চশ্রেণী না নিম্নশ্রেণী? উত্তর ছিলো- নিম্নশ্রেণী। এ উত্তর হিরাক্বলার কাছে রাসূল সা.-র হাক্কানিয়াতের আলামাত সাব্যস্ত হয়েছিলো। (সহীহ বুখারী-৭) তাই পথশিশুদের শিক্ষার প্রতি যেমন গুরুত্ব দিতে হবে, গুরত্ব দিতে হবে সমাজের নিম্নশ্রেণীর ঈমান-আক্বীদা হেফাযতের প্রতিও। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং সীমিত পরিসরে এ ব্যাপারে যে মেহনত চলছে, তা যথেষ্ট নয়। আরো ব্যাপক, আরো বেগবান করতে হবে। প্রয়োজনে মুখলিস-নিষ্ঠাবান আলেমগণের সমন্বয়ে এনজিও প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাতে মানুষের বিপদ-অর্থকষ্টকে কেন্দ্র করে কাউকে বিপদগামী করার সুযোগ না থাকে।

‪#‎পাঁচ‬.
সাথে সাথে স্মরণ রাখতে হবে- এসবের দ্বারা চূড়ান্ত সফলতা অর্জিত হবে না। চূড়ান্ত সফলতার জন্য চূড়ান্ত ত্যাগ আবশ্যক। তবে উপযুক্ত সময়ে। যাতে ফেৎনার কারণ না হয়, লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশী না হয়। ইসলামী শাসনব্যবস্থার বড় শত্রু আধিপত্যবাদী ও তার দালাল-দোসররা। তাদের পরাজিত করা ব্যতীত ইসলামী খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করা কোনোক্রমেই সম্ভব না। নিকট অতীত ও চলমান ঘটনাপ্রবাহ এর জ্বলন্ত প্রমাণ। আর ইসলামী খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করা ব্যতীত ইসলামের সুফল উপভোগ করা, আল্লাহ-রাসূল ও ইসলাম অবমাননা রোধ করা, মানবতার মুক্তির বিধান করা, নাস্তিকতার সয়লাব রোধ করা, মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। হয়তো ‘শুফআ’র মতো দু’একটি বিধান থাকতে পারে, কিন্তু ইসলামকে ইসলামরূপে দেখতে পাওয়ার সুযোগ নেই। তাই কী করণীয়? কিভাবে করণীয়? কখন করণীয়? আপনি..ই ভাবুন! আপনিও ভাবুন!

হে আল্লাহ! তুমিই তো আমাদের হেদায়াত দাতা। তুমি আমাদের সামনে সত্যকে সত্য হিসাবে দেখিয়ে দাও। আর তাওফীক্ব দাও তা অনুসরণের। আল্লাহ! তুমি বাতিলকে বাতিল হিসাবে দেখিয়ে দাও। আর তাওফীক্ব দাও তা থেকে বেঁচে থাকার। আল্লাহ! তুমিই দাতা। আমরা তোমার দয়ার ভিখারী।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২৬

রুহুল্লাহ নোমানী বলেছেন: সবাই পড়ুন।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২৮

খেলাঘর বলেছেন:



গুহামানবের প্রলাপ

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩০

দ্যা ফ্রীল্যান্সার বলেছেন: আমি নাস্তিক। ইসলাম নামক বালের ধর্মটা ছাড়ছি আজ থেকে ৩০ বছর আগে। আমার কি বালডা ছিড়তে পারছ দেখি।

৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩০

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: আওয়ামী সরকারের আগানে বাগানে এরকম নাস্তিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এখন সরকারে আছে এবং চাপে আছে বলে তারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। তারা বিদেশী বন্ধুদের সিগন্যালের আশায় তাকিয়ে আছে। সিগ্ন্যাল পেলে আর এক মুহূর্ত দেরি করবেনা নিজেদের মুখোশ খুলে ফেলতে।

৫| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২১

সত্যের পথে আরিফ বলেছেন: পথশিশুরাও সমাজের অংশ। মুসলমানদের সন্তান। তাদের ঈমান-আক্বীদার হেফাযতের জন্যও চিন্তা করতে হবে। আমরা তাদের থেকে বেখবর। আর বিদেশী এনজিওগুলো তাদের প্রতি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে যতœবান। অথচ সমাজের নিম্ন শ্রেণীই সর্বদা ইসলামের জন্য নিঃস্বার্থ ত্যাগ স্বীকার করেছে। তাদের হারানোর কিছু থাকে না, না অনুসারী, না সম্পদ

৬| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২২

রুহুল্লাহ নোমানী বলেছেন: ব্লগে তো দেখা যায় ‘স্ব-ঘোষিত’ নাস্তিকদের বেশ উপস্থিতি আছে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.