নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক ও তালিবুল ইলম।

ররুহুল্লাহ নোমানী

রুহুল্লাহ নোমানী

তালিবুল ইলম

রুহুল্লাহ নোমানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাযার কেন্দ্রিক কিছু অপপ্রচারঃ কদম-রাসূল ও বায়েযীদ বোস্তামী এবং ...

১১ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:০৮


নারায়নগঞ্জের বন্দর থানার একটি স্থানের নাম ‘কদম-রাসূল’। মাযারের একটি কক্ষের মাঝখানে তার দিয়ে সেলাই করা একটি পাথরের জুতা আছে। জুতা বলতে শুধু পায়ের নিচের অংশ এবং ওটার ওপর পায়ের আঙ্গুলের ছাপও রয়েছে। একটি পাত্রের মধ্যে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা হয়েছে এবং টাকার বিনিময়ে ভক্তদের মাঝে ওই পানি বিতরণ করা হয়। এ পানি পান করলে নাকি মনের আশা পূরণ হয়। মাযারের খাদেম জানালেন- এই ‘না‘লাই শরীফ’ রাসূল সা. অযূ করার সময় ব্যবহার করতেন। এখন একটি আছে, অন্যটি চুরি হয়ে গেছে। এখানে কিভাবে আসলো? প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন- ‘এ সম্পর্কে দু’টি কথা শুনেছি। কেউ বলেন- রাসূল সা. মি‘রাজে যাওয়ার সময় পা মুবারক থেকে এখানে পতিত হয়েছে। আবার কেউ বলেন- এই মাযারের প্রতিষ্ঠাতা আরব থেকে আসার সময় সাথে নিয়ে এসেছেন।’ পাঠক! চমকে ওঠার মতো তথ্য হলেও ওই জুতার কারণেই কিন্তু ওই স্থানের নাম ‘কদম-রাসূল’! অথচ এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তিই নেই। দেখুন, এক শ্রেণীর ধুরন্দর মানুষ বোকা মানুষদের নিয়ে কিভাবে খেলছে?

আবার দেখুন চট্টগ্রাম শহরের অদূরের বায়েযীদ বোস্তামীর মাযার। বলা হয়ে থাকে, বায়েযীদ বোস্তামী রহ. সু-দূর খোরাসানের বোস্তাম শহর থেকে বাংলাদেশে দ্বীন প্রচার করতে এসেছিলেন। এরপর বাংলাদেশেই তার মৃত্যু হয়েছে এবং চট্টগ্রাম শহরের ওই স্থানে তাকে সমাহিত করা হয়েছে। তার নামানুসারেই ওই স্থানের নাম রাখা হয়েছে বা নাম হয়ে গিয়েছে ‘বায়েযীদ বোস্তামী’। কী সুন্দর ও বরকতময় নামকরণ, তাই-না! এই সুন্দর ও সাজানো ইতিহাসে বিশ্বাসী লোকের অভাব নেই। তাই এই কাল্পনিক মাযারকে কেন্দ্র করেই সেখানে শিরক ও বিদ‘আতের বাজার বসেছে।
বায়েযীদ বোস্তামীর মাযারে বড়ো খাসীর মতো উচ্চতার বিশাল বিশাল কচ্ছপ রয়েছে। ভক্তরা মনের আশা পূরণ ও উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ওই কচ্ছপগুলোকে কলা-রুটি খাইয়ে থাকে। মহান কচ্ছপ যদি কারো কলা-রুটি অগ্রাহ্য করে, সে কপাল পোড়া, তার সব শেষ। বিবাহ ও সন্তান লাভের আশায় যুবতীরা মাযারের থেকেও ওই কচ্ছপগুলোকে বেশী যিয়ারত করে। বায়েযীদ বোস্তামীর কচ্ছপ, কম কথা তো নয়! এমনকি অনেককে ওই কচ্ছপের পিঠে জমে থাকা শ্যাওলার পানি পান করতেও দেখা যায়। তাদের ভক্তির অতিমাত্রিকতার সামনে রুচিবোধ নিতান্ত অসহায়। অথচ তা শুনতেও ঘৃণা লাগে। তার থেকেও বেশী আশ্চর্য লাগে কুরআন-হাদীছের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি ভিত্তিহীন ইতিহাসকে কেন্দ্র করে তাদের আকীদা-বিশ্বাস ও আস্থা-ভক্তির অবস্থা দেখে। আল্লাহর পানা!
অথচ প্রকৃত ইতিহাস হলো: চট্টগ্রামে অবস্থিত বায়েযীদ বোস্তামীর মাযার বলতে ভণ্ডরা যাকে বুঝিয়ে থাকে, তার নামের মূল উচ্চারণ হলো ‘আবূ ইয়াযীদ বাস্তামী’। পুরো নাম: আবূ ইয়াযীদ ত্বয়ফূর ইবনে ঈসা ইবনে শরুশান বাস্তামী। (তার দাদা শরুশান ছিলেন অগ্নিপূজক, পরে মুসলমান হয়েছেন।) বাস্তাম শহরে তার জন্ম। বাস্তাম খোরাসানের অন্তর্গত খোরাসান ও ইরাকের মধ্যবর্তী একটি শহর। এ বাস্তাম শহরেই আবূ ইয়াযীদ বাস্তামী রহ. ২৬১ হিজরীতে ৭৩ বছর মৃত্যু বরণ করেছেন। তার জীবন কাল হলো ১৮৮ → ২৬১ হিজরী, ৮০৪ → ৮৭৫ খ্রীষ্টাব্দ। তার অনুসারীদেরকে ‘ত্বয়ফূরিয়্যাহ’ বা ‘বাস্তামিয়্যাহ’ বলা হয়। (দেখুন: যারাকলী রচিত ‘আল-আ‘লাম’, ৩:২৩৫; ত্ববাকাতুস সূফিয়্যাহ, পৃ: ৬৭-৭৪; হিলইয়াতুল আওলিয়া, ১০:৩৩; অফাইয়াতুল আ‘ইয়ান, ১: ২৪০; আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১১:৩৮; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১৩:৮৮)।

বায়েযীদ বোস্তামীর কচ্ছপের কথা তো বলা হলো। এভাবে শাহজালাল রহ.’র দরগায় রয়েছে ‘গজার মাছ’। আর খানজাহান আলী রহ.’র দরগায় রয়েছে ‘কুমীর’। কুমীরের নামও বেশ রহস্যাবৃত: ‘ধলা পাহাড়’। এই কচ্ছপ, কুমীর ও গজার মাঝের কেরামতী অন্তহীন! এই মাযারকেন্দ্রিক প্রাণীগুলোকে ঘিরে কতো শিরক, বিদ‘আত ও কু-সংস্কারের যে প্রচলন রয়েছে, আল্লাহ মালূম। ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইয়েরা স্বীয় ঈমানের স্বার্থে অবশ্যই এসব বিশ্বাস করা থেকে শতো শতো মাইল দূরে থাকবেন। সংবাদপত্রের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক বছর আগে শাহজালাল রহ.’র মৃত গজার মাছকে গোসল করিয়ে, কাফন পরিয়ে, জানাযা পড়ে দাফন করা হয়েছে। কী ঈমান বিধ্বংসী কাজ! ভণ্ডামিরও তো একটা সীমা থাকা উচিত! আল্লাহর পানা!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩২

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: যারা সচেতন, তারা কোনকালেই এসব ভন্ডামির ফাঁদে পা দেয়নি। এদের ব্যবসা অনেক আগেই শেষ হয়ে যাবার কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ইসলামকে নিজেদের মনমতো করে রাখবার জন্য এদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। তরীকত ফেডারেশনের নেতাকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের ডিজি বানিয়ে এসব মাজারে মোটা অঙ্কের অনুদানের ব্যাস্থা করেছে।

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৩

নতুন বলেছেন: শিক্ষা ছাড়া কিছুই হবেনা...

৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

ঢাকাবাসী বলেছেন: সরকারের লোকেরা ভালই ঘুষ খাচ্ছে।

৪| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: এই সব কোন সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? নাকি এইগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে? বর্তমান সরকার ধরলাম তাদের কাজ ঠিক ভাবে করছে না, তাহলে এই ব্যাপারে দেশের অন্য সরকারগুলো কি ব্যবস্থা নিয়েছিল?

নাস্তিক হত্যার এজেন্ডা তুলে ঢাকার শাপলা চত্তরে হেফাজতি ইসলামের ঐ ১০ দফা দাবির কততম দফায় এই সব ভ্রান্ত ও মাজার পুজার ব্যাপারে প্রতিরোধের ব্যাপারে বলা হয়েছে?

দেশের কোন সরকার কি এই সব ভ্রান্ত মাজার পুজা বন্ধ করতে পারবে? যদি কোন সরকার এই সব বন্ধ করতে চায়, তাকে কি সাধারণ জনগণ সমর্থন দিবে? নাকি ধর্ম অনুভুতিতে আঘাত করার জন্য আন্দোলনে নামার ব্যাপারে ব্যবহার করা হবে?

৫| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৫৪

সুদীপ্ত সরদার বলেছেন: কাল্পনিক ভালোবাসার সাথে সহমত। নিরন্তর শুভকামনা

৬| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৩১

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: খুব সহজেই আমরা ব্লগারদের নাস্তিক বলি, তাদের হত্যা করি। কিন্তু যারা মাজার ব্যবসায় জড়িত, তাদের নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যাথা নাই, তাদের নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য নাই। দিব্যি দিনের পর দিন তারা ধর্মের নামে অধর্ম করে যাচ্ছে। অথচ কোন ইসলামিক দলকে তাদের বিরুদ্ধে কোন টু শব্দ করতে শুনি না। ইসলামিক দলগুলো যে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, এটা সহজেই এতে প্রমাণিত হয়।

৭| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:১৭

রুহুল্লাহ নোমানী বলেছেন: আত্মহত্যা নয়, তওবাই সমাধান

মানুষ জীবনে অনেক ভুলই করে। সব ভুল যেমন সমান নয়, সকলের ভুলও সমান নয়। তবে ভুল যতো মারাত্মকই হোক, কেউ তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। মিডিয়ার সুবাদে তোমার জীবনের কতোগুলো মোটামোটা ভুল দেশবাসী জেনেছে। এর মধ্যে তোমার প্রথম ভুলটি ছিলো শরী‘আত অসমর্থিত সম্পর্কে নিজেকে জড়ানো। এর পরের ভুলটি ছিলো তা সকলের সামনে প্রকাশ করা। নিষিদ্ধ কাজ করা ও প্রকাশ করা, উভয়টিই আল্লাহর অত্যন্ত অপসন্দনীয়। কেউ ভুল করলে তার করণীয় হলো, আর না করার দৃঢ় সংকল্প করা, তওবা করা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। কিন্তু তুমি বরং আত্মহত্যা চেষ্টার আরো একটি ভুল যোগ করেছো। এটি তোমার ক্রমিক ন¤^রের তৃতীয় ভুল।

মুদ্রিত সংবাদপত্র সাধারণতঃ পড়া হয় না। তবে অনলাইন সংবাদ-মাধ্যমগুলো তোমার ইদানিং কালের ঘটনাপ্রবাহ বেশ গুরুত্বের সাথেই পরিবেশন করছে, যা থেকে বুঝা যায়- ওইসব খবরের প্রতি অনেক বড়ো সংখ্যকের বেশ আগ্রহ আছে। দেশান্তরিত লেখিকাও যেচে এসে সংশ্লিষ্ট উভয়কে বেশ উপদেশ বিতরণ করেছে। এসব কিছুর সমšি^ত চিত্র হলো, যুবসমাজ অবক্ষয়ের প্রান্তসীমায় উপনীত। যার আবশ্যক পরিণতি হলো, জীবনের প্রতি হতাশা এবং যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া।

কিন্তু আত্মহত্যা কি যন্ত্রণার অবসান, না ভয়াবহ যন্ত্রণার সূচনা? যন্ত্রণার অবসান হলো, সু-পথে ফিরে আসা, তাওবা-ইসতিগফার করা। বান্দার অপরাধ যতোই বড়ো হোক, আল্লাহর রহমাত তার থেকে হাজার, লক্ষ, কোটি গুণ বড়ো। কেউ কায়মনো বাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন, তার যন্ত্রণা দূর করে দিবেন এবং তাকে সুস্থ-সুন্দর ও ¯^াভাবিক জীবন-যাপনের সুযোগ করে দিবেন। তাই আত্মহত্যায় সমাধান না খুঁজে তওবায় সমাধান খুঁজো।

তোমাকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো দেশের কোটি জনতাকে বলা। যাবতীয় ঘটনাপ্রবাহ থেকে সবাই এ কথা ¯^ীকার করতে বাধ্য যে, ইসলামের অনুশাসন ছাড়া আর কোথাও শান্তি নেই। সবই মরীচিকা, ধোঁকা, প্রতারণা। ইসলাম..ই শুধু সুস্থ-সুন্দর, সুখ-শান্তিময় জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারে। ওই নির্বাসিত কুখ্যাত লেখিকাকে অতি নিভৃতে জিজ্ঞেস করিও। সেও তোমাকে এ কথার ¯^ীকৃতি দিবে। এ আমার নিশ্চিত দাবী। মরীচিকার সন্ধানে ছটফটকারীরা পরীক্ষা করে দেখতে পারো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.